আমি শিমু আর রিমি একদিন প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিলাম ।যে রাস্তা দিয়ে প্রাইভেট পড়তে যেতাম সেই রাস্তায় অনেক লিচু গাছ লাগানো আছে ।যখন লিচু পাকার সময় হতো তখন লিচু পাহারা দেওয়ার জন্য লিচু গাছের নিচে লোক থাকতো ।সব লিচু গাছে জাল দিয়ে ঘিরে রাখত যেন পাখি একটাও লিচু নষ্ট করতে না পারে। যখন আমরা প্রাইভেট পড়তে যেতাম তখন আমাদের ওই লিচুর দিকে চোখ যেতো ।এবং এত লাল টকটকে লিচু দেখে মন যেন আর মানতো না। মনে হতো এখনই যেয়ে পেড়ে খাই। তবুও কিছু করার নেই যদি লিচু খেতে হয় তাহলে লিচুর বাগান থেকে কিনে খেতে হবে ।টাকা না দিলে ওরা লিচু দিত না ।মাঝেমধ্যে আমরা টাকা দিয়ে কিছু কিনে খেতাম । প্রতিদিন প্রাইভেট পড়তে যেতাম বিকেল বেলায় তখন লিচুগুলো দেখে প্রতিদিনই খেতে ইচ্ছে করতো। প্রতিদিন টাকা নিয়ে যাওয়া হতো না। তাই মন চাইলেও খেতে পারতাম না। লিচু বাগানে ছয় জন পাহারায় থাকতো ।তিনজন পাড়ায় থাকতো সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ।আর তিনজন পাহারায় থাকতো বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ।বিকেলে যেই তিনজন পাহারায় থাকতো তার মধ্যে একজন অনেক ভালো লোক ছিল। সে তেমন একটা ধরা ধরতি করত না। অল্প টাকা দিলেই অনেক করে লিচু দিত ।আর বাকি দুইজন একটু হিংসুটে ছিল ।যে পরিমাণ টাকা দিতাম সেই পরিমাণ লিচু দিত ।একটাও বেশি দিত না।তখন আমাদের মধ্য থেকে শিমু বলে উঠলো প্রতিদিন এভাবে টাকা দিয়ে কিনে খাওয়া সম্ভব না ।আমরা আজ সন্ধ্যা বেলায় এসে লিচু চুরি করব ।যখন দেখব পাহারাদাররা সন্ধ্যা বেলায় এক জাগায় বসে আড্ডা দিচ্ছে। তখন আমরা লিচু চুরি করব। হালকা হালকা বাল্বের আলোতে তেমন একটা ওরা আমাদেরকে দেখতে পাবে না।
|
Source
কিন্তু আমাদের ভাবাটা ভুল ছিল। লিচু বাগানের পাশে এক অফিসারের বাড়ি ছিল। তার বাড়ির পিছনে সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল। আমরা জানছিলাম না যে সেই সিসি ক্যামেরায় আমাদেরকে দেখা যাবে ।যখন রাতের অন্ধকারে আমরা লিচু চুরি করতে গিয়েছিলাম তিনজনে ।তখন ভাবছিলাম আজকে সব গাছের লিচু চুরি করে আনবো। যখন লিচু চুরি করে নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছি ।এবং আমরা মনের মতো খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তখন ঠিক আমার চাচা আব্বুকে বলছিল তোমার মেয়ে লিচু বাগান থেকে লিচু চুরি করে এনে খেয়েছে। এত লজ্জার ব্যাপার মেয়ে মানুষ হয়ে চুরি করতে গিয়েছে। তখন আমি ভাবলাম কিভাবে চাচু জানলো ।আমরা লিচু চুরি করেছি ।সকালে যখন লিচু বাগানের পাহাদাররা বুঝতে পারলো বাগান থেকে লিচু চুরি হয়েছে। তখন তারা অফিসারের সেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করে এবং দেখতে পায় আমি রিমি ও শিমু তিনজনে রাতের অন্ধকারে লিচু চুরি করেছি ।তেমন একটা বোঝা যাচ্ছিল না তবুও বাল্বের আলোতে হালকা হালকা বোঝা যাচ্ছিল ।সেজন্য তারা খুব একটা শিওর ছিল না ।তবুও ওরা জানছিল যে আমরা তিনজনই লিচু বাগান থেকে লিচু চুরি করেছি। তখন আমাদের আব্বুদেরকে ডাকে এবং বলে আপনারাই বলেন আপনাদের ছেলে মেয়েদের এখন কি করা উচিত ।যখন আমরা জানতে পারি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওরা বুঝতে পেরে গিয়েছে আমরা তিনজনে লিচু চুরি করেছি ।তখন আমরা তিনজন ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছি ।অনেক দূরে হয়তো সেদিন আর আমরা তিনজনে বাড়ি আসবো না। এদিকে আব্বুদের ডেকেছে লিচু বাগানের পাহারাদার। তখন আমাদের তিনজনার বাবারা পাহারাদারদের কাছে যায় এবং বলে দেখুন ওরা তো ভুল করে ফেলেছে । এখন তো কিছু করার নেই তার চেয়ে ভালো যে পরিমাণ লিচু চুরি করেছে তার কিছু পরিমাণ টাকা আমাদের থেকে নিয়ে নিন। তা না হলে আমরা আর কি করবো লিচু তো পেরেই ফেলেছে।
তখন পাহারাদার বলেন থাক তোমাদেরকে আর টাকা দিতে হবে না ।এরপর থেকে ওদেরকে বলে দিবেন লিচু বাগানের আশপাশেও যেন তারা না আসে ।যদি এবার দেখি তারা একটা নিচুতেও হাত দিয়েছে তাহলে আর তাদেরকে আস্ত রাখবো না। যখন আমরা বাড়ি ফিরে এসেছিলাম। তখন আব্বু অনেক বকুনি দিল এবং বলল লিচু বাগানের আশপাশেও যেন আমরা আর না যায়। আশা করি গল্পটা আপনাদের ভালো লেগেছে? কতটা ভালো লেগেছে আশা করি কমেন্টে জানাবেন?
🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹
আল্লাহ হাফেজ...! আবারো খুব শীঘ্রই দেখা হবে ইনশাল্লাহ ❣️❣️❣️
ব্লগার | @mdemaislam00 |
ব্লগিং ডিভাইস | infinix note 11pro |
অনুবাদে | মোছাঃ ইমা খাতুন |
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং |
আমার নাম মোছাঃ ইমা খাতুন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বর্তমান ঠিকানা ষোলটাকা, গাংনী মেহেরপুর। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি করতে অনেক পছন্দ করি এছাড়াও আমি লেখালেখি এবং ডাই পোস্ট করতে ভালোবাসি। আমি এসএসসি পাশ করেছি আমাদের গ্রাম থেকে এবং পাশাপাশি ব্লগিং করি এবং নিজের যোগ্যতাকে যোগ্য অবস্থান দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি মানুষ একদিন হয়তো থাকবে না কিন্তু মানুষের কর্ম সারা জীবন থেকে যাবে এই জন্য আমি কাজের ভিতরে আসল শান্তি খুঁজে পাই।
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 4/6) Get profit votes with @tipU :)
please follow this ,
https://steemit.com/hive-129948/@rex-sumon/very-important
এতকিছুর পরেও যে আপনার আব্বু শুধু আপনাকে বকেছে যেটা জেনেই তো আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমার সাথে যদি এমন ঘটনা করতে তাহলে মনে হয় আমাকে আর আস্ত রাখতো না। আপনারা বেশ বুদ্ধি করে তিনজন লিচু চুরি করেছিলেন। তবে যত নষ্টের গোড়া সব এই সিসি ক্যামেরা। সিসি ক্যামেরা না থাকলে আপনাদের বুদ্ধিটা কিন্তু ভীষণ কাজে লাগতো। ধন্যবাদ আপু এই গল্পটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলছেন আপু আমাদের কেউ হয়তো আস্ত রাখত না কিন্তু কিছু করার নেই সবকিছু মেনে নিতেই হল।
আপনার ছোটবেলার গল্পটি পড়ে আমারও ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আপনাদের মতো আমাদেরও একটা দল ছিল আপু। শুধু দুরন্তপনা করে বেড়াতাম সারাটা দিন। কতজনের দৌড়ানি যে খেয়েছি তার ঠিক নেই। এটা চুরি করা ওটা চুরি করা লেগেই থাকতো আমাদের। ধন্যবাদ আপু ছোটবেলার স্মৃতিচারণ শেয়ার করার জন্য।
শুনে অনেক ভালো লাগলো আপনাদেরও একটা দল ছিল ছোটবেলায়।
হাহা এতো পুলিশ সিসি টিভি ফুটেজ দেখে চোর শনাক্তকরণ করার মতো অবস্থা। আসলে আম,লিচু এগুলো চুরি করে খাওয়ার মজাই আলাদা যদি সাথে থাকে বন্ধু বান্ধবী। আমার অবশ্য এরকম সুযোগ কখনো হয়নি তবে ভাবতাম। ভালো লাগলো পোস্ট টি পড়ে।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু আম ও লিচু চুরি করে খাওয়ার মজায় আলাদা।