এক আষাঢ়ের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা ।
আজ- ২০শে আষাঢ় ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, বর্ষাকাল।
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।
আমাদের এদিকে আজকে বেশ কয়েকদিন যাবৎ বৃষ্টি পরে চলেছে সারাক্ষণ । কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টিতে থামলে আবারো পুনরায় ঘন কালো মেঘ জমে বৃষ্টি পড়া শুরু করে। আর এভাবেই চলছে সারাটাখন। বর্ষাকালে বৃষ্টি হবে এটি স্বাভাবিকভাবে এবং এই বৃষ্টিটা বেশ মজাদার হয় তবে এই মজার সাথে অবশ্যই সাজা ও রয়েছে।
টানা বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় , বিশেষ করে সব থেকে বড় যে সমস্যাটা হয় সেটা হচ্ছে যাতায়াত এর অসুবিধা । পিচ্ছিল, কাদামাখা রাস্তাগুলোতে যাতায়াতের চলাফেরা অনেক সমস্যা হয়। এমনিতে আমাদের দেশের রাস্তাগুলো অনেকটাই ভাঙাচোরা এবং গর্তযুক্ত আর একটু বৃষ্টির ফলে এই সকল রাস্তাগুলোর অবস্থা হয়ে ওঠা আরো করুন ফলে জনজীবনে নেমে আসে এক দুর্দশা।
এ বর্ষাকালে খবর কিংবা পত্রিকা খুললেই দেখতে পাওয়া যায় অগণিত সব সড়ক দুর্ঘটনা। এছাড়াও বর্ষায় সড়ক দুর্ঘটনা পাশাপাশি নৌ দুর্ঘটনা কম ঘটে না। বর্ষাকালে নদী পারাপারারা ক্ষেত্রে ও অনেকটা বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশের কিছু কিছু গ্রাম রয়েছে যেগুলো যাতায়াতের একমাত্র উপায় হচ্ছে নদী পারাপার। বর্ষাকালে তখন এই সকল নদী পারাপার গুলো অনেকটা মুশকিল হয়ে পড়ে। ফলে গ্রামগুলোর সাথে শহরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে অনেক সময়।
আমাদের গ্রামে যেতেও নদী পার হতে হয় ফলে কিছুটা অভিজ্ঞতা রয়েছে এ বর্ষায় সাগরের ভয়ংকর রূপ সম্পর্কে। আমার জীবনে সাগর পারাপারের এ বিষয়টি নিয়ে রোমাঞ্চকর একটি ঘটনা রয়েছে। চলুন আজকে সেই ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
ঘটনাটা খুব বেশি পুরনো নয়, কিছু বছর আগের ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। সেবার এরকম একটি সময় অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠের শেষ কিংবা আষাঢ়ের শুরু এরকমই একটি মাঝামাঝি সময়। প্রচন্ড গরম পড়ছে তখন চারিদিকে হাহাকার একটু খানি বৃষ্টির আশায়। আর এমন একটি সময় আমার পুরো পরিবার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন পরে। আমরা সাধারণত গ্রীস্মের সময় গুলোতে গ্রামের বাড়িতে খুব কমই বেড়াতে যাওয়া হয়। কেননা গ্রীষ্মের ঐ উতাল সাগর পাড়ি দেওয়াটা অনেকটা সাহসের কাজ। যাইহোক, সেইবার খুব বেশি জরুরী তাগিদ হওয়ায় পুরো পরিবার নিয়ে আমরা বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
ওয়েদার মোটামুটি ওই দিন ভালোই ছিল বেশ রোদ এবং বৃষ্টি হওয়ার কোন আশঙ্কায় নেই। তাই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো লঞ্চে না গিয়ে স্পিডবোটে করে চলে যাওয়ার। স্পিড বোর্ডে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায়। আর এর মাঝে আমরা টিকিট সংগ্রহ করে স্পিডবোটে পুরো পরিবার নিয়ে উঠে পড়লাম। কিন্তু দেখা গেল বোর্ডে ওঠার ক্ষনিকের মধ্যে উজ্জ্বল আকাশ একটু একটু করে অন্ধকার হতে শুরু করলো। এদিকে বাতাসে বইছে। সাগর উতাল হয়ে উঠেছে। স্পিডবোর্ড চলছে তা নিজ গতিতে। সময়ের সাথে সাথে মেঘ আরো ঘন হয়ে বৃষ্টি নামার মত এমন একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। আর মনে হচ্ছে যেন এখনই তুফান নামবে। এরই মধ্যে আমরা মাঝ সাগরে পাড়ি দিচ্ছি। ওই মুহূর্তে সুযোগ ছিল না যে পিছনে ফিরে যাওয়ার , যা কিছু হোক না কেন সামনে এগিয়ে যেতেই হবে । মাঝ সমুদ্রে এক ভয়ঙ্কর মুহূর্ত। ওই মুহূর্তে প্রত্যেকটা মানুষ এতটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে যে সবাই জীবনের আশা ছেড়ে দিয়েছে প্রায়। ওই সময়ের ভয়, আতংক এই অনুভূতিগুলো হয়তোবা আমি প্রকাশ করতে পারবো না তবে সত্যি বলতে জীবনের এক রোমাঞ্চকর ঘটনা বলা চলে এটিকে।
ওই বোর্ডে থাকা প্রত্যেকটা মানুষ অনেকটা আশাহত হয়ে পড়েছে। কেউ আর চিন্তাও করেনি যে বেঁচে ফিরবে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। যাইহোক, ঝড় বৃষ্টির সাথে সাথে বোর্ড চলতে থাকে এবং একটা সময়ে পারে এসে পৌঁছায়। তখন প্রত্যেকটা মানুষের মনে হতে লাগলে যেন নতুন এক জীবন ফিরে পেয়েছি। আমরা তো কোন ভাবে পারে এসে পৌঁছেছি তবে আমাদের পরেও কিছু বোর্ড ছিল যেগুলো তখনো পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে মাঝ সাগর পাড়িয়ে দিচ্ছিল এই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে। যদিও এরপরে সমস্ত বোর্ড চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
বৃষ্টির মধ্যে সাগর পারাপার সত্যিই খুব সাংঘাতিক অভিজ্ঞতা। যেকোন বিপদ হতেই পারত৷ আপনারা যে সুস্থ ভাবে তীরে পৌঁছাতে পেরেছিলেন এই ঈশ্বরের অশেষ কৃপা।
আবার বর্ষাকাল এলো, প্রতি বছর আসবে৷ আশা করব ওমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে আর পড়তে হবে না৷
লেখাটি কিন্তু বেশ ঝরঝরে গদ্য৷ শুধু একটা কৌতুহল ছিল বোটকে কি বোর্ডও বলেন আপনারা? মানে বাংলাদেশের সমস্ত চলিত শব্দ সম্পর্কে জানি না বলে জানতে চাইছি৷ কারণ কোথাও বোট লেখা আবার কোথাও বোর্ড।
জলপথে থাকাকালীন ঝড়ের অভিজ্ঞতা সত্যিই বড় ভয়ঙ্কর। আমি প্রতিদিন নদী পার হই বলে কয়েকবার এই ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। যদিও তা সাগরে নয়। তবে মাঝসমুদ্রে ঝড় উঠলে যে আতঙ্ক ভর করে তা সত্যিই ভয়ানক। আপনি যে সেই মুহূর্ত কাটিয়ে উঠেছেন এবং কুশলে আছেন তা সত্যিই ঈশ্বরের আশীর্বাদ। পোস্টে আমাদের মধ্যে এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে নিজের ভয়াবহতার কিছুটা ভাগাভাগি করলেন। আমরাও একসাথে সামিল হলাম। ভালো থাকুন এবং সাবধানে থাকুন।
আমাদের এখানেও ৫/৬ দিন ধরে বেশ ভালোই বৃষ্টি হচ্ছে। ওয়েদার একেবারে শীতল হয়ে গিয়েছে। বেশ ভালোই লাগছে এই ওয়েদারটা। ঠান্ডা ওয়েদারে আম খাচ্ছি আর ঘুমাচ্ছি😂। যাইহোক ঝড় বৃষ্টির সময় নদী পার হতেই তো অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু ঝড় বৃষ্টির মধ্যে সাগর পার হওয়াটা খুবই ঝুকিপূর্ণ। আপনারা এমন বিপদ থেকে বেঁচে ফিরেছেন, এটাই অনেক ভাই। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঢাকা শহরে বৃষ্টির সময়ে পানি জমে যাওয়ায় কিন্তু অনেক দূর্ঘটনা ঘটে। ঐরকম বৈরী আবওহাওয়াই স্পিড বোটে উঠার বুদ্ধি টা মোটেই ঠিক ছিল না। ওটা হয়তো দ্রুত যায় কিন্তু ঐটাতে ঝুকিও রয়েছে অনেক।