বর্তমানে বাঙালির সব চেয়ে আকর্ষনীয় বোহ আর্ট || আর্ট পোস্ট
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,
সমস্ত ভারতবাসী এবং বাংলাদেশের বাঙালি সহযাত্রীদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আশা করি আপনারা ঈশ্বরের কৃপায় সুস্থ আছেন, সব দিক থেকে ভালোও আছেন। আপনাদের সবার ভালো থাকা কামনা করে শুরু করছি আজকের ব্লগ।
এবার যখন কলকাতা গেলাম কলেজস্ট্রিটে ঢুকেই প্রথমে মাথায় এলো ডমসের ব্রাশপেন কেনার কথা। এদিকে আমাদের সবার প্রিয় কৌশিকদার থেকে আমার রাখীবন্ধনের উপহার পাওনা ছিল৷ উপহার আদায়ে আমি বেশ সিদ্ধহস্ত। হা হা। সেদিন কলেজিস্ট্রিট একসাথেই গিয়েছিলাম তাই চেপে ধরলাম, আমার পাওনা মিটিয়ে দিতেই হবে৷ বেচারা কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ কিনে দিল৷ আর আমার একটুও লজ্জা করেনি বিশ্বাস করুন। হাসি মুখে গদ গদ হয়েই নিলাম।
সেই রঙ পেন তো উদ্বোধন করতে হবে৷ কি আঁকব ভেবে ভেবে ঠিক করলাম একটা বোহ আর্ট আঁকি৷ কারণ বর্তমানে বাঙালির মধ্যে বোহ আর্টের খুব প্রচলন হয়েছে৷ বোহ আর্ট কি? বোহ কথাটি এসছে বোহেমিয়ান শব্দ থেকে৷ বোহেমিয়ান শিল্প শৈলীর প্রধান দিক হল এই শিল্প শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত। এর শৈলীতে নিদর্শন, টেক্সচার, এবং বেশ কয়েকটি রঙের ব্যবহার দেখা যায়৷ এর ফলে যে কোন সাধারণ অংকনই রঙিন হয়ে অভুতপূর্ব দেখায়। ফলে এই আর্ট যেই জায়গায় করা হয় বা রাখা হয় সেই জায়গার যেন প্রাণ ফিরে আসে৷ এতোই অপূর্ব দেখায়৷ ছিমছাম আর্টের মধ্যেও অদ্ভুত মাধুর্য বজায় রেখে বোহ আর্ট করা হয়। সেই সবই মাথায় রেখে নিজের মতো করে চেষ্টা করেছি। আমার টা আদৌ হল কিনা তা আপনারাই বলবেন৷
- ডমসের কালার পেন
- কালো জেল পেল
- পেন্সিল
- স্কেচবুক
আসুন ধাপে ধাপে দেখে নিই কিভাবে এঁকেছি।
🌷ধাপ-১🌷
পুরো প্যাকেট থেকে পছন্দ মতো বেশ কিছু রং- এর বার করে নিয়েছি৷
এবার ছবি তে দেখলে বোঝা যায় পর পর এক এক করে চার কোণায় চারটে রঙ এবং মাঝে দুটো আলাদা রঙ দিয়ে কিছুটা করে অংশ মনের মতন যেমন তেমন আকারে এঁকে রঙ করে নিয়েছি।
🌷ধাপ-২🌷
রঙের কাজ শেষ হওয়ার পর সামান্য ফুলের ডিজাইন করব বলে একটি পেন্সিল নিয়ে দুটো বড় ফুল একেঁছি৷
ছোট ফুলটি আঁকার পর মনে হল গোলাপি রঙের গোলাকৃতি অংশটা খানিকটা বাড়িয়ে দিই। কারণ বাইরের পাপড়ির অংশটা ঠিক দেখতে ভালো লাগছে না। তাই আবারো গোলাপি রঙের ব্রাশ পেন দিয়ে পাপড়ির মাফ করে বাড়িয়ে নিয়েছি।
তারপর ফুলের হিসেবে কিছু পাতা দেখেছি এবং উপরের দিকে দুই কোণের সামান্য একটু ডিজাইন করে নিয়েছি।
পেন্সিলের কাজ শেষ হওয়ার পর পুরো চিত্রর একটি ফটো তুলেছি। যাতে করে পরিষ্কার বোঝা যায় কোথায় কতটা ডিজাইন এঁকেছি।
🌷ধাপ-৩🌷
যে ফুল লতা পাতাগুলো পেন্সিল দিয়ে এঁকেছি সেগুলোর ওপরেই কালো জেল পেন দিয়ে দাগ টেনে নেব বলে শুরু করেছি।
একটা পাপড়ির ভেতরের লাইনগুলো টানানো পর দেখলাম বর্ডার গুলো পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। তাই আবারোও কালো রঙের ব্রাশ পেন দিয়ে ফুল ও পাতার পুরোটারই বর্ডার বানিয়ে নিলাম।
🌷ধাপ-৪🌷
উপরের দিকে দুটো কোণেও যে পেন্সিল দিয়ে ডিজাইন করেছিলাম সেগুলোও কালো ব্রাশ পেন দিয়ে পেন্সিলের দাগের উপর আরো একবার এঁকে নিয়েছি।
এবার ভেতরের যত ফাঁকা অংশ রয়েছে সেগুলো কালো জেল পেন দিয়ে লম্বা লম্বা রেখা টেনে ভরিয়ে ফেলবো।
অল্প অল্প করে দাগ টেনেছি আর একটা একটা করে ছবি তুলেছি।
এরপর ফুলের মাঝখানে ফাঁকা অংশটি ছিল সেখানেও কালোজেল পেন দিয়ে গুর গুর করে বিন্দু এ কে ভরিয়ে দিয়েছি।
এভাবেই বোহ আর্টটি শেষ করলাম আর তাই একেবারে নিচে নিজের সই করলাম।
বন্ধুরা, আপনাদের কেমন লাগল আমার আজকের নিবেদন? আমার প্রচেষ্টা কি আপনাদের মনে জায়গা করতে পারল? কি জানি, কমেন্ট করে জানালে অবশ্যই জানব৷ আজকের ব্লগ এখানেই শেষ করছি।
টা টা
পোস্টের ধরণ | আর্ট পোস্ট |
---|---|
ছবিওয়ালা | নীলম সামন্ত |
মাধ্যম | স্যামসাং এফ৫৪ |
লোকেশন | পুণে,মহারাষ্ট্র |
ব্যবহৃত অ্যাপ | ক্যানভা |
১০% বেনিফিসিয়ারি লাজুক খ্যাঁককে
আমি নীলম সামন্ত। বেশ কিছু বছর কবিতা যাপনের পর মুক্তগদ্য, মুক্তপদ্য, পত্রসাহিত্য ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করেছি৷ বর্তমানে 'কবিতার আলো' নামক ট্যাবলয়েডের ব্লগজিন ও প্রিন্টেড উভয় জায়গাতেই সহসম্পাদনার কাজে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরেছি। কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধেরও কাজ করছি। পশ্চিমবঙ্গের নানান লিটিল ম্যাগাজিনে লিখে কবিতা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ ভারতবর্ষের পুনে-তে থাকি৷ যেখানে বাংলার কোন ছোঁয়াই নেই৷ তাও মনে প্রাণে বাংলাকে ধরে আনন্দেই বাঁচি৷ আমার প্রকাশিত একক কাব্যগ্রন্থ হল মোমবাতির কার্ণিশ ও ইক্যুয়াল টু অ্যাপল আর প্রকাশিতব্য গদ্য সিরিজ জোনাক সভ্যতা।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সব্বাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন৷ ভালো থাকুন বন্ধুরা। সৃষ্টিতে থাকুন।
যাক জিনিসটা কাজে লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। আঁকাটা সম্পর্কে নতুন করে আর কি বলব। তোর আঁকা আমার দুর্দান্ত লাগে। আর এই ছবিটার মধ্যে কেমন যেন একটা ত্রিমাত্রিক স্তর দেখতে পেলাম। অসাধারণ বললেও কম বলা হয়। ছবিটি ফিচার হয়েছে দেখলাম। একেবারে যোগ্য পোস্ট হিসেবে সিলেক্ট হলো।
কাজে লাগবে বলেই তো ঝুলে ঝুলে নিলাম গো। আঁকার ব্যপারে তুমি খুবই উৎসাহ দাও আমায়। অনেকটা পজিটিভ ভাইব কাজ করে৷ এমনিই পাশে থেকো৷
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/neelamsama92551/status/1858964545005404463?t=yqOOwL_GShRoQ7IzwHsdaA&s=19
বাহ বেশ চমৎকার হয়েছে। বর্তমানে বাঙালির সব চেয়ে আকর্ষনীয় বোহ আর্টটি আপনি খুব সুন্দর ভাবেই অঙ্কন করেছেন। চিত্রটি সত্যি ভালো লাগার মত ছিল। এজন্যই বাঙালি এটা পছন্দ করেছে। ধন্যবাদ।
বাঙালি তো নিজেও অনেকটাই বোহেমিয়ান ধরণের৷ তাই হয়তো ভালোবেসেছে এমন আর্ট৷ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
কৌশিক দাদার দেওয়া রাখি বন্ধনের গিফট রং পেন দিয়ে দারুন বোহ আর্ট করে ফেলেছেন। বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় বোহ আর্ট নিখুঁতভাবে এঁকেছেন।আর্ট করার প্রত্যেকটি ধাপ সুন্দরভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করে নিয়েছেন। আপনার উপস্থাপনা আমার কাছে সব সময় ভালো লাগে। সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে আর্ট পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দিদি।
চেষ্টা করেছি বোন৷ অবশেষে কি হবে ভাবিনি৷ নিজের মতো যা পেরেছি এঁকেছি। আপনার ভালো লাগল জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ নেবেন।
বোহ আর্ট সম্পর্কে আমার জানা ছিল না।নতুন একটা আর্টফর্ম সম্পর্কে জানলাম। তবে উপভোগ করেছি পুর্ণমাত্রায়। অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার চিত্রকর্ম।কৌশিকদার গিফট আপনার হাতে এসে স্বার্থক হয়ে গেছে। ধন্যবাদ দিদি সুন্দর চিত্রকর্মটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আজকাল এই আর্টফর্ম খুব চলে। বিশেষ করে যখন পত্রিকার প্রচ্ছদ করতে যাই বা কোন প্রচ্ছদ শিল্পীর সাথে আলোচনা করি বার বার এই আর্টফর্মই উঠে আসে৷ তার ভাবলাম এঁকেই দেখি পারি কিনা৷ আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
জাস্ট ওয়াও আপু আপনি অনেক সময় নিয়ে ধৈর্যের সাথে কালারফুল আকর্ষনীয় বোহ আর্ট করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এই আর্টের সাথে আপনার বিবরণী গুলো অনেক সুন্দর ছিল। তাছাড়া আপনার বোহ আর্টের কালার কম্বিনেশনটা ছিল দেখার মত। সবশেষে নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে এত সুন্দর আকর্ষনীয় বোহ আর্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
এই আর্টগুলো সত্যিই অনেকটা ধৈর্য্য নিয়ে করতে হয়৷ একটু এদিক-ওদিক হলেই লাইনের গন্ডগোল হয়ে যায় তখন আর দেখতে ভালো লাগে না। আর সময়ও লেগে যায় অনেকটা । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য ।
বাহ! বেশ সুন্দর আর্ট করতে পারেন তো আপনি, দারুণ হয়েছে আজকের আর্টটি। ধন্যবাদ
চেষ্টা করি দাদা, তবে প্রথাগত কোনো শিক্ষা নেই নিজের থেকে যা হয়। অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যে উৎসাহ পেলাম।
বাহ বোহ আর্ট পোস্টটি সুন্দর লাগছে। এই ধরনের আটগুলো দেখতে ভালো লাগে। বিশেষ করে রং বেরঙের কালার কম্বিনেশন এর সাথে করা আর্ট গুলো ভালো লাগে। আপনি সময় নিয়ে পোস্ট টি তৈরি করেছেন। ধন্যবাদ দিদি সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু অনেকটা ধৈর্য ধরে করতে হয় এবং সময়ও লাগে অনেক। আমার তো সেভাবে প্রথাগত কোনো শিক্ষা নেই ছবি আঁকার ক্ষেত্রে তাই আমার আরো বেশি সময় লাগে। যাইহোক আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হয়েছি। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।