নাটক রিভিউ || পড়তে আমার ভাল্লাগেনা..🌿
হ্যালো বন্ধুরা.. কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভালো আছেন ৷ আমিও বেশ ভালো আছি ৷ তো আজ আবারও আপনাদের মাঝে চলে আসলাম , আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করবো ৷ আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে ৷ তো চলুন শুরু করা যাক..
নাটক | পড়তে আমার ভাল্লাগেনা |
---|---|
পরিচালক | প্রিন্স রোমান পিকিউ |
শিল্পী | আরোশ খান , তাসনুভা তিশা , শিবা শানু , সাবিহা জামান , হিন্দোল রায় , মনীষা শিকদার এবং আরো অনেকেই |
সঙ্গীত | শাকির হোসেন রাজ |
সম্পাদনা ও রং | হাবিবুর রহমান হাবিব |
প্রযোজক | রফ তানভীর রুহি |
ভাষা | বাংলা |
দৈর্ঘ্য | ৪৬ মিনিট |
প্রকাশ | ইউটিউব , ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং |
এই নাটকের গল্পটা শুরু হয় রিতুকে দিয়ে ৷ রিতুর পড়ালেখা করতে ভাল্লাগেনা ৷ তাই সে একদমই পড়ালেখা করতে চায় না ৷ এদিকে তার বাবার ইচ্ছে তাকে আরো পড়ানোর ৷ তাই তার বাবা রিতুকে পড়ানোর জন্য বাড়িতে শিক্ষক রাখে ৷ কিন্ত কেনো শিক্ষক ই তাকে ঠিকমত পড়াতে পাড়ে না ৷ কয়েক দিন পড়ানোর পর শিক্ষকরা নিজে নিজেরাই চলে যায় , আর পড়াতে আসে না রিতুকে ৷ রিতুর বাবা একটার পর একটা শিক্ষক রিতুর জন্য নিয়ে আসে ৷ কিন্তু রিতুর পাগলামী জন্য কোনো শিক্ষক ই আর থাকে না রিতুকে পড়ানোর জন্য ৷ শেষমেশ রিতুর বাবা রায়হান কে খুঁজে পায় ৷ রায়হানের কেউ নেই কিন্তু সে ভীষণ মেধাবী ৷ রিতুর বাবা রিতুকে পড়ানোর জন্য এবার রায়হানকে নিয়ে আসে ৷ তার মেয়েকে পড়ানোর জন্য রায়হান তিন বেলা খেতে পারবে এবং তাদের বাড়িতে থাকতে পারবে ৷ রায়হানের এইটুকু খুব প্রয়োজন , তাই সে আর কোনো শর্ত ছাড়াই চলে আসে রিতুদের বাড়িতে রিতুকে পড়ানোর জন্য ৷
রিতুর পড়ালেখা করতে একদমই ভাল্লাগেনা ৷ কিন্তু তারপরও তার বাবা তাকে পড়াতে চায় ৷ বাড়িতে শিক্ষক রাখে তাকে পড়ানোর জন্য ৷ এসব দেখে রিতুর রাগ হয় , কিন্তু সে কিছু বলতে পারে না ৷ দুইদিন আগেই রিতু টিউশনির শিক্ষক কে ভাগিয়েছে , আবার নতুন করে এসেছে রায়হান নামে এই ছেলে ৷ রায়হানকে দেখে রিতুর রাখ হয় , আর সে মনে মনে ভাবে এবার রায়হানকে কি করে ভাগানো যায় ৷ সে চিন্তা নিয়েই রিতু মগ্ন ৷ রায়হান রিতুকে পড়াতে আসে , কিন্তু রিতু পড়ালেখা না করে রায়হানের সাথে দুষ্টুমি করে ৷ বিভিন্ন আজেবাজে কথা বলে , রায়হান সে সব চুপচাপ শুনে যায় ৷ আর রিতুকে পড়ানোর চেষ্টা করে ৷
রায়হানের প্রতি রিতুর পাগলামি আর দুস্টুমি দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে ৷ কারণ রিতু এতো চেষ্টা করেও এতোদিনে রায়হানকে তাদের বাড়ি থেকে তাড়াতে পারে নি ৷ অন্য সব শিক্ষকদের রিতু কয়েক দিনে তাড়িয়ে দিয়েছে ৷ কিন্তু রায়হানকে পাড়ছে না , এত কিছু বলে কয়েও রায়হান চলে যাচ্ছে না ৷ এমনটা দেখে রিতু রাগ রায়হানের প্রতি আরো বেড়ে যায় ৷
এদিকে রায়হান রিতুর এসব অত্যাচার মেনে নিতে না পেরেও মেনে নিচ্ছে ৷ কারণ তার কাছে এখন রিতুর এসব পাগলামি আর দুষ্টুমি সহ্য করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই ৷ ছেড়ে গেলে রায়হান থাকবে কোথায় আর খাবেই বা কি ? তার যে এই পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই , কিছু নেই ৷
রিতু যখন অনেক চেষ্টা করেও রায়হানকে তাদের বাড়ি থেকে তাড়াতে পারছে না ৷ তখন সে তার ফুফাতো ভাইকে ডেকে নিয়ে আসে ৷ তার ফুফাতো ভাই এসে রায়হানকে ধমক দেয় , তাতেও লাভ হয় না ৷ রায়হান নির্লজ্জের মতো থেকে যায় চুপচাপ ৷ এরপর রিতুর ফুফাতো ভাই রিতুকে বাজে আইডিয়া দেয় ৷ তাতেই কাজ হয়ে যায় ৷ একদিন রিতু পড়া বুঝে নেওয়ার জন্য রাতে রায়হানের রুমে যায় ৷ রুমে গিয়ে রিতু চিৎকার চেঁচামেচি করে ৷ এরপর তার বাবা মা কাছে আসলে রিতু বলে রায়হান তার সাথে বাজে কাজ করার চেষ্টা করেছে ৷ এই সব শুনে রিতুর বাবা অনেক রেগে যায় এবং পরের দিন রায়হানকে গাছে বেধে সবার সামনে প্রচুর মারধর করে জুতার মালা গলায় বেধে বের করে দেয় ৷
এরপর রিতু বুঝতে পারে সে যেটা করলো সেটা একদমই ঠিক হয়নি ৷ তার কাছে খারাপ লাগতে শুরু করে বিষয়টি ৷ রায়হানের প্রতি তার এতো বড় অন্যায় করা ঠিক হয়নি ৷ রিতু তার ভুল বুঝতে পেরে রায়হানের সাথে দেখা করতে যায় ৷ এবং নিজের ভুল গুলো জন্য সে ক্ষমা চায় ৷ এরপর রায়হান বলতে শুরু করে , আস্তে আস্তে রায়হান তার জীবন কাহিনীও কিছুটা শোনায় রিতুকে ৷
রায়হান তার বাবাকে খুব ছোট বেলায় হারিয়েছে ৷ এরপর মায়ের সাথেই সে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে ৷ কিন্তু তার মাও বেশি দিন বেঁচে থাকে না ৷ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার মাকে এবং তাকে বের করে দেওয়া হয় গ্রাম থেকে ৷ তার কিছু দিনের মাঝেই তার মা মারা যায় ৷ এরপর থেকেই রায়হান একা ৷ বড্ড এক সে ৷ গরিব অসহায় মানুষের জীবন এমনই কষ্টের হয় ৷ তারা বেঁচে থাকার কঠিন লড়াই করে যায় ৷ ভুল না করলেও দোষী হয় , অসহায়দের মিথ্যা অপবাদ দেওয়া যায় খুব সহজে ৷ অসহায় মানুষের কথা কেউ বিশ্বাসও করে না ৷
রায়হানের জীবনের এসব কথা শুনে রিতুর খারাপ লাগে ৷ তার ভুলের জন্য আজ রায়হান আরো বেশি কষ্ট পেলো ৷ রিতু তার এই ভুলের জন্য রায়হানের কাছে ক্ষমা চায় এবং তার সম্মান ফিরিয়ে দিতে তাকে আবার বাড়িতে নিতে চায় ৷ কিন্তু রায়হান ফিরে যায় না , সে বলে সন্মান এক বার গেলে আর ফিরে আসে না ৷ এই বলে রায়হান চলে যায়..রিতু দারিয়ে থাকে ৷ আর এখানেই এই গল্পটা শেষ হয় ৷
রেটিং:-০৮
আমার মতামত:-
পড়তে আমার ভাল্লাগেনা এই নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছে ৷ নাটকের গল্প সবার অভিনয় সব মিলিয়ে বেশ ভালোই ছিলো ৷ কিছুটা বাস্তবিক এই নাটকের গল্প ৷ আসলে বাস্তবতা ভীষণ কঠিন ৷ এই পৃথিবীতে যাদের মা-বাবা নেই , তারাই বুঝে বাস্তবতা কতটা কঠিন ৷ প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকার জন্য কঠিন লড়াই করতে হয় ৷ গরিব অসহায় মানুষের পাশে এসে কেউ দারায় না ৷ বরং তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেওয়া চেষ্টা করে কিছু মানুষ ৷ এই পৃথিবীতে বাবা-মা , অর্থ-সম্পদ ছাড়া মানুষের জীবন কতটা অসহায় , সেইটাই তুলে ধরা হয়েছে এই নাটকের গল্পে ৷ যাই হোক , বেশ ভালো ছিলো নাটকের গল্প ৷ আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছে ৷ আশা করি আপনাদেরও সবার ভালো লাগবে ৷
নাটকের লিংক
🙏 ধন্যবাদ সবাইকে 🙏
আমার নাম নিরব ৷ জাতীয়তা বাংলাদেশী ৷ মাতৃভাষা বাংলা ৷ বাংলায় কথা বলতে এবং লিখতে আমি অসম্ভব ভালোবাসি ৷ পেশাগত দিক দিয়ে আমি একজন ছাত্র , পড়াশোনা করছি অনার্স প্রথম বর্ষে ৷ পাশাপাশি স্টিমিটে ব্লগিং করছি ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ৷ আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও আর্ট , ফটোগ্রাফি এবং লেখালেখি করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে ৷ সব সময় শেখার চেষ্টা করি , নতুন কিছু শিখতে এবং জানতে আমার খুবই ভালো লাগে ৷ আমি বন্ধুদের সাথে সময় কাটতে অনেক বেশি পছন্দ করি ৷ এছাড়াও পরিবারের সাথে থাকতে এবং সময় কাটাতে আমার প্রচুর ভালো লাগে ৷ আমি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৷ আমি আমার ধর্মকে অনেক বেশি ভালোবাসি এবং সম্মান করি ৷ আমি স্টিমিটে জয়েন করি ২০২০ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৷ ধ ন্য বা দ ...
https://x.com/Nirob7000/status/1872698369493352792?s=19
খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করেছেন তো ভাইয়া। নাটকের নাম শুনে রিভিউ করতে ইচ্ছে করল। বেশ মজা লাগলো নামটা শুনে। তবে রিভিউ করে বেশ খারাপ লাগলো। নাটকটা খুব কষ্টের। এ নাটকটি আগে আমার দেখা হয়নি। গরিব মানুষকে কত কষ্টের সাথে বেঁচে থাকতে হয় নাটকের মাধ্যমে সেই বিষয়বস্তু বেশ ভালো বুঝতে পারলাম। সুন্দর একটি নাটক আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
খুবই সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ করেছেন আপনি। আসলে নাটকের রিভিউ পোস্ট দেখলে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। যে নাটকটি আমি দেখি নাই সে নাটক দেখার সুযোগ হয়। কারণ সব সময় আপনারা সুন্দর নাটকগুলোর রিভিউ করে থাকেন। চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যে জন্য ৷
এই নাটকের কাহিনী তো একেবারে দারুণ ছিল। আর আমার কাছে পুরো কাহিনীটা অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এই নায়ক নায়িকা গুলোকে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। তেমনি তাদের এই নাটকটা অনেক সুন্দর হয়েছে। আমার কাছে তো সম্ভব ভালো দেখেছে নাটকটা। তাই আমি ভাবছি সময় পেলে নাটকটা দেখব।
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মতামত মন্তব্য করে জানানোর জন্য ৷
পড়তে আমার ভাল্লাগেনা নাটকটির গল্প সম্পুর্ন ভিন্ন রকম ছিলো। বর্তমান সময়ে আরোশ এর নাটক গুলো বেশ ভালো লাগে। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ করেছেন। কয়েকদিন আগে নাটকটি দেখা হয়েছে ধন্যবাদ আপনাকে।