জেনারেল রাইটিং :মেস লাইফে খিচুড়ি পিকনিক।

in আমার বাংলা ব্লগ15 hours ago (edited)

হ্যালো..!!

আমার প্রিয় বন্ধুরা,

আমি @purnima14 বাংলাদেশী,

আজ-১৯ শে ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার , ২০২৪ খ্রিঃ



কভার ফটো


1000005088.jpg

কয়েকটি ছবি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমি নিজেও ভালো আছি। আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে হাসি খুশি রাখার। আমি "আমার বাংলা ব্লগের" মাধ্যমে আপনাদের সামনে আমার ক্রিয়েটিভিটি তুলে ধরবো।আজ আমি আমার কাটানো একটি আনন্দ মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

কয়েকদিন একটানা পরীক্ষা দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। সেদিন মঙ্গলবারে এক্সামটা দেওয়ার পর এক সপ্তাহ ছুটি পেয়েছি। কয়েকদিন একটানা পরীক্ষা দেওয়ার পর এক সপ্তাহ ছুটি মানে বিশাল ব্যাপার। সেদিন পরীক্ষা দিয়ে এসে আমি প্ল্যান করেছিলাম আজ আমরা খিচুড়ি পিকনিক করবো। কিভাবে পিকনিক টা করলাম কেমন মজা করেছিলাম সবকিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক।



1000005080.jpg

মঙ্গলবারে পরীক্ষা দিয়ে আসার পর আমি প্রথম সবাইকে বললাম চলো আমরা খিচুড়ি পিকনিক করি। আমাদের মেসে অনেক মানুষ কিন্তু আমাদের ইউনিটে মাত্র পাঁচ জন থাকি আমরা। আমাদের ইউনিটের সামনে মালিকের ইউনিট। এজন্য আমাদের এখানে পাঁচজনের সিট। আমরা পাঁচ জনের মধ্যে আমার রুমমেট নেই। আর ছিলাম আমরা চারজন তাই চার জন মিলে ঠিক কইলাম খিচুড়ি পিকনিক করবো। আমি মেসেজ এসেছি প্রায় এক বছর এর মধ্যে কখনো আমাদের ইউনিটে কোন পিকনিক করা দেখিনি। আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল বাড়ির জন্য খুব মন খারাপ করছিল সাথে এই পরীক্ষা অনেক প্যারা লাগছিলো।তাই একটু আনন্দ করার জন্য পিকনিক টার আয়োজন করি। আমরা সবাই যার কাছে যা ছিল সবকিছু অল্প অল্প করে দিয়ে সবজি খিচুড়ি রান্না করেছিলাম। রান্নাটা অবশ্য আমিই করেছিলাম।

1000005081.jpg

প্রায় সাতটার দিকে আমি রান্না শুরু করেছিলাম। রান্না করতে আমার বেশ ভালই লাগে। বাকিরা সবাই সবকিছু কাটাকুটি করে দিয়েছিলো।প্রথমে আমি চালটা ভেজে নিয়ে রাইস কুকারে খিচুড়ি বসিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর আমার ম্যাচমেটরা বেগুনগুলো কেটে ধুয়ে দিয়েছিল আমি সেগুলো হলুদ মেখে তারপর ভেবে নিয়েছিলাম। প্রথমবার মেসে আমরা পিকনিক করছিলাম বেশ ভালো লাগছিলো।আমাদের খাবারের মেনু আমি ঠিক করেছিলাম। সবজি খিচুড়ি, বেগুন ভাজি, ডিম ভাজি আর আলু ভর্তা সাথে ঘি ছিলো।

1000005082.jpg

রাইস কুকারে ভাত বসিয়ে দিয়ে একে একে আমি সবকিছু ভেজে নিচ্ছিলাম। আমার মেসমেটরা কাটাকুটি শেষ করে আমার সাথে গল্প করছিলো।আমরা তিনজন সমবয়সী আর একজন বড় আপু থাকে আমাদের সাথে। আমরা তিনজন তো ভীষণ মজা করছিলাম। তবে বড় আপুর কোথায় মজাটা একটু কমই হয়েছে। বড় আপু নতুন এসেছে আমাদের সাথে অতটা মানিয়ে নিতে পারছিল না। আমি গল্প করতে করতে দিন ভেজে নিয়েছিলাম। আলু ভর্তা করার জন্য মরিচ এবং পেঁয়াজ ভেজে উঠে রেখেছিলাম।

1000005085.jpg

ভাজি শেষ করতে না করতেই আমাদের ভাত হয়ে এসেছিলো।আমি তো ঠিক করে রান্না করতে পারি না ভয়েই ছিলাম খিচুড়িটা পারফেক্ট হবে কিনা। নিজের জন্য রান্না করলে সেটা যেমনই হোক কোন ব্যাপার মনে হয় না। কিন্তু রান্নাটা অন্য কেউ খাবে এরকম হলে বেশ চিন্তা ব্যাপার। তারপরেও নিজের আন্দাজ মত লবণ ঝাল দিয়ে খিচুড়িটা রান্না করেছিলাম। সাড়ে আটটার মধ্যে আমাদের সব রান্না কমপ্লিট হয়ে গিয়েছিলো।তারপর সবকিছু রুমে নিয়ে গিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম। গল্পে,হাসি মজাই রান্নাটা করতে বেশ ভালই লাগছিলো।

1000005083.jpg

রান্না শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা তিনজন মিলে তো জমিয়ে আড্ডা দিয়েছিলাম। এরকম আড্ডা দেওয়া আমাদের হয়। সবাই নিজেদের মতো ব্যস্ত থাকে। সবাইকে আমার রুমে ডেকেছিলাম সবার রুমেই জায়গা কম। তবে আমার রুমে আমার রুমমেট না থাকাই তার বেডে বসে সবাই গল্প করেছিলাম। আমরা গল্প করতে করতে কিছুক্ষণ পর বড় আপু আমাদের সাথে যোগ দেয়। বড় আপু কি আমরা অনেকবার দেখেছিলাম সে একবার এসেছিল তারপরে আবার চলে গিয়েছিলো।যেহেতু নতুন এসেছে তাই কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না। গল্প শেষে আমরা গান বাজিয়ে বেশ দারুন সময় উপভোগ করেছিলাম।

1000005084.jpg

তারপর আড্ডা দেওয়া শেষ করে আমরা সাড়ে দশটার সময় খাবার খেতে বসব বলে ঠিক করি। ১০:১৫ দিকে আমি সবার প্লেটে খাবার সাজিয়ে দি।কাউকে আপ্যায়ন করতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি আস্তে আস্তে সবার প্লেটে সবকিছু দিয়ে সাজিয়ে দেই। তারপর আমরা সবাই মিলে খাওয়া শুরু করি। খাওয়ার সময় ছবি তুলতে গিয়ে কত মজা করেছি।

1000005087.jpg

সবার সাথে সাথে আমি নিজেও খাওয়া শুরু করি। ভয়ে ছিলাম কেমন যে রান্না করেছি সবাই কি খেতে পারবে!সবাই খেয়ে যখন বলল অনেক ভালো হয়েছে তখন বেশ ভালো লাগছিলো।সেদিন আমার নিজেকে অনেক বড় মনে হচ্ছিলো।আমি সচরাচর এভাবে রান্না করে কখনো কাউকে খাওয়ায়নি। সেদিনের মুহূর্তটা অনেক সুন্দর মুহূর্ত ছিলো।মেস লাইফে কাটানো এটাই আমার সব থেকে ভালো মুহূর্ত। গল্প, মজাই সবাই খাওয়া শেষ করে যে যার রুমে চলে যায়। সেদিনের মুহূর্তটা এক কথায় অসাধারণ ছিলো।



ছবির বিবরণ

ডিভাইস: গুগল পিক্সেল ৭ প্রো
ক্যামেরা: ৫০ মেগাপিক্সেল
তারিখ: ১৭ই ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ
লোকেশন:কুষ্টিয়া



প্রিয় বন্ধুরা,আমার আজকের ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে সবসময় পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন।



আমি কে !

Screenshot_20231102_205038_Facebook-01.jpeg

আমি পূর্ণিমা বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @purnima14। আমি আমার মাতা-পিতা এবং নিজের মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাকে ভালবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, কবিতা লিখতে ও আবৃত্তি করতে, গান শুনতে, যেকোনো ধরনের রেসিপি তৈরি করতে ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@purnima14



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Sort:  
 15 hours ago 
1000005095.png1000005096.png1000005097.png

তিনটি ম্যান্ডেটরি টাস্ক কমপ্লিট করার পরে স্ক্রিনশট নিয়েছি।

 14 hours ago 

আজকে আপনার এই খিচুড়ি বিষয়ে পোস্ট পড়তে গিয়ে বেশ অনেক অতীতের স্মৃতি মনে পড়ে গেল আপু। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি উপস্থাপন করেছেন বিস্তারিত বিষয়গুলো। যার জন্য অনেক কিছু জানার সুযোগ হল আমার।

 14 hours ago 

আপনার এই ব্লগটি দেখে আমি তো আমার ছাত্রী জীবনে ফিরে গেলাম। যখন কলেজ হোস্টেলে থাকতাম প্রায় রাতেই এমন খিচুড়ি পার্টি করতাম সবাই। মিলের রান্না খেতে খুব একটা ভালো লাগতো না তাই নিজেরা সবাই বাজার করে রান্না করে খেতাম। সেই দিনগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু। সেই সাথে আমার হোস্টেল জীবনকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যও অসংখ্য ধন্যবাদ।

 6 hours ago 

আপু আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে মেস লাইফে খিচুড়ি পিকনিক আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আপনার পোস্ট দেখে আবার আমারও পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আমি যখন কুষ্টিয়াতে ছিলাম তখন প্রায় প্রতিনিয়ত বন্ধুদের সাথে রাতের খাবার বাইরে খেতে যেতাম এবং আড্ডায় মেতে উঠতাম। আসলে বন্ধুবান্ধবের সাথে একসাথে কোন জিনিস ভাগাভাগি করে খাওয়ার মজাই আলাদা। ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 3 hours ago 

আপু আপনার মেস লাইফের খিচুড়ি পিকনিক করা দেখে অনেক ভালো লাগলো।আপনার খিচুড়ি পিকনিক দেখে অতীতের আমার মেস লাইফের স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ‌।