ভয়ঙ্কর ডার্ক সাইকোলজির গ্রাস

in আমার বাংলা ব্লগ27 days ago
❤️আসসালামুআলাইকুম/আদাব❤️

আমি @rahnumanurdisha বাংলাদেশ থেকে। কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগ এর সকল ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশি বন্ধুরা?আশা করছি সকলেই অনেক ভালো আছেন?আমিও ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়।ফিরে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে।

mask-3829017_1280.jpg

ছবির উৎস

ভয়ঙ্কর ডার্ক সাইকোলজি আমার আজকের পোস্টটির বিষয়।অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম আপনাদের সাথে এই বিষয়টি আলোচনা করব।কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হয়ে উঠছিল না।তাই আজ চিন্তা করলাম আলোচনা করে ফেলি এই গুরুত্বপুর্ণ টপিক নিয়ে।এটি বিশেষ করে মেয়েদের জন্য উপকারী একটি পোস্ট হবে।কেননা মেয়েরা বেশিরভাগ ভিকটিম হয়ে থাকে এধরনের ডার্ক সাইকোলজির।

চলুন একটি সত্য ঘটনার মাধ্যমে উদাহরণ দিই।২০০০ সালের দিকে এই গল্পটি ইন্টারমিডিয়েট এর এইচএসসি ইংলিশ বই এ ছিল।ঘটনা টি এরকম ছিল,একটি লোক মোটামুটি মধ্যবিত্ত পরিবারের।তার স্ত্রীর সাথে সে বসবাস করতো।একদিন তার স্ত্রীকে এক আত্মীয় ডায়মন্ড এর নেকলেস উপহার দেয়।যেহেতু জুয়েলারি জিনিসে মেয়েদের দুর্বলতা আর উপহারের জিনিস তাই লোকটি প্রথমেই জানতেন যে তার স্ত্রী কখনোই দিবেনা তাকে আর সেটি সেল দিয়ে তার ধার গুলোও শোধ করা হবেনা।লোকটির নাম ছিল জ্যাক আর তার স্ত্রী ডেল্লা।তখন লোকটি সিদ্ধান্ত নেয় তার স্ত্রীর কাছ থেকে অন্যভাবে নেকলেস আদায় করতে হবে।আর এটি ছিল এক ভয়াবহ সিদ্ধান্ত।যেহেতু লোকটি স্ত্রীর সাথে সে একইসাথে অনেকদিন থাকছে তাই তার ইমোশনাল, মেন্টাল কন্ডিশন এছাড়া মোটামুটি সব বিষয় তিনি জানতেন তার সর্ম্পকে।তাই তখন থেকেই শুরু করলেন ডার্ক সাইকোলজির ব্যবহার।এটিকে আমরা সাইকোলজির অপব্যবহার বলতে পারি সহজ কথায়।

প্রথমেই তিনি তার স্ত্রীকে ভুল প্রমাণ করতো। যেমন কিছুক্ষণ আগে রেখে যাওয়া পানির গ্লাস তার স্ত্রী যদি টেবিলে রাখতেন তিনি সেটিকে সরিয়ে অন্যত্র অর্থাৎ ডেস্ক বা চেয়ারে রাখতেন।তারপর তার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন তুমি ওখানে রেখেছ হয়তো।প্রতিনিয়ত এটি করতেই থাকেন তিনি।তারপর তার স্ত্রী চুল অন করে রাখলে তিনি গিয়ে বন্ধ করে দিতেন।এভাবে করে তার স্ত্রীকে মানসিক চাপে রাখতেন ।যেহেতু তারা দুইজনই বাড়িতে থাকতেন।তাই তার স্ত্রীর সন্দেহ কখনোই তার উপর যেত না।কারণ সে তার সামনে খুব ভালো আচরণ করত।এভাবে করতে করতে একদিন ডেল্লাকে পাগল করে তোলা হয়। অতঃপর তার স্ত্রীর থেকে তিনি সেই নেকলেস পেয়ে যান।ব্যাপারটি নিশ্চয়ই এতোক্ষণ বুঝতে পেরেছেন বন্ধুরা,লোকটি তার স্বার্থ সিদ্ধি করতে তার স্ত্রীকে পাগল করে দিলেন।এখানে সে কাঙ্খিত জিনিসটি কিন্তু চান নি জানেন চাইলে তিনি সেটা পাবেন না।কিন্তু যেকোনো মূল্যে তার সেই জিনিসটি চাই।

একবার একটি অফিসে কর্মরত কয়েকজন কলিগ একসাথে কাজ করতেন।এর মধ্যে একজন ব্যক্তি আরেক জন ব্যক্তির উপর ডার্ক সাইকোলজির ব্যবহার শুরু করলেন।কারণ তিনি তার সহকর্মীর উপর নিজের প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিলেন।যখন দেখলেন এটি সম্ভব হলোনা,তখন শুরু করলেন সাইকোলজির অপব্যাবহার।তার উদ্দেশ্য যেহেতু পূরণ হয়নি তিনি তাকে সহজ থাকতে দিবেন না।যিনি এই কাজটি করছিলেন তিনি ছেলে আর যার সাথে করা হচ্ছিল তিনি মেয়ে।তিনি উপরের গল্পটির মত একই কাজ করছিলেন কোনো এসাইনমেন্ট বা দরকারি কাগজ গুলোতে সবার সাথে যেই আঙ্গিকে সাইন করতেন ,মেয়েটির সাথে ভিন্ন আঙ্গিকে।তারপর অফিসিয়াল গ্রুপে সবার পোস্ট ফিডব্যাক দিলে মেয়েটির টি বাদ রাখতেন ইচ্ছাকৃতভাবে।যাতে করে মেয়েটির এটেনশন পাওয়া যায়।ইচ্ছাকৃতভাবে সমস্যা সৃষ্টি করে আবার সেগুলো কিছুক্ষণ বাদে নিজেই সলভ করে দিতেন।এতে মেয়েটি যাতে কনফিউজড হয়ে পড়ে এবং এমনভাবে রাস্তাগুলো ব্লক করতেন যাতে কেউ কিছু আন্দাজ না করতে পারে।এটি দীর্ঘ সময় ব্যাপি করেন যাতে মেয়েটির এটেনসন পাওয়া যায় এবং মেয়েটির মাথায় যাতে তার কথা চলে।সর্বোপরি ,মেয়েটি যাতে তাকে নিয়ে ভাবে। এভাবে করে মেয়েটি যখন বুঝতে পারে তার সাথে ডার্ক সাইকোলজি ব্যবহার করা হচ্ছে ।তখন মেয়েটি পদক্ষেপ নেন,আর সমস্যা গুলো ওভারকাম করেন।

উপরের দুইটি গল্প থেকে আমরা দুই ধরনের অভিজ্ঞতা পাই।একজন অন্ধ বিশ্বাস করে নিজে পাগল হলো আর জানতেই পারলো না এই কাজটির জন্য কে দায়ী,উদ্দেশ্য কি?অন্যদিকে দ্বিতীয় গল্পটি থেকে বুঝতে পারি ,চোখ,কান খোলা রাখায় এবং বিষয়টি নিয়ে অবগত থাকাতে মেয়েটি সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াই বেঁচে গিয়েছিল ভয়ঙ্কর ডার্ক সাইকোলজির গ্রাস থেকে। এসকল কাজগুলোতে বেশিরভাগ মেয়েরা ভুক্তভুগী হয়ে থাকেন।এর মধ্যে মেয়েদের অন্যতম ভুল যেটা থাকে।তারা নিজের সম্পর্কে খুব বেশি জানিয়ে ফেলে অন্যকে।সাধারণত এধরনের অপব্যাবহার কাছের মানুষ বা খুব বেশি জেনে ফেলেছে একজন অন্যজনের বিষয়ে এরাই করে থাকেন।বেশিরভাগ অনলাইন জগৎ এ এগুলো দেখা যায় বেশি।কেননা মানুষ অনলাইন জগতে নিজের সম্পর্কে বেশি জানিয়ে ফেলেন।এটা বড় রকমের একটি ভুল,তাই সবাই চেষ্টা করবেন নিজের সম্পর্কে কম শেয়ার করতে।যদিও এই কাজগুলো করে থাকেন যারা ,তারা নিতান্তই খারাপ মানুষ।আর আমরা যারা স্টিমিট এ কাজ করি সবাই তো ভালো মানুষ,তাই আমরা নিজেদের ব্যাপারে শেয়ার করলে সমস্যা নেই।কারণ এধরনের মানুষ আমাদের পরিবারে নেই।তাই আমরা খুব সহজেই নিজেদের ব্যাপারে শেয়ার করতে পারি ,হিহি।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।আমার আজকের ব্লগটি কেমন লেগেছে কমেন্টে জানতে ভুলবেন না কিন্তু বন্ধুরা । আবার নতুন কোনো ব্লগ নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো।


❤️আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি❤️
আমি রাহনুমানূর দিশা।আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী।আমি বর্তমান অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়াশুনা করছি।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সাথে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় থেকে যুক্ত রয়েছি।বাংলা ভাষায় লিখতে, পড়তে এবং নতুন নতুন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে আমার ভালো লাগে।এছাড়াও ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতে অনেক ভালো লাগে।অবসর সময়ে গান শুনতে এবং বাংলা নাটক দেখতে পছন্দ করি।

Post by-@rahnumanurdisha
Date -29th November,2024


Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Twitter_Banner_24.3.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 25 days ago 

দারুন একটি পোস্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। ডার্ক সাইকোলজির বিষয়ে আগে শুনেছিলাম। কিন্তু সম্পূর্ণ ডিটেইলটি আপনার পোস্টে এসে পড়ে জানতে পারলাম। ডার্ক সাইকোলজি বা নেগেটিভ ভাবে কাউকে মনস্তাত্ত্বিক চাপ দেওয়া তাকে অসুস্থ করে তোলে। যদিও বর্তমান যুগে স্বার্থ চরিতার্থ করবার জন্য এমন ঘটনার ব্যবহার দেখাই যায়। কিন্তু এই ঘটনা যে মানুষটাকে পাগল করে দেয় তার বিষয় কেউ ভাবে না।

 24 days ago 

এককথায় অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু। তাছাড়া দারুণ দুটি গল্পের মাধ্যমে ডার্ক সাইকোলজি ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিলেন। ভয়ঙ্কর ডার্ক সাইকোলজি প্রথম জনকে পুরোপুরি গ্রাস করে পাগল করে ফেললেও,দ্বিতীয় জন তার বুদ্ধির কারণে পাগল হওয়া থেকে বেঁচে যায়। এটা ঠিক ব্যক্তিগত তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় যত কম শেয়ার করা যায় ততই ভালো। কিন্তু ফেসবুকে অনেক মেয়েকেই দেখি ব্যক্তিগত তথ্য অহরহ শেয়ার করছে। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।