গ্রাম্য বিশ্বাসের জালে!
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আজকে আমি আপনাদের সাথে কালকের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাচ্ছি, তো চলুন শুরু করি...
গতকাল আমার এক বন্ধুকে তার HSC পরীক্ষার জন্য মাদ্রাসায় পৌঁছে দেওয়ার সময় একটি মর্মান্তিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলাম। সকালবেলা রাস্তায় যেতে যেতে দেখতে পাই একটি ভ্যানে দুইজন মহিলা ও একজন পুরুষ একটি অজ্ঞান শিশুকে কোলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। শিশুটির অজ্ঞান হওয়ার কারণ তখন আমার জানা ছিল না—বিদ্যুতের শক অথবা কোনো দুর্ঘটনা হতে পারে।
গ্রাম্য চিকিৎসার প্রতি আস্থার অভাবে আমি দ্রুত শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর দেই। তবে সমস্যাটি ছিল, ওই মুহূর্তে কোনো যানবাহন পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করি এবং তাদের সাহায্য চাই। দুঃখজনকভাবে, তারা আমার ৫ মিনিট ২৭ সেকেন্ড নষ্ট করে কোনো সাহায্য প্রদান করতে ব্যর্থ হয়।
দুঃখজনক হলেও সত্যি যেহেতু এখানে ফটো দিতে পারলে খুবই ভালো কিন্তু আমি ঐ পরিস্হিতিতে কোনো ফটো তুলতে প্রস্তুত ছিলামনা। তবে কেউ আগ্রহী হলে এটা নিয়ে আমি একটা লাইভ করেছি সেটা আপনারা দেখতে পারেন দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন
এমন অবস্থায় আমি রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে গাড়ির মালিকদের অনুরোধ করতে থাকি এবং অবশেষে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ম্যানেজ করতে সক্ষম হই। ইতিমধ্যে আমি শিশুটির উপর চাপ প্রয়োগ করতে বলি, যা শিশুটির জ্ঞান ফিরে পেতে সাহায্য করে। শিশুটির জ্ঞান ফেরার পর তারা আর হাসপাতালে যেতে চাননি।
আমি তখনো তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করি, কারণ অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি কখনো হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। কিন্তু তখন ওখানকার কিছু মানুষ আমার উপর রাগ করল।
এই ঘটনাটি আমাকে গ্রাম্য চিকিৎসার প্রতি মানুষের অন্ধ বিশ্বাসের সমস্যাটি স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে। যদিও আমাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জ্ঞান থাকা উচিত, গুরুতর পরিস্থিতিতে পেশাদার চিকিৎসা নেওয়া অত্যাবশ্যক। আমি আশা করি, আমাদের সমাজে জরুরি সেবার প্রাপ্যতা এবং ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে এবং ভবিষ্যতে এমন কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে আমরা দ্রুত ও সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারব।
এই অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই প্রস্তুত থাকতে হয় এবং কখনও কখনও নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হয় যে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আমরা যদি একে অপরের পাশে দাঁড়াই এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করি, তবে আমরা একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
আমি রিদওয়ান হোসাইন। পরিবারের শেষ সন্তানটি আমি। পড়াশোনা করছি কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি নিয়ে। ভ্রমণ করা, গান গাওয়া ও শোনা এবং ফটোগ্রাফি করা আমার খুবই পছন্দ। আমি পড়াশোনার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে লেখা শুরু করি, তাই "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব, আমার ভালোবাসা। নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার মুক্ত প্লাটফর্ম। এখানে নিজের মনের ভেতর জমে থাকা হাজারো কথা তুলে ধরা যায়।
আমি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শিশুটির জন্য গাড়ি ম্যানেজ করার চেষ্টা করা 999 এ ফোন দেয়া ও অবশেষে শিশু থেকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে জ্ঞান ফেরানো। ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়ে সাহায্য না পাওয়াটা ভীষণ দুঃখজনক ব্যাপার। আসলে গ্রামের মানুষেরা এরকমই হয়ে থাকে ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে এভাবে উৎসাহমূলক মন্তব্য করার জন্য আপু। আমি শুধুমাত্র আমার কর্তব্যটাই করেছি। শিশুটির সুস্থতা গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ তারা আমাদের আগামীর ভবিষ্যতে। আর সত্যিই, গ্রামীণ এলাকার মানুষেরা অনেক সময় এমন পরিস্থিতিতে সহায়তা পেতে সমস্যায় পড়ে, তবে আমাদের সবার উচিত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। আর এমন ছোট্ট একটা কাজে আপনার আন্তরিক ধন্যবাদ পেয়ে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ, সুস্থ থাকবেন।