টিনটিন জীবনের প্রথম স্টেজ পারফরম্যান্স

in আমার বাংলা ব্লগlast month

IMG_20241008_203725.jpg


গতকাল পঞ্চমীর সন্ধ্যায় টিনটিনের স্কুলের পাশের একটা পুজো প্যান্ডেলে বাচ্চাদের একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছিল । টিনটিনের স্কুলের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানে কিছু খুদে পারফর্মারদের একটা লিস্ট দেওয়া হয়েছিল । এই সকল খুদে পারফর্মারদের বয়স ৪ থেকে ১২ এর মধ্যে ছিল সবার । টিনটিন কবিতা আবৃত্তি আর গ্রূপ ডান্স লিস্টে ছিল । এমনিতে টিনটিন ঘরের বাইরের পরিবেশে মারাত্মক রকমের ইন্ট্রোভার্ট, তাই আমাদের সবার আশংকা ছিল যে টিনটিন হয়তো শেষমেশ স্টেজেই উঠবে না । কিন্তু , বাস্তবে দেখা গেলো ঠিক তার উল্টোটাই হয়েছে ।

অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৭ টায় । আমরা চারজন, আমি, আমার এক ভাইপো সৈকত, নিলয় আর টিনটিন ঠিক ৬ টা বেজে ৪৫ মিনিটে টিনটিনের স্কুলে পৌঁছে গেলাম । গিয়ে দেখলাম অনেক বাচ্চা এসেছে তাদের মায়েদের সাথে । তারা সাজগোজে ব্যস্ত । টিনটিনকে স্কুলের ভেতরে সাজতে পাঠিয়ে আমরা পুজো প্যান্ডেলে চেয়ার পেতে স্টেজের সামনে বসে গেলুম ।

ঠিক সাতটার দিকে স্টেজের সামনে স্কুল থেকে সব বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলের ম্যাডামরা এসে গেলেন । এরপরে শুরু হলো আমাদের অপেক্ষার পালা । কখন অনুষ্ঠান শুরু হয় ! কিন্তু , পুজো উদ্বোধন না করা অব্দি তো আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে না । মিনিটের পর মিনিট কাটতে থাকলো । ক্রমশঃ বাচ্চারা অস্থির হয়ে উঠতে লাগলো, কিন্তু পুজো আর উদ্বোধন হয় না ।

এভাবে পাক্কা একটি ঘন্টা বসে থাকার পরে আমাদের পৌরসভার চেয়ারম্যান এসে পুজো উদ্বোধন করে দিয়ে গেলেন । তারপরে আরো কিছুক্ষণ বসে রইলাম । এবার এলেন স্থানীয় ওয়ার্ডের councillor, তিনি এসে আবারো একবার পুজো উদ্বোধন করলেন । ততক্ষণে দেড় ঘন্টার উপরে টাইম পার । বাচ্চাদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্রমশঃ অসন্তোষ দানা বাঁধছে । সঙ্গত কারণেই হচ্ছে সেটা । অধিকাংশ বাচ্চাদের বয়স ৪ থেকে ৭ । তারা অস্থির হয়ে যাচ্ছে বসে থাকতে থাকতে ।

অবশেষে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ শুরু হলো বাচ্চাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । শুরুতে স্কুলের প্রিন্সিপাল ম্যাডামের উদ্বোধনী বক্তব্যের পর RJ সোমা সরকার স্টেজে এলেন । তিনি পেশায় একজন রেডিও জকি হলেও আঙ্কারিংও করে থাকেন । শুরু হলো আমাদের বহু প্রতীক্ষিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । একের পর এক খুদে শিল্পীদের কবিতা আবৃত্তি আর সংগীত পরিবেশনে পরিবেশ নিমেষেই বদলে গেলো । দারুন একটা সুন্দর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল ।

কবিতা আবৃত্তি আর গানের ফাঁকে মাঝে মাঝে নৃত্য হয়ে গেলো বেশ কয়েক রাউন্ড । অনেক প্রতিযোগী ছিল । পাড়ার বাচ্চারা, স্কুলের বাচ্চারা প্লাস পাড়ার বাইরের কিছু বাচ্চাও পারফর্ম করেছিল । কবিতা আবৃত্তির পারফর্মারদের লিস্টের মাঝামাঝি ছিল টিনটিনের নাম । যখন টিনটিনের নাম ঘোষণা হলো । তখন সবাইকে অবাক করে দিয়ে স্টেজে উঠে নমস্কার করলো সবাইকে । কিন্তু , নমস্কারের ঠেলায় মাউথপিস সরে গেলো মুখের থেকে । ফলে কবিতা আবৃত্তি খুবই আস্তে শোনা গেলো । আর আবৃত্তিতে জড়তা বেশ ছিল । তবে ও যে আবৃত্তি করেছে এটাই আমরা আশা করিনি । ভেবেছিলাম মুখই খুলবে না, চুপ করে থাকবে ।

সবার শেষে ছিল গ্রুপ ডান্স । খুদেদের এই গ্রুপ ডান্সে টিনটিনেরও নাম ছিল । জড়তা কাটিয়ে বেশ কিছুক্ষন হিন্দি গানের তালে তালে নাচলো টিনটিন । তবে স্টেজে যতটুকু নেচেছিল বাড়িতে তার দশগুণ স্পীডে নাচে ।

নাচ শেষ হতেই রাত ১০ টা । অবশেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম আমরা ।


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর $PUSS টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code [Tron Wallet]

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png
[Tron Wallet]


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

»»——⍟——««

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last month 

ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। একদিন খুব বড় হবে টিনটিন বাবু। একদিন বড় মঞ্চে লেকচার দিবে, পারফর্ম করবে আরো অনেক কিছু করবে। এটা কেবল সূচনা তাই জড়তা থাকবেই। আমার মেয়েটাও এরকম করে বাসায় খুব কথাবার্তা বলে কিন্তু বাইরে গিয়ে আর কিছু বলতে চায় না। শুভকামনা।

Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

 last month 

হিহি,

ছোটবেলায় আমিও ঠিক টিনটিনের মতোই ইন্ট্রোভার্ট ছিলাম। এই গল্পটা পড়ে আমারো সেই কেজি স্কুলের কথা মনে পড়তেছে। আর সবচেয়ে খারাপ ও বিরক্ত লাগে এই রকম বসে বসে অপেক্ষা করতে।

 last month 

দাদা অনেক বাচ্চারাই বাহিরের পরিবেশে ইন্ট্রোভার্ট। তবে টিনটিন যে স্টেজে উঠে কবিতা আবৃত্তি করেছে এবং ডান্স করেছে, এটা জেনে আসলেই খুব ভালো লাগলো। তাছাড়া টিনটিন বাবুকে খুবই কিউট লাগছে। বিশেষ করে ডান্সের পোশাক পড়া ছবিটাতে বেশি কিউট লাগছে। যাইহোক বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি দেখে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 last month 

যাক সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমাদের সবার প্রিয় টিনটিন বাবু দুইটি ক্যাটাগড়িতেই অংশগ্রহন করেছে। এত ছোট বাচ্চা সাহস করে যে এতটুকু করতে পেরেছে সেই জন্য অভিনন্দন জানায়। বাড়িতে বাবা মা সবাই থাকে। সেখানে সাহস থাকে বেশি। আর অনুষ্ঠানে তো কত মানুষ থাকে। তাদের সামনে পার্ফেমেন্স করা কঠিন। ধন্যবাদ।

 last month 

সত্যি দাদা অনেক বাচ্চারাই পরিবারের বাইরে ইন্ট্রোভার্ট থাকে। তবে টিনটিন বাবু দুটিতে অংশ গ্রহণ করেছে জেনে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আসলে দাদা বাচ্চারা দেখে দেখেই শিখে।তবে বসে থাকাটা বাচ্চাদের জন্য অনেক বিরক্তকর।আশাকরি এখন থেকে টিনটিন বাবু সব কিছুতেই অংশ গ্রহণ করবে।ধন্যবাদ দাদা পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

ধীরে ধীরে এক্সট্রোভার্ট হয়ে যাবে আশা করি।

 last month 

এতো মানুষের সামনে যে টিনটিন বাবু পারফর্মেন্স করেছে এটাই প্রশংসার দাবি রাখে। আমিতো এখনও অনেক মানুষের সামনে কথা বলতে হ্যাজিটেড করি। আর টিনটিন সেখানে দু'টো ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহন করেছে। এবং বেশ ভালোভাবে পারফর্মেন্স করেছে। ধীরে ধীরে আরও ভালো করবে আশাকরি। বেশ সুন্দর লাগছে টিনটিন বাবুকে। ধন্যবাদ দাদা ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।