ছোটবেলায় আমড়া নিয়ে মজার ঘটনা
Copyright Free Image Source: Pixabay
অনেক দিন আগের কথা । তখন আমি একদমই ছোট্ট । খুব সম্ভবত তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি তখন । আমাদের গ্রামে হাটখোলা নামে একটা জায়গা ছিল । হাটখোলায় সপ্তাহে দুই দিন হাট বসতো । এত দিন পরে মনে নেই কবে কবে ছিলো হাটবার । তবে, বৃহস্পতিবার একদিন বসতোই । কারণ, ঘটনাটি বৃহস্পতিবারই ঘটেছিলো ।
তো, শুরু করি মূল ঘটনা । একদিন বৃহস্পতিবার বিকেলবেলা হাটে গিয়েছি বাবার সাথে । হাটখোলার হাট বসতো একেবারে নদীর কিনারে । হাটখোলার পাশ দিয়ে এঁকে বেঁকে ছোট্ট একটা নদী বয়ে গিয়েছে । নদীর এই পাশটা যেখানে হাট বসতো সেখানে গাছপালা শূন্য একটি মাঠের মতো ছিল । এটাই হাটখোলার মাঠ । এই মাঠেই সপ্তাহে দুই দিন হাট বসতো ।
আমার মনে আছে সেদিন দুপুরের পর থেকে বেশ কয়েক পশলা বৃষ্টি পড়েছিল । রাস্তা ঘাট কর্দমাক্ত, পিচ্ছিল । কারণ শ্রাবণ মাস চলছিল তখন । বাবা নেবেই না আমাকে হাটে । বর্ষার দিনে বাচ্চা কাচ্ছা সামলিয়ে বাজার করে আসা বেজায় কঠিন কাজ । তবুও আমি যাবোই যাব । শেষমেশ আমার জেদের কাছে নতি স্বীকার করে বাবা আমাকে নিয়ে হাটে গেলো ।
হাটে গিয়েই শুরু হয়ে গেলো আমার খাই খাই । কারণ, এই কাজেই তো হাটে আসা আমার । আসল কাজ তো এটাই । বাবা যথেষ্ঠ বিব্রত হয়ে পড়লো । বাজার করবে না খাওয়াবে আমাকে ? রাগে গজ গজ করতে করতে ছোলা-বুট মাখা, বরফ (আইসক্রিম নয় ), গজা এসব কিছু কিছু কিনে দিচ্ছে আর আমি মুহূর্তের মধ্যে খেয়ে ফেলছি । আর পাত খালি হলেই আবার আবদার শুরু করছি ।
বাবা রেগে মেগে অস্থির । বাট, ওসব আমি থোড়াই কেয়ার করি । হাটে এমনিতেই আসতে পারি না । মাসে ১-২ দিন আসতে পারি । তাই, মুখ চালাচ্ছি কোনোদিকে কর্ণপাত না করে । যেটা দেখছি সেটাই খেতে চাচ্ছি । আর বাবা রেগে গেলেও কিনে দিতে বাধ্য হচ্ছে শেষমেশ ।
এভাবে খাওয়া আর বাজার করা চলছেই । এর মধ্যে দেখলাম সেই খাদ্যবস্তুটা । যার প্রতি একটা দুর্নিবার আকর্ষণ ছিল ছোটবেলায় । কাঁচা আমড়া মাখা । ঝাল, নুন, কাসুন্দি আর মশলা দিয়ে মাখা কাঁচা আমড়া । দেখলেই জিভে জল চলে আসে । তো, দেখেই মাটিতে খুঁটি গাড়লাম । আর আমাকে সেখান থেকে নাড়ায় এমন সাধ্য কার ?
বাধ্য হয়ে বাবা কিনে দিলো । দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাচ্ছিলাম । বাবা হাত ধরে টেনে নিয়ে চললো সাথে । বাবার বাজার করা চলছে আমার খাওয়াও চলছে । এভাবে আস্তে আস্তে বাবার বাজার করা হয়ে গেলো । আমার খাওয়া চলছেই । শেষ হচ্ছে না । বাবার মনে খটকা লাগলো ।
এতটুকু আমড়া মাখা এখনো শেষ হয়নি খাওয়া ? শেষমেশ বাবা আবিষ্কার করলো যে আমি আমড়া মাখা শেষ করে কাগজটা চেটে চলেছি । কাগজে তখনও তেল, নুন, ঝাল, কাসুন্দি মাখা । তাই, চেটে চলেছি । দেখে তো বাবা রেগেমেগে আগুন । একটান দিয়ে কাগজটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো ।
গভীরভাবে মুষড়ে পড়লাম আমি । আরো একবার কাগজটা চাটতে মনে গভীর একটা ইচ্ছে ছিল আমার । সেটি আর পূরণ হলো না । বহুদিন পর্যন্ত এ দুঃখটা মনের গভীরে ছিল আমার ।
এখন ভাবলেই খুব হাসি পায় আমার । ছোটবেলা আসলেই বেশ মজার ।
Beautiful...
Please support my blog 🙏
Hello rme you must superb post
Nice post! Do you have a donations page like on Poof https://www.poof.io/ or Venmo?
The post is very nice. I hope for such a post in the future. I enjoyed reading the post. I learned a lot.
SBU 2022
SBU 2022
SBU 2022
আমড়া মাখার কাগজ কখনো চেটে না খেলেও চিপ্স ফুরিয়ে গেলে পেকেটে লেগে থাকা মসলা গুলো খাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা এখনো মনে আছে । আহা পেকেটে লেগে থাকা মসলা গুলোর স্বাদ যেন অমৃত ছিল তখন । বড়দের সামনে খেতে পারবো না তাই লুকিয়ে লুকিয়ে সে চেষ্টা চলতো ।
ছোট বেলার স্মৃতি গুলো এমনি এখন মনে পড়লে বড্ড হাসিপায় । আপনার আজকের শেয়ার করা ছোট বেলার স্মৃতি গল্প পড়ে ভীষণ হাসি পেলো ।
খুব হাসলাম ভাই পড়ে। তবে এইটা একদম চিরন্তন সত্য কথা বলেছেন , আমড়া মাখার সঙ্গে যে লবণ কাসুন্দি ও ঝাল দেয় সেটা খাওয়ার স্বাদটাই আলাদা । একদম মুখের ভিতরে পানি চলে এসেছে ভাই ।
দাদা গল্পটা পড়ে খুব ভালো লাগলো।দাদা বাবার বকুনি আর আমড়া, দুইটারই আলাদা স্বাদ আছে। যা আপনি উপভোগ করেছেন শৈশবে।
@tipu curate 9
Upvoted 👌 (Mana: 0/9) Get profit votes with @tipU :)
আপনি চেটেই চলছিলেন আর আমি হেসেই চলেছি।দারুন মজা পেয়েছি উপরের ওই লাইন দুটি থেকে। আরেকটি জিনিস বুঝতে পারলাম ছোটবেলা থেকেই আপনি খাওয়ার অনেক পাগল ছিলেন, যেমন এখনো খাওয়ার জন্য শুধু মেলায় চলে যান।
আহা ! আরো একবার কাসুন্দি আর মশলা মাখা কাগজটা চাটার একটা গভীর বাসনা ছিল মনে ।