কৈশোরের কিছু স্মৃতিচারণ (ফেলে আসা সোনালী অতীত)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

childhood
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY


বলা হয়ে থাকে মানুষের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময় হলো তার শৈশব । এই ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করার মতো মানুষের সংখ্যা খুবই কম আছে । আমার বাল্যকালের কিছুটা সময় কেটেছে শহরে নয়, গ্রামে । একেবারে অজ পাড়া গাঁ যাকে বলে । বিদ্যুৎ ছিলো না , রাস্তা ঘাট সবই ছিলো কাঁচা । গ্রামে পাকা বাড়ির সংখ্যা ছিলো একেবারেই নগণ্য যাকে বলে । আমাদের স্কুলটা অবশ্য খুব একটা দূরে ছিলো না, কিন্তু তাও নয় নয় করে হলেও ২ কিলোমিটারের মত দূরে ছিল আমাদের বাড়ি থেকে । ক্লাস ফোর অব্দি পড়েছি আমি গ্রামের সেই স্কুলটিতে ।

আমরা হেঁটেই যেতাম স্কুলে ক্লাস করতে, কারণ আগেই বলেছি আমার জন্মস্থান গ্রামটি ছিলো একেবারেই অজ । গ্রামের কাঁচা রাস্তায় এক বাইসাইকেল ভিন্ন দ্বিতীয় কোনো যান দেখিনি ছোটবেলায় । বাড়ি থেকে স্কুলটি যেহেতু প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ছিলো তাই সকালে ক্লাস শুরু হওয়ার বেশ কিছুটা আগে থেকেই আমরা কয়েক বন্ধু বেরিয়ে পড়তাম ।

আমাদের দলে ছিলো আমার সমবয়সী কিছু বন্ধু, আমাদের চাইতে বয়সে অনেক বড় কিন্তু সহপাঠী হিসাবে পাড়ার কয়েকজন দাদা আর কয়েকটি সমবয়সী মেয়েও ছিলো আমাদের দলে । এক ঘন্টা আগে থেকে বেরিয়ে পড়তাম আমরা স্কুলের উদ্দেশ্যে । আর সারা রাস্তা নানারকম মজা ও দুষ্টুমি করতে করতে স্কুলের দিকে এগিয়ে যাওয়া । আমার মনে আছে আমাদের দলে আমিই ছিলাম আমার সব সহপাঠী বন্ধুদের মধ্যে সব চাইতে কম বয়সী । যাদেরকে আমি সমবয়সী ভাবতাম তারাও আমার চাইতে ৬-৭ মাসের বড় ছিলো ।

কিন্তু, ওই বয়সেই আমার নেতৃত্ব দেওয়ার একটা সহজাত প্রবৃত্তি ছিলো । সারা স্কুলের মধ্যে উঁচু ক্লাসের ছেলেরাও আমাদের গ্রুপের পিছনে লাগতে সাহস পেতো না । সবার ছোট ছিলাম কিন্তু লিডার ছিলাম দলের । অন্যের গাছের ফল চুরি করা, টিফিন কেড়ে খাওয়া , ছোট বাচ্চাদের অকারণে কান ধরে ওঠবস করানোর ঘোরতর বিরুদ্ধে ছিলাম আমি ও আমার দল । তবে যেদিন আমাদের গ্রুপের সাথে অন্য কোনো গ্রূপের ক্রিকেট খেলা হতো সেদিন টের পেতাম আমাদের বিরুদ্ধে কি পরিমান আক্রোশ ছিলো অন্য সব দলের ।

এত জোরে তারা বল করতো যে আমরা সবাই চোখে অন্ধকার দেখতাম । আঘাতের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই উইকেট ছেড়ে দিত । তবে, প্রায় সময়ই গো-হারান হারলেও আমাদের গ্রূপের যে ছেলেগুলো অনেক বড় ছিলো আমাদের চাইতে তাদের এলোপাথাড়ি ধুম ধাম চার ছয়ে মাঝে মাঝে আশ্চর্যজনক ভাবে জিতে যেতাম । সেদিন যে সারাটা দিন কি খুশি যে লাগতো তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব ।

আমাদের দলের যেই সেদিন umpire হতো নিরপেক্ষভাবে সে বিচার করতো । কিন্তু অন্যদলের ছেলেগুলোর আচরণ আমাদের ব্যথিত করতো । পপিং ক্রিজের পাঁচ হাত দূরে থাকতে উইকেট ভেঙে দিলেও আউট হতে চাইতো না, umpire এর সাথে তর্ক করতো । অথচ, ওদের দলের কেউ আম্পায়ার হলেই আমাদের শরীরের কোথাও বল টাচ করলেই এলবিডাব্লিউ আউট দিয়ে দিতো। অদ্ভুত !

এবার বালক বয়সের একটি ঘটনা উল্লেখ করেই আজকের মতো পরিসমাপ্তি টানবো । আমাদের স্কুলে অন্য গ্রাম থেকে কয়েকটি ছেলে পড়তে আসতো । তাদের যা বয়স ছিল তাতে তাদেরকে কোনো মতেই বালক হিসাবে অভিহিত করা সম্ভবপর ছিলো না । আমাদের চাইতে তারা কম করে হলেও ১০-১২ বছরের বড় ছিল । অথচ, পড়তো আমাদের চাইতে মাত্র দু'ক্লাস উপরে । কেন যে তারা এই বয়সে এসে হাই স্কুলে ভর্তি হলো কে জানে ।

যাই হোক, তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কটা ছিলো একেবারে যাকে বলে আদায় কাচঁকলায় ।সুযোগ পেলেই তারা আমাদেরকে ধরে ঠ্যাঙাতে চাইতো । কিন্তু, সুযোগ পেলে তবে তো ঠ্যাঙাবে । আমার আজও মনে আছে তাদের মধ্যে সব চাইতে বখাটে দুটোর নাম ছিলো ইন্দ্র আর গৌরাঙ্গ । মিটমিটে শয়তান ছিলো দুটোই, বদবুদ্ধিতে ঠাসা । অন্যগুলোর ছিলো শুধু মোষের মতো শক্তি গায়ে, কিন্তু বুদ্ধি ছিল না ।

কো-এড স্কুল, কাজেই ছেলে মেয়ে উভয়ই পড়তো । ওই বয়সে মেয়েদের প্রতি আমাদের একটাই টান ছিল যেটা বন্ধুত্বের টান, ছেলেদের প্রতি যে টান সেটাই । আর কোনো জ্ঞানচক্ষুর উন্মীলন হয়নি আমাদের তখন । নাকি শুধু আমারই হয়নি তখন, আমি এখনো confused । যাই হোক, ইন্দ্র গ্রুপ প্রায়শই স্যারদের হাতে পিটুনি খেত মেয়েদেরকে উত্যক্ত করার জন্য । আর তাদের এগেনেস্টে বেশিরভাগ রিপোর্ট যেতো আমাদের কাছ থেকেই ।

কাজেই আমাদের উপর তাদের শকুনি নজর ছিল । সুযোগ খুঁজছিলো তারা আমাদেরকে একদিন ধরে ইচ্ছেমত বানাতে । কিন্তু, সুযোগ দিলে তবেই না । আমাদের গ্রুপেও আমাদের সহপাঠী কয়েকজন ছিলো প্রায় তাদের সমবয়সী, গায়েও তাদের মোষের শক্তি । তারাই আমাদের গ্রূপের সৈনিক, বডি গার্ড প্রহরী সব ।

একদিন কিন্তু তাদের হাতে সুযোগ এসেই গেলো । বার্ষিক পরীক্ষার মাঝামাঝি । আমাদের গ্রুপের মোষগুলো সব অনুপস্থিত । গায়ে যতই তাদের শক্তি থাকুক মগজে তার ছিটেফোঁটাও নেই । তাই ড্রপ আউট । পরীক্ষায় বসলো না তারা । আর আমাদেরকে আনসিকিউর্ড করে ফেলার সুবর্ণ পেয়ে গেলো ইন্দ্র গ্রুপ ।

সেদিন বেশ শীত । অঙ্ক পরীক্ষার দিন । পরীক্ষা দারুন হলো । আমাদের প্রায় সবাই খুশি । বিকাল হয়ে এলো প্রায় । বাড়ি ফিরছি । এমন সময় নির্জন হাটখোলার কাছে এসে আমাদের বাহিনী হঠাৎ এমবুশের মুখে পড়লো । গেরিলা আক্রমণ ইন্দ্র গ্রূপের । প্রথম দিকটায় আমরা ভীষণ ঘাবড়ে গেলাম । নির্জন জায়গা, মনের সুখ মিটিয়ে আমাদের আচ্ছাসে পিটিয়ে পরোটা বানাবে এখন ।

আমার লাইফের সব চাইতে বড় নেতৃত্ব দিয়েছিলাম আমি সেইদিন । চিৎকার করে সবাইকে সতর্ক করলাম । দৌড়াতে বারণ করলাম সবাইকে । ইন্দ্রাকে চ্যালেঞ্জ করলাম ।তাদের যা শক্তি তাদের তুলনায় আমাদের হলো বাঘের পাশে বিড়াল । দেখলাম ইন্দ্র গ্রূপের কোনো তাড়াহুড়ো নেই । শীতের দুপুর শেষ হয়ে বিকেল হয়ে আসছে ।ছাত্রছাত্রী সবাই বাড়ি চলে গেছে । হাটখোলার পাশে এই মাঠের ধারটা নির্জন থাকবে আরো বেশ কিছুক্ষন । তাই তাদের আনন্দ দেখে কে ?

আর আমি চাইছিলাম তখন টাইম ওয়েস্ট করার একটা সুযোগ । যতই নির্জন এলাকা হোক । গ্রামের দিকে রাস্তা ঘাটে কখন কে চলে আসবে তার কোনো ঠিক নেই ।আর সে রকম কেউ চলে আসলেই আমরা বেঁচে যাই । এটাই ছিলো আমার প্ল্যান । তাই সময়ের অপচয় করার চেষ্টা করলাম ।

আড়চোখে তাদের হাতের খেঁজুরের ডাল দিয়ে বানানো লাঠিগুলো একবার দেখে নিলাম । তারপরে শুরু করলাম । প্রথমে জানতে চাইলাম যে তারা কি চায় । চেঁচিয়ে লাঠি দেখিয়ে বলে দিলো তাদের সাধু উদ্দেশ্য । আমাদের দলের অবস্থা তখন শোচনীয় । এক কলম ছাড়া দ্বিতীয় কোনো অস্ত্র নেই আমাদের ।

আমি একটা সন্ধি প্রস্তাব দিলাম ইন্দ্রকে । আমাদেরকে ছেড়ে দিলে তাকে আমি আমাদের বাড়ির এয়ারগানটা যখনি চাইবে তখনি ধার দেব । আমি জানতাম এই অফার ফেরানোর সাধ্য ইন্দ্র গ্রূপের কারো নেই । ইন্দ্র সম্মতি দিলো । কিন্তু তিন সত্যি করে দিব্যি করতে বললো । আমি তিন সত্যি করলাম । একটু পরেই সসম্মানে আমাদেরকে তারা রীতিমত গার্ড করে বাড়ি অব্দি পৌঁছে দিলো ।

পরে অবশ্য আমি চাইলেই এর শোধ নিতে পারতাম । কারণ ততদিনে উঁচু ক্লাসের গুন্ডা প্রকৃতির একটি মুসলিম ছেলের সাথে কিছুটা সখ্যতা হয় । অন্ধের মতো আমার সব কথা শুনতো সে । তার গ্রূপকে আবার যমের মতো ডরাতো ইন্দ্র গ্রূপ । কিন্তু, প্রতিহিংসা শুধুই প্রতিহিংসা-কেই ডেকে আনে, প্রতিশোধ শুধুই আরেকটি প্রতিশোধেরই জন্ম দেয়; কিন্তু কোনো সমাধান আসে না কখনোই ।

তবে বেশিদিন আমি গ্রামে ছিলাম না । ক্লাস ফোরে উঠেই সেই যে শহরে পাড়ি দিয়ে চিরদিনের জন্য ইট বালি কংক্রিটের দেয়ালে বন্দী হয়ে গেলাম, আর কোনোদিন বেরোতে পারলাম না । গ্রামে আর ফেরা হয়নি কোনোদিন । মুছে গেলো জীবনের একটা বৈচিত্রময় অংশ ।

পরিশেষে বলি, আমি আমার কথা রেখেছিলাম । ইন্দ্রকে এয়ার গানটা ব্যবহার করতে দিতাম যখনি সে চাইতো । আর চিরদিনের জন্য গ্রাম ছেড়ে শহরে আসার আগে আমার কাকার এয়ার গানটি আমি ইন্দ্রকে দান করে এসেছিলাম ।

Sort:  
 3 years ago 

প্রতিহিংসা শুধু প্রতিহিংসাকেই ডেকে আনে,প্রতিশোধ শুধু আরেকটা প্রতিশোধেরই জন্ম দেয় এক কথাটি একেবারে মনের গভীরে গেঁথে গেলো। আমাদের যে আনন্দের শৈশব ছিলো এখনকার শহরের বাচ্চাদের তা নেই। গ্রামের মাটির পথ অনেক দিন দেখিনা আপনার লেখায় কল্পনায় সেই পথ দেখতে পেলাম। সত্যিই স্মৃতি কাতর করে দিলেন।

 3 years ago 

দাদা তোমায় শৈশবটা
অনেক মজার ছিল,,
তোমার লেখা শৈশবটা
দারুন মজা দিল,

অজ পাড়াগাঁয় গ্রামটি
রাস্তাগুলো কাঁচা
ক্রিকেট খেলায় উইকেট
ছেড়ে নিজেকে বাঁচা।

অবশেষে ইন্দ্ররা ও
হারলো তোমার কাছে
শক্তির চেয়ে বুদ্ধি বড়
মানল তারা পাছে
♥♥


 3 years ago 

মুগ্ধ হয়ে পড়ছিলাম আর নিজের শৈশবের কথা ভাবছিলাম। সেই সময়ের দিনগুলোকে সত্যিই কোনদিন ভুলা যাবে না। আপনার ছোটবেলার দাদাগিরির ঘটনা গুলো সত্যিই খুব মজার ছিল।

আমি দশম শ্রেণী পর্যন্ত গ্রামে বড় হয়েছি এবং আমাদের অঞ্চলটি অনেকটা চর এলাকা যা প্রায় অজ পাড়াগাঁয়ের মত। আর আমার জীবন থেকে এটা উপলব্ধি হয়েছে যে, মূলত দুরন্ত শৈশব কেবলমাত্র গ্রামেই খুঁজে পাওয়া যায় যেটা শহরের জীবনে একেবারে অসম্ভব কারণ এত বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা এবং আনন্দ আড্ডায় আমরা মেতে থাকতাম যা শহরের ছেলে মেয়েদের পক্ষে চিন্তা করাই অসম্ভব।

শহরের অনেক ছেলেমেয়ে ছোট একটা গাছে উঠতে ভয় পাবে কিন্তু আমরা কত রকম গাছে যে উঠেছি আর কত রকম খেলাধুলা আর দুরন্তপনা যে করেছি তা হিসাব করে বলা মুশকিল।

ধন্যবাদ আপনার শৈশবের স্মৃতিচারণ করার জন্য যা আমার শৈশব কে আজ মনে করিয়ে দিয়েছে।

 3 years ago 

প্রতিহিংসা শুধুই প্রতিহিংসা-কেই ডেকে আনে, প্রতিশোধ শুধুই আরেকটি প্রতিশোধেরই জন্ম দেয়; কিন্তু কোনো সমাধান আসে না কখনোই ।

আপনার উপরের লাইনের কথাগুলোর সাথে আমি একমত। আপনার প্রতিটি পোস্ট পড়ে অনেক শিক্ষা,দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। এটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

খুবই চমৎকার কাহিনী পড়লাম এবং কিছু শিখলামও বটে।

প্রতিহিংসা শুধুই প্রতিহিংসা-কেই ডেকে আনে, প্রতিশোধ শুধুই আরেকটি প্রতিশোধেরই জন্ম দেয়; কিন্তু কোনো সমাধান আসে না কখনোই ।

খুব ভালো লেগেছে আপনার এই ধরনের মানসিকতা দেখে, যেটা আপনি সেই ছোট্ট বেলা হতেই লালন করে আসছেন। আমার জীবনের এই রকম ঘটনা আছে, দল বেঁধে এবং গ্রুপিং নিয়ে আমিও চলতাম। তবে আমার সাথে কেউ কোন দিন পেরে উঠতে পারে নাই কারন আমাদের এলাকার তিনটি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে ছিলো আমার ক্লাসমেট এবং তিনজনেই আমার বন্ধু ছিলো। সুতরাং সব সময়ই নিজের একটা ভাব ছিলো ক্লাসে হে হে হে। কোন প্যারা ছিলো না আমার কিন্তু অন্যদের ঠিকই প্যারায় রাখতাম।

 3 years ago 

আমার ছোটকাল টাও আপনার মত গ্রামে কেটেছে। তবে আমি এখন গ্রামেই থাকি। আমার গ্রামে কারেন্ট আসে যখন আমি ক্লাস টু তে পড়ি ওই 2009 সালের দিকে। এবং মোটামুটি আমার স্কুলটাও আমার বাড়ি থেকে দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে।আমি ওই এক ঘন্টা আগে বাড়ি থেকে বের হতাম।আমাদের গ্রুপের দুজন মেয়ে সহ আমরা চারজন ছিলাম।অনেকটা আপনার ছোটবেলার সাথে মিলে যায়।এবং খেলাধুলার কথা কি বলব খেলা ধুলার ক্ষেত্রে আমি সবসময় আমার দলকে নেতৃত্ব দিতাম। কারণ খেলাধুলার প্রতি ছোটবেলায় থেকে আমার একটা ঝোক ছিল।এবং খুব ভালো বুঝতাম। কিন্তু আমার নেতৃত্ব দেয়া খেলা এর অধিকাংশই আমরা হেরেছি। তবে হ্যাঁ যেদিন জিতেচি প্রতিপক্ষকে একেবারে গো হারান হারিয়েছি। এমন হয়েছে আমরা 11 জন ব্যাটিং 12 রানে আউট এবং বিপরীত দলকে 10 রানে অলআউট করেছি। তাহলে ভাবুন। এবং আমাদেরও প্রতিপক্ষ ছিল ছোটবেলা কিন্তু আমরা কখনো আপনার দলের মত ঐরকম সম্মুখ সমরে যায়নি। আপনার সাহস আছে বলতে হয় দাদা ওইটুকু বয়সেই সংখ্যালঘু হয়েও চোখে চোখ রেখে কথা বলা চাট্টিখানি কথা ছিল না।

 3 years ago 

সত্যিই শৈশবকাল টা তখনই মজার ছিল। গ্রামের শৈশবকাল খুবই মজাদার একটি মুহূর্ত। সন্ধ্যার সময় যখন কারেন্ট থাকতো না আমরা সকলে এক জায়গায় বের হতাম লুকোচুরি খেলতাম। কত আনন্দ কোন টেনশন ছিল না ভবিষ্যৎ নিয়ে। আসলেই গ্রামে অনেক আনন্দ উদযাপন হয়।আসলেই আপনারাই স্কুলে যাওয়ার জন্য অনেক কষ্ট পরিশ্রম করেছেন। এর জন্যই আজকে সফল।

ওদের দলের কেউ আম্পায়ার হলেই আমাদের শরীরের কোথাও বল টাচ করলেই এলবিডাব্লিউ আউট দিয়ে দিতো। অদ্ভুত

  • জোর যার মুল্লুক তার এটা মনে হয় ঘুষ দিয়ে করত। এটা খুবই অন্যায় আমাদের এখানেও হয়ে থাকে গ্রামাঞ্চলে। এটা বেশিরভাগ হয়ে থাকে গ্রাম অঞ্চলে। আউট দিতে চায়না।

তবে বেশিদিন আমি গ্রামে ছিলাম না । ক্লাস ফোরে উঠেই সেই যে শহরে পাড়ি দিয়ে চিরদিনের জন্য ইট বালি কংক্রিটের দেয়ালে বন্দী হয়ে গেলাম, আর কোনোদিন বেরোতে পারলাম না । গ্রামে আর ফেরা হয়নি কোনোদিন । মুছে গেলো জীবনের একটা বৈচিত্রময় অংশ ।

*সত্যি দাদা আসলে গ্রামের মুহূর্তরা খুবই মিস করছিলে। আপনি শহর অঞ্চলে চলে আসলেন চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি। খেলাধুলার জন্য কোন অবস্থায় থাকে না সবসময় রুমের ভীতর।

 3 years ago 

দাদা পুরোটা গল্প পড়তে আমার আধাঘন্টা সময় লেগেছে , আর এই আধা ঘন্টা সময়ে আমি চলে গিয়ে ছিলাম আপনার সেই শৈশব কালে , প্রতিটা কথা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছিলো , দাদা কতটা সুন্দর ছিল আপনার শৈশব কাল , আমি আজ পর্যন্ত অনেক গল্প পড়েছি কিন্তু কিন্তু দাদা এতটা মজা আমি পাইনি , দাদা আপনার ছোটবেলার প্রতিটা আচরণ দেখে বুঝা গেলো আপনি কতটা বুদ্ধিমতি আর ভালো মন মানুষিকতার মানুষ ছিলেন , আর এখনো আছেন। আমরা ও আপনার মতো ছোট বেলায় অনেক দুষ্টমি করেছি কিন্তু আপনার শৈশব কাল অনেক আলাদা আমাদের কাছ থেকে , অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা , আর কিছু বলার নেই।

 3 years ago 

দাদা আপনার নেতৃত্বগুণের এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে তা জানি তবে ছোটবেলা থেকেই যে নেতৃত্বগুণ আপনি অর্জন করেছেন তা সারাজীবন আপনার মাঝে বই থাকবে আরেকটা বিষয় হচ্ছে হিংসা বিদ্বেষ হানাহানি করে কখনো কারো মন জয় করা যায় না অন্যায় করে কখনো পাওয়া যায় না আপনি সব সময় সব ছিলেন ন্যায়ের পক্ষে ছিলেন বলেই আপনি সবার চোখের মনি হয়েছেন আর ছোট বয়সে অথবা আমাদের মেয়েদের ভিতরে এরকম দলাদলি ছিল না বললেই চলে খুব কম তারা এসব নিয়ে ভাবি না তবে ছেলেদের দেখতাম আমাদের কলেজগুলোতে দলাদলি চলত হানাহানি চলত ছেলেদের নামে অভিযোগ আসছে আমাদের কাছে এই অভিযোগটি তাদের ক্লাসের অধিকাংশ সময় ব্যয় করত অর্থাৎ প্রতিটি জায়গায় প্রতিটা সময় প্রতিটা স্টেজে বখাটে ছেলেদের থেকেই যাবে তাদের তুলনা করার জন্য আপনাদের মত যোগ্য ব্যক্তিরা সবসময় এগিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক ধন্যবাদ দাদা আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার শৈশব সম্পর্কে।

 3 years ago 

দাদা আপনার শৈশবের পড়তে পড়তে রবীঠাকুরের একটি গানের কয়েক টি লাইন মনে পড়ে গেল।

(আমার যে দিন ভেসে গেছে
নিবিড় সুখে, মধুর দুখে
জড়িত ছিল সেই দিন
দুই তারে জীবনের বাঁধা ছিল বীন)

আমাদের শৈশব ও কেটেছে ঠিক আপনার মতই অনেকটা । দাদা আপনার স্কুলের সাথী কিংবা ইন্দ্রর দলের সাথে আর কি কখনও দেখা হয়েছে ? আর কি কোন দিন গ্রামে যান নি ? এখন কি সেই নীরবতায় ঘেড়া রাস্তা টি আছে ? আপনার কি কখনও জানতে ইচ্ছে করে কিংবা দেখতে ইচ্ছে করে ?

সত্যি সুন্দর ভাবে বর্ননা করেছেন আপনার শৈশবের স্মৃতি বিজরিত দিন গুলো। ভাল থাকবেন দাদা । শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।