কুঞ্জবিহারীর নিকুঞ্জ - পর্ব ০৭
copyright free image source pixabay
ষষ্ঠ পর্বের পর
সাত
কুঞ্জবাবুর আশঙ্কাই সঠিক দেখা গেলো । কুকুরটির মালিকেরাই কুকুরটিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে তাকে শেষ করার জন্য । তারাই গুলি করেছে । কিন্তু, এই কুকুরটি একটা অসাধারণ কুকুর । সারমেয়প্রেমী কুঞ্জবাবু তাঁর সারা জীবনেও এমন অসাধারণ কোনো কুকুর দেখার কথা তো দূরে থাক, শোনেননি পর্যন্ত । তাহলে, তার মালিকেরা কেন এত উঠে পড়ে লেগেছে সেটিকে শেষ করতে ? কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না । সব কিছু কেমন যেন রহস্যের একটা ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া । এই কুয়াশার চাদর ছিন্ন না করলে কোনো কিছুই আর বোঝা সম্ভবপর নয় ।
এবার কুঞ্জবাবু পল্টু আর পাঁচুকে সবটা খুলে বললেন । পল্টু আগেই শুনেছিলো কুঞ্জবাবুর কুকুরপ্রাপ্তির বিষয়টি । সেই সাঁঝবেলায়ই । তাই মাঝরাত্তিরে ঝিলের ধারে ওই অদ্ভুত ঘটনা ঘটার সাথে সাথে সে আর পাঁচু সর্বপ্রথম ছুটে এসেছে কুঞ্জবাবুর কাছেই । সব কিছু খুলে বলার জন্য । কুঞ্জবাবুও পাঁচু আর পল্টুর কাছে তাই কিছুই আর গোপন রাখলেন না ।
রাইফেল, পিস্তল আর শটগানের গুলি খেয়েও যে কুকুর দিব্যি বেঁচে থাকে সেটি যে একটি অসাধারণ কুকুর এ ব্যাপারে পাঁচু আর পল্টুও একমত হলো । তারাও জীবনে এমন অসাধারণ কোনো কুকুরের কথা শোনেনি কোথাও । এরপরে কুঞ্জবাবু তাদেরকে সেই মাইক্রো ট্র্যাকার চিপটি দেখালেন ।
পল্টু আর যাই হোক মাধ্যমিক পাশ করা ছেলে । উচ্চ মাধ্যমিকে এখন সায়েন্স নিয়েই পড়ছে । সে লহমায় বুঝে গেলো কুঞ্জবাবুর আশংকার কথা । সত্যিই তো ঝিলের ধারে সেই বুড়োটে লোকটার হাতে একটা টিভি রিমোটের মতো যন্ত্র ছিল যেটা দিয়ে সে কুকুরটির অবস্থান ট্র্যাক করার চেষ্টা করছিলো । যন্ত্রটা সেই মুহূর্তে কোনো কারণে কাজ করছিলো না এটা ঠিক, কিন্তু তারা তো একদম নির্ভুলভাবে ঝিলের ধারে যেখানটায় কুকুরটিকে পাওয়া গিয়েছিলো সেখানে হাজির হতে পেরেছিলো ।
তাহলে, তো সেই দুর্বৃত্তের দল খুব শীঘ্রই কুকুরের খোঁজে কুঞ্জবাবুর বাড়িতেও হানা দিতে পারে । বিশেষ করে যখন ট্র্যাকার চিপটা হঠাৎই আবার সক্রিয় হয়েছে । কিন্তু, কিছুতেই এই অসাধারণ প্রাণীটিকে ওই দুর্বৃত্তদের হাতে অসহায়ের মরতে দেওয়া যায় না । কিছু তো একটা করতেই হবে । যে করেই হোক কুকুরটিকে বাঁচাতে হবে ।
কুঞ্জবাবু বিড় বিড় করে বললেন - "নিকুঞ্জ তোকে আমি যে করেই হোক বাঁচাবো ওদের হাত থেকে ।"
খুব দ্রুত ছোট্ট একটা মিটিং হলো তিনজনের মধ্যে । মিটিংয়ে সবাই মিলে রাজি হলো যে, সবার আগে ওই মাইক্রো চিপটাকে দূর করা উচিত । কুঞ্জবাবু মাইক্রো চিপটি পল্টুর হাতে দিয়ে বললেন -
"যা বাবা, এটাকে দূরে কোথাও ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আয় । বাড়ির বাইরে এমন কোথাও ফেল যাতে এর অবস্থান জানতে পারলেও বদমাশের দল এটাকে হাতে না পায় ।"
পল্টু মুহূর্তের মধ্যে চিপটি নিয়ে দরজা খুলে রাতের অন্ধকারে হাওয়া হয়ে গেলো ।
তার ইচ্ছে এটাকে নিয়ে গাঁয়ের পশ্চিমদিকের চন্ডী মণ্ডপের পাশে যে মজা দীঘিটা আছে ওটার মাঝখানে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া । মজা দীঘিটা এক সময় প্রকাণ্ড একটা জল টলটলে সুপেয় জলের দীঘি ছিল । এখন কালক্রমে দীঘির জল কমে অসংখ্য ঝোপঝাড়, শ্যাওলা, কলমি আর কচুরিপানার দামে ভর্তি হয়ে আছে । জল দেখাই যায় না । জলের চাইতে কাদা প্রচুর । অসংখ্য ঝোপঝাড়ে সাপের আড্ডা শুধু । ওখানে একবার ফেললে ছোট্ট এত্তটুকুন এই চিপটা খুঁজে বের করা এক প্রকার অসম্ভব ।
গাঁয়ের অন্ধকার রাস্তা দিয়ে যতটা দ্রুত ছোটা সম্ভব ততটা জোরে ছুটছে পল্টু । চণ্ডীমণ্ডপের থানটা এখনো বেশ কিছুটা দূরেই রয়েছে । ছুটতে ছুটতে পল্টু টের পেলো অন্ধকারের মধ্যে কেউ তার পিছু নিয়েছে । এক জোড়া ছুটন্ত পায়ের শব্দ পাচ্ছে সে প্রতিটা পদক্ষেপে ঠিক তার পিছু পিছুই । ছোটার গতি একটু বাড়ালো পল্টু । পিছনে পদশব্দের শব্দও সেই সাথে বাড়লো ।
নিঝুম শীতের রাতের ঘুমন্ত গাঁয়ের মেঠো পথ দিয়ে ছুটতে ছুটতে পল্টুর সর্বাঙ্গ দিয়ে ঘাম ছুটছিল । তার মাথায় শুধু একটা চিন্তাই আসছে - "লেজার গান আছে ওদের কাছে, আর ট্র্যাকার চিপটা এখন পল্টুর কাছেই রয়েছে । খুবই সহজ টার্গেট ।"
ওদের টার্গেট এখন পল্টুই । কথাটা ভাবতেই দারুন আতঙ্কে দিশেহারা পল্টু গতি বাড়িয়ে দিলো ছোটার ।
[ক্রমশ:]
পরিশিষ্ট
প্রতিদিন ২২৫ ট্রন করে জমানো এক সপ্তাহ ধরে - ৬ষ্ঠ দিন (225 TRX daily for 7 consecutive days :: DAY 06)
সময়সীমা : ২১ অগাস্ট ২০২২ থেকে ২৭ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত
তারিখ : ২৬ আগস্ট ২০২২
টাস্ক ৪১ : ২২৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
২২৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : 256f4998d4e7af8b0dc321cbd0ec18573ae51d0af5df87dd07b764d97ede99a5
টাস্ক ৪১ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
RME, Thank You for sharing Your insights...
পল্টু ভালোই ফাঁসা ফেঁসে গেলো। হুট করে কেন যে একা বেরিয়ে যেতে গেলো, এই মুহূর্তে ধীরে সুস্থে পদক্ষেপ নিতে হতো। পরের পর্বে কি যে হয়! আমার মনে হচ্ছে কুকুরটা নিশ্চই কোনো ধরনের এলিয়েন।
Thank You for sharing...
টান টান উওেযনা কাজ করছে,পড়ে বেশ মজা পাচ্ছি। কিন্তু এমন এক জায়গা শেষ করেন দাদা,পরবর্তী পর্ব না পড়া অব্দি শান্তি নাই। ভালো ছিলো।
Thank You for sharing...
এক্সাইটমেন্ট ধরে রাখার জন্যই তো এইভাবে শেষ করা।
পল্টু চিপ ফেলতে গিয়ে নিজেই বিপদে পড়লো। চিপ নিয়ে না ছুটে আশেপাশে ফেলে পালালেই তো পারে। এমন জায়গায় গল্প শেষ করলেন দাদা। পল্টুর কি হল না জানা পর্যন্ত তো শান্তি পাওয়া যাবে না।
পল্টুর জন্য অনেক দুশ্চিন্তায় পরে গেলাম দাদা। আদৌ কি সে বেঁচে ফিরতে পারবে নাকি কোন ভাবে রক্ষা পাবে?? কুঞ্জবাবু যদি এই বিষয়টি আগে থেকে একটু মাথায় রাখতেন তাহলে হয়তো পল্টুর এমন অবস্থা হতো না। তারপরও কুঞ্জবাবুর ও কিছু করার ছিল না। ট্রাকার টি বাসা থেকে না সরালে সেখানে দুর্বৃত্তরা চলে আসতে পারতো। খুব এক্সাইটিং একটা মুহূর্ত শেষ করলেন দাদা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।।
Thank You for sharing Your insights...
পড়ে খুবই ভালো লাগছিলো, পড়ে আর্কষণ বেড়ে চলছে, পরের পর্ব খুবই তাড়াতাড়ি আশা করছি দাদা...
এই যা পল্টুর জন্য তো এখন আমারই চিন্তা হচ্ছে। সত্যি ওরা পল্টুর পেছনে না অন্যকেউ। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম দাদা। অনেকদিন পর কুঞ্জবিহারীর নিকুঞ্জ সিরিজটা আবার চালু করার জন্য ধন্যবাদ।।
Thank You for sharing...
পল্টুর জন্য তো এবার ভয় হচ্ছে দাদা। জানিনা কি অপেক্ষা করছে ওর কপালে। অবলা প্রাণী টিকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের প্রাণ দিতে হবে না তো! পরের পর্ব টা এবার তাড়াতাড়ি চাই দাদা।
প্রিয় দাদা, কুঞ্জবিহারীর নিকুঞ্জ - পর্ব ০৭ পড়ে আমিও পল্টুর জন্য ভয়ে আতঙ্কে আছি। না জানি পল্টুর শেষ পর্যন্ত কি পরিণতি হয়।মাইক্রো চিপটাকে পল্টু কোথায় রাখে এবং পল্টুর শেষ পর্যন্ত কি পরিণত হয় তাই জানার জন্য পরবর্তী অপেক্ষায় রইলাম।
Thank You for sharing...
পল্টু এখন ভীষণ বিপদে সে শুধু ছুটেই চলছে। পল্টুর এমন অবস্থা গা শিহরিত হচ্ছে দাদা শেষমেশ যে কি হয় পল্টুর ।চিন্তায় পড়ে গেলাম। অষ্টম পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা। গল্পটা যতো পড়ছিলাম ততই ভালো লাগছিলো।