গল্প পড়ার থেকে এখন দিন দিন বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গল্প শোনা
Copyright Free Image Source: PixaBay
বই পড়া নেশা হলো পৃথিবীর সব চাইতে ভালো নেশা । এই নেশায় আমিও আক্রান্ত সেই ছোট্টবেলা থেকে । এই নেশায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আজ অব্দি একটা সিঙ্গেল ডে'তেও বই না পড়ে কখনো থাকতে পারিনি । আমি মনে করি বইয়ের নেশার চাইতে সুখকর নেশা পৃথিবীতে আর একটিও নেই । আমি সব ধরণের বই পড়তে ভালোবাসি । এদিক থেকে বলা ভালো যে আমি একজন সর্বভুক বই-পোকা । সব রকম বই-ই আমার পড়তে ভালো লাগে । তবে বেশি ভালো লাগে - বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রবন্ধ, প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল, ম্যাথের মজার প্রবলেম নিয়ে বই, ইতিহাস, গল্পের বই (বিশেষ করে শিশু-কিশোর সাহিত্য), উপন্যাস, কবিতা, নাটক, ভ্রমণ কাহিনী, অনুবাদ সাহিত্য সব ।
তবে, সব চাইতে বেশি পড়া হয় বাংলা ভাষার শিশু-কিশোর সাহিত্য । রহস্য-রোমাঞ্চ, কল্পবিজ্ঞান, ভূত-প্রেত-পিশাচ, অলৌকিক গল্প, গোয়েন্দা গল্প, এডভেঞ্চার কাহিনী - এসবই বেশি টানে আমাকে । বোধ হয় শুধু আমাকে নয়, সব বয়সী পাঠক=পাঠিকাকেও এসব বই-ই বেশি টানে । ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের গ্রামের বাড়িতে প্রায় ১৬,০০০ বই ও দেশি-বিদেশী পত্র-পত্রিকার গৃহ-লাইব্রেরি । সেই সময় থেকেই বইয়ের প্রতি আমার একটা অসম্ভব ভালোবাসার টান তৈরী হয় । নামি-দামি ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনের পাতা উল্টে রঙিন ঝকঝকে ছবি দেখতাম আমরা দু'ভাই । তখন বুঝিনি, বাট এখন বুঝতে পারি যে কত দেশি-বিদেশী রেয়ার পত্রিকা ছিল আমাদের বাড়িতে । সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো আমার সাত বছর বয়সে ।
বড় হয়ে বইয়ের নেশা আরো তীব্রতর হয়েছে । তাই বই কিনেছি দেদার । আমার বাড়িতে এখন মোট বই-পত্র-পত্রিকার সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের মতো । কিছু এখানে আছে, আর কিছু দাদার বাড়িতে । যখন আমি মাধ্যমিক দেই সেই সময় ধীরে ধীরে পিডিএফ খুব জনপ্রিয় হওয়া শুরু করে । বাড়িতে ইন্টারনেট আসার পরে আমিও শুরু করি দেই বিভিন্ন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড করা । অসংখ্য ব্লগ সাইটে তখন সব বইয়ের পিডিএফ পাওয়া যাচ্ছিলো । আমিও ধুমিয়ে ডাউনলোড করা শুরু করি । এই সময় "আমাজান কিন্ডল ফায়ার" নামে ই-বুক রিডার পাওয়া যেত বাজারে । প্রচুর দামি ছিল এই ডিভাইস । তখনকার সময় মোটামুটি কনফিগারেশনের একটা পার্সোনাল কম্পিউটারের দাম ছিল চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার । আর একটা "আমাজান কিন্ডল ফায়ার" ই-বুক রিডারের দাম ছিল ২৫,০০০-৩৫,০০০ টাকার মতো ।
আমার বই পড়ার আগ্রহ দেখে এই মহার্ঘ্য ই-বুক'টি কিনে দেয় আমার দাদা (বড় ভাই) । কমিক্স পড়তে খুবই ভালোবাসি আমি চিরকাল । ওই সময়টাতে টিনটিন আর অরণ্যদেবের কমিকসের প্রচুর পিডিএফ পাওয়া যেতো অনলাইনে । সব ডাউনলোড করে কিন্ডল ফায়ারে পড়তাম । এত জনপ্রিয় পিডিএফ এবং ই-বুক রীডারে এখন ধীরে ধীরে ভাঁটা পড়ছে । তার স্থলে জায়গা করে নিচ্ছে । অডিও বুক স্টোরি । মানুষের ব্যস্ততা এখন আরো বেড়েছে । বই খোলার সময় কোথায় তাদের ? ই-বুক পড়ার সময়ও তো অন্য কাজ করা যায় না । কাজের চাপে মানুষ এখন মাল্টি-টাস্কিংয়ে অভ্যস্ত হচ্ছে । আর তাই, পিডিএফ আর ই-বুক রীডারকে রিপ্লেস করছে এখন অডিও বুক ।
বই পড়া, গল্প পড়ার চাইতে মানুষ তাই এখন ঝুঁকেছে গল্প শোনার দিকে । ইউটিউবে প্রচুর কনটেন্ট ক্রিয়েটর আছে এই অডিও বুক স্টোরি তৈরির কাজে । তারা তাদের সেরাটা দিয়ে অডিও বুক বানাচ্ছে, শুধু রীডিং পড়া নয়, দস্তুরমতো অভিনয় করে করে গল্পের বিভিন্ন চরিত্রদেরকে ফুটিয়ে তুলছে খুব নিখুঁতভাবে । যান্ত্রিক সংগীতের আবহে গল্পের মেজাজও বহুগুনে বৃদ্ধি পাচ্ছে । একজন নয় অনেকজন মিলে একটা গল্প পাঠ করে । চরিত্রদের বিভিন্ন গলা ফুটিয়ে তোলা থেকে শুরু করে গল্পের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে গল্পের গতি বুঝে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সেট করা থাকছে । এসব অডিও গল্প শুনলে চোখের সামনে সব চরিত্রকে দেখতে পাওয়া যায় যেনো । আর অডিও হওয়াতে গল্প শুনতে শুনতে দিব্যি অন্য কাজও করা যাচ্ছে ।
আর তাই সময়ের সাথে সাথে গল্প পড়ার চাইতে মানুষ গল্প শোনার দিকে বেশি ঝুঁকেছে ।
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)
তারিখ : ১০ মার্চ ২০২৪
টাস্ক ৫২৩ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : bbe86ae35bfbc02f7211ef923acf998ed244e982189efa39aa3d066d507843c5
টাস্ক ৫২৩ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনি সত্যিকারের একজন বই পোকা, যতই জানছি ততোই মুগ্ধ হচ্ছি। যদিও আমি খুব একটা বই পড়ার সুযোগ পাইনি জীবনের তাগিদে। তবুও একটা সময় অনলাইনে বই পড়ার চেষ্টা করতাম, এখনতো সেটাও হয়ে উঠে না। হ্যা, এখন আর আমরা পড়তে চাই না, শুনতে চাই এবং তাতে মনোযোগটা বেশী থাকে। অনেক ধন্যবাদ
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Congratulations, your post has been upvoted by @upex with a 42.47% upvote. We invite you to continue producing quality content and join our Discord community here. Keep up the good work! #upex
This is great, reading several niche of books helps to widen our scope and knowledge.
Now I understand why you have so much knowledge on so many things.
I will endeavor to develop the habit of reading too, thank you so much Dada for sharing this with us 😊❤️❤️❤️
আমার বই পড়ার শুরুও আপনার মত করেই হয়,তবে আমার মামার বাড়িতে ছিল বইয়ের সংগ্রহ। সেখান থেকেই আগ্রহ জন্মে। আর আমি ইবুক পড়ার জন্য ট্যাব কিনেছিলাম একটি। এখন সময়ের অভাবে, আর বইয়ের দামের কারনে অডিও স্টোরি ই ভরসা। প্রত্যেক রাতে ঘুমানোর আগে বই পড়ার বদলে অডিও গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাই। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর আর্টিকেল টির জন্য।
বর্তমান অডিও বুক স্টোরি গুলো খুব চলে।মানুষ যেহেতু মাল্টি টাস্কিং এ এখন বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তাই ইউটিউব এ এধরনের প্রচুর কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাজ করে যাচ্ছেন।মানুষ গল্প পড়ার চেয়ে শুনতে পছন্দ করেন ইদানিং সব ক্যারেক্টার গুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে যখন অডিও ই বুক শোনা হয়। এটা ঠিক বলেছেন, বই পড়ার চেয়ে ভালো নেশা পৃথিবীতে আর কিছু নেই।আমাদের বর্তমান জেনারেশন এর এই অভ্যাস টাই নেই।ভালো লাগলো পুরো লেখাটি।ধন্যবাদ দাদা সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.
দাদা আপনি তো বেশ বইপোকা ছিলেন। বইয়ের প্রতি আপনার এত আগ্রহ দেখি আমার একজন বাংলা সাহিত্যিকের নাম মনে পড়ে গেল। আপনার মত তিনিও ছিলেন বেশ বইপোকা। আর এখনকার যুগে তো আর বই পড়ার সময় নেই মানুষের। আপনার বই পড়ার যে এত আগ্রহ তা এই পোস্ট না পড়লে হয়তো অজানায় থেকে যেত। ধন্যবাদ দাদা এত তথ্যবহুল একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
তোমাদের সেই বাড়ির লাইব্রেরিটি তো যেকোনো বড়ো মাপের লাইব্রেরিকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখতো। ১৬,০০০ বই! বাপরে বাপ।
আমার মনে হয় যেহেতু লোকের হাতে সময় খুব তাই গল্প শোনার দিকে অনেকে ঝুঁকেছেন।
দাদা সেই কিন্ডলটি কি এখন আছে?
তাহলে তো আপনাদের গ্রামের বাড়ির গৃহ-লাইব্রেরিতে প্রচুর বই এবং পত্রিকা ছিলো একসময়। সেজন্যই ছোটবেলা থেকে বই পড়ার আগ্রহ আপনার অনেক বেশি। তবে এটা ঠিক বর্তমানে অডিও বুক স্টোরি গুলোর চাহিদা অনেক বেশি। কারণ গল্প পড়ার পাশাপাশি অন্য কোনো কাজ করা যায় না। কিন্তু গল্প শুনতে শুনতে অনেক কাজ করে ফেলা যায়। আমিও ২/৩ বছর আগে ইউটিউব থেকে অনেক গল্প শুনেছি। বিশেষ করে রোমান্টিক গল্প গুলো বেশি শুনতাম। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো দাদা। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।