শৈশবের ফেলা আসা দিনগুলির স্মৃতি - "ছোট্টবেলায় হারিয়ে ফেলা নিজেকে"
Copyright Free Image : Source - PixaBay
এত দিন ধরে আমার নিজের ছেলেবেলার বহু মজার স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি । এতে আমি খুবই আনন্দ পাই । আমি মনে করে মানুষের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময় হলো তার শৈশব বেলা । শৈশবের এই সব স্মৃতি রোমন্থন করে আমি যে পরিমান আনন্দ লাভ করি তেমনটা আর কোনো কিছুতেই পাই না এখন । বয়স বাড়ছে আর সেই সাথে বাড়ছে শৈশব বেলা ফিরে পাওয়ার আকুতি ।
আজ থেকে তাই একটা নতুন সিরিজ চালু করলাম - "শৈশবের ফেলা আসা দিনগুলির স্মৃতি" । এটাকে "আমার বাংলা ব্লগ"-এ ট্রেন্ড করার দ্বায়িত্ব আপনাদেরই । আপনারাও আজ থেকে এই সিরিজে নিজেদের ফেলা আসা শৈশব-কৈশোরের মধুর স্মৃতি শেয়ার করতে শুরু করে দিন । তাহলে "আমার বাংলা ব্লগ" সমৃদ্ধ হবে আরো কিছু মণি মাণিক্যের ভীড়ে । আপনাদের ছোট্টবেলার সেই সব মধুর স্মৃতি পাঠ করতে পেরে আমারও এক অনাবিল আনন্দ লাভ করতে পারবো ।
আজকের যে স্মৃতিটা শেয়ার করতে চলেছি সেটা আমার একদমই ছোট্টবেলাকার । খুবই আবছা স্মৃতি মনে আছে । তবে তার সাথে কিছুটা কল্পনা আর বাবা-মায়ের মুখ থেকে পরবর্তীতে শোনা কথাগুলো জুড়ে দিলে বেশ চমৎকার একটি গল্প পাওয়া যায় । তো শুরু করছি আমার সেই ছোট্টবেলার একটি মজার ঘটনা ।
তখন আমি ছোট্ট, খুবই ছোট্ট । হাঁটতে পারি, কথাও বলতে পারি পুরো । স্কুলেও ভর্তি হয়েছি । তবে, ক্লাস ওয়ানের নীচে । এমন সময়েই এই ঘটনাটি ঘটে যায় । বছর পাঁচেক মনে হয় বয়স তখন আমার । আমার বাবা থাকতেন শহরে । আমরা থাকতাম গ্রামে । বাবা শহরের স্কুলে শিক্ষকতা করতেন । আমাদের গ্রাম থেকে শহরের দুরুত্ব ছিল প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটারের মতো । এ জন্য বাবা সপ্তাহের পাঁচদিন শহরে আর দেড় দিন গ্রামে কাটাতেন । আমার ক্লাস ফোরে পড়ার সময়ে পাকাপাকিভাবে শহরে চলে আসি সবাই ।
তো, একদিন বাবা পুজোর ছুটিতে আমাদের সবাইকে শহরে নিয়ে এলো পুজোর জামা কাপড় কেনার জন্য । আমার ভাই তখন খুবই ছোট্ট । বছর দু'য়েক হবে মোটে বয়স । তাই তাকে কোলে নিয়েই রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করতে হতো । তো এবার আসি মূল ঘটনায় । শহরে আসার পরের দিন আমরা সবাই বের হলাম পুজোর কেনাকাটা করতে । কেনা কাটা শেষে আমরা যাবো দাদু বাড়ি । আমার দাদু বাড়ি ছিল একদমই শহরের কাছে । পাঁচ কিলোমিটার দূর মোটে ।
তো, আমাদের সবাইকে চৌরাস্তার মোড়ে রেখে বাবা গেলো টিকিট কাটতে । আমি, মা আর আমার ভাই রয়ে গেলাম রাস্তার ধারের যাত্রী ছাউনিতে । ভাই মায়ের কোলে দুধ খাচ্ছে এই সুযোগে আমি গুটি গুটি পায়ে চলে গেলাম সেখান থেকে । চৌ রাস্তার মোড়ের উপরেই একটা বড় দোকান । আমি গিয়ে সেই দোকান থেকে কেনাকাটায় বিজি । আর এদিকে আমার মা আমায় না পেয়ে পাগলের মতো খোঁজাখুঁজি করতে লাগলো ।
মানুষের ভীড়ে আমার ছোট্ট শরীর হারিয়ে গেছে বেমালুম । যাত্রী ছাউনির খুব কাছের দোকানেই আমি তখন কেনাকাটায় খুব ব্যস্ত । এর মধ্যে বাবা ফিরে এসেছে টিকিট কেটে । সব শুনে বাবাও কেমন জানি হয়ে গেলো । প্রথমে তো বসেই পড়লো রাস্তার ধুলোর ওপর । বেশ কয়েকজন মানুষ ছুটে এলো বাবার কাছে । সবাই ভেবেছে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছে । পরে সব শুনে বাবার সাথে সাথে তারাও খোঁজ লাগালো আমার ।
এবং অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আবিষ্কার করলো আমাকে । আমি তখন দোকানদারের সাথে ভাব জমিয়ে ফ্রীতে দু'পকেট বোঝাই করেছি চকলেট আর লজেন্সে । আর অনর্গল কথা বলে যাচ্ছি দোকানদার আর তার বউ এর সাথে । এই অবস্থায় পাকড়াও হলুম আমি । আমাকে বুকে জড়িয়ে সেদিন আমার মায়ের অমন কান্না দেখে আমিও নাকি ভ্যাঁ করে কেঁদে দিয়েছিলাম ।
উপরের পুরো ঘটনাটাই একটু বড় হয়ে মা-বাবার মুখে বহুবার শুনেছি । কারণ, আমার প্রায় কিছুই মনে নেই এই ঘটনার । শুধু আবছা মনে আছে একা একা দোকান থেকে কিছু কিনছি আর একটু পরে আমার মা এসে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছে । ব্যাস এইটুকু শুধু মনে আছে আমার ।
------- ধন্যবাদ -------
পরিশিষ্ট
আজকের টার্গেট : ৫২৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 525 trx)
তারিখ : ০৯ আগস্ট ২০২৩
টাস্ক ৩৫০ : ৫২৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron
আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx
৫২৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :
TX ID : d6b75133b17d6e766d301950cea1fd6b0fca7eca922aaa30c20d24c7dddc5cc7
টাস্ক ৩৫০ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি
Account QR Code
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আসলেই শৈশব স্মৃতিগুলো যেমন মধুর হয় তেমনি কোনো বেদনা ভরা ঘটনার হয়।তবে সেটা কখনো মন থেকে মুছে ফেলা যায় না।আপনার বাবা মায়ের মুখ থেকে আপনার স্মৃতিগুলো শুনে সেই শৈশবকে চোখের সামনে অনুধাবন করা যায় বারবার।চকলেট আর লজেন্স এ পকেট ভর্তি বিষয়টি পড়ে মজা লাগছিল কিন্তু শেষটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল।শৈশবের ঘটনাগুলি এমনই হয় কিছু মজার আমাদের কাছে কিন্তু বাবা মায়ের জন্য চিন্তার।ধন্যবাদ দাদা।
ওক্কেে বস্। আমিও শুরু করে দিব এরকম একটা সিরিজ। এটা কিন্তু সত্যি, ছোট বেলার স্মৃতিময় কোন মুহুর্তের গল্প মনে আসলে সেই সময়ে ফিরতে ভিষণ ইচ্ছে হয়। আর কারোর কাছে সে গল্প শেয়ার করার মুহূর্তে অনেক এক্সাইটমেন্ট কাজ করে।
আপনার চকলেট নেয়ার ঘটনাটা কিন্তু সেই ছিলো। 😅
ছোটবেলার স্মৃতিগুলো এখন মনে এলে খুব ভালো লাগে দাদা।কেমন যেনো এক অজানা ভালো লাগা ভর করে।আসলে বাস কাউন্টার বলেন আর ট্রেন এর কাউন্টার ই বলেন এসব জায়গায় নানা জায়গার মানুষ আসে।তাই হয়তো মা ভেবেছে ছেলে আমার হারিয়ে গেছে। এজন্য ই পেয়ে কেঁদে ফেলেছিল।তবে বোঝা যাচ্ছে দাদা আপনি ছেলেবেলা থেকেই খুব আলাপী মানুষ। খুব ভালো লাগলো। আমি আপনার ছেলেবেলার গল্প পড়তে পড়তে আপনাকে ওই ঘটনায় কল্পনা ও করছিলাম।🫣অনেক ধন্যবাদ দাদা ঘটনাটি শেয়ার করার জন্য।
আসলেই শৈশব হচ্ছে একটি মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। মাঝে মধ্যে সত্যিই খুব ইচ্ছে করে শৈশবে ফিরে যেতে। কিন্তু সেটা তো কোনভাবেই সম্ভব নয়। যাইহোক আপনি তো দাদা সেই ছোটবেলা থেকেই গল্প গুজব করতে খুব পছন্দ করতেন দেখছি। কেনাকাটা করতে করতে দোকানদার এবং তার বউয়ের সাথে ভালোই ভাব জমিয়েছিলেন। এদিকে তো আপনাকে খুঁজে না পেয়ে, আপনার বাবা মা খুবই দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কারণ এমন ভিড়ের মধ্যে বাচ্চারা প্রায়ই হারিয়ে যায়। যাইহোক গল্পটি পড়ে দারুণ লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ছোটবেলার স্মৃতি গুলো সত্যি অনেক মধুর হয়। তবে আমরাও যদি আমাদের ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো শেয়ার করি তাহলে সত্যি অনেক ভালো হবে দাদা। যাই হোক দাদা আসলে এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের মনের অবস্থা ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। উনারা তো বেশ দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এরকম অনেক স্মৃতি আছে। দাদা ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।
জ্বী দাদা আমরা সবাই মিলে যদি নিজের শৈশবের স্মৃতিগুলোতে তুলে ধরি তাহলে এই সিরিজটি ট্রেন্ড করা কোন ব্যাপারই না, তাছাড়া সকলের গল্প/স্মৃতিগুলো পড়ে দারুণ আনন্দ উপভোগ করা যাবে। এতো ছোট বয়সের ঘটনা এখনো আপনি মনে রেখেছেন সেটা শুনেই বেশী অবাক হয়েছি। ধন্যবাদ
শৈশব হচ্ছে প্রতিটি মানুষের জীবনের সবথেকে মধুময় একটি সময়। দাদা আপনার ছোটবেলার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। তবে গল্পটি পড়ে এতটুকু বুঝতে পারলাম আপনি ছোটবেলা থেকেই গল্প গুজব করতে পছন্দ করেন।
এইরকম একটি সময়ে বাবা-মার মনের অবস্থা
খুবই খারাপ থাকে । কারণ যে কোন মুহূর্তে একটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। তাইতো মা সন্তানকে ফিরে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিল। ভালো লাগলো দাদা গল্পটি পড়ে। ধন্যবাদ দাদা আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
হ্যাঁ দাদা আমার ও গতকাল এই ধরনের ভাবনাটা মাথায় চলে আসে। শৈশবের স্মৃতিগুলো পর্ব আকারে শেয়ার করলে স্মৃতিচারণ করলে নিজের কাছে ভালো লাগবে। যেমনটা আপনি আজকে আপনার শৈশবের পূজোয় মার্কেট করতে গিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আসলে এই ধরনের ঘটনাগুলো বাবা-মা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে এবং এমন এক পর্যায়ে আসে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। যাই হোক আপনাকে খুঁজে পেয়েছে সেই মুহূর্তে আপনিও কেঁদে দিয়েছেন হাহাহা।
আসলেই, যে কোন মানুষের শৈশব ই বোধ হয় সবচেয়ে ঘটনাবহুল সময়। আবার সবচেয়ে মধুর সময়ও... সবাই মিলে নিজেদের শৈশবের ঘটনা শেয়ার করলে ট্রেন্ডিং এ আনা কোন ব্যাপার ই না। আর এধরণের ঘটনাগুলো বেশিরভাগ সময় মজাদারই হয়, তাই পাঠিকরাও বেশ উপভোগ করবে...
আসলে দাদা শৈশবের স্মৃতিগুলো কার না ভালো লাগে প্রত্যেকটি মানুষের কাছে তার শৈশবের স্মৃতিগুলো মনে পড়লেই বেশ ভালো লাগে। আসলে দাদা আপনার পোস্টে পড়ে জানতে পারলাম ছোটবেলা থেকেই আপনি গল্প গুজব করতে বেশ ভালোবাসেন। পুজোর সামনে আপনারা কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন শহরে জেনে বেশ ভালো লাগলো। সেখান থেকে আপনারা আপনার দাদুর বাসায় গিয়েছিলেন তাও জানতে পারলাম শহর থেকে আপনার দাদুর বাষা পাঁচ কিলোমিটার দূরে। আসলে দাদা ছেলে মেয়েদের নিয়ে যদি বাবা-মা এরকম ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়ে তাহলে সেই সময় তাদের অনেক টেনশন এবং মানসিক চাপ কাজ করে। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে ছোটবেলার কাহিনী শেয়ার করার জন্য দাদা।