প্রাণিজগতের কিছু অজানা বিস্ময়কর তথ্য

in আমার বাংলা ব্লগ4 years ago (edited)

সবার আগে মানুষ কুকুরকে পোষ মানায়, বিজ্ঞানীদের মতে কুকুরের সাথে মানুষের বন্ধুত্ব সেই Pleistocene যুগ থেকে; তার মানে আড়াই লক্ষ বছর আগে থেকেই কুকুরের সাথে মানুষের মিতালী । শিকারের কাজে প্রাচীন যুগের মানুষ কুকুরদের ব্যবহার করত । এখনও কিছু কিছু আদিবাসী শ্রেণীর মানুষ কুকুদের শিকারের কাজে লাগায় । এই ২,৫০,০০০ বছর পরেও কুকুরের মানুষের প্রতি প্রভুভক্তি আর বিশ্বস্ততা বিন্দুমাত্র কমেনি ।

কুকুরের পরেই আছে ছাগল জাতীয় প্রাণীরা , প্রায় ১০,০০০ বছর পূর্বে মানুষ এদের গৃহপালিত প্রাণী হিসাবে গ্রহণ করে ।

এর পরে কোন জন্তুর অবস্থান বলতে পারেন ? গরু? ঘোড়া ? নাকি বিড়াল ? এদের কোনোটাই নয় । চিতা । হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, প্রায় ৫,০০০ বছর পূর্বে মানুষ চিতা পুষত শিকারের কাজে লাগানোর জন্য ।

মানুষ সব চাইতে বুদ্ধিমান প্রাণী, কিন্তু আপনি জানেন কি মানুষের প্রায় কাছাকাছি বুদ্ধিমান প্রাণী কী ? বানর জাতীয় প্রাণী ভাবছেন ? যেহেতু মানুষের উৎপত্তি বানর থেকেই তাই বানর জাতীয় প্রাণীই মানুষের পরে সব চাইতে বুদ্ধিমান প্রাণী হবে; কি ঠিক তো ? কিন্তু, দুঃখের বিষয় এটা সম্পূর্ণ ভুল । মানুষের পরে বুদ্ধিমত্তায় শীর্ষে অবস্থানকে করছে কোনো বাঁদর জাতীয় জীব নয়, কোনো স্থলচর জীব-ই নয়, জলচর জীব । জলচর , কিন্তু তারাও স্তন্যপায়ী জীব । হ্যাঁ , তারা আর কেউ নয় , তারা হলো ডলফিন বা শুশুক জাতীয় প্রাণী।এদের মধ্যে আবার কিছু প্রজাতি তিমি জাতীয় , যেমন Killer Whale বা খুনে তিমি । ডলফিন আবার মানুষের পরম বন্ধু । সমুদ্রে বিপদগ্রস্ত নাবিকদের এরা হাঙর জাতীয় হিংস্র জলচর প্রাণীদের হতে রক্ষা করে ।

আপনি জানেন কি কুমির, ঘড়িয়াল, কচ্ছপ, তিমি, ডলফিন, জলার সাপ এই সব জলচর প্রাণীও কিন্তু আমাদের মত স্থলচর প্রাণীদের মত জলে ডুবে মারা যেতে পারে । কি অবাক হচ্ছেন তো ? আসলে এই সব প্রাণীগুলো জলচর হলেও মৎস্য জাতীয় প্রাণী নয় , অর্থাৎ এরা কেউই Pisces শ্রেণীভুক্ত নয়, এদের কেউ mammalia শ্রেণীর (যেমন - তিমি, ডলফিন), কেউ reptiles (যেমন - কুমির, কচ্ছপ) বা কেউ amphibians (যেমন - অ্যানাকোন্ডা) ।এরা দীর্ঘক্ষণ জলে থাকতে পারে ঠিকই , কিন্তু জলে ডুবে মরার সম্ভাবনাও থাকে । যেমন তিমি , তিমি একটানা ৪০ মিনিট জলের নিচে ডুবে থাকতে পারে কিন্তু তারও বাতাস থেকে নিশ্বাস নেয়া লাগে, তাই কোনো কারণে বাতাস থেকে নিশ্বাস নিতে না পারলে তিমির ঘটে সলিল সমাধি । তাই তো তিমি বাচ্চা জন্ম দেয়ার পরে থেকে থেকে পাখনা দিয়ে বাচ্চা কে জলে উপরে তুলে দেয় যাতে সদ্যজাত বাচ্চা বাতাস থেকে টাটকা অক্সিজেন নিতে পারে ।

বাঘের গায়ে যে কালো কালো ডোরা কাটা দাগ থাকে সেটা কি শুধুই তাদের গায়ের লোমের উপরে থাকে ? না ! আসলে বাঘের গায়ের এই রাজকীয় ডোরা কাটা দাগ তাদের চামড়ার উপরেও থাকে । যদি বাঘের লোম কামিয়ে দেয়া হয় তবে ওই ডোরা গুলো দৃশ্যমান হবে । আশ্চর্য !!! তাই না ?

জেব্রা র চামড়া হলো পুরোপুরি কালো । আর চামড়ার উপরের কোট টা হলো কালোর উপরে সাদা ডোরা । একটা জেব্রা'র সাদা-কালো ডোরার প্যাটার্ন এর সাথে পৃথিবীর আর কোনো জেব্রা'র ডোরা'র প্যাটার্নের মিল নেই; পুরোপুরি ভিন্ন প্যাটার্ন । ঠিক যেমন আমাদের হাতের আঙুলের ছাপ, বাঘের গায়ের ডোরা, কুকুরের নাকের ছাপ ইত্যাদি একেবারে ইউনিক, একটার সাথে আরেকটার কোনও মিল নেই ।

আজ আর বেশি কিছু লিখলাম না । এই পর্যন্তই থাক, কাল আবার চেষ্টা করবো কিছু লিখতে । শুভ রাত্রি ।

Sort:  
 4 years ago 

সুন্দর কিছু তথ্য দিয়েছেন ভালো লাগলো প্রাণী জগত সম্পর্কে জানতে পেরে । বিশেষ করে তিমির বিষয়টি আমার ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 years ago 

অনেক ধন্যবাদ ।
বাঘের ছবি যখন দিয়েছি তখন বাঘ সম্বন্ধেও একটা তথ্য যোগ করে দেই -

বাঘের গায়ে যে কালো কালো ডোরা কাটা দাগ থাকে সেটা কি শুধুই তাদের গায়ের লোমের উপরে থাকে ? না ! আসলে বাঘের গায়ের এই রাজকীয় ডোরা কাটা দাগ তাদের চামড়ার উপরেও থাকে । যদি বাঘের লোম কামিয়ে দেয়া হয় তবে ওই ডোরা গুলো দৃশ্যমান হবে । আশ্চর্য !!! তাই না ?

ভাইয়া, জেব্রার গায়ের চামড়ার বৈশিষ্টও তো একই রকম। তাই নয় কি?🙃

 4 years ago 

জেব্রা র চামড়া হলো পুরোপুরি কালো । আর চামড়ার উপরের কোট টা হলো কালোর উপরে সাদা ডোরা । একটা জেব্রা'র সাদা-কালো ডোরার প্যাটার্ন এর সাথে পৃথিবীর আর কোনো জেব্রা'র ডোরা'র প্যাটার্নের মিল নেই; পুরোপুরি ভিন্ন প্যাটার্ন । ঠিক যেমন আমাদের হাতের আঙুলের ছাপ, বাঘের গায়ের ডোরা, কুকুরের নাকের ছাপ ইত্যাদি একেবারে ইউনিক, একটার সাথে আরেকটার কোনও মিল নেই ।

 4 years ago 

এইটাও জানা ছিল না আমার । ভালো তথ্য দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

মানুষের পরে সবচেয়ে কাছাকাছি প্রাণীটি সত্যিই ডলফিন। আর ডলফিন এর মস্তিস্ক মানুষের মস্তিস্কের চেয়ে আকারে বড়। এদের জটিল আচরণের জন্যই প্রাণী বিজ্ঞনীদের কাছে প্রমাণিত হয়েছে । ধন্যবাদ ভাইয়া, এই ইনফোরমেটিভ লেখাটির জন্য। 😀😀😀

 4 years ago 

একেবারে সঠিক

 4 years ago (edited)

খুবই জানা অজানা তথ্য নির্ভর পোস্ট।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 4 years ago 

প্রাণীজগৎ সম্পর্কে অনেক সুন্দর একটি বর্ণনা দিয়েছেন। অনেক অজানা কিছু বিষয় জানতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ প্রাণী সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরার জন্য।