নারিকেলের ফোঁপরা আমার খুবই প্রিয় একটা খাবারsteemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগlast year

IMG_20230919_141529.jpg


বহুদিন পরে আজকে হঠাৎ সে জিনিসটি পেলাম । একটা সময় ছোটবেলায় খুব খেতাম এই জিনিস । আমাদের বাড়িতে ছোটবেলায় দেখেছি শীতকালে প্রচুর নারিকেল পাড়া হতো । আমাদের বাড়িতে প্রচুর নারিকেল গাছ ছিল । যখন নারিকেল পাড়া হতো তখন আমাদের উঠোনে পাহাড়ের মতো উঁচু হয়ে থাকতো অসংখ্য নারিকেল ।

পরবর্তীতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সকাল থেকে সন্ধ্যে অব্দি শুধু নারিকেলের ছোবড়া ছাড়ানো, নারিকেল ভাঙা আর নারিকেল শাঁস কেটে বের করা হতো । ঝুনো নারিকেল, আধ ঝুনো নারিকেল আর কিছু ডাব ঝুনোর মাঝামাঝি নারিকেল পাড়া হতো । মূলত ঝুনো নারিকেলের শাঁস বের করে সেগুলো রোদে বেশ কেয়েকদিন ধরে শুকিয়ে তেলের ঘানিতে নিয়ে গিয়ে নারিকেল তেল বের করা হতো ।

এই ভাবেই হাজার হাজার নারিকেলের শাঁস বের করা দেখতাম আমরা উঠোনে দাঁড়িয়ে । এই সময় ঝুনো নারিকেলের পেটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফোঁপরা পাওয়া যেতো । এই ফোঁপরাগুলো বিরাট একটা ধামায় করে রাখতো আমাদের বাড়ির কিষানেরা । আর আমরা ছোটরা সেগুলো কাড়াকাড়ি করে খেতাম । তবে কয়েক ধামা ফোঁপরা হতো তাই খুব সামান্যই শেষ করতে পারতাম আমরা ।

বাকি ফোঁপরা দিয়ে প্রচুর মজাদার খাবার তৈরী করতো দিদিমা আর মা মিলে । ফোঁপরার মিষ্টি, ফোঁপরার পিঠা, ফোঁপরা ভাজা, ফোঁপরা দিয়ে ডিমেলি চিংড়ির মালাইকারি, ফোঁপরার টক ইত্যাদি । তবে আমার কাছে এমনি কাঁচা ফোঁপরাই ভালো লাগতো । হালকা নোনতা মিষ্টি ক্রিম স্বাদের এই নারিকেল ফোঁপরা যেন অমৃত ছিল আমাদের কাছে ছোটবেলায় । তবে মা বেশি খেতে দিতো না । বলতো পেট কামড়াবে বেশি খেলে ।

আজকে বহুদিন পরে আবার নারিকেল এর ফোঁপরা খেলাম । আঃ সেই স্বাদ !

IMG_20230919_141547.jpg

আমাদের গ্রামে নারিকেলের ফোঁপরার লোকাল নাম ছিল "ফোল" বা "পোল" । শীতকালে নারিকেলের পোলের মতো আর কিছু এমন মজাদার খাবার ছিল আমাদের ছোটবেলায় । নারিকেলের ফোঁপরার মতোই স্বাদের ছিল তালের আঁটির শাঁস । ভাদ্র মাসের পাকা তালের আঁটি তাল খাওয়ার পরে একটা ভেজা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় ডাঁই করে রাখা হতো । কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে সেই আঁটির থেকে শেকড় বের হতো । তবে আশ্বিন মাসে পুজোর সময়েও অনেকগুলোর শেকড় বেরিয়ে যেতো । তখন সেগুলো তুলে ভালো করে পরিষ্কার করে মাঝখান থেকে কেটে ফেললেই তালের আঁটির ফোঁপরা পাওয়া যেতো । এটার স্বাদও নোনতা মিষ্টি ক্রিম ক্রিম স্বাদের । দারুন লাগতো ।

আরেকটি জিনিস খেতাম আমরা শীতকালে । বর্ষাকালে আমাদের কাঠবাদাম গাছটায় প্রচুর কাঠবাদাম ফলতো । বাবা সেগুলো পেড়ে রাখতো অশ্বিন মাসে । এরপরে একটা বড় থলিতে করে রান্নাঘরের পিছনে একটা লাকড়ি ঘরের এক কোন রেখে দেয়া হতো সেই থলিটি । দু'মাস পরে যখন থলি থেকে সেই কাঠবাদাম গুলো বের করা হতো তখন তার গায়ের সবুজ মাংসল আবরণ শুকিয়ে ধূসর রং হয়ে গিয়েছে । দা দিয়ে হালকা আঘাত করলেই ফেটে দু'ভাগ হয়ে যেত । ভেতরে চিনে বাদাম এর মতো দানা থাকতো । আঃ কি সেই স্বাদ কাঠবাদামের । চীনা বাদামের চাইতে ১০ গুন্ বেশি স্বাদের ।

আর শীতকালে মামাবাড়ি গেলে গোলফল খাওয়া হতো । এই ফলের শাঁস খেতে একদম কচি তাল শাঁসের মতো । দেখতেও সেই রকম জলভরা । তবে গোলফলে নুনের পরিমান বেশি থাকতো ।

IMG_20230919_141550.jpg


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


আজকের টার্গেট : ৫৫৫ ট্রন জমানো (Today's target : To collect 555 trx)


তারিখ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

টাস্ক ৩৮৯ : ৫৫৫ ট্রন ডিপোজিট করা আমার একটি পার্সোনাল TRON HD WALLET এ যার নাম Tintin_tron


আমার ট্রন ওয়ালেট : TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx

৫৫৫ TRX ডিপোজিট হওয়ার ট্রানসাকশান আইডি :

TX ID : a5652169a010ef22c6d3f45d5ddcfa06068bd33b42db5322ac6e11027c60edfd

টাস্ক ৩৮৯ কমপ্লিটেড সাকসেসফুলি


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

Sort:  

🥥😍 নারিকেলের ফোঁপরা আমার একটা প্রেমের সুপ্রিম! স্বাদে দ্বিধা নেই, আমার মনে এই খাবারের জন্য একটি দুটি থালি হতে হয়! 😋🍽️ #নারিকেল #ফোঁপরা #খাবার #স্বাদ

1233.jpg

 last year 

আরে বাপরে, নারিকেলের ফোপড়া দিয়ে এতসব রেসিপি তৈরি করা যায় তা তো আগে জানতাম না দাদা। আপনার দাদী ও মা মিলে এই ফোঁপড়া দিয়ে ভীষণ সুস্বাদু রেসিপি গুলো তৈরি করত তা জেনে খুব ভালো লাগলো। নারিকেলের ফোঁপড়া খেতে আমার কাছেও খুবই ভালো লাগে। ছোটবেলায় যখন আমার বাবা নারিকেলের ছোবড়া ছাড়ানোর জন্য অনেকগুলো নারিকেল নিয়ে বসতো, তখন আমরাও ভাই-বোনেরা অধির আগ্রহ নিয়ে বসে থাকতাম, কোন নারিকেলটাতে ফোপরা পাওয়া যাবে। আর যখন নারিকেলে ফোঁপড়া পাওয়া যেত, তখন আমরা সকলেই খুব কাড়াকাড়ি করে তা খেয়ে নিতাম। পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিলেন দাদা। অনেক অনেক ধন্যবাদ, মজার এই খাবারটির কথা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।

 last year 

দাদা নারিকেলের ফোঁপরা দেখে তো ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ছোটবেলায় নারিকেলের ফোঁপরা খাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে থাকতাম। যখন দেখতাম পিঠা বানানোর জন্য কয়েকটি নারিকেল কিনে আনা হয়েছে, নারিকেল কাটার সময় সামনে থেকে উঠতাম ই না। তবে বেশ কয়েক বছর হলো নারিকেলের ফোঁপরা খাওয়া হয় না। কিন্তু কিছুদিন আগে কচি তালের শাস খেয়েছিলাম। তালের শাস দারুণ লাগে খেতে। আপনি নারিকেলের ফোঁপরা এতো পছন্দ করেন, জেনে খুব ভালো লাগলো দাদা। আজকে বহুদিন পরে নারিকেলের ফোঁপরা খেয়ে তো পুরনো স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছেন একেবারে। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

দাদা কী ছবি দেখাইলেন। এই ফোঁপরা আর তালের আঁটি বিশাল প্রিয় আমার।

আগে গ্রামে প্রচুর নারিকেল গাছ ছিল। এখন বেশি নারিকেল গাছ না থাকায় তেমন একটা পাওয়া যায় না। ঝুনো নারিকেল পর্যন্ত টিকে থাকা কম নারিকেলের ভাগ্যেই থাকে। হাহাহা।।

আমিও আপনাকে একটু লোভ লাগাই দিলাম, 😂

vM1pGHgNcyCXUWJECrZbvn1NMPj1oFGUo3gYfF3NNPRD9U4MFcHxEJaVnLqwQvP6SrHAUfqMn2ajyJMJYRznEzEAsLkrqU5o9obokYRaYgdkKsuFz399ZhrAQfr9PMGfuSYdXgi.jpeg

 last year 

নারকেল ফোঁপরা খেতে বেশ ভালই লাগে দাদা ।আমিও ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি। তবে এখন খুব একটা পাওয়া যায় না ।তবে এর আগে একবার দেখেছিলাম রূপক বাজার থেকে অনেকগুলো কিনে নিয়ে এসেছিল । বাজারে এগুলো আলাদাভাবে কিনতেও পাওয়া যায় দেখে অবাক হয়েছিলাম । তাছাড়া তালের ফোপড়াও খেয়েছি। যেগুলো মাটিতে পুঁতে রেখে কয়েক মাস পরে বের করা হতো ।তবে নারকেল ফোপরা দিয়ে যে অত কিছু বানানো যায় তা জানা ছিল না । আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম ।বেশ ভালো ছিল ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

সত্যি দাদা ছোট বেলার সেই স্মৃতিগুলো সামনে চলে আসলো, দারুণ স্বাদের জিনিষ শেয়ার করেছেন, এটার প্রতি যেমন আকর্ষণ ছিলো ঠিক তেমনি তালের বিচি মাটিতে পুতে রেখে তারপর সেটা ভাঙ্গলেও এই রকম ফোঁপরা পাওয়া যেতো, সেগুলোর স্বাদও কিন্তু দারুণ।

 last year 

দাদা আমার তো আপনার নারকেলের ফোঁপরা দেখে মনে হচ্ছে নিয়ে একটা দৌড় দিয়ে এটি খেতে আমার কাছেও খুব ভালো লাগে । অনেকদিন হয়ে গেছে খাওয়া হয় না আবার আপনারটি দেখে মনে পড়ে গেল । আর খেতে ইচ্ছা করছে খুব । তালের আঁটির ফোঁপরা খেতেও অনেক মজা লাগতো । ছোটবেলায় অনেক খেয়েছি মাটির নিচে পুঁতে রেখে পরে কেটে খাওয়া হতো । সত্যিই অন্যরকম স্বাদ ছিল । অনেকদিন পরে মজাদার খাবারের কথা শুনে ও ছবি ভালো লাগলো । জানি না এগুলো আবার কবে খেতে পারবো । নারকেলের শাঁস খেয়েছি শুধু ওটা দিয়ে এত কিছু তৈরি করে খাওয়া হয়নি । ওগুলো যে বানানো যায় তাই তো জানতাম না ।

 last year 

আপনার পোস্ট পড়ে অতীতে ফিরে গেলাম দাদা। ছোট বেলায় অনেক মজা করে খেতাম। এখন ব্যস্ত শহুরে জীবনে খাওয়া হয়ে উঠেনা। নারিকেলের ফোপরা আর তালের শাস আমরও ভীষণ প্রিয় কিন্তু অনেকদিন খাইনি। কাঠবাদাম খাওয়া হয় মাঝে মাঝে। নষ্টালজিক একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

নারিকেলের ফোপরা খেতে অনেক ভালো লাগে। আমার মনে হয় এই খাবারটি অনেকেই পছন্দ করেন।নারকেলের ফোপরা পোস্টটি দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। কত যে খেয়েছি ছোটবেলায় কারণ নিজেদের নারিকেল গাছ ছিল। এখন আর খাওয়া হয় না। তালের ভেতরের যে শ্বাসটা থাকে ঠিক নারিকেলের ফোঁপড়ার মতই খেতে। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা আপনাকে।

 last year 

নারিকেলের ফোঁপরা আমার ও ভীষণ পছন্দ দাদা।নিউ মার্কেটের সামনে প্রায়ই দেখি এক ভ্যানে ফোঁপরা বিক্রি করছে এক লোক।কিন্তু তা কিনতে মন সায় দেয়না।নিজের হাতে নারিকেল ভেঙ্গে ফোঁপরা বের করে খেতে সেই মজা।কি বলবো আর দাদা।আর তালের আঁটি থেকে কাঁচা ফোঁপরা খেতে দারুন লাগে আমার কাছে।কিন্তু আমার শাশুড়ী মা তালের ফোঁপরা দুধ দিয়ে রান্না করতো।যা আমি কখনো ই খাইনি।আসলে কাঁচা খেতেই বেশ মজার।রান্না করে খেতে কোনদিনও ইচ্ছে হয়নি।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো দাদা।ধন্যবাদ আপনাকে।