লকডাউনের আগে লাস্ট বেড়ানোর কিছু টুকরো স্মৃতি (Last moments were clicked before lockdown)

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

করোনা হলো মানবজাতির জন্য বিগত ১০০০ বছরের মধ্যে সব চাইতে বড় অভিশাপ, এর আগে ছিল প্লেগ, সম্ভবত সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে ।এই অভিশাপে জর্জরিত সমগ্র মানবজাতি, স্বাস্থ্যগত ভাবে, আর্থিক ভাবে, শিক্ষাগত ভাবে, মানসিক ভাবে ধুঁকছে । প্রায় সকল প্রকারের সমস্যা বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো করোনা ভাইরাস । প্রতিদিন যেমন লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে তেমনি মানুষের স্বাধীনতাও কেড়ে নিচ্ছে । এখন প্রায়শই lockdown থাকে, বাইরের বেরোনয় চরম নিষেধাজ্ঞা । শেষ কবে বেড়িয়েছি রীতিমত মনে করে বলতে হয় । সব চাইতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু, কিশোররা । স্কুল বন্ধ, বন্ধুদের সাথে বেড়ানো বন্ধ, বিকালে মাঠে খেলাধুলা বন্ধ , বাবা মায়ের সাথে পার্কে যাওয়া বন্ধ, আত্মীয় স্বজন , বন্দু বান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী কারো বাড়ি যাওয়া বন্ধ । শিশুদের প্রাণ হাঁপিয়ে উঠছে, খোলা হাওয়ায় নিশ্বাষ নিতে না পেরে তাদের জীবন আজ দুর্বিষহ । আমিও ভুক্তভোগী, আমার বাড়িরও বাচ্চা আছে । শেষ আমরা বেড়াতে গিয়েছিলাম ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে । ২০২০ সালের ৮ মাস ছিল lockdown আমাদের দেশে । আমাদের শেষ বেরোনোর কিছু ফোটোগ্রাফি এখানে আজ শেয়ার করলাম । আশা করি উপভোগ করবেন ।

আমাদের বিয়ের ৩ বছর হয়ে গেছে, স্ত্রীকে সেই ভাবে বড় কোনো গিফট করিনি, নানান ঝামেলায় সময় করে উঠতে পারিনি, আর ২০২০ সাল তো ছিল প্রায় পুরো lockdown, তাই ২০২১ সালে আমার ওয়াইফ এর জন্মদিনে ওকে একটি car গিফট করলাম । Car ডেলিভারি পাওয়ার পরের দিন গাড়ির পুজো দিতে গেলাম মন্দিরে । আমডাঙ্গা কালী মন্দির, খুবই জাগ্রত । তো সকাল সকাল আমরা বেরিয়ে পড়লাম মন্দিরের উদ্দেশ্যে । প্ল্যান ছিল সকাল সকাল পুজো দিয়ে সারাদিন ঘুরবো ।

pic_01.jpg
গাড়ির পুজো হচ্ছে

পুজো তো সারা হলো, এবার মাতা-পুত্রের নিউ কারের সাথে নানা রকমের পোজে ছবি তোলা শুরু হলো । আমি বিরক্ত হয়ে আম বাগানে চলে গেলাম ।

pic-02.jpg
টিনটিন বাবু পোজ দিয়েছেন

pic03.jpg

pic04.jpg
ম্যাডাম পোজ দিচ্ছেন গাড়ির সাথে

এর পরে আমরা আরো কিছুক্ষন ঘুরলাম মন্দির প্রাঙ্গনে, তনুজা প্রায় সারাক্ষন সেলফি আর ছবি তুলে বেড়ালো ।

pic-05.jpg
টিনটিন বাবুর খিদে পেয়েছে

pic-06.jpg

pic-07.jpg

pic-08.jpg
মন্দিরের বাঁধানো পুকুর ঘাটে তনুজা নানান ভঙ্গিতে পোজ দিচ্ছে

পুজো দিয়েই আমরা বাড়ি ফিরে এলাম । ব্রেকফাস্ট করে, তারপর চেঞ্জ করলাম, একটু রেস্ট নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়লাম । এবার আমাদের গন্তব্য হলো "নিক্কো পার্ক" ।

নিক্কো পার্ক দারুন একটা amusement পার্ক কলকাতায় । আমরা মোটামুটি বারোটা নাগাদ ঢুকে পড়লাম । টিনটিন বাবু টয় ট্রেনে উঠতে চাইলো । আমরা টিকিট কেটে উঠে পড়লাম ।দারুন এনজয় করলাম ।

pic-09.jpg

pic-10.jpg

pic-11.jpg
টয়ট্রেনে টিনটিন বাবু আর তার মাম্মা

এর মধ্যে সবার গরম লাগাতে শীতের পোশাক সব খুলে ফেললো, আমি কিন্তু সোয়েটার খুললাম না । সবাই তাই নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগলো । আর তনুজা ছবির পর ছবি তোলাতে লাগলো ।

pic-12.jpg

pic-13.jpg

pic-14.jpg

pic-15.jpg

pic-16.jpg
তিনটিনবাবু আর তার মাম্মা পোজ দিচ্ছে ক্যামেরার সামনে :)

pic-17.jpg
টিনটিন বাবু একা একা পোজ দিচ্ছেন, কিছুটা রাগন্বিত

আমাকেও ছাড়লো না , অগত্যা ছবি তুললাম , আমি আর আমার ছেলে

pic-18.jpg

pic-19.jpg

সন্ধ্যের দিকে ফিরে এলাম ।

আমার ছেলে দারুন সেলফি তুলতে পারে --

147356459_440732413739104_705324888526104850_n.jpg

IMG_20210107_104729.jpg
বাবু সেলফি তুলছে

আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ০৯ ই ফেব্রুয়ারী ২০২০
স্থান : পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।

ক্যামেরা পরিচিতি : HUAWEI
ক্যামেরা মডেল : LLD-AL20
ফোকাল লেংথ : ৩ মিমিঃ

এবং

REDMI NOTE 8 PRO
AI QUAD CAMERA
64 MEGA PIXEL

Sort:  
 3 years ago 

খুব সুন্দর হয়েছে ছবি গুলো।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ছবিগুলি দেখার জন্য ।

 3 years ago 

খুব সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছিলেন ভাইয়া। দেখে খুব ভালো লাগলো!!!

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন দারুন সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছিলাম :)

 3 years ago 

খুব একটা ভাল কাজ করেছেন দাদা , বৌদি খুব খুশি হয়েছে দেখে মনে হচ্ছে, বৌদিকে দিবেন না তো কাকে দিবেন যিনি আপনার জন্য অনেক স্যাক্রিফাইস করেন, অনেক ভাল লাগলো আপনাদের আনন্দের মুহূর্ত গুলো দেখে।

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপনি । আমাদের আনন্দমুহূর্তগুলি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে আমিও খুব খুশি । অনেক ধন্যবাদ :)

 3 years ago 

শত ব্যস্ততার মাঝে পরিবারের সাথে কাটানো সময় গুলো সত্যিই অনেক আনন্দের।

গাড়ির মডেল টা কি দাদা??

Mahindra XUV 500 na..?

 3 years ago 

Mahindra XUV500 W11 (O) AT Top Model (2021)

 3 years ago 

অসাধারন পোজ দাদা
অসাধারন ছবি,
মা ও ছেলের পোজ দেখে
হয়ে গেলাম কবি।

তনুজা ভাবীর বেষ্ট উপহার
সাদা রংয়ের গাড়ি
অপরুপা লাগছে তাকে
মেরুন গ্লোডেন শাড়ি।

সব মিলিয়ে চমৎকার
কাটছে সেইদিন
এমনি করেই সারা জীবন
বাজুক সুখের বীণ।

শুভ কামনা।

 3 years ago 

সত্যি অসাধারণ লেখনী ক্ষমতা আপনার । স্যালুট আপনাকে ম্যাডাম :)

 3 years ago 

স্যালুট দাদা।শুভ কামনা।

 3 years ago 

সবগুলি ছবি খুব সুন্দর হয়েছে। আমাদের মাঝে এরকম আনন্দঘন বেড়ানোর মুহুর্ত তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা

 3 years ago 

তোমাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের আনন্দঘন বেড়ানোর মুহুর্তগুলি উপভোগ করার জন্য ।

চমৎকার কিছু মূহুর্ত দাদা। বউদিকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে গিফটটা উনার খুব পছন্দ হয়েছে। টিনিটন মনে হয় কোলে থাকতে চাচ্ছিলোনা। ও মনে হয় নিজে নিজেই ঘুরতে চাচ্ছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা আমাদের সাথে মূহুর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

টিনটিনকে ওরকম শান্তশিষ্ট দেখালে কি হবে, ও আসলে ভীষণ দুস্টু । আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের শেষ বেড়ানো নিয়ে লেখা পোস্টটি পড়ার জন্য ।

বাচ্চারা একটু দুষ্টুমি না করলেও ভালো লাগে না দাদা।

 3 years ago 

অসাধারণ পোজ টিনটিন বাবু এবং বৌদির।খুব সুন্দর লাগছে।ধন্যবাদ আপনাকে দাদা সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

টিনটিন বাবু ওই রকম পোজ দিতে লাইক করে খুব । ধন্যবাদ আমাদের ফটো অ্যালবাম দেখার জন্য ।

Nice family..happy family.pray for your family dada...

 3 years ago 

থ্যাংক ইউ সো মাচ :)

এই স্মৃতি গুলো কে আকড়ে ধরেই বেঁচে থাকা লাগবে মনে হয় দাদা।মন খুলে কি আর ঘুরা যাবে কিনা ঈশ্বর ই জানেন। ভালো এবং সুস্থ থাকুক আপনার পরিবার ❤️

 3 years ago 

করোনাই তো সব কিছু শেষ করে দিলো । কি আর করা , প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই ।