ছেলে সন্তানের বাবা হলাম।
আসসালামুআলাইকুম। আমি @sabbirakib. আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার জীবনের আনন্দের মুহূর্তটি শেয়ার করতে চাই।
আমার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা ছিল এবং বিগত দিনগুলোর USG রিপোর্ট অনুযায়ী এখন তার ৩৮তম সপ্তাহ চলছিল। প্রেডিক্ট করা ছিল জুলাই মাসের ১৫-২১ তারিখের মধ্যে আমাদের সন্তান দুনিয়াতে আসবে। যাইহোক, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আজ (৩০জুন, ২০২৪) আমার ছেলে দুনিয়ার আলো দেখে। একজন পুরুষ হিসাবে নিজের সন্তানকে প্রথমবার দেখার যে অনুভূতি তার সাথে অন্য কিছুর তুলনা চলেনা।
গতকাল (২৯ জুন, ২০২৪) সন্ধ্যার পর আমার স্ত্রী হঠাৎ আমাকে জানায় তার গর্ভকালীন সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমি ছিলাম আমার বাসায়, ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায়। স্ত্রী ছিল আমার শ্বশুর বাড়ি, গাজীপুরের পুবাইল থানায়। কিন্তু টঙ্গী থেকে কাছে। যারা চিনেন, তারা জানেন, জায়গাগুলো কিন্তু কাছাকাছিই কিছুটা। দেড় ঘন্টার পথ। যাইহোক, আমি কর্মস্থল ফার্মেসিতে ছিলাম। বললাম, সরাসরি হাসপাতালে চলে যেতে। ডাক্তার দেখানোর পর কি বলে জানাতে। আমার অগ্রীম ছুটি নেয়া আছে। রাতে আর কিছুহয়নি। পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
সকালে আমি পৌঁছাতে পৌঁছাতে সিদ্ধান্ত হয় ইন্টারনাল সামান্য ত্রুটির কারনে সিজার করাতে হবে। যাইহোক, বারোটার সময় তাকে OT-তে নেয়া হয়। আমি আর আমার শ্বাশুড়ি OT-র সামনে বসে ছিলাম। হঠাৎ সিস্টার এসে জানালো ব্লাড লাগব, ডোনার ম্যানেজ করার জন্যে। আমরা আগেই তাদের কাছ থেকে কনফার্ম হয়েছিলাম রক্ত লাগবে না। তাই ব্যবস্থা নেইনি। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে কিছুটা আতংকিত হয়ে যাই। দুইজনই মোবাইলে ব্লাড ম্যানেজ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এরমধ্যেই খবর আসে আমার ছেলে হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।
কিছুক্ষণ পর দুইজন সিস্টার আমার ছেলেকে নিয়ে বের হয়। প্রথম বার নিজের সন্তানকে কোলে নেয়ার অনুভূতি ছিল ভিন্ন। যারা এমন অভিজ্ঞতা পেয়েছেন, তারাই বুঝবেন। আমার বাবা বাসায় অপেক্ষায় ছিলেন। আমি উনাকে জানানোর সময়েই চোখে পানি চলে আসে। কোলে নিয়ে তার কানে আজান দিচ্ছিলাম। আবেগে আমার কন্ঠ বুজে আসছিলো। নিজেকে শক্ত করে আজান শেষ করি।
এরপর, আমার স্ত্রীর ব্লাড জোগাড়ের পালা। আস্তে আস্তে কল আসা শুরু করল। তখনও জানতাম না কয় ব্যাগ রক্ত লাগবে। যাক, দুইজন কনফার্ম হয় আর দুইটার মধ্যে তারা চলে আসে। আমি প্রথম জনের ক্রস ম্যাচিংয়ের ব্যবস্থা করি। তাতেই কাজ হয়। উনি ব্লাড দিয়ে চলে যায়।
এরই মধ্যে আত্মীয়স্বজনরা আসতে থাকে। আমার বাবা-মা ততক্ষণে চলে আসে। আমার শ্বশুরও চলে আসে। অন্যান্য কয়েকজন আত্মীয়ও এসে দেখে যায়। আমার ক্ষণেক্ষণে উপরে নিচে দৌড়াতে হয়েছে।
আল্লাহর রহমতে, সন্ধ্যা সাতটার পর স্ত্রীকে কেভিনে নিয়া আসা হয় এবং কনফার্ম হই আমার সন্তান এবং স্ত্রী দুইজনই আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছে। আলহামদুলিল্লাহ।
সবাই চলে গেছে। আমি, আমার স্ত্রী, সন্তান আর শ্বাশুড়ি আপাতত হাসপাতালে আছি৷ সকালে আরও কিছু আত্মীয় আসবে। আপাতত, আমি বাচ্চা পাহারায় নিযুক্ত আছি। স্ত্রী আমার সাথে গল্প করছে। শ্বাশুড়ি গতদুই দিন নির্ঘুম ছিল। উনাকে রেস্ট নিচ্ছে।
সবাই আমার সন্তানের জন্য, আমার স্ত্রীর জন্য এবং আমার জন্য দোয়া করবেন। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ সবাইকে বাবা/মা হাওয়ায় তৌফিক দান করুন। আমিন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
নতুন শিশু পৃথিবীতে এসেছে তার জন্য অনেক দোয়া রইল। মহান সৃষ্টিকর্তা যেন এই পৃথিবীতে তাকে সুস্থ এবং সুন্দরভাবে রাখে সেই প্রার্থনাই করি। এটা আপনি ঠিক বলেছেন একজন পুরুষ যখন তার সন্তানকে প্রথম চোখের সামনে দেখে তার মনের মধ্যে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে এমনটা কিছুদিন আগে আমারও হয়েছিল।
আমিন।
ধন্যবাদ ভাই। আল্লাহ আপনার সন্তানকেও সুস্থ এবং সুন্দর ভাবে রাখুক এই দোয়া রইল।
অভিনন্দন আপনাকে এবং আপনার স্ত্রীকে, সুস্থ এবং সবল থাকুক আপনাদের সন্তান। আরো সুখময় হোক আপনাদের দাম্পত্য জীবন।
ধন্যবাদ, প্রিয় ভাই।
আপনি আজকে আমাদের মাঝে সন্তানের বাবা হওয়ার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে সন্তানের বাবা হওয়ার মতো আনন্দ মনে হয় আর কোথাও নেই। আপনার ছেলে বাচ্চা হয়েছে, জেনে অনেক ভালো লাগলো। আপনার সন্তানের জন্য দোয়া রইল। আশা করছি আপনার সন্তান বড় হয়ে ভালো কিছু করবে।
আমিন।
ধন্যবাদ, ভাই।
আসলে বাবা হওয়ার অনুভূতিটা যে কত আনন্দমূলক তা আমরা বুঝতে পারবো না আসলে যিনারা বাবা হয়েছেন তিনারাই বুঝবেন বাবা হওয়ার আনন্দটা কত মধুর। আপনার সন্তানের জন্য দোয়া কামনা করি ভাই তিনি যেন সুস্থতার সহিত নেক সন্তান হয়ে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুক শুভ কামনা রইল আপনার বাচ্চার জন্য এবং বাচ্চার মায়ের জন্য দোয়া কামনা রইল।
আমিন।
ধন্যবাদ ভাই।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। নতুন শিশু এই পৃথিবীতে আসছে তার জন্য অনেক দোয়া সৃষ্টিকর্তা তাকে যেন সুস্থ ও সুন্দর ভাবে রাখে। আপনার ছেলে বাবু হয়েছে জেনে অনেক ভালো লাগলো। এই অনুভূতিটা অন্যরকম বাবা মার জন্য। ধন্যবাদ অনুভূতিটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু। আমিন।
আপনার নবাগত সন্তানের সুস্থ্যও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।আসলে সন্তান কে প্রথম দেখা ও কোলে নেয়ার অনুভূতি আলাদা। হাসপাতালের আত্নীয়দের আসার কারণে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় হাসপাতালে ।বেশ ভালো লাগে।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টর মাধ্যমে প্রথম বাবা হওয়ার অনুভূতি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
ধন্যবাদ, দিদি। আমিন।