আত্মার সম্পর্ক বড় নাকি রক্তের সম্পর্ক?


প্রথমেই সবাইকে জানাই সালাম,আদাব। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আশা করছি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকলেই ভালো এবং সুস্থ আছি।


❤️ সবার জন্য অবিরাম ভালোবাসা ❤️


আজকে আমি হাজির হয়েছি একটি লিখা নিয়ে।
লিখতে ভালা লাগোটা আমার বহুদিন এর। কেও যদি জিজ্ঞেস করে তোমার লিখার কারণ কি?
তাহলে আমার একটাই উত্তর আসবে তা হলো জানিনা।
তাহলে আজকের লিখাটা শুরু করি।
আজকের লিখার বিষয় হলো " আত্মার সম্পর্ক বড় নাকি রক্তের সম্পর্ক?"।


★সম্পর্ক কখনো ছোট-বড় হয়না★


IMG_20220330_183915.jpg


  • সম্পর্ক কী?:-

সম্পর্ক।
সম্পর্ক মানে হলো দুইটা মানুষ কিংবা দুইটা পরিবার কিংবা অনেকগুলো মানুষের মধ্যেই সুন্দর ব্যাপারটি গড়ে উঠা,
সুন্দর বোঝাপড়া,
আত্মীয়তার মাঝে এবং সুন্দর একটি বন্ডিং গড়ে ওঠে,
তাকে মূলত সম্পর্ক বলা হয়।

এখন আমার সাথে আপনার সম্পর্কের সংজ্ঞা অমিল হতেই পারে।
তবে অবশ্যই তা আপনি জানাবেন।

সম্পর্ক কখনো কোনো শুধুমাত্র একটি বিষয়ের উপর স্থাপন করে হয়না।
একটি বিষয়ের উপর হয়না কিংবা হলেও হতে পারে।
সম্পর্ক এমন একটি বিষয় যেটা কখন কার সাথে হয়ে যায়
কিংবা,
পূর্বসূত্র এর হয়ে থাকে।
তাই সম্পর্কের সংজ্ঞা দেওয়া টা একটু কঠিন। সম্পর্ক বলতে আরো সহজ ভাবে বুঝাতে পারি যে,
যদি একজন অপরের পাশে থাকে,
সবসময় ভরসা হয়ে থাকে,
একজনের সুখে-দুখে অপরজন ঝাঁপিয়ে পরে, তবেই তাকে সম্পর্ক বলে।

  • সম্পর্কের ছোট-বড়:-

আমার আমি মনে করি সম্পর্কের মাঝে কখনোই ছোট-বড় এই দুইটি বিষয়ে আনা উচিত নয়।

কারণ প্রতিটি সম্পর্কই তাই নিজের মতো করে সুন্দর,
প্রতিটি সম্পর্কই তার নিজস্ব সৌন্দর্য সৌন্দর্যমন্ডিত।
তা না হলে, আমরা যদি তা না ভেবে সম্পর্কের মাঝে ছোট-বড় হিসাব করা শুরু করে দি।
তাহলে দেখবেন দিনশেষে আমাদের সম্পর্ক গুলোর সৌন্দর্য একেবারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কারণ সম্পর্ক বিষয়টি হলো অনুভূতির জায়গা থেকে গড়ে ওঠে,
সম্পর্কের বিষয় গুলো হয়তো অনেক সময় মাতৃসূত্রীয় গড়ে উঠেছে
কিংবা
বিভিন্ন পিতৃসূত্রে গড়ে ওঠে।
কিন্তু আমি মনে করি কোনো সম্পর্কই অনুভূতির বাইরে নয়।
অনুভূতির জায়গা থেকেই আমাদের সম্পর্কটা সৃষ্টি হয়। সেই কারণেই বড়,ছোট নেই।

★সম্পর্ক হতে পারে অন্য প্রাণীর সাথেও★

আমাদের সকলের মধ্যেই একটি ধারণা প্রায় আছে। যে সম্পর্ক শুধু মানুষ মানুষের মধ্যেই হতে পারে।
কিন্তু তা না।
সম্পর্ক শুধু রক্তের হলেই হয়না।
সম্পর্ক হতে পারে সকলেইর মধ্যেই।

কি করে তা আজ আপনাদের একটি গল্পের মাধ্যমে একটু বোঝানোর চেষ্টা করব।
গল্পটি আমি একটি টিভিতে দেখেছিলাম।
সেই হিসেবে আমি আপনাদের সামনে ও গল্পটি লিখছি।

একদিন একটি লোকের বাইরের দেশে চলে যাওয়ার দরকার পরেছে।
এখন সেই লোকটি একটি কুকুর পালত।
এখন সমস্যা হয়েছে অন্য জায়গায়।
হয়তো কোন কারনে কুকুর দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কারণ বিভিন্ন সময় দেখা যায় বিভিন্ন ফ্লাইটে কিংবা অতিরিক্ত দূরের ফ্লাইটে কোন পশু পাখিকে তারা এলাও করে না। সেই কারণেই হয়তো লোকটি নিয়ে যেতে পারছিল না।
কিংবা,
অন্য কোনো কারণও হতে পারে।
লোকটি তাও কুকুরটিকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত নিয়ে এসেছিল, একেবারে প্লেনে ওঠার সামনে নিয়ে এসেছিল।
কারণ কুকুরটি তার পিছু ছাড়ছিলো না।
সেই কারণে লোকটি করল একটি হাতে বল নিয়ে জোরে দূরের দিকে ছুড়ে দিলো। কুকুরটি ভাবল তার মালিক তার সাথে খেলছে।
সেই কারণেই সে বলটি নেওয়ার জন্য দৌড়ে গেল।
সেই সুযোগে মালিক প্লেনে করে চলে গেল।
এরপর বছরের-পর-বছর কাটে কিন্তু কুকুরটি ওই এয়ারপোর্ট ছেড়ে কোথাও যায় না।
সেই কারণে এয়ারপোর্টের লোকেরা কুকুরটিকে ব্যবস্থা করে দিয়েছিল থাকার এবং খাওয়ার। এরপর যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে যায় কুকুরটির।
তখন তার মালিক কুকুরটিকে জন্য আবার সেই দেশে ফিরে যায় অনেক বছর পরে।

  • আত্মার সম্পর্ক কী?:-

অনেক সম্পর্কই দেখবেন গড়ে উঠে আত্মার কাছে আসার মাধ্যমে।
যেমন আমরা যদি ধরি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক টির কথা ধরি।
তাহলে তাদের কিন্তু কোন রক্তের সম্পর্ক থাকে না।তাদের গড়ে উঠে আত্মার সম্পর্ক।
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর কিছু সম্পর্কের মধ্যে একটি হলো স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক।

এই সম্পর্ক সবকিছুকেই হার মানাতে পারে
অর্থাৎ,
আত্মার সম্পর্ক হল মনের সম্পর্ক।
সে সম্পর্ক গুলো দুইটা মনের একসাথে হয়ে গড়ে ওঠে তাই হলো আত্মার সম্পর্ক।

  • রক্তের সম্পর্ক:-

রক্তের সম্পর্ক হলো যে সম্পর্ক গুলো আমরা পিতৃসূত্রে মা মাতৃসূত্রে পেয়ে থাকি।
এসব সম্পর্কে আমরা জন্মের পর থেকে জড়িয়ে পরি।অনেক সময় এ সম্পর্ক গুলো হয়ে উঠে অসম্ভব মধুর।এ সম্পর্ক গুলো একেবারে জন্ম থেকে শুরু হওয়াতে এই সম্পর্ক গুলোর গভীরতা থাকে অনেক বেশি।

  • কোনটাই বড় কিংবা কোনটাই ছোট নয়:-

আত্মার সম্পর্কের সব ধারা তার নিজের মতোই।
এবং
রক্তের সম্পর্কের ও সব ধারা তার নিজের মতো।

কোনোটার চেয়ে কখনোই কোনটাই ছোট বড় হতে পারেনা।এ সম্পর্ক গুলো হয় অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক।এসব সম্পর্কের কোনো মাপকাঠি হয়না।
তাই এসব সম্পর্ক কে মেপে নষ্ট করার ও কোনো মানে নেই।সম্পর্কের ছোট বড় হিসাব করা মানে সম্পর্কগুলোকেই ছোট করা।
ভালোবাসার যেমন মাপকাঠি নেই।
ঠিক তেমন,
সম্পর্কের কোনো মাপকাঠি নেই।

লোকে বলে রক্তের সম্পর্কের চেয়ে বড় কিছুই হয় না।
কিন্তু আমি বলব পৃথিবীতে এমন অনেক নজির সৃষ্টি করা কাহিনী রয়েছে, যেগুলো দেখলে মানুষ হয়তো বলবে রক্তের সম্পর্কের চেয়ে আত্মার সম্পর্ক অনেক বড়।
কিন্তু আমি বলব কোন সম্পর্ক বড়
কিংবা
কোনো সম্পর্কই ছোট হতে পারে না।
দুইটা সম্পর্কই দুইটা সম্পর্কের মতো সুন্দর।

সকলকে জানাই আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।
নিজেদের মূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমার পাশে থাকবেন।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার লেখাটি সুন্দর।
তবে আমি আশা করবো আপনি আপনার এংগেজমেন্ট বাড়াবেন।
ধন্যবাদ।

 2 years ago 

এটা সঠিক ভাবে বলা যায় না।অনেক সময় রক্তের সম্পর্কে র চেয়ে আত্মার সম্পক বড় হয়।আবার আত্নার চেয়ে রক্তের সম্পর্ক বড় হয়।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।শুভেচ্ছা রইলো।

 2 years ago 

আপনার লেখা পড়ে অনেক ভালো লাগে কারণ আপনার লেখার উপস্থাপনা অনেক ভালো। আপনি অনেক সাজিগে গুছিয়ে লিখেন এটা আপনার অনেক বড় গুন। আমার কাছে দুটি সম্পর্কই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভালোবাসা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

আপনি চমৎকার একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যেথায় আত্মা মেলে সেথায় রক্ত না মিললেও চলে। আপনার লেখাটি অসাধারণ ছিলো। শুভ কামনা রইলো।

 2 years ago 

লিখাটি অসম্ভব দারুন ছিল ♥️
আমি দুটি সম্পর্কেই সমানভাবে দেখি, আসলে কোনটার থেকে কোনটা কম যায়না।
দারুনভাবে পুরো উপস্থাপনা করেছেন।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য 💌