শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের তৃতীয় পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের তৃতীয় পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
রাতুল ও সুলতানার তাদের বন্ধুত্ব দিন যত যেতে থাকে ততই গভীর হতে শুরু করে। কয়েক বছর পর তারা দুজনেই কলেজে ভর্তি হয়। আর তাদের দুজনের বন্ধুত্বের ভিতর এক দিন তৃতীয় ব্যক্তি এসে উপস্থিত হয়। তৃতীয় ব্যক্তিটি নাম হল রফিক। রফিক ছিল হুজুর টাইপের সে কলেজে সব সময় পাঞ্জাবি পায়জামা মাথায় টুপি পরিধান করে কলেজে আসত। যেটি সুলতানা খেয়াল করতো আর সুলতানার রফিকের এই আচরণ খুবই ভালো লাগতো। রাতুল একদিন সুলতানা কে জিজ্ঞাসা করে।
রাতুল: সুলতানা রফিক ছেলেটা যখন কলেজে আসে তুই সব সময় ওর দিকে তাকিয়ে থাকিস। বিষয়টা কি আমাকে বলবি?
সুলতানা: আসলে রাতুল তেমন কিছু নয়। ছেলেটাকে আমার খুব ভালো লাগে।
রাতুল: ভালো লাগে মানে?
সুলতানা: ভালো লাগে মানে, ভালো লাগে ছেলেটা অনেক ভদ্র।
রাতুল: ছেলেটা যে ভদ্র সেটা তুই কিভাবে বুঝতে পারলি? সে তো খারাপও হতে পারে।
সুলতানা: আমি লোক দেখলে বুঝতে পারি কে ভালো কে খারাপ।
রাতুল: তুই তো জ্যোতিষী হয়ে গিয়েছিস দেখলেই বুঝে ফেললি কে কেমন।
সুলতানা: বাদ দে এসব কথা। এখন আমায় বল তুই আমাকে ফলো করছিলি।
রাতুল: হ্যাঁ মানে না।
সুলতানা: হ্যাঁ না মানে কি। আমি রফিকের দিকে তাকাই তোর কি খারাপ লাগে।
রাতুল: আমার কেন খারাপ লাগবে। তুই আমার বন্ধু ভাবলাম তোর হয়তো বা তাকে ভালো লাগতে পারে। তাই তোর কাছে শুনলাম।
সুলতানা: আচ্ছা ঠিক আছে তোর কথা মেনে নিলাম। অনেক সময় পার করেছি চল ক্লাশে যাওয়া যাক।
এ বলে তারা দুজনেই ক্লাসে প্রবেশ করল কিন্তু সেদিনের পর থেকে রাতুলের সবসময় মনটা খারাপ থাকতো। অনেক বার করে সুলতানা জিজ্ঞাসাও তাকে করেছে কিন্তু রাতুল কথাটা সব সময় এড়িয়ে গিয়েছে। রাতুল একদিন দেখতে পায় সুলতানা রফিকের সঙ্গে কথা বলছে। রাতুল এটি দেখার পর নিজেকে ঠিক রাখতে না পেরে সঙ্গে সঙ্গে সুলতানাকে কিছু না জানিয়ে বাড়িতে চলে আসে। রফিকের সঙ্গে সুলতানার কথা হয়ে যাওয়ার পর সে রাতুলকে খুঁজতে থাকে কিন্তু ক্যাম্পাসে কোথাও তাকে খুঁজে পায় না। রাতুল সেদিনের পর থেকে কলেজে যাওয়া অফ করে দেয়। তখন ফোন ছিল না তাই কোন খোঁজ খবরও জানতে পারছিল না সুলতানা। সুলতানা একটি চিঠি পাঠায় রাতুলের ঠিকানায়। কয়েকদিন পর রাতুল সুলতানার চিঠি পায়। আর সেই চিঠিতে লেখা ছিল। রাতুল আমি তোকে খুব মিস করছি। তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে। জানিনা হঠাৎ করে তুই কোথায় হারিয়ে গেলি। যদি আমার চিঠি পাস তাহলে আমার সঙ্গে দেখা কর। ইতি তোর বন্ধু। সুলতানার চিঠি পেয়ে রাতুল পরের দিন কলেজে যায়। কলেজে যে সুলতানা কে খোঁজার চেষ্টা করে কিন্তু সুলতানা সেদিন কলেজে আসে না। রাতুল কে দেখতে পেয়ে কলেজে রাতুলের এক বন্ধু তাকে জানায় সুলতানা বিবাহ ঠিক হয়েছে। কথাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাতুলের মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না এই কথাটা।
রাতুল সঙ্গে সঙ্গে রওনা দেয় সুলতানাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে। এখানে এসেই দেখতে পায় সুলতানা দের বাড়ি সাজানো গোছানো। সে কিছুই বুঝতে পারে না সে ভিতরে প্রবেশ করে। ভিতরে দেখতে পায় জিয়া সাহেবকে। রাতুল ভালোভাবে সুলতানার বাবাকে চেনে সুলতানার বাবাও রাতুলকে খুব ভালো চেনে। রাতুলকে দেখে জিয়া বাবু তার কাছে এসে বুকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানিয়ে বসতে বলে। রাতুল কিছুই বুঝতে পারে না অনেকক্ষণ বসে থাকার পর অবশেষে দেখতে পায় সুলতানা বধু সেজে বাইরে বেরিয়ে আছে। রাতুল নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। তার দু চোখ লাল হয়ে গিয়েছিল আর চোখের কোনায় জল এসে জমা হয়েছিল। সুলতানা রাতুলের দিকে তাকায় কিন্তু কিছুই বলতে পারেনা। রাতুল ও কিছু বলতে পারেনা শুধু সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সুলতানার বিবাহ দেখছিল। সে অনেকটাবার চেষ্টা করেছিল সুলতানার সঙ্গে কথা বলার কিন্তু কিছুতেই তার সঙ্গে কথা বলতে সে পারলো না। অবশেষে বিদায় নিয়ে চলে গেল সুলতানা। আর সেদিনের পর থেকে রাতুল সবকিছু ছেড়ে দেয় পড়াশোনা, খাওয়া দাওয়া। আনমনা হয়ে ঘুরে বেড়াত।কারো সঙ্গে কথা বলতো না। ঘরের এক কোণে বসে থাকতো সব সময় রাতুল। রাতুলের পরিবার তাকে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে কিন্তু রাতুল কোন কথার উত্তর দেয় না। এইভাবে রাতুলের দিনগুলো চলতে থাকে অনেকটা দিন পর সে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে। সে আবার পড়াশোনার জন্য কলেজে যাওয়া শুরু করে। ভুলে যেতে থাকে তার জীবনে সুলতানা নামে একটি মেয়ে ছিল। রাতুল নিজেকে এতটাই ব্যস্ত রাখতো যাতে করে সে সুলতানা কে ভুলে যেতে পারে। কিন্তু ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যতই চেষ্টা করা হোক না কেনো ভালোবাসার মানুষটাকে কখনোই ভোলা যায় না।
এই গল্পটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আগের পর্বগুলো আমি পড়েছিলাম। রাতুল তো দেখছি সুলতানা কে অনেক বেশি ভালোবাসতো। কিন্তু নিজের মনের কথা বলতে পারিনি সুলতানা কে। অবশেষে সুলতানার অন্য একটা জায়গায় বিয়ে হয়ে যায়। প্রিয় মানুষকে কখনোই ভোলা যায় না। তবুও রাতুল এখন চেষ্টা করছিলাম ভুলে যাওয়ার জন্য। খুব সুন্দর করে শেয়ার করেছেন গল্পটি।
এই গল্পের আগের পর্বগুলো আমার পড়া হয়েছিল। তবে আমি মনে করছিলাম গল্পের শেষে হয়তো সুন্দর কিছু দেখতে পাবো। কিন্তু রাতুল মনের কথা বলতে পারেনি সুলতানা কে। সুলতানার অন্য আরেকটা জায়গায় বিয়ে হয়েছে, এটা ভাবতেই তো খারাপ লাগছে। সুলতানা ও হয়তো জানতো না রাতুল তাকে এতটা ভালোবাসে। রাতুল নিজের জীবনে মুভ অন করে ভালো করেছে।