সবাই কেমন আছেন?
প্রিয় পরিবারের সম্মানিত ব্লগার ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আশা করি বন্ধুরা আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আপনাদের দিনকাল কেমন যাচ্ছে? আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে আপনাদের অনেক অনেক দোয়ায়। সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় শুকরিয়া আদায় করি আল্লাহ যতটুকু রাখছেন ততটুকু অনেক ভালো রাখছেন। সুস্থ আছি পরিবারের সবাইকে নিয়ে সেই নেয়ামতটুকু শুকরিয়া আদায় করি সব সময়। বন্ধুরা আজকে আবার হাজির হয়ে গেছি নতুন একটি রেসিপি নিয়ে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে রেসিপি শেয়ার করার চেষ্টা করি। তবে এত ব্যস্ততার মাঝে কোন রেসিপি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছিল না। খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে রান্নাঘরে যেয়ে নিজেদের খাবারগুলো তৈরি করে হুটহাট খেয়ে ফেলা। বাচ্চাদেরকে নিয়ে অনেক সময় ব্যস্ত থাকছি।
যেহেতু ডিসেম্বরের ২ তারিখ থেকে তাদের বার্ষিক পরীক্ষা তাই তাদেরকে একটু সময় দিতে হচ্ছে সেজন্য ব্যস্ত সময় পার করছি। বছরের শেষের দিকে বাচ্চাদের পড়ার চাপ অনেক বেশি বেড়ে যায়। তাছাড়াও একটি ম্যাথের কোচিং আছে। একটি স্পোকেন ইংলিশ এর কোচিং আছে। আবার আরেকটি হচ্ছে বাংলা কবিতা আবৃত্তির কোচিং আছে। সপ্তাহের তিন দিন আদিলা’কে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। বাকি সময় গুলো বাসায় থেকে স্কুলের আসা যাওয়াতে সময় চলে যায়। তাছাড়াও আবার ছোট মেয়ের কোচিং রয়েছে, মক্তবে যেতে হয় কোরআন পড়ার জন্য। বুঝতে পারছেন আমার ব্যস্ততা দিন দিন অনেক বেশি বেড়ে যাচ্ছে। যেহেতু কোন রেসিপি ছিল না আজকে বিকেল বেলায় খাওয়ার জন্য একটি রেসিপি তৈরি করেছিলাম। যখন রেসিপি নিয়েছিলাম তখন চিন্তা করলাম যে সেই রেসিপিটি আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিব আজকে।
শীতের দিনে যেকোনো খাবার খেতে খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে কুড়মুড়ে কোন খাবার হলে খুবই মজার হয়। আমার ঝাল খাবার যেমন ভালো লাগে তেমনি মিষ্টি জাতীয় খাবার আরো অনেক ভালো লাগে। বলতে পারেন মুখের রুচি এত বেশি খারাপ না হা হা হা। যেটা খায় সেটাই ভালো লাগে। বেশ কয়েকদিন ধরে গজা খেতে ইচ্ছে করছিল। আপনাদের ওদিকে কি নামে চিনেন জানিনা আমরা গজা নামে পরিচিত।যেহেতু শহরে আছি এখানে তাজা খাবার গুলো খুবই কম পাওয়া যায়। গ্রামের দিকে হলে এই ধরনের হাতের নাস্তা গুলো ফ্রেশ পাওয়া যায়। তাই ভাবলাম যে বিকেল বেলায় একদম কুড়মড়ে গজা তৈরি করব। তাই যে চিন্তাভাবনা সেই কাজ রেসিপিটি নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য হাজির হয়েছি।
আমি কিভাবে তৈরি করেছি গজার রেসিপি ধাপ সমূহ আপনাদের সাথে পর্যায়ক্রমে শেয়ার করে নিব। আশা করি বন্ধুরা আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে আমার আজকের এই রেসিপি।
রেসিপির প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহঃ |
কুড়মুড়ে গজা তৈরীর ধাপ সমূহঃ
রান্নার ধাপ-১
প্রথম ধাপে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমি বড় একটি পাত্রের মধ্যে হাফ কেজি পরিমাণ ময়দা নিয়েছি। সেখানে পরিমাণ মতো লবণ দিয়েছি এবং এক চামচের থেকে বেশি চিনি দিয়েছি।
রান্নার ধাপ-২
এরপরের ধাপে দিয়েছি মেখে নেওয়ার জন্য ৩ চামচ তেল। এরপরে দিলাম কর্নফ্লাওয়ার। এই উপকরণগুলো দেওয়ার পরে সব উপকরণকে আমি হাত দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছি।
রান্নার ধাপ-৩
যেহেতু ময়দা ভালোভাবে মিক্স করে নিয়েছি এখন পানি দিয়ে মেখে ডো তৈরি করে নিব। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন এখানে আমি কালোজিরা এবং সাদা তেল দিয়েছি। সবগুলো উপকরণ যেহেতু দেওয়া শেষ ভালোভাবে পানি দিয়ে মেখে ডো তৈরি করে নিলাম।
রান্নার ধাপ-৪
তৈরি করে নেওয়া ডো বেশ কিছুক্ষণ রেস্ট রাখছিলাম। এরপরে বেলে নিতে হবে। আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন আমি রুটি বেলে নিলাম। এরপরে ছুরি দিয়ে সাইজ করে কেটে নিয়েছি।
রান্নার ধাপ-৫
বন্ধুরা এখন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমি ছুরি দিয়ে কেটে ছোট ছোট গজা সাইজ করে সবগুলো ডো এভাবে তৈরি করে নিয়েছি।
রান্নার ধাপ-৬
যেহেতু সবগুলো গজা সাইজ করে কেটে নিলাম। এখন তেলে ভেজে নেওয়ার জন্য চুলায় একটি করাইতে পরিমাণ মত তেল দিয়ে গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছি। যখন গরম হয়ে আসলো তেল তখন কেটে রাখা গজাগুলো তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছি। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন নেড়েচেড়ে গজা গুলোকে ব্রাউন কালার করে ভেজে নেওয়া হলো।
রান্নার ধাপ-৮
গজাগুলোতে চিনির সিরকায় দিতে হবে। তাই আমি পরিমাণ মতো চিনি নিয়ে একটি পাত্রের মধ্যে পানি ঢেলে দিলাম। চুলায় জ্বাল করে ঘন করে সিরকা তৈরি করে নিয়েছি।
রান্নার ধাপ-৯
অবশেষে যখন চিনি সিরকা ঘন হয়ে আসে তৈরি হয়ে যায় তখন চুলা থেকে নামাই ফেলে একটু ঠান্ডা করতে দিলাম। চিনির সিরকা ঠান্ডা হয়ে আসলে গজার উপরে ঢেলে দিয়ে নেড়েচেড়ে নিয়ে নিলাম।
রেসিপির পরিবেশনা
বন্ধুরা আপনারা বুঝতেই তো পারছেন অনেক সময়ের ব্যাপার এই রেসিপি তৈরি করা। অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করে অবশেষে কুড়মুড়ে গজা তৈরি হয়ে যায়। আমার খেতে যেমন ভালো লাগে বাচ্চারাও খেতে খুবই পছন্দ করেন। যেহেতু শীতের দিন এমন খাবার বেশ ভালো লাগে খেতে। আমি বিকেল বেলায় তৈরি করেছিলাম বাচ্চারা বেশ মজার করে খাওয়া দাওয়া করেছে। বাচ্চাদেরকে মাঝেমধ্যে ভিন্ন কিছু তৈরি করে দিলে তারা খুবই খুশি হয়। তাই আমিও চেষ্টা করি ভিন্ন কিছু তৈরি করে তাদেরকে খেতে দেওয়ার। গজাগুলো দেখতে যেমন সুন্দর হয়েছে খেতেও তেমন ভালো লাগলো। আমার রেসিপিটি দেখে আপনারাও তৈরি করতে পারেন। এই ধরনের কোরমুড়ে গজাগুলো বেশ কয়েকদিন সংগ্রহ করে রাখা যায় একদম মচমচে থাকে। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার আজকের রেসিপি দেখার জন্য।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
মডেল | W-V770 |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | রেসিপি |
আজ এখানে আমার লেখা সমাপ্তি করছি। আবার উপস্থিত হব নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই সুস্থ থাকবেন আর ভাল থাকবেন।
💘ধন্যবাদ সবাইকে💘
@samhunnahar
আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
আমার আজকের টাস্কঃ-
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
প্রথমত এটাই প্রার্থনা করছি আপনি যেন খুব তাড়াতাড়ি এত ব্যস্ততার মধ্য থেকে স্বাভাবিক জীবনের ফিরে আসতে পারেন। তবে একটু বেশি ভালো লাগলো আপনার আজকের গজা রেসিপিটি দেখে। আমাদের এই দিকে এটিকে কুড়কুড়ে নামে চিনে থাকে। এটি তৈরি করার প্রসেসগুলো কিন্তু একদম খুবই সহজ এবং সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করেছেন। এই বিষয়টি খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু বিকেলের একটি মজাদার কুড়কুড়ে গজা রেসিপি তৈরি করার প্রসেস আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনার কাছ থেকে এত সুন্দর গঠনমূলক মতামত পড়ে খুবই ভালো লেগেছে ভাইয়া। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ছোটবেলা মেলায় গেলে গজা খাওয়া হতো। কিন্তু নিজে বাসায় তৈরি করে কখনো খাওয়া হয়নি। অনেকদিন এই গজা খাওয়া হয় না। আপনার রেসিপিটি দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। আর নিজে তৈরি করে গরম গরম খাওয়ার তো মজাই আলাদা। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি আমাদের মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
আমি আপু অনেকবার তৈরি করেছি। তবে অনেকদিন পরে কালকে তৈরি করেছিলাম আবার।
বসে বসে এই ধরনের গজা খেতে ভীষণ ভালো লাগে আপু। আপনি দারুন সুন্দর ভাবে লোভনীয় এই গজাগুলি বানিয়ে ফেলেছেন। ফাঁকা সময় বসে কিছু খাবার দিয়ে মুখ চালাতে ইচ্ছে করে। সেক্ষেত্রে এই ধরনের পদ গুলি খুবই যথাযথ। আপনি দারুণ সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ পদ্ধতিটি আমাদের সামনে তুলে আনলেন বলে ধন্যবাদ।
ফ্রী সময়ে বসে টিভি দেখে কিংবা আড্ডার সময় এই ধরনের কুড়মুড়ে কিছু খেতে খুবই ভালো লাগে দাদা।
এতদিন এই গজাগুলো শুধু কিনেই খেয়েছি কখনো বাড়িতে বানিয়ে খাইনি। আপনার রেসিপি দেখে শিখে নিলাম এরপর আর কোনদিনও কিনে খাব না বানিয়ে খাব। খুব সুন্দর বানিয়েছেন।
অনেক ভালো লাগলো দিদি আপনার অনুভূতি জানতে পেরে। তবে অবশ্যই তৈরি করবেন এত বেশি কঠিন না এই রেসিপি।
বিকেলের নাস্তায় কুড়মুড়ে গজা তৈরি করার খুবই সুন্দর একটা পদ্ধতি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। বিকেলের নাস্তা তে এমন গজা সেটা হোক চিনি দিয়ে তৈরি অথবা গুড় দিয়ে তৈরি সবগুলোই খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি তো বিকেলে নাস্তা নয় যেকোনো সময়ই এমন জিনিস খেতে পছন্দ করি।
ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো লাগলো সময় দিয়ে রেসিপিটি দেখার জন্য।
যেকোনো রকমের রেসিপি দেখলেই একেবারে লোভ লেগে যায়। আপনি তো আজ একেবারে আমার ফেভারিট রেসিপি নিয়ে হাজির হয়ে গেলেন। এই রেসিপিটা আমার কত বেশি পছন্দের, এটা বলে বোঝাতে পারবো না। এরকম মজাদার রেসিপিগুলো ছোট বড় সবাই খুব ভালোবাসে খেতে। দেখেই বুঝতে পেরেছি , এই মজাদার রেসিপিটা সবাই অনেক মজা করে খেয়েছিলেন।
এ ধরনের খাবার গুলো আমার খুবই পছন্দের। সময় সুযোগ পেলে ঘরে তৈরি করার চেষ্টা করি।
আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে শীতের দিনে বিকেলের নাস্তায় কুড়মুড়ে গজা তৈরির রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি করা রেসিপি টি দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার হয়েছিল।আল শীতকালে এরকম রেসিপি গুলো একটু বেশি মজা লাগে। আপনি বেশ দারুন ভাবে রেসিপি টি সম্পন্ন করেছেন।
আপনি ঠিক বুঝতে পারছেন ভাইয়া রেসিপি দেখে। সত্যি খেতে অনেক মজার ছিল।
গজা রেসিপি দেখে লোভ লেগে গেল। এই গজা সকাল বিকেলে খেতে অনেক ভালো লাগে।তবে কখনো বানানো হয়নি।আপনার রেসিপি দেখে শিখে নিলাম একদিন অবশ্যই তৈরি করবো। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমার বেশ পছন্দের একটি খাবার আপু। মাঝেমধ্যে ঘরে তৈরি করি আবার মাঝেমধ্যে বাইরে থেকে এনে খাই। আপনিও অবশ্যই তৈরি করে দেখবেন।