ফটোগ্রাফিঃচট্টগ্রামের সি আর বি ও ডিসি হিলের ফটোগ্রাফি।

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

সবাইকে শুভেচ্ছা।

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি । প্রত্যাশা করি সব সময় ভালো থাকেন সবাই। ১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।
আজ ১৭ই আষাঢ়। গত দুদিন ধরে আষাঢ় নামের সার্থকতা। ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি দিনভর গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ,কখনো কখনো মেঘের গর্জন কবি গুরুর আষাঢ় কবিতার কথা মনে পড়ে যায়-" নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে।ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে"। বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিং য়ে আজ হাজির হয়েছি একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট নিয়ে। পোস্টের ভিন্নতার জন্য চেস্টা করি প্রতি সপ্তাহে একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট শেয়ার করতে । তারই ধারাবাহিকতায় আজ একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। যারা নিয়মিত আমার পোস্ট পড়েন, তারা জানেন আমি প্রায় এক সপ্তাহ প্রানের শহর চট্টগ্রামে ঘুরা আসলাম।এবং গিয়েছিলাম মাকে দেখতে। বয়স জনিত কারনে আমার মা বিভিন্ন রোগে ভুগছে। তাই দেখতে গিয়েছিলাম।প্রচন্ড গরমের কারনে কোথাও তেমন যাওয়া হয়নি। তুবুও ঈদের আমেজ থাকায় বান্ধবীদের সাথে দেখা হয়েছে। অনেকদিন রিক্সায় চট্রগাম ঘুরা হয় না। এক বান্ধবীকে বলতেই রাজি হয়ে গেল। দুই বান্ধবী মিলে,রিক্সায় চেপে চট্টগ্রাম শহর প্রদক্ষিন। বিকালে বেলা বাসা থেকে বের হয়ে বান্ধবীকে নিয়ে লালখান বাজার থেকে আমাদের রিক্সা যাত্রা শুরু। আষাঢ় মাস। সুন্দর ছিল আবহাওয়া।বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আমাদের গন্তব্য সি আর বি তে । অনেকদিন যাওয়া হয়নি। চট্টগ্রামের ফুস্ফুস খ্যাত এই সি আর বি।

p1.jfif

পাহাড়ের উপর শত বছরের পুরানো গাছে ঘেরা এই সি আর বি।সেন্ট্রাল রেলওয়ে ভবনসহ হাসপাতাল,রেলওয়ের বিভিন্ন অফিস। আছে শিরিশ তলা, বড় মাঠ। যেখানে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়। যেহেতু পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করা তাই রাস্তাগুলো উপর থেকে দেখলে মনে হয় একতলা ও দোতলা রাস্তা। আর এ জন্যই বেশি সুন্দর লাগে এই সি আর বি।

p3.jfif

রাস্তার দু'ধারে শত বছরের পুরানো গাছ এই স্থানের সৌন্দর্য বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। বিকেলে বেশ জামায়েত হয় এই এলাকায়। এর শান্ত শীতল পরিবেশের জন্য। কিন্তু এই শত বছরের গাছ কেটে হাসপাতাল তৈরির জন্য যুক্তিবদ্ধ হয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে। কিন্তু জনগনের প্রতিবাদের কারনে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। এখানে যে স্থাপনাগুলো রয়েছে তা ব্রিটিশ আমলের । পুরো বিশ্ব যেখানে পুরানো ঐতিহ্য বজায় রাখতে ব্যস্ত সেখানে আমরা তা ভেঙ্গে নতুন স্থাপনা তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ঐতিহ্য রক্ষার চেয়ে আর্থিক স্বার্থ বড় হয়ে উঠে। কি বিচিত্র্য আমাদের ভাবনা-চিন্তা!

p4.jfif

p2.jfif

রি আর বির ভবন গুলোতে বিধি নিষেধ এর কারনে সেই স্থাপনার ফটোগ্রাফি করা সম্ভব হয়নি বলে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না।সি আর বি যাওয়ার কিছুক্ষন পর বৃষ্টি শুরু হলো। আর তাই সেখানে না থেকে আমরা আবার রিক্সা যোগে চলে গেলাম ডিসি হিল। সেখানেও রয়েছে শত বছরের পুরানো গাছ। আর আছে মুক্ত মঞ্চ। সেখানে বিভিন্ন বিশেষ দিন গুলোতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

p5.jfif

p6.jfif

ডিসি হিল বর্তমানে নজরুল স্কোয়ার নামে পরিচিত।বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের আডডা আর হাটাহাটিতে মুখরিত হয়ে উঠে এই ডিসি হিল চত্ত্বর।প্রাতঃভ্রমণেও আসেন অনেক মানুষ। এখানেও কিছু ফটোগ্রাফি করেছি। বন্ধুরা,ব্যস্ত নগরীতে উন্মুক্ত স্থানে প্রকৃতির সানিধ্যে সময় কাটানো জায়গার বড্ড অভাব মানুষের। চট্রগ্রামের এই বিখ্যাত জায়গা দুটি আমার খুব প্রিয়। বান্ধবীর সাথে আড্ডা মেরে জায়গা দুটির কিছু ছবি তুলতে পেরে আমি বেশ আনন্দিত। আরো আনন্দিত আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম বলে। আশাকরি আজকের ফটোগ্রাফি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের ফটোগ্রাফি পোস্ট এখানেই শেষ করছি। শুভ রাত্রি।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীফটোগ্রাফি
ক্যামেরাRedmi Note A5
পোস্ট তৈরি@selina75
তারিখ১লা জুলাই, ২০২৪
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 days ago 

আপু আপনার মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে সত্যি খারাপ লাগছে। আসলে যখন বয়স বেড়ে যায় তখন বিভিন্ন রকমের অসুখ চাপ দেয়। তবুও চাই আপনার মা যেন ভালো থাকেন। আপু আপনি নিজের মাকে দেখতে গিয়েছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। আর ফটোগ্রাফি গুলো দেখেও ভালো লাগলো।

 17 hours ago 

ধন্যবাদ আপু আমার মায়ের জন্য শুভ কামনার জন্য।দোয়া করবেন যেনো মা ভালো থাকেন।