জেনারেল রাইটিংঃ মব জাস্টিস।
হ্যাপি ক্রিসমাস।
আর কিছুক্ষণ পরেই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা। হ্যাপি ক্রিসমাস। আশাকরি ভালো আছেন সবাই। প্রত্যাশা করি সব সময় যেনো ভালো থাকেন। আজ ৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,শীতকাল। ২৪শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ। আজ একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
আমার বাংলা ব্লগে নিয়মিত ব্লগিংয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার চেষ্টা করি। বিষয় বস্তু নির্ধারনে চেষ্টা করি সমসমায়য়িক প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে। আজকের জেনারেল রাইটিং এর বিষয়ও বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে আলোচিত একটি শন্দ মব জাস্টিস। আপনারা জানেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতির পালা বদল হয়েছে। রাজনীতির পালা বদলের সাথে সাথে কিছু কিছু শব্দ,বাক্য বেশ আলোচিত হচ্ছে। তেমনেই একটি শব্দ মব জাস্টিস। দেশের বর্তমান হালচালের যারা খোঁজ খবর রাখেন শব্দটি তাদের কাছে পরিচিত। এর আগে শব্দটির সাথে মানুষ তেমন পরিচিত ছিল না। আসলে মব জাস্টিস কি?
মব অর্থ উত্তাল জনতা বা উচ্ছৃঙ্খল জনতা আর জাস্টিস অর্থ বিচার বা ন্যায়বিচার।অর্থাৎ মব জাস্টিস অর্থ দাড়াচ্ছে সমাজে উত্তাল বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার বিচার। আগে যেটাকে আমরা গণধোলাই বা গণপিটুনি বলতাম সেটাই এখন মব জাস্টিস। ৫ আগষ্ট বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালা বদলের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্বক অবনতি হয়েছে। গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই একই পরিস্থিতি ছিল। গ্রামে গ্রামে-মহল্লায় মহল্লায় রাত জেগে মানুষ পাহারা দিয়েছে। রাজনৈতিক কারনে প্রতিপক্ষের উপর হামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কারনে প্রতিপক্ষের উপর আক্রমনের একটি ট্রেন্ড চালু হয়েছিল। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মব জাস্টিসের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ্কে দমন ছিল আলোচিত ঘটনা। একথা ঠিক ৫ আগষ্টের পর বেশ কিছুদিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিত ছিল একেবারেই অকার্যকর। এই সময়টা মব জাস্টিসের জন্য জয়জয়কার! দিন দিন সেই অকার্যকর পরিস্থিত অবশ্য এখন কার্যকর হচ্ছে।
আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াই মব জাস্টিস। যখন কোন অপরাধীকে, প্রচলিত বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা না রেখে উত্তেজিত জনতা নিজেরাই বিচার করে-শাস্তি দেয় সেটাই মব জাস্টিস। যা সমাজের জন্য শুভ নয়। অনেকটা দূর্বলের উপর সবলের অত্যাচারকে জাস্টিফাই করাই হচ্ছে মব জাস্টিস। মব জাস্টিস অপরাধ। প্রচলিত আইনে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া চরম অপরাধ। রাজনৈতিক কারনের পাশাপাশি গুজব থেকে মব জাস্টিস সৃষ্টি হচ্ছে বেশী। এছাড়া চুরি,ডাকাতি, নির্যাতন ,ধর্ষনের ঘটনা থেকেও মব জাস্টিস হয়ে থাকে। মব জাস্টিস মানুষের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রয়া। আবার পরিকল্পিত বা সঙ্ঘবদ্ধ মব জাস্টিসও আমরা দেখেছি এই সময়ে। টাটকা একটি উদাহরণ দিয়ে আজকের লেখা শেষ করবো। গতকাল(২৩ আগষ্ট) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একজন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মব জাস্টিসের শিকার হয়ে লাঞ্চিত হয়েছে। কেউ অপরাধ করলে তার বিচার প্রচলিত আইনেই হওয়া উচিত। তা না হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বা বিশ্বাস চলে যায়। সমাজে অরাজক পরিস্থিতির তৈরি হয়। দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়। সর্বপরি মানুষের মানবাধিকার চরম ভাবে লঙ্ঘিত হয়। সভ্য সমাজে যা কোন ভাবেই কাম্য নয়।
মব জাস্টিস জঘন্যতম অপরাধ। এই অপরাধ চিরতরে নির্মূল হোক। সর্বত্র আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @selina 75 |
তারিখ | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Daily task
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.