রেসিপিঃকাউনের চাল এর জর্দা।
শুভেচ্ছা সবাইকে।
বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন? আশাকরি, সবাই ভালো আছেন। ভালো থাকুন এই প্রত্যাশা করি। আমিও ভালো আছি।আজ ২০শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জুলাই ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।
বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে আজ হাজির হয়েছি একটি রেসিপি ব্লগ নিয়ে। আর তা হচ্ছে কাউনের চালের জর্দা রেসিপি।আমার বংলাব্লগে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করার চেস্টা করি। আর এ চেস্টার ফল হলো আজকের কাউনের চালের জর্দা। কাউন দেশের চরাঞ্চলে চাষ হয়ে থাকে। কাউনের চাল কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। আর তাতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে ।সেই সাথে কাউনের চালে থাকে ফাইবার কোস্টকাঠিন্য দূর করতেও সহায়ক।এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন সি।তার মানে শরীরের জন্য বেশ উপকারি কাউনের চাল। আজ কাউনের চালের জর্দা তৈরিতে প্রধান উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করেছি কাউনের চাল।এছাড়া অন্যান্য উপকরণতো আছেই। আর কিভাবে রেসিপিটি তৈরি করলাম, চলুন তা দেখে নেই। আশাকরি,আমার আজকের উপস্থাপন রান্নার ব্লগ কাউনের জর্দা রেসিপিটি আপনাদের ভালো লাগবে।
উপকরণ সমূহ
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
কাউনের চাল | ১কাপ |
চিনি | ১ কাপ |
ঘি | ৩ টেঃ চামচ |
এলাচ | ২ পিস |
দারুচিনি | ১ইঞ্চি পরিমাণ |
মাল্টা | ১টি |
কাঠ বাদাম | ৫ টি |
পেস্তা ব বাদাম | ৫টি |
কিসমিস | ১৫-২০টি |
হলুদ ফুড কালার | ১ চাঃ চামচ |
চিনা বাদাম | ইচ্ছে মতো |
কুমড়ার মোরব্বা | ৪০ গ্রাম |
লবন | পরিমাণ মতো |
কেওড়া জল | পরিমাণ মতো |
রন্ধন প্রণালী
ধাপ-১
প্রথমে মাল্টা কেটে নিয়ে রস বের করে নিয়েছি।
ধাপ-২
এরপর কাউনের চাল ভালোভাবে ধুয়ে একটি ঝাঁকনীতে ঢেলে দিয়েছি পানি ঝরে যাওয়ার জন্য।
ধাপ-৩
চুলায় পরিমাণ মতো পানি দিয়ে একটি হাড়ি বসিয়ে দিয়েছি। তাতে হলুদ ফুড কালার দিয়ে দিয়েছি। পানি যখন ফুটা আসবে তখন ধুয়ে রাখা কাউনের চাল দিয়ে দিয়েছি। কাউনের চাল হাফ সিদ্ধ হয়ে এলে একটি ঝাকনীতে ঢেলে দিয়েছি, পানি ঝরে যাওয়ার জন্য।
ধাপ-৪
এবার মাল্টার রস একটি পাত্রে নিয়ে নিয়েছি। এবং তাতে পরিমান মতো চিনি মিশিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৫
চুলায় একটি হাড়ি বাসিয়ে দিয়েছি পরিমান মতো ঘি দিয়ে।
ধাপ-৬
ঘি গরম হয়ে এলে তাতে এলাচ দিয়ে দিয়েছি।
ধাপ-৭
এরপর দারুচিনি দিয়ে দিয়েছি।
ধাপ-৮
এরপর তাতে সিদ্ধ করা কাউনের চাল দিয়ে দিয়েছি। এবং ঘি এর সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-৯
এরপর তাতে চিনি মিশ্রিত মাল্টার রস দিয়ে দিয়েছি।এবং চাউলের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়েছি।
ধাপ-১০
কাউনের জর্দায় যাতে সুন্দর ফ্লেভার আসে সেজন্য সামান্য কেওড়া জল দিয়ে দিয়েছি।৩-৫ মিনিট জ্বাল দিয়েছি।যেহেতু আগে থেকেই কাউনের চাল সিদ্ধ করা তাই বেশিক্ষন জ্বাল দেয়ার প্রয়োজন নেই।
ধাপ-১১
কাউনের চালের জর্দা নামানোর আগে কেটে নেয়া বাদাম,কিসমিস ও মোরব্বা দিয়ে নেড়েচেড়ে নামিয়ে নিয়েছি। এবং একটি প্লেটে বাদাম কুচি দিয়ে সাজিয়ে নিয়েছি পরিবেশনের জন্য।
উপস্থাপন
আশাকরি আজকের কাউনের চালের জর্দা রেসিপিটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমি চেষ্টা করি নতুন নতুন রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। এই বর্ষায় সবাই নিজের যত্ন নিন।এবং পরিবারের বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হোন। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আমার রেসিপি ব্লগ এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন।
পোস্ট বিবরণ
পোস্ট | রেসিপি পোস্ট |
---|---|
পোস্ট তৈরি | selina 75 |
ডিভাইস | Redmi Note A5 |
তারিখ | ৪ই জুলাই,২০২৪ |
লোকেশন | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আগে আমাদের বাড়িতেও কাউনের চাউলের খিচুরি রান্না করা হতো খুব ভালো খেতে।কিন্তু এখন এটার চাষ ও করা হয়না আর দেখাও যায়না।বিলুপ্ত প্রায় এক রেসিপি শেয়ার করেছেন। খুব সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
কাউন এর চাল দিয়ে অনেক কিছুই রান্না করা যায়। তাই আজ আমি কাউন এর চালের জর্দা করেছি। মতামতের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আজ প্রথমবার এই চালের নাম শুনলাম।সত্যিই জানা ছিল না আপু।আর এটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হিসেবে বিনাশর্তেই খাওয়া যায়।আসলে বাজারে এখন বিভিন্ন রকম চাল আছে,যেটা বিভিন্নরকম প্রসেসিংয়ের কারণে অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে।যাইহোক কাউনের চাল দিয়ে জর্দা রেসিপি তৈরি করেছেন, যেটা আসলেই লোভনীয়। তবে, খেতে পারলে আরও বেশি ভালো লাগতো।
এই চাল উত্তরাঞ্চলে পাওয়া যায়। তবে চাষ কমে এসেছে। বেশ পুস্টিকর। মতামতের জন্য ধন্যবাদ আপু।
কাউনের চালের পায়েস খেয়েছিলাম একবার। আর আপনি এত সুন্দর করে কাউনের চালের জর্দা তৈরি করেছেন দেখে ভালো লাগলো আপু। মনে হচ্ছে খেতে দারুণ হয়েছিল। দারুন একটি রেসিপি আমাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমিই এর আগে পায়েসের রেসিপি শেয়ার করেছিলাম আপু ।খেতে বেশ মজা । জর্দাও খেতে বেশ । ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
বাহ্,আপু আপনি আজ জর্দা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছেন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। কারন জর্দা আমার খুব পছন্দ। তবে কাউনের চালের পায়েস খেয়েছি জর্দা কখনো খাওয়া হয়নি আমার।আপনি খুব সুন্দরভাবে রেসিপিটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এজন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনাকে।
পায়েস খেতে বেশ মজা কাউনের চালের । তবে জর্দাও খেতে বেশ মজা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কাউনের চালের জর্দা বানিয়ে ফেললেন আপু। আমি এক সপ্তাহের ও বেশি সময় ধরে কাউনের চাল কিনে এনে রেখেছি রেসিপি করবো বলে। মেয়ের অসুস্থতার জন্য হয়ে ওঠেনি। ঠিক বলেছেন আপনি এগুলো আর অঞ্চলে চাষ হয়। অনেক পুষ্টিও উপকারিতা ও উল্লেখ করেছেন এই চালের।আপনার কাউনের চালের জর্দা দেখে তো আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছে। ভীষণ লোভনীয় ভাবে কাউনের চালের জর্দা তৈরি করেছেন আপনি। ধাপে ধাপে জর্দা তৈরি পদ্ধতি চমৎকার সুন্দরভাবে আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বাসায় যখন কাউন এর চাল আছেন তখন বানিয়ে ফেলুন।মতামতের জন্য ধন্যবাদ।