জেনারেল রাইটিংঃ অনলাইন জুয়া।

in আমার বাংলা ব্লগyesterday

শুভেচ্ছা সবাইকে।

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? ভালো ও সুস্থ্য আছেন,আশাকরি। সকলে ভালো থাকেন এই প্রত্যাশা করি।আমিও ভাল আছি। আজ ৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,হেমন্তকাল। ২০শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।

g1.jfif

source

আমাদের দেশে তরুণ সমাজকে ধবংসের জন্য এতদিন দায়ী করা হতো মাদককে। মাদকাসক্ত হয়ে অনেক তরুণ পরিবার ও সমাদের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন তরুণ দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর না হয়ে হয়েছে মাদকাসক্ত। মাদকাসক্ত সন্তানের জ্বালা কি তা ভুক্তভোগি পরিবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। মাদকাসক্ত সন্তানের কারণে পরিবারটি আত্নীয়-স্বজন ও সমাজের কাছে অনেকটা অপাঙক্তেয় । এরকম পরিবারের সংখ্যা আমাদের চারপাশে অনেক। এতদিন এক মাদকের ছোবল ছিল আমাদের সমাজে এর উপর নতুন করে যুক্ত হয়েছে অনলাইন জুয়া।এই জুয়াও এক প্রকার আসক্তি। যার ফলে সর্বস্বান্ত হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। শুধু তরুণ প্রজন্ম নয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ আসক্ত হচ্ছে এই অনলাইন জুয়ায়।

অনলাইন জুয়ার অনেক সাইট তাদের বিভিন্ন লোভনীয় অফার ও এজেন্টের মাধ্যমে যুক্ত করছে মানুষকে। বিনা পরিশ্রমে অল্প পুঁজিতে একদিনে লাখোপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আর অনলাইন জুয়া গুলো সহজলভ্য হওয়ায় ঝুঁকে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।প্রথম দিকে ইনভেষ্টের টাকা ২/৩ গুণ ফেরত পেলেই বাড়তে থাকে লোভ। আর অর্থের লোভ মারাত্নক। সামাল দেয়া মুশকিল। যেভাবেই হোক বেশি টাকা ইনভেষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠে। কখনো বাজিতে লাভ আবার লস। এবার হবে আবার ইনভেষ্ট আবার বাজি এভাবে একসময় সব জলে চলে যায়। এভাবে একসময় নিঃস্ব হয়ে যায়। হতাশায় নিমজ্জিত হয়। পরিবারের বোঝা হয়ে যায় তরুণ,যুব বা বয়স্ক মানুষটি। যদিও তরুণ ও যুবরাই বেশি আসক্ত জুয়াতে। অনলাইন জুয়া একটা নেশার মতো, এখানে একবার ঢুকলে নিঃস্ব হওয়া ছাড়া উপায় নেই।

বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তি মানুষের জীবনযাত্রার মান ও যোগাযোগের ক্ষেত্রকে সহজ করে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। সুফল ভোগ করছে মানুষ। এক শ্রেণির মানুষ এই তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার শুরু করেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে এর অপব্যবহার। বিশেষ করে ফেসবুক,টুইটাই,হোয়াট অ্যাপ,টেলিগ্রাম প্রভৃতি মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও প্রসার চলছে। এরসাথে যুক্ত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং এর সহজলভ্যতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে ৫ হাজার কোটি টাকার উপর দেশীয় মুদ্রা বিদেশে পাঁচার হচ্ছে। কার্যকর মনিটরিং এর অভাবে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান গুলো সে কাজটি অনায়াসে করে যাচ্ছে।

অনলাইন জুয়া দেশের জন্য অশনিসংকেত। আমাদের দেশে যে কোন ধরণের জুয়া নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও দিন দিন এর ব্যবহার বেড়েই চলছে। বিশেষ করে অনলাইনে। এর কারণ অনলাইনে জুয়ার অ্যাপসের সহজলভ্যতা। যে কেউ চাইলেই সহজেই অ্যাপসে অ্যাকাউন্ট খুলে যুক্ত হতে পারছে। শহর কিংবা গ্রাম নয়, দেশের সর্বত্রই এখন এই অনলাইন জুয়ার ছড়াছড়ি। দেখার কেউ নেই! ইচ্ছে মত চলছে। এখনেই বন্ধ করতে না পারলে সামনের পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। সরকারের উচিত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে অনলাইনে জুয়ার সব সাইট ও অ্যাপস বন্ধ করে দেওয়া। বর্তমানে অনলাইন জুয়ার যে সামাজিক আগ্রসন চলছে তা বন্ধ না করার কোন বিকল্প নেই। আর বন্ধ করতে না পারলে সামাজিক অস্থিরতা দিন দিন বৃদ্ধি পারে। সরকার, বিভিন্ন সামাজিক,সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক হিসেবে আমাদের সবার উচিত যার যার অবস্থান থেকে সোচ্চার হয়ে অললাইন জুয়ার আগ্রাসন রুখে দিতে। আসুন সবাই অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। পরিবারে ও সমাজে অনলাইন জুয়ারিদের না বলি।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেনীজেনারেল রাইটিং
ক্যামেরাRedmi Note A5
পোস্ট তৈরি@selina 75
তারিখ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

image.png

image.png

image.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 yesterday 

daily task

p.png

p2.png

p3.png

 yesterday 

অনলাইনে জুয়া খুবই খারাপ একটা বিষয়। মানুষকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে খুব অল্প সময়ে কৌশল করে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। যেগুলো সাধারণ মানুষের বুঝতে। কিন্তু দিনশেষে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। তাই এই জিনিসগুলো দেশ থেকে যত দ্রুত উঠে যাবে ততই দেশের জন্য ভালো।