কবিতা -"বিজয়ের গৌরব"🇧🇩
স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে মহান বিজয় দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস আমাদের জাতির গর্ব ও অহংকারের প্রতীক। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, তা ছিল লাখো বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগ, রক্ত আর অশ্রুর ফসল। তাদের অসীম সাহস ও ত্যাগে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। এই দিনটি শুধুই আনন্দের নয়, বরং এটি আমাদের জন্য দায়িত্ব, শ্রদ্ধা, এবং প্রতিজ্ঞার দিন।
মুক্তিযুদ্ধের সময়কার প্রতিটি দিন ছিল রক্তাক্ত ও কষ্টময়। মাটি, আকাশ, আর মানুষের মন ছিল শোক ও স্বপ্নের মিশেলে ভরা। হাজারো মা-বাবা তাদের সন্তান হারিয়েছেন, বোনেরা হারিয়েছেন ভাইদের, তবুও তারা থেমে থাকেনি। স্বাধীনতার জন্য তাদের যে ত্যাগ, তা আমাদের লাল-সবুজের পতাকায় অমর হয়ে আছে। বিজয়ের দিনে সেই আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করতে হবে।
এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতার পথ সহজ ছিল না। বিজয়ের পেছনে লুকিয়ে আছে অগণিত মানুষের কান্না, স্বপ্নভঙ্গের ব্যথা, আর জীবন উৎসর্গের গল্প। তবুও, তাদের সেই আত্মত্যাগের কারণেই আজ আমরা স্বাধীন। বিজয় দিবস আমাদের শেখায়, নিজেদের দেশের প্রতি ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ, আর একে সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়ার গুরুত্ব।
তাই, বিজয়ের দিনে আমাদের উচিত সেই মহান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তাদের আত্মত্যাগকে হৃদয়ে ধারণ করা। এটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার একটি দিন, যা আমাদের শপথ করায় দেশকে আরও সমৃদ্ধ, উন্নত, এবং গৌরবময় করে তোলার। এই দিনটি আমাদের শিখিয়ে দেয় যে, আমরা স্বাধীন জাতি, আর সেই স্বাধীনতাকে ধরে রাখা ও উন্নতির পথে এগিয়ে নেওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব।
"আমাদের বাংলাদেশ" যেন সবসময় গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়—এই প্রতিজ্ঞাই হোক বিজয়ের দিনের মূল শিক্ষা।
বিজয়ের গৌরব
— সেলিনা সাথী
লাল সবুজের পতাকাটা
আজও বাতাসে ডাকে,
ডাকে এক সোনালি ইতিহাস—
একটি ভূখণ্ড, একটি ভাষা,
একটি জাতির আত্মত্যাগ।
১৯৭১-এর সেই রক্তাক্ত দিনগুলি,
বুলেট আর বোমার তপ্ত শিখায়
পুড়ে গিয়েছিল শত সহস্র স্বপ্ন।
তবুও এক অমর ডাক উঠেছিল—
"তোমার দেশ, আমার দেশ,
বাংলাদেশ!, বাংলাদেশ।
শীতল ডিসেম্বরের সকালে
মাটি যেনো বলেছিল,
"আমি রক্ত চাই।"
ক্ষেতের ধান কেঁদেছিল,
আকাশ হয়ে উঠেছিল রক্তবর্ণ।
আর সেই দিনগুলোতে
মা হারিয়েছিলেন ছেলে,
বোন হারিয়েছিলেন ভাই,
তবুও স্বপ্ন ছিল—
একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের।
১৬ই ডিসেম্বর!
এ যেনো এক নতুন সূর্যোদয়ের দিন।
সেদিন বীরেরা লুটিয়ে পড়েছিলো
বিজয়ের মাটিতে,
চোখে ছিলো গৌরবের অশ্রু,
আর হাতে তুলে নিয়েছিলো
স্বাধীনতার পতাকা।
সেদিন বাংলাদেশ পেয়েছিল
তার মুক্তির পথ।
আজ আমরা বিজয়ের আনন্দ
উদযাপন করি,
তবে হৃদয়ের এক কোণে থেকে যায়
তাদের স্মৃতি,
যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলো।
লাল সবুজের প্রতিটি ভাঁজে
লেখা আছে সেই বীরত্বগাঁথা,
প্রতিটি শিশিরকণা জানে
তাদের ত্যাগের গল্প।
আমরা বিজয়ী জাতি,
তবু সেই বিজয়ের পথে ছিলো
অগণিত কান্না,
অগণিত স্বপ্নের মৃত্যু।
এই দিনটি শুধু আনন্দের নয়,
এটি প্রতিজ্ঞার দিন—
দেশকে ভালোবাসার,
দেশকে গড়ার,
আর পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে
গৌরবময় করে তোলার।
তোমাদের জন্যই আজ
আমরা বেঁচে আছি,
তোমাদের জন্যই আজকের
এই পতাকা,
এই স্বাধীনতা।
তোমাদের প্রতি রইল
চিরকালীন বিনম্র শ্রদ্ধা,
হে মহান মুক্তিযোদ্ধারা,
তোমাদের আত্মত্যাগেই লেখা হলো—
"আমাদের বাংলাদেশ!"
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুব সুন্দর লিখেছেন আপু। অনেক ভালো লাগলো বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে লেখা আপনার এই চমৎকার কবিতা। রাত পোহালে বিজয় দিবসের দিন। যেন মনের মধ্যে এক অন্যরকম ভালো লাগার অনুভূতি। বারবার ফিরে আসুক আমাদের বিজয় দিবস আনন্দ উল্লাস নিয়ে।
বিজয়ের গৌরব এই কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনি খুবই সুন্দর ভাষায় কবিতাটি লিখেছেন। কবিতার মাধ্যমে যেন বিজয়ের গৌরব সুন্দরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
প্রথমেই মহান বিজয় দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনেক বড় একটি কবিতা লিখেছেন।কবিতাটি পড়ে এক কথায় মনে শান্তি পেলাম।
বিজয় দিবস এমন একটি দিন এই দিনকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা দরকার। এবং হাজার শহীদের জীবন ও রক্তের বিনিময়ে আমরা এই দেশ পেয়েছি। তবে আজকে আপনি সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন বিজয় দিবস উপলক্ষে। আপনার কবিতাটি পড়ে সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। চমৎকার অনুভূতি দিয়ে এত সুন্দর একটি কবিতা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।