সিয়ামের জীবনসঙ্গী হিসেবে "টুম্পাকে" আশীর্বাদ করে এলাম||~২২/১১/২০২৪
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন। এটাই প্রত্যাশা করি।
জীবন কখনোই সহজ বা সরল নয়, এটি প্রতিনিয়ত আমাদের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন দিকনির্দেশনা এবং নতুন অনুভূতি নিয়ে হাজির হয়। এক সময় আমি ছিলাম একটি শিশু, তারপর কিশোরী, কন্যা, বধু এবং আজ, জীবন আমাকে এক নতুন পরিচয়ে পরিচিত করছে—শাশুড়ি মা হিসেবে। তবে, এই যাত্রায় এমন একটি মুহূর্ত আসে, যা আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি জটিল, অনেক বেশি গুরুতর—যেমন আমার ছেলে সিয়ামের জীবন সঙ্গী খোঁজার দায়িত্ব। সিয়াম তার জীবনের সঙ্গী নির্বাচন করার পুরো দায়িত্বটা আমার উপর দিয়েছিল। ভাবুন তো, নিজের সন্তানের জন্য এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে—এটা আমার জন্য ছিল এক অদ্ভুত এবং কঠিন দায়িত্ব। আমি জানতাম, যে সঙ্গী সিয়াম পাবে, তার সঙ্গেই তার জীবন কাটানোর কথা। তাই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল আমার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
এটা সত্যিই সহজ ছিল না, কারণ একজন মায়ের জন্য তার সন্তানের সুখের পথে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া ভয়ঙ্কর হতে পারে। দিনরাত আমি ভাবতাম, সিয়াম কেমন সঙ্গী চাইবে, সে কী ধরনের মানুষের সঙ্গে সুখী হবে? একদিকে ছিল তার ইচ্ছা এবং অন্যদিকে ছিল আমার অভিজ্ঞতা, ভালোবাসা, আর সন্তানের জন্য সবচেয়ে ভালো কিছু করার মানসিকতা। কিন্তু, সিয়ামের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটা ছিল তাকে উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজে দেওয়া, যার সঙ্গে সে নিজের সুখী ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারবে।
একদিন, আমি একটি মেয়ে পছন্দ করি, যাকে দেখে মনে হয়েছিল, সিয়ামের জন্য সে আদর্শ সঙ্গী হতে পারে। তার মধ্যে ছিল কোমলতা, সৌম্যতা, আর এক অদ্ভুত শান্তি যা সিয়ামের জীবনে যোগ করতে পারবে। তার ব্যক্তিত্ব, তার স্বভাব, এবং তার জীবনদর্শন—এগুলো সব কিছু মিলে সিয়ামকে এক সুন্দর সহযাত্রী দিতে পারে। আমি বুঝলাম, এই মেয়েটি হতে পারে সিয়ামের জীবনের সঙ্গী। সেই অনুভূতিটি আমার মধ্যে এক শান্তির আভা সৃষ্টি করেছিল। আমি মনে করলাম, সিয়ামের জন্য এই মেয়ে এক আদর্শ জীবনসঙ্গী হবে, যে তার পাশে দাঁড়িয়ে সুখী ও সফল জীবন কাটাতে পারবে।
আজ, আমরা সবাই মিলে সেই মেয়েকে আশীর্বাদ করে এলাম, এবং সিয়াম সেখানে উপস্থিত ছিল না। তবে, তার কাছে সবকিছু পৌঁছানোর জন্য আমি ভিডিও কলে তাকে দেখিয়েছি। সিয়াম নিজের মতামত জানাতে না পারলেও, তার চোখে আনন্দের ঝিলিক ছিল, তার মুখে এক অদ্ভুত প্রশান্তি। এটা দেখে আমি জানলাম, সিয়ামও এই সিদ্ধান্তে খুশি, এবং সে নিজের ভবিষ্যত নিয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। সিয়ামের এমন খুশি মুখ দেখে, আমি অনুভব করলাম যে আমার এই সিদ্ধান্ত, আমার দায়িত্ব পালন, সঠিক ছিল। এই মুহূর্তে আমার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা প্রায় অসম্ভব, কিন্তু তারপরও বলতে চাই, যে শান্তি, আনন্দ এবং গর্ব আমি অনুভব করছি, তা একেবারেই অদ্ভুত।
জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই আসে এক নতুন সম্ভাবনা নিয়ে, আর সেই সম্ভাবনার পথে আমি আজ একটি নতুন দায়িত্বের দিকে এগিয়ে চলেছি। আজ আমি শুধু আমার সন্তানের জন্য আশীর্বাদ করছি না, বরং সেই নতুন জীবন সঙ্গীটির জন্যও ভালোবাসা, আশীর্বাদ এবং শুভকামনা জানাচ্ছি, যে সিয়ামের জীবনে নতুন আলো নিয়ে আসবে। জীবন কখনোই সরল বা একরৈখিক থাকে না—এটি একটি চলমান যাত্রা, যা প্রতিটি নতুন অধ্যায়ে আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি দেয়। আমি এখন শাশুড়ি মা, কিন্তু আমি জানি, এই নতুন পরিচয়ে আমি আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠব, আরও বেশি প্রেম এবং সহানুভূতির সঙ্গে জীবন কাটাবো।
সিয়ামের জীবনের এই নতুন অধ্যায়, তার সুখী ভবিষ্যতের দিকে তার প্রথম পদক্ষেপ, আমাকে আবারও শেখাল যে, সন্তানদের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টায় মা-বাবার কর্তব্য শেষ হয় না। জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে, তাদের জন্য সঠিক পথ বেছে নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আজ আমি সেই দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি, এবং তার জন্য আমি গর্বিত।
🥀 🥀
বন্ধুরা আমার আজকের এই রাইটিং টি , নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। আমি সেলিনা সাথী
💞
🥀 ধন্যবাদ 🥀
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়:
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
অনেক অনেক শুভ কামনা রইল টুম্পা এবং সিয়ামের জন্য, সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুখী দাম্পত্য জীবনের কামনা করছি।
আলহামদুলিল্লাহ, খবরটা শুনে ভীষণ খুশি হলাম।
আপনি শাশুড়ি মা হতে চলেছেন, দারুন একটা ব্যাপার।
সিয়াম ভাইয়ের সামনের দিনগুলো আনন্দময় হয়ে উঠুক এই কামনা করছি।
আলহামদুলিল্লাহ আপু টুম্পাকে আশীর্বাদ করেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো । সত্যি সিয়াম ভাইয়ের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো।আশাকরি আপনাদের মনের মতো একটা বউ পেয়েছেন।দাওয়াতের অপেক্ষায় থাকলাম আপু।
জীবনের সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে জীবনসঙ্গীকে বেছে নেওয়া যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।যে দায়িত্বটা সিয়াম ভাই নিজের মায়ের উপর ছেড়ে দিয়েছে। পৃথিবীতে একমাত্র মা তার সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় ভরসার প্রতীক। যেহেতু আপনি একজন সেরা সঙ্গিনীকে খুঁজে দিয়েছেন। আশা করি বৈবাহিক জীবন সুখের হবে দোয়া করি। দুজনের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
অবশেষে তাহলে সিয়াম ভাইয়ের টুম্পাকে পাওয়া গেল। শুনেই তো অনেক এক্সাইটেড লাগছে আপু। আসলে ঠিকই বলেছেন এরকম গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজে অনেক চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সারা জীবনের বিষয়। তাছাড়া যেহেতু আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছে তাই আপনার চিন্তাটা অনেক বেশি ছিল। যদি ভুল কোন ভুল না হয়ে যায়। যাই হোক নতুন দম্পতির জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো। টুম্পার ছবি দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
নিঃসন্দেহে এটি আমার বাংলা ব্লগ বাসির জন্য একটি সুখবর। অবশেষে আমাদের কমিউনিটি শ্রদ্ধেয় মডারেটর সিয়াম ভাইয়ার শুভ বিবাহ হতে চলেছে। আপনি কিন্তু যথার্থ বলেছেন আন্টি, ছেলের জন্য মেয়ে খোঁজা মায়ের পক্ষে এটা সত্যি গুরুভার দায়িত্ব। কেননা এই একটি সিদ্ধান্তের কারণে হয় সন্তানের জীবন সুখকর হবে অথবা নরকে পরিণত হবে। যাইহোক অবশেষে আপনি ভাইয়ার পছন্দমত পাত্রী খুঁজে পেয়েছিলেন এটাই যেন খুশি হলাম। সর্বোপরি সিয়াম ভাইয়ার জীবনের নতুন অধ্যায়ের শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইল।
আরিব্বাস! দারুণ খবর৷ তোমার লেখা পড়তে পড়তেই মনে পড়ল আজ শুক্রবার৷ আজই তো যাবার দিন ছিল৷ এখন তো মিষ্টি মুখ করার সময় বন্ধু৷ তোমায় অনেক অভিনন্দন৷ জীবনের নতুন আরেকটি পরিচয় পেলে তুমি। এখন থেকে দায়িত্বও অনেক বেড়ে গেল৷ নতুন পরিচয় একই ভাবে তোমায় সমৃদ্ধ করে তুলুক এই কামনা করি৷ আর সিয়াম ও টুম্পার জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইল৷ ওদের চলার পথ মসৃণ হোক৷ ভালো থেকো সকলে মিলে৷
অনেক খোঁজাখুঁজির করার পর অবশেষে তাহলে টুম্পা ভাবিকে খুঁজে পাওয়া গেলো। আপনি অবশ্যই ভাইয়ার জন্য নিঃসন্দেহে বেস্ট একজনকে বাছাই করেছেন। এরকম একটা খবর শুনে অনেক ভালো লাগলো। আপনি তাহলে শাশুড়ি মা হয়ে গেলেন। সিয়াম ভাইয়া এবং টুম্পা ভাবির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। উনাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
সিয়াম ভাইয়ের জন্য শুভকামনা রইলো।