কবিতা -"তবুও রাত জেগে বেঁচে আছি"||~~
স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে বিজয় মাসের রক্তিম শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
অনুভূতির কিছু কথা
রাত তখন গভীর। নীলফামারীর শীতল হাওয়া জানালা দিয়ে ঢুকে এসে যেন আমার মনটাকে আরও নিস্তব্ধ করে দিচ্ছিল। বাইরে পূর্ণিমার আলো থাকলেও, আমার ঘরের ভিতরটা অন্ধকারে আচ্ছন্ন। মনটা যেন এক বিশাল শূন্যতায় ডুবে আছে।
বহুদিনের পুরোনো স্মৃতিগুলো একে একে মনে পড়ছিল। কোনোটা আনন্দের, কোনোটা দুঃখের। কিছু স্মৃতি ছিল এমন, যা ভোলার চেষ্টা করেও ভুলতে পারিনি। আবার কিছু ছিল, যা আমি বারবার মনে করতে চেয়েছি, যেন একটুখানি শান্তি পাই।
চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকলেও ঘুম আসছিল না। চোখের সামনে যেন ভেসে উঠছিল ভাঙা স্বপ্নের ছবিগুলো। সেই ভাঙা স্বপ্নগুলো কখনো কাঁদিয়েছে, আবার কখনো আমাকে নতুন করে জেগে ওঠার শক্তি দিয়েছে। মনে হচ্ছিল, এই রাতের নিস্তব্ধতাই যেন আমার মনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে।
একটা জায়গায় মন থেমে ছিল—আমি কি এখনো জীবনের গভীরতা বুঝতে পেরেছি? রাতের অন্ধকারটা কি শুধু ভয়ংকর, নাকি এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে আলোর সন্ধান?
মনের এই টানাপোড়েনের মাঝেই কলমটা হাতে নিলাম। নিস্তব্ধ রাতে এই অনুভূতিগুলোকে আর আটকে রাখা সম্ভব হলো না। মনে হলো, এই রাতটাই আমাকে ডেকে বলছে, “তুমি লিখে ফেলো। নিজের অনুভূতিগুলো মুক্ত করো।”
সেই গভীর রাতের নীরবতায় জন্ম নিলো কবিতাটি।
(সেলিনা সাথী)
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
রাত গভীর, নিস্তব্ধতার চাদরে
ঢাকা চারপাশ যেন অচেনা হয়ে যায়,
আলো-আঁধারের খেলায়
চোখের সামনে কেবল ছায়ার নাচন।
ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে যায়, কিন্তু
আমার সময় থমকে থাকে,
এই নীরবতার মাঝে, আমি জেগে থাকি।
কত শত স্মৃতি এসে ভিড় করে,
গোপন দুঃখ আর না বলা কথাগুলো
যেন ফিসফিস করে কানে কানে।
পুরোনো একখানা চিঠি খুলে বসি—
সেই অক্ষরগুলো কি এখনো জীবন্ত?
তবুও পড়ি, যেন তাদের
নতুন করে জানার ইচ্ছা।
রাত গভীর হলে মনে হয়,
আমি একা নই,পাশে যেন বসে থাকে
ভাঙা স্বপ্নের দল, তাদের ভাঙাচোরা
টুকরোগুলো কেমন মায়াবী আলো ছড়ায়।
এ আলো আমাকে কাঁদায়,
আবার জাগিয়ে তোলে।
রাত জেগে বাঁচা মানে নিজের সাথে
সময় কাটানো। জীবনের ঝড়-তুফান,
ভালোবাসা, বিচ্ছেদ—সব যেন রাত্রির
আকাশে তারা হয়ে ফুটে থাকে।
সেই তারার দিকে তাকিয়ে কতবার
মনে হয়েছে, "জীবন তো থেমে থাকে না
তবে আমি কেন থেমে থাকি?"
তবুও রাত জেগে থাকি।
কারণ রাতের গভীরতা আমাকে
শেখায় বেঁচে থাকার মানে।
মনে হয়, এই নিস্তব্ধ রাতেই আমি
সত্যি নিজের কাছে ফিরে আসি।
অন্ধকারের ভেতর থেকে
নিজের আলো খুঁজে পাই।
এই জাগরণই আমাকে বলে দেয়,
আলো আসবেই, নতুন
ভোরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে।
ততক্ষণ, আমি রাত জেগে বেঁচে থাকি।
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
সময় -- রাত ৮:২০
কবিতা কুটির -নীলফামারী।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
কত স্মৃতি আর চিন্তার ভিড়ে প্রতিনিয়ত ডুবে যাই আমরা। আর সেই সব চিন্তা থেকেই তৈরি হয় নতুন বিষাদের। তোমার কবিতা থেকে এই কথাগুলোই মনে পড়ছে বারবার। সব মিলিয়ে দারুণ সুন্দর একটি কবিতা লিখে ফেলেছ। জীবনের কথা লিখতে গেলে কবিতার থেকে ভালো মাধ্যম আর কিছু হয় না।
এজন্য এক অন্যরকম অনুভূতি দিয়ে লেখা আপনার আজকের কবিতা। বেশ ভালো লাগলো রাত জেগে থাকা মুহূর্তে ভাঙ্গাচুরা স্বপ্নগুলোর দল যখন পাশে থাকে এমন অনুভূতিটা মনের মধ্যে আনতে পেরে। যেন নিজেও এক অন্যরকম অনুভূতির সাগরে হারিয়ে গেলাম। অসাধারণ ছিল কবিতার লাইনগুলো।
মাঝে মাঝে আমার এমন হয়। রাতে ঘুম আসে না। একটা নিস্তব্ধতা এসে আমার চারিদিকে ঘিরে ধরে। তখন অনেক অদ্ভুত খেয়াল অনেক স্মৃতি মনে পড়ে। ঐ মূহুর্ত্তের অনূভুতি টা একেবারেই আলাদা হয়ে থাকে। কবিতা টা অসাধারণ লিখেছেন আপু। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।