১২ ডিসেম্বর, আমার প্রিয় বাবার মৃত্যুবার্ষিকী||~~
স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
" অনুভূতি"
আজ, ১২ ডিসেম্বর, আমার প্রিয় বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। একজন বাবাকে হারানোর শূন্যতা যে কত গভীর, তা শুধুমাত্র সেই সন্তানই বুঝতে পারে, যে এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। আমার বাবাকে বহু বছর আগে হারিয়েছি, কিন্তু সেই বেদনা, সেই অভাব এখনও আমার জীবনকে গভীরভাবে স্পর্শ করে। বাবার স্মৃতি, তাঁর স্নেহ, মমতা আর অভিভাবকত্ব প্রতিদিনই যেন আমার হৃদয়ে কথা বলে।
আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমিন।
"রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।"
অর্থাৎ, হে আমার প্রভু! আমার বাবা-মার প্রতি দয়া করুন, যেমন করে তারা আমাকে শৈশবে লালন-পালন করেছেন।
বাবাকে হারিয়ে এতিম হওয়ার অনুভূতি এমন একটি কষ্ট, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গভীর ক্ষতের মতো মনের এক কোণে রয়ে যায়। বাবার হাত ধরার, তাঁর স্নেহময় দৃষ্টির নিচে বেড়ে ওঠার স্মৃতিগুলো যেন এখন শুধুই স্মৃতির পাতায়। আমার জীবনের প্রতিটি সফলতা, প্রতিটি অর্জনে আমি বাবাকে সবচেয়ে বেশি মিস করি। যদি তিনি আজ পাশে থাকতেন, তাহলে নিশ্চয়ই আমাকে গর্বের চোখে দেখতেন।
যে কেউ তাঁর বাবা-মাকে জীবিত পেয়েছেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ, তাদের যথাযথ সম্মান করুন, ভালোবাসুন এবং তাদের জন্য নিয়মিত দোয়া করুন। কারণ, বাবা-মা আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহ। তাদের সান্নিধ্য হারালে সেই অভাব আর কখনো পূরণ হয় না।
আবারও সবার কাছে অনুরোধ, আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাঁর কবরকে প্রশস্ত করেন, আলোয় ভরিয়ে দেন, এবং তাকে চিরশান্তির স্থান জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমিন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বাবা-মার খেদমত করার তৌফিক দান করুন এবং তাদের জন্য নিয়মিত দোয়া করার সুযোগ দিন। আমিন।
বাবা তোমার মুখের সেই স্নেহমাখা হাসি,
যেন এখনো আমার বুকের ভেতর বাজে।
তোমার গম্ভীর অথচ কোমল কণ্ঠস্বর—
আজো আমার শূন্য রাতে বাতাসের
মতো জড়িয়ে ধরে।
তুমি ছিলে আমার প্রথম নিরাপত্তা,
প্রথম আশ্রয়,
যেখানে পৃথিবীর সব ঝড় এসে থেমে যেত।
তুমি কি জানো, বাবা?
তোমার চলে যাওয়ার পর
জীবন এক অসমাপ্ত গল্প হয়ে রয়ে গেছে।
তোমার হাত ছাড়া
পৃথিবীটা যেন ঠান্ডা, নিঃসঙ্গ।
তোমার ছায়া হারিয়ে যাওয়া মানে,
প্রতিদিন একটু একটু করে
এতিম হয়ে যাওয়া।
তোমাকে মনে পড়ে যখন,
মনে হয়, জীবন তো বড় অদ্ভুত!
তোমার শাসনগুলো এখন শূন্য,
তোমার মমতার পাহাড়
এখন শুধুই স্মৃতি।
তুমি বলেছিলে,
"তুমি বড় হলে শক্ত হবে,
কঠিন হবে—পাহাড়ের মতো।"
কিন্তু পাহাড়েরও তো
ভাঙার সময় আসে, বাবা।
তুমি ছিলে আমার ভিত,
তোমার অভাবে আমার ভিত কেঁপে ওঠে।
আজ তোমার জন্য দোয়া করি—
মহান প্রভু যেন তোমায় রাখেন চির শান্তিতে।
তোমার কবর যেন হয় আলোর প্রদীপ।
জান্নাতুল ফেরদৌসে তোমার জন্য
আমি দু'হাত তুলে প্রার্থনা করি।
তুমি কি আমাকে শুনতে পাও, বাবা?
তোমার সেই মেয়েটা এখনো
তোমার কথা ভেবে চোখের
জল লুকিয়ে রাখে।😭
তুমি ছিলে, তুমি আছো,
তুমি থাকবে আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে।
তুমি আমার শেকড়, আমার সবটুকু।
তোমার জন্য, বাবা,
এই শূন্যতা, এই ব্যথা—
তোমার স্মৃতির সুরে বাঁধা আমার জীবন।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপু আপনার বাবা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন, জেনে অনেক খারাপ লাগলো। আপনার প্রতি দোয়া রইল আপু। আসলে এই পৃথিবী ছেড়ে আমাদের সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে। আমরা কেউ এই পৃথিবীতে চিরস্থায়ী ভাবে বসবাস করতে পারবো না। তবে, বাবা হারানোর কষ্ট অনেক কঠিন।
আমার বাবা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছে অনেক আগে। আমাদেরকে এতিম করে চলে গেছে। অন্তরের অন্তস্থল থেকে সব সময় দোয়া করি আল্লাহ যেন আমার বাবাকে বেহেস্ত নসিব করেন। 🤲
বাবার জায়গা কখনো পরিপূর্ণ হয় না। জায়গাটা আজীবন খালি রয়ে যায়। তবে আমরা স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে বাবা মাকে আমাদের সঙ্গে ধরে রাখি। আর বাবা-মা তার সন্তানকে সারা জীবন আশীর্বাদ করে চলেন। বাবাকে নিয়ে লেখা তোমার কবিতাটা অসাধারণ হয়েছে। তোমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে আমার তরফ থেকে অনেক প্রণাম এবং শ্রদ্ধা জানাই।
একদম ঠিক বলেছ বাবার জায়গা কখন নয় কেউ পূরণ করতে পারে না। বাবা হারানোর পর এতিম হয়ে বুঝেছি বাবা মাথার উপর থাকা কতটা জরুরী।
এই একটা কষ্টই হয়তো সময়ের সাথে কমে না বরং বাড়ে। আমরা যত বড় হয় ততই যেন বাবার অভাব অনূভব করতে থাকি। এই অনূভুতি টা আমার বেশ ভালোভাবে জানা আছে। কবিতা টা সুন্দর ছিল আপু। চমৎকার লিখেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু আপনার মনটা অনেক খারাপ বুঝতে পারছি। আসলে বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে কেউ ভালো থাকতে পারে না। অনেক স্মৃতি হৃদয়ে জাগ্রত হয়। আপনার বাবার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল আপু। তিনি যেন পরপারে ভালো থাকেন।