😢 " বাবার তরফ থেকে পাওয়া শেষ উপহারটি "
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।
আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের মাঝে যুক্ত আছি।আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করে থাকি।আমি বিশ্বাস করি আমার ব্লগ আপনাদের কাছে ভালো লাগে।আমি আমার প্রতিদিনের নানা রকম কর্মকান্ড থেকে কিছু কিছু বিষয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।আজ ও এসেছি এমন একটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে।আশাকরি সঙ্গেই থাকবেন।
বাবার তরফ থেকে পাওয়া শেষ উপহারটিঃ
বন্ধুরা,আজ নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম।আজকের লেখার বিষয়টি খুব হৃদয়স্পর্শী।আসুন আজকের লেখাটি আপনাদের মাঝে তুলে ধরি।বাবার তরফ থেকে পাওয়া শেষ উপহারটি খুবই মূল্যবান আমার কাছে।যেকোনো কারো দেয়া উপহারই ভীষণ মূল্যবান।আর যেহেতু বাবার দেয়া উপহার,আর শেষ উপহার তাই এর মূল্য অনেক বেশী এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাবা আর আমার মাঝে নেই।আজ এক মাস ৭ দিন পার হয়ে গেলো।বাবা পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছেন।আমাদের মাঝে হাজার ও স্মৃতি রেখে ঘুমিয়ে আছেন বাবা।কেউ আর বলবে না আমাকে " মামনি তুমি কি করছো,বাসায় আসবে কবে তুমি? "বাবা হারানোর বেদনা কতোটা কষ্টের যার হারিয়ে যায় সেই ই বোঝে।বাবার আদরের মেয়ে ছিলাম আমি।বাবা কে আর ডাকতে পারবো না বাবা বলে।এতিম হয়ে গেলাম।আম্মু কে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছি।
এইতো গত বছর শীতকালের কথা।বাবা তখন ভালো ই সুস্থ ছিলেন।আব্বু বার বার বলছিলো কবে বাসায় যাব।ছেলের এক্সাম শেষ হলে যাব বলেছিলাম।কিন্তু এর মাঝেই দেশের বাইরে থেকে আমার দেবর-ননদ আসাতে আমাকে শ্বশুরবাড়িতে যেতে হয়েছিল।এরপর ঢাকা এসেই বাবার বাসায় যাই।২/৩ দিন ছিলাম।তখন দেখলাম আব্বু আগে থেকেই আমি যাব বলে এই কম্ফোর্টারটি নিয়ে এসেছিল।আমার খুব এলার্জির সমস্যা তাই কম্বল কখনো ইউজ করিনা আমি শীতে।এমন কি ঘরের মেঝেতে কার্পেট ও আমার সমস্যা হয় বলে আমি বাবার বাসায় গেলে আব্বু আগেই বলতো কার্পেট তুলে রাখতে।আমি চলে এলে আবার সেটা বিছানো হতো।আমি শীতের সময়টাতে লেপ অথবা কম্ফোর্টার ই ইউজ করি সব সময়।
আর এজন্য আব্বু বলেছিলো এবার বাসায় এলে লেপ না দিয়ে আমাকে যেনো কম্ফোর্টারটি দেয়া হয় ব্যবহার করার জন্য।সেটা আমি ব্যবহার ও করেছিলাম।আজ আব্বু না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন।তাই আব্বুর তরফ থেকে আমার জন্য কেনা শেষ উপহারটি আম্মু আমার জন্য পাঠিয়ে দিলেন।উপহার পেতে তো আমি ভীষণ পছন্দ করি।তবে আজ কেন বাবার দেয়া এই উপহারটি দেখে আমার চোখ জলে ভরে উঠছে।কেন আমি আবেগী হয়ে উঠছি এই উপহারটি দেখে।কেন কষ্টে আমার বুকটা ভেঙ্গে পরছে কান্নায়।তবে শেষ সবকিছু ই বোধ হয় এতোটা কষ্টের।বাবা আর কখনো কোন কিছু উপহার আমাকে দিবেন না।তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হয়ে আছেন।দোয়া করি বাবা আমি তুমি পরম শান্তিতে পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকো।তোমার দেয়া শেষ উপহারটি আমি তোমার স্মৃতির মতো করে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকবো। যখন খুব একাকিত্ব বোধ হবে আমার তখন না হয় এই কম্ফোর্টারটিকে ধরে তোমার উষ্ণতা অনুভব করবো। পোস্টটি যখন লিখছিলাম আমার দুচোখ দিয়ে কেন এতো জল গড়িয়ে পরছিল আমি জানি না।আমি যে এতোটা আবেগী এই প্রথম অনুভব করেছি বাবাকে হারিয়ে।পৃথিবীর সকল বাবা ভালো থাকুক তার সন্তানদের জন্য।মা-বাবা বেঁচে থাকুক সন্তানের আদরে আর ভালোবাসায়।
কষ্টের কিছু অনুভূতি আজ শেয়ার করলাম আপনাদের মাঝে।এই স্মৃতিগুলো লেখার মাধ্যমে বন্দী করে রাখলাম।মনের অনুভূতি গুলো পুরোপুরি লেখার মাধ্যমে তুলে ধরা যায় না।যতটুকু পেরেছি শেয়ার করে নিলাম।আশাকরি আমার অনুভূতি গুলো আপনাদের হৃদয় স্পর্শ করেছে।সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন।এখানেই শেষ করছি।আবার কোন নতুন বিষয় নিয়ে ব্লগ শেয়ার করতে চলে আসব।
ধন্যবাদ সবাইকে
পোস্ট বিবরন
শ্রেনি | লাইফ স্টাইল |
---|---|
প্রয়োজনীয় ডিভাইস | Samsung A 20 |
ফটোগ্রাফার | @shimulakter |
স্থান | ঢাকা |
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
বাবার দেওয়া এমন একটি উপহার আপনার স্মৃতির মনিকোঠায় থেকে যাবে চিরকাল। জীবনে চলার পথে বাবা মানুষটা খুব মূল্যবান একজন। তাই সেই মানুষটা চলে গেলে সেই জায়গার পূরণ হয় না কোনদিন। কিন্তু তার দেওয়া জিনিস গুলো থেকে যায় আজীবন। আগলে রাখুন সেই জিনিসগুলোকে যেগুলোর মধ্যে দিয়ে বাবা থেকে যাবে আপনার কাছে।
অনেক ধন্যবাদ দাদা।আপনার মুল্যবান মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
X-promotion
আপনার বাবার দেওয়া শেষ উপহারটি এখন আপনার কাছে তাঁর আশির্বাদ হিসেবেই রইল৷ খুব কষ্ট পাচ্ছেন আপনি। আমারও হৃদয় কাঁদছে আপনার অনুভূতি পড়ে৷
অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।
যেকোনো উপহারই মূল্যবান, তবে বাবার দেয়া উপহারগুলো হয়তোবা অনেক বেশি মূল্যবান হয়ে থাকে। আপনার বাবা আপনার জন্য এত সুন্দর একটি কম্ফোর্টার কিনেছেন সেটা আপনার জন্য অবশ্যই অনেক বেশি মূল্যবান। আপনার বাবার জন্য দোয়া রইলো আপু।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
আপনার লিখাটি পড়ে আমার বাবার কথা মনে পড়ে গেলো। আমি বাবা হারা হয়েছি ২০০৭। মা-বাবার এমনই সব সময় সন্তানের ভালোর কথাই চিন্তা করেন। কিসে তাদের ভালো হবে এই তাদের ভাবনা। দোয়া করি আপনার বাবা যেন জান্নাতের সর্বোচ্চ আসনে আসীন হন। আমিন।
মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
বাবা- মা সবসময়ই সন্তানদের ভালোর কথা চিন্তা করে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কত কিছু করে থাকেন আর আমরা তাদের সেই স্মৃতি গুলো নিয়েই বেঁচে থাকি। আমি বাবা হারা হয়েছি আজ ১১ বছর হয়ে গেলো। এই কষ্ট কখনও কাউকে বুঝানোর মতো নয়। এভাবেই হয়তো বছরের পর বছর কেটে যাবে। আপনার বাবার জন্য দোয়া রইল।
আপু আপনি আপনার বাবাকে ছেড়ে এতোটা দিন কষ্টে আছেন।খুব কষ্টি লাগলো শুনে।ধন্যবাদ আপু।
আপনার পোষ্টে পড়ার সময় আমার নিজেরই চোখে পানি চলে আসছিল। বারবার আমার আব্বুর কথা বারবার মনে হচ্ছিল। আসলে বাবারা এভাবেই মেয়েদের চাহিদা না চাইতে পূরণ করে দেয়। আর সেই বাবা যদি জীবন থেকে হারিয়ে যায় তাহলে আর কি থাকে বেঁচে থাকার অবলম্বন। যাইহোক আপু দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনার বাবাকে বেহেস্ত নসিব করেন।
ধন্যবাদ আপু। সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।