কবিতা উৎসব-২
গতপর্বে:
যাই হোক আমাদের লাইব্রেরির সভাপতি ইউএনও মোহদয়।উনাকে প্রস্তাব দিতেই উনি উৎসাহিত হয়ে উঠলেন। তবে বিপত্তি হল আমাদের ১০তারিখ এর আগেই আয়োজন করতে হবে। এরপর উনি সময় দিতে পারবেন না।তাই সিদ্ধান্ত হল আমরা আগামী ৯তারিখ এই অনুষ্ঠান করব।আর এই সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা ৭তারিখে।তাই সময় কম,কাজ অনেক বেশি। আমরা উঠে পড়ে লেগে গেলাম।
বর্তমান পর্বে
হাতে ছিল মাত্র দুদিন। কাজ কিন্তু হাতে পর্বতপ্রমাণ। অফসার তো বলেই খালাস,কাজ গুলো সম্পাদন করতে হবে আমাদের। এর মাঝে আবার সমস্যা হল আমাদের অধিকাংশ মেম্বার পরীক্ষা আর অন্যান্য কারনে ঢাকায়। এলাকায় আমরা আছি মাত্র তিনজন। যার মাঝে দুজন আবার আইনজীবী,তাই আমাদের সময় দেওয়া সম্ভব না আপাতত।
গ্রুপে ডিসকাস করে প্ল্যান হল আমরা যে দুইজন আছি সে দুইজনই যতটা পারি করব।যেহেতু প্রথমবার তাই খুব বড় না হলেও কোন অপরাধ হবে না। প্রথম কাজ প্রথমে,আমরা ফেসবুকে কবিতার জন্য আহবান জানালাম। তবে কবিতা হতে হবে স্বরচিত। এরপর এলাকার সংস্কৃতিমনস্ক ব্যক্তিদের নিমন্ত্রণ করতে হবে,সেই সাথে এলাকার প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোকেও জানাতে হবে।
আমরা ঠিক করে নিলাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জানানো আর নিমন্ত্রণের কাজ একসাথেই করব। প্রথমেই গেলাম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। স্যার কে জানালাম,স্যার আমাদের উদ্যোগের প্রশংসা করলেন৷ কিন্তু জানালেন, স্কুলে পরীক্ষা চলছিল তাই উনি অফিসিয়ালি কাউকে পাঠাতে পারবেন না।তবে কবিতা সাবমিট করতে বলতে পারবেন।
এরপর হাইস্কুলেও সেম ঘটনা।স্যার ও জানালেন উনি অফিসিয়ালি কিছু করতে পারবেন না। তবে হাইস্কুল এর কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আছে যারা সংস্কৃতিমনস্ক। তাদের বলে দেবেন বলে জানাবেন। এরপর গেলাম সরকারি কলেজে এবং মহিলা কলেজে। সেখানেও প্রচুর প্রশংসা পেলাম। মহিলা কলেজ তো ক্যাম্পাস প্রোগ্রাম করার প্রস্তাব দিলো।
এরপর আমরা চলে এসে বিজয়ীদের জন্য গিফট সংগ্রহের কাজ শুরু করলাম। এরপরের দিন অবশ্য আমি যাই নি। সেদিনের কাজ ছিল তাবুদিয়ে লাইব্রেরির সামনে একটু ঘিরে নেওয়া আর একটা কালো পর্দা টানানোর ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ একটি ধন্যবাদ প্রাপ্য।
অনুষ্ঠানের দিন সকাল সকাল গিয়ে সেই কালো পর্দায় আমরা কবিতা গুলো টানিয়ে দিলাম।এই ফাকে জানিয়ে রাখি আমিও একটা কবিতা জমা দিয়েছিলাম।তারপর ব্যানার টাঙিয়ে বাসায় চলে আসলাম। অনুষ্ঠান শুরুর সময় দেওয়া ছিল বেলা একটায়, একটার মাঝেই সবাই চলে এসেছিল। সবাইকে লাইব্রেরিতে বসিয়ে আমরা ইউএনও ম্যামকে ডাকতে গেলাম। সেখানে ম্যাম জানালো তার জরুরী মিটিং আছে,উনি বেশিক্ষণ থাকতে পারবে না।
তাই দ্রুত আমরা উনাকে দিয়ে অনুষ্ঠান উদ্ভোধন করিয়ে নিয়ে উনাকে বিদায় জানালাম। তারপর আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হল। প্রথমে আমন্ত্রিতরা বক্তব্য দিলেন। তারপর স্বরচিত কবিতা লেখকদের মাঝে যাদের টা বেশি ভাল হয়েছে তাদের পুরস্কার বিতরণ করা হল।তারপর সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Twitter link