সৃজামনির জন্মদিন
আমাদের পরিবারটি কে যৌথ বলা যায় নাকি একক বলা যাবে তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধা আছে।কারন বাড়ি আলাদা আলাদা হলেও কিন্তু সবাই সবার পাশে সর্বদাই।কারো মাঝে হিংসা,ঝগড়া নেই।ছোট বড় সুখ,দু:খে সবাই পাশাপাশি সর্বদা।তাই বলে মনে করবেন না আমারের পরিবারটি নেহাৎ ছোট। আমার বাবা কাকারাই সাত ভাই।আবার দাদুর অন্য ভাইদের ছেলে মেয়েরা তো আছেই।
যাই হোক আমার সব থেকে ছোট কাকা বিধু। আর তার ছোট মেয়ে সৃজা।আমাদের পরিবারের সব থেকে ছোট। তাই সব থেকে আদরের আর সবার চোখের মনি হচ্ছে সৃজা।যেমন চঞ্চল তেমনি চালাক। আমি যে এত বুড়ো গাধা আমাকে পর্যন্ত এই হাটে বিক্রি করে ঐ হাটে আবার সস্তায় কিনতে পারে। আর ওর সাথে কথায় পারা বেশ মুসকিল।তাই সবাই ওকে ডাকি "বুড়ি"।আর আমার সাথে ওর মিল টা বেশি,কারন ছোট থেকে আমার কোলেই থেকেছে,আর ওর আবদার গুলো মোটামুটি আমি পূরণ করি।
তো গত শুক্রবার ছিল বুড়ির জন্মদিন। শুক্রবার হল আমার কাছে ঈদের দিনের মত, সারা সপ্তাহ টিউশন করার পর এই একদিন একটু শান্তিমত ঘুমাই। কিন্তু এই সপ্তাহে আর তা হল না। সকাল হতে না হতেই ফোন। ফোন ধরেই ধেয়ে এলো তোপের গোলার মত প্রশ্ন,"দাদা তুমি আমাকে হ্যাপি বাড্ডে বললা না কেন?তুমি আমার জন্মদিন ভুলে গেছ কেন? " বাপরে বাপ আমি কথা বলার সুযোগই পাচ্ছিলাম না।
এরপর থামল কিছুটা,এই ফাকে আমি উইশ করে দিলাম। তারপর এল আসল বক্তব্য। দাদা আমাকে কেক কিনে দিচ্ছে না।তুমি কেক কিনে দাও। আমি বললাম তথাস্ত। বিকেলে আমি কেক নিয়ে যাব,তুমি জেদ করো না,সারাদিন গুড গার্ল হয়ে থাকিও। একটু পর কাকা ফোন দিয়ে বলল ভাল কেক কোথায় পাওয়া যাবে? আমি বললাম আমি ব্যবস্থা করে ফেলব কাকা যাতে চিন্তা না করে।কাকা বলল তা করো,কিন্তু টাকা যেন তুমি দিও না।
এরপর সন্ধ্যার সময় আমি কেক নিয়ে হাজির হলাম।মা আর মামি বিকেলেই চলে গিয়েছে রান্নাবাড়ির জন্য।কাকা প্রথমে ভেবেছিল রেস্টুরেন্ট এ ব্যবস্থা করবে,কিন্তু সেখানে টাকা খরচ হবে বেশি আবার ওভাবে মজা করা যাবে না তাই বাড়িতেই ব্যবস্থা। আমি কেক নিয়ে যেতেই বুড়ির খুশি দেখে কে।খুশি তে প্রায় নাচানাচির অবস্থা।এরপর আস্তে আস্তে লোকজন আসা শুরু করল। কিছুক্ষণের মাঝে সব লোকজন আসল,বোনেরাও রেডি হয়ে নিল।
এরপর রান্না শেষ হলে কেক কাটা হল।বুড়ির দুই তিনজন বান্ধবী আর আমাদের কিছু ফ্যামিলি ফ্রেন্ড এসেছিল।কেক কাটার পর সবাইকে খাবার পরিবেশন করলাম,তারপর আমিও বুড়ির সাথে খেতে বসলাম। যদিও আমার কেক আর পায়েস ওর পেটেই গেছে। তারপরেও অনেক সুন্দর ছিল মুহুর্ত গুলো।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বুড়ি ঠিকই তো বলেছে ভাই। আপনি বড় দাদা হয়ে যদি একটা কেক কিনে না দেন তাহলে কি হয়। এ ভারি অন্যায় কাজ। ছোট বোনের জন্মদিনে তার আবদার একদম সঠিক বলেই আমার মনে হয়েছে। দাদার কাছে আবদার করবে না তো কার কাছে করবে। ছোট্ট বুড়িকে আমার অনেক ভালোবাসা এবং জন্মদিনের শুভেচ্ছা। অনেক বড় হয়ে উঠুক সে। আর তারপর আপনাকে কেক কিনে দিক। 🤣🤣
এখনকার ছোট বাচ্চারা চটপট করে কথা বলে শুনতেও ভালো লাগে। আবার অনেকের মধ্যে এমন কিছু বলে বসে যেগুলো নিজের মান সম্মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়। তবে যাই হোক ছোটদের জন্মদিনে অনেক অনেক ভালো লাগে। কারণ এখানে অনেক আনন্দের কথা হয়ে থাকে আনন্দ হয়ে থাকে। আশা করি অনেক সুন্দর মুহূর্ত ছিল আপনাদের সকলের জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।