প্রচন্ড গরমের এক সন্ধ্যা রাতে প্রশান্তির খোঁজে স্কুল মাঠে

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago


আসসালামু আলাইকুম




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। অনেকদিন পর প্রচন্ড গরমের দিনের কথা মনে পড়লো আজকে। আজ সকালে পুকুরপাড়ে কাজ করতে গিয়ে প্রচন্ড গরমের সম্মুখীন হয়েছিলাম। তাই ফেলে আসা সেই মে মাসের কথা স্মরণ হয়েছিল। তাই প্রচন্ড সেই গরমের দিনের কথা স্মরণ করেই আজকের পোস্ট শেয়ার করতে আসলাম আশা করব এই পোস্ট পড়ে আপনারা অনেক কিছু জানবেন।

IMG_20240504_222233_626.jpg


ফটোগ্রাফি সমূহ:


আমরা সকলেই জানি এই বছরে আমরা প্রচন্ড গরমের সম্মুখীন হয়েছিলাম। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু করে আগস্ট পর্যন্ত প্রচন্ড গরমের সম্মুখীন হয়েছি আমরা দিনকে দিন। তবে সবচেয়ে বেশি গরমের সম্মুখীন হয়েছিলাম এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত। তবে যাই হোক মে মাসের একটা দিন। আমি প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলাম। সারাদিন শেষের সন্ধ্যাবেলায় সূর্য যখন ডুবে গেছে তখন যেন ঘরের ফ্যানের পাশ থেকে বাইরের পরিবেশে আসলাম। কিন্তু সূর্যের আলো না থাকলে কি হবে রয়েছে প্রচন্ড গরম। এ মুহূর্তে আমার মনে আসলো যদি একটু মোটরসাইকেল রান করি তাহলে শীতল বাতাস অনুভব করতে পারব। কারণ এত টাইম অতিষ্ঠ ছিলাম সারাদিন ঘরের মধ্যে থেকে ফ্যানের বাতাসেও যেন শান্তি ছিল না। তাই স্বস্তি পাওয়ার আশায় মোটরসাইকেলটা রুম থেকে বের করেই মনে করলাম বেশ কয়েকটা জায়গায় সন্ধ্যার রাত ঘোরাঘুরি করব এবং শীতল বাতাস গায়ে লাগাবো। তাই মোটরসাইকেলটা নিয়েই বের হয়ে পড়েছি চলে গেলাম পাশের গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানের এক ফাঁকা জায়গায় যেখানে মানুষজন বসা এবং পানি পান করার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে উপস্থিত হয়ে হঠাৎ আমার প্রিয় বন্ধু মারুফ ফোন করলো আমি কোথায় আছি জানার জন্য। আমি তখন বললাম বিস্তারিত। সে বলল আমরা চার বন্ধু আই স্কুল মাঠে বসে কিছুটা সময় গল্প করি। আমি তো প্রচন্ড গরমে অসুস্থ। এই মুহূর্তে আবার এক জায়গায় বসে গল্প করব বিষয়টা খারাপ লাগছিল। বন্ধুরা বলছে কথা ফেলা যায় না। তখন তাদের বললাম তারা যেন বাড়ি থেকে স্কুল মাঠের দিকে এসে যায় আমিও একটু ঘুরাঘুরি করে চলে আসবো। যেমন কথা তেমন কাজ। তারা বাড়ি থেকে স্কুল মাঠের দিকে এসে গেছে আমিও মোটরসাইকেল নিয়ে এসে পড়লাম। এরপর মোটরসাইকেলটা রাখলাম স্কুল গেটের একটা পাশে।

IMG_20240504_190639_628.jpg

IMG_20240504_210838_256.jpg


এরপর আমি এসে তাদের খুঁজতে থাকলাম তারা এখন কোথায় রয়েছে কোন দোকানের দিকে রয়েছে না রয়েছে। তিন বন্ধুর মধ্যে মারুফ বললো সে তার ভূমি অফিসের মধ্যে বসার জন্য আর অন্যান্য জিনিস আনতে গেছে। এদিকে পলাশ দোকানে গেছে খাবার জাতীয় কিছু জিনিস কেনার জন্য তার সাথে সোহেল রয়েছে। এই মুহূর্তে আমি আর কি করবো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গেট পার হয়ে এসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবনের পাশে অপেক্ষা করলাম। এই মুহূর্তে লক্ষ্য করে দেখলাম স্কুল মাঠের মাঝখানে জায়গায় জায়গায় অনেক মানুষ বসে রয়েছে কিছুটা প্রশান্তির আশায়। হঠাৎ করে দেখি বন্ধুরা আমাকে ফোন দিয়ে ডাকছে। তখন আমি কিছুটা স্কুল মাঠের মধ্যে নেমে পড়েছিলাম এবং লক্ষ্য করে দেখলাম ঠান্ডা শীতল বাতাস বইছে। তবে বাতাস মাঝেমধ্যে গায়ে লাগছে আবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমন মুহূর্তে হাটাহাটি করাটাও কঠিন। তবে যাই হোক বন্ধুদের কাছে এগিয়ে গেলাম।

IMG_20240504_210913_037.jpg

IMG_20240504_210926_605.jpg


তারা জানতে চেয়েছিল আমি কি খাব না খাব। তখন আমি বলেছিলাম প্রচন্ড এই গরমের মুহূর্তে কোন কিছু খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে না শুধুমাত্র ইচ্ছে হচ্ছে একটু শান্তিতে শীতল বাতাসে বসি বা ঘোরাঘুরি করি। তারপর তারা তাদের মত এটা সেটা কিনলো এরপর চলে আসলাম স্কুল মাঠের দিকে। যেহেতু আমি বেশ কয়েকটা ফটো ধারণ করার ইচ্ছে পোষণ করেছিলাম তাই তারা সামনে থাকলো আমি পেছনে থাকলাম। অস্বস্তিকর গরম কে মন থেকে একটু দূরে রাখার জন্যই ফটো ধারণ করার প্রতি যেন আরো মনোযোগী হলাম। আর এভাবেই আমরা রাস্তা পার হয়ে স্কুল মাঠের দিকে এসে গেলাম।

IMG_20240504_222101_789.jpg

IMG_20240504_221728_747.jpg


বন্ধুরা আমাকে বলেছিল তারা প্রত্যেকদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর এখানে আসে এবং ৯ টা সাড়ে ৯টার দিকে বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু আমি বিভিন্ন কারণে তাদের সাথে বেশি একটা যোগাযোগ রাখা হয় না আবার আসা হয় না। তারা অনেকটা আফসোস করছিল আমি তাদের পাশে না থাকায়। তবে যাই হোক চারজন বন্ধুর বিয়ে হয়ে গেছে সন্তান রয়েছে পরিবার রয়েছে বিভিন্ন কাজ তো থাকতেই পারে প্রত্যেক দিন তো আর গরমের দোহাই দিয়ে মাঠে এসে বসে থাকা যায় না। কারণ বাড়ি থেকে স্কুল মাঠ হাফ কিলো দূরে। যাই হোক সবাই একসাথে বসলাম। আমাদের সকলের পারিবারিক সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প চলল বেশ কিছুটা সময় ধরে। আর ইতোমধ্যে আমরা অনুভব করেছিলাম ঠান্ডা বাতাসে আমাদের গা শীতল করে তুলেছে। এরপর হঠাৎ মনে করলাম মোটরসাইকেল টা রেখে এসেছি এক জায়গায় শুধুমাত্র ঘাড় লক দিয়ে। রাত হয়ে যাচ্ছে অনেক মোটরসাইকেলটা দূরে রেখে মাঠের মাঝখানে বসে থাকাটা ঠিক হবে না।

IMG_20240504_221500_407.jpg

IMG_20240504_221449_650.jpg

IMG_20240504_221452_199.jpg


যাইহোক এভাবে আরও কিছুটা সময় আমরা স্কুল মাঠ এরপর বন্ধুর ভূমি অফিস এবং স্কুলের বাইরে বটগাছের নিচে অবস্থান করলাম গল্প করলাম। হালকা ঠান্ডা জাতীয় পানি পান করলাম এছাড়াও বিভিন্ন গল্প আনন্দের কথাবাত্রার মধ্য দিয়ে যেন সারা দিনের প্রচন্ড গরমের ক্লান্তি দূর হয়ে গেল আমাদের মধ্য থেকে। বন্ধুর ভূমি অফিসের পাশেই ছিল বেশ কয়েকটা কাঁঠাল গাছ। গল্পেগল্পে কখন জানি কাঁঠালের ফটো ধারণ করে বসে ছিলাম। যাইহোক এভাবেই আমরা আমাদের মত আনন্দের সাথে গল্প করে একটি মুহূর্তে তিন বন্ধুকে বিদায় জানালাম তারা হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির দিকে রওনা দিল আর এদিকে আমিও আমার মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আর এভাবেই প্রচন্ড গরমের একটা দিন শেষে সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তটা আমরা চার বন্ধু স্কুল মাঠে অবস্থান করে মনের স্বস্তি এনেছিলাম এবং প্রশান্তি এনেছিলাম।

IMG_20240504_222048_703.jpg

IMG_20240504_222030_915.jpg


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

পোস্ট বিবরণ


বিষয়প্রশান্তির খোঁজে একদিন স্কুল মাঠে
লোকেশনLocation
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix hot 11s-50mp
ফটোগ্রাফার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সকলে। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 days ago 

অনেক ভালো লাগলো আপনার আজকের এই পোস্ট করে। আপনার পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে কিন্তু অনেক কিছু জানতে পারলাম। প্রচন্ড গরমের মুহূর্তে আপনারা বাইরে ঘুরতে পারেন কিন্তু আমাদের সম্ভব হয় না এটাই সমস্যা।

 6 hours ago 

অনেক কিছু জানতে পেরেছেন যেনে খুশি হয়েছি

 3 days ago 

সত্যিই গরমকালে ফ্যানের হাওয়াও স্বস্তি দেয় না।তখন স্কুলের মাঠগুলিই একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে।আপনি দারুণ সময় কাটিয়েছেন বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে।এছাড়া কাঁঠালের ছবিটি সুন্দর ও ভূমি অফিসের নামটি বেশ মজার।ধন্যবাদ আপনাকে।