ঢাকা পান্থপথের "হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতাল"এ আম্মুকে প্রথম ডাক্তার দেখানোর অনুভূতি
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে আমি আপনাদের কাছে মায়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করি। সকলে আমার আম্মার জন্য দোয়া করবেন। আপনারা অনেকেই জানেন দীর্ঘদিন আমার আম্মা বেশ অসুস্থ। আর তার অসুস্থতার জন্য যেন থমকে গেছে বাড়ির পরিবেশ। আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব ঢাকা পান্থপথের "হেলথ এন্ড হোপ হসপিটালে" আম্মাকে প্রথম ডাক্তার দেখানোর অনুভূতি। আশা করব এই পোস্ট পড়ার মধ্য দিয়ে অনেক তথ্য পাবেন এবং কাজে আসবে।
কুড়ি মে, ২০২৪, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চলল। হেলথ অ্যান্ড হসপিটাল হসপিটালে চতুর্থ তলায়, জানালার বাইরে দিয়ে ঢাকা পান্থপথের দিকে চেয়ে থাকলাম আর ভাবতে থাকলাম কি করা যায়। ডাক্তার আসতে একটু দেরি হল। এরপর ডাক্তার এসে অন্য পেশেন্ট দেখলেন। এরপর উনি তার চেম্বারে বসলেন। ততক্ষণে সিরিয়ালে বেশকিছু রোগী ছিল। আমার আম্মা সম্ভবত ৫ নম্বর অথবা তিন নম্বরের সিরিয়ালে ছিলেন যাইহোক মনে নেই বিষয়টা। তবে সেই সমস্ত কাগজগুলো সবই রয়েছে খুঁজলে দেখা যেতে পারে। যতক্ষণ ডাক্তার অন্যান্য পেশেন্ট দেখলেন। ততক্ষণে এবং তার পূর্বেও বেশ কিছু ফটো ধারণ করেছিলাম চেম্বারের আশেপাশে ব্যানার থেকে। আর চিন্তা করতে থাকলাম যে সমস্ত টেস্টগুলো দিবে সেগুলো কিভাবে পরীক্ষা করব আর কতটাই বা হয়রানি হতে হবে। কম্পাউন্ডার বলেছিলেন কয়েকটা টেস্ট দিতে পারে ডাক্তার সেগুলো আগেই করা যেতে পারে অথবা ডাক্তার লেখার পর করলে ভালো হয় সেটা আপনাদের বিষয়। যেহেতু কুষ্টিয়া জেনারেল হসপিটাল থেকে আম্মার এন্ডোস্কোপি করা হয়েছিল। তাই কুষ্টিয়ার ডাক্তার আরিফুল ইসলাম বলেছিলেন আর এন্ডোসকপি করা লাগবে না কিন্তু ঢাকার ডাক্তার মাসফিক আহমেদ ভূইয়া কি বলে সে আশায় ছিলাম।এন্ডোস্কোপি করতে হলে আবারও বড় অংকের খরচ। কিন্তু ডাক্তারের কথামতো চলতে হবে।
সিরিয়াল অনুসারে আম্মার ডাক আসলো। আমাকে নিয়ে প্রবেশ করলাম ডাক্তার মাসিক আহমেদ ভূঁইয়ার রুমে। সেখানে মায়ের যাবতীয় সমস্যার বিষয়গুলো জানতে চাইলেন। কুষ্টিয়ার রিপোর্ট দেখতে চাইলেন। আরিফুল ইসলাম স্যারের রিপোর্ট সহ সবকিছু দেখলাম এবং বললাম। কোন কোন ঔষধ খাওয়ানো চলছে কতদিন ধরে খাওয়ানো চলছে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরলাম। সবকিছু শোনার পর উনি বেশ কিছু টেস্ট লিখে দিলেন। উনি এন্ডোস্কোপি বিষয়ের ডাক্তার। উনার পরিচয় সবকিছু প্রেসক্রিপশন এর ফটোগ্রাফিতে রয়েছে। তবে রুম থেকে বের হওয়ার আগে প্রেসক্রিপশনে লিখে দিলেন পাশের রুমে দেবাশীষ নামক মেডিসিন বিষয়ক ডাক্তারকে তার প্রেসক্রিপশনটা দেখিয়ে যেতে। এমনিতেই সকালে বের হয়েছি দীর্ঘক্ষণ তার জন্য অপেক্ষা করেছি এদিকে বিকেল চারটা বেজে গেছে। দেবাশীষ এখনো এসে পৌঁছান নাই। এদিকে মাশফিক আহমেদের কম্পাউন্ডার ৮০০ টাকা ভিজিট নিলেন আমার কাছ থেকে। আর বলে দিলেন কিছুটা সময় অপেক্ষা করেন দেবাশীষ স্যার চলে আসবে এখনই।
কিছুটা সময় অপেক্ষা করার পর দেবাশীষ স্যার আসলেন। একটা পেশেন্টের পর সিরিয়াল পেলাম। সেখানে দেখালাম মাশফিক স্যারের প্রেসক্রিপশন। উনি মাসিক স্যারের প্রেসক্রিপশন সহ কুষ্টিয়ার ডাক্তার আরিফুল স্যারের প্রেসক্রিপশন দেখলেন এবং আমার অসুস্থতার বিষয় বিস্তারিত সবকিছু জানতে চাইলেন ঠান্ডা মাথায়। কেন এসেছি কি করতে এসেছি কে পাঠিয়েছে বিস্তারিত সবকিছু জানানো হলো এবং দেখানো হলো কুষ্টিয়ার আরিফুল ইসলাম স্যারের এন্ডোস্কোপি রিপোর্ট এর পাশাপাশি। তখন উনি মাস পিকচারের প্রেসক্রিপশন দেখে আরেকটি টেস্ট বেশি করে দিলেন। বললেন এখনি এই মুহূর্তে এগুলো পরীক্ষা করে এনে আমার কাছে দিয়েন। শুধুমাত্র এক্সরে রিপোর্টটা হয়তো আজকে পাবেন না। বাকি রিপোর্টগুলো আমার কাছে দেন, এই অনুপাতে আমি ওষুধ লিখে দিব। তখন আমরা আবার চিন্তায় পড়ে গেলাম। এদিকে ছোট মামা ফোন দিলেন। ছোট মামাকে বিস্তারিত বললাম। ছোটমামা বলল আমি আশেপাশে আছি এখনই হেল্প হসপিটালে এসে যাব। তুমি টাকা জমা দিও না টেস্টগুলো আমি করিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু দেখা গেল দেবাশীষ স্যার কে দেখানোর জন্য আবারো ৮০০ টাকা ভিজিট দিতে হলো। বুঝতে পারছেন সাথে সাথেই ১৬০০ টাকা ভিজিট চলে গেল। বেশ খারাপ লাগলো তারপরেউ মামার কথা শুনে তখন কিছুটা টেনশন ফ্রি হলাম। কারণ যে সমস্ত টেস্ট গুলো দিয়েছে সেগুলো এক এক রুমে আলাদা আলাদা জায়গায়। এ সমস্ত বিষয়গুলো আমার বুঝে ওঠা বেশ কঠিন। এদিকে মাথায় টেনশন রাত হয়ে যাচ্ছে কখন খালাম্মার বাসায় ফিরব সেও তো দুই তিন ঘন্টার রাস্তা। তবে মামা একবারে টেনশন মুক্ত করে দিয়ে বলল কোন চিন্তা করো না আমার গাড়ি রয়েছে গাড়িতে তোমাদের পৌঁছে দিবে যেহেতু টেস্ট দিয়েছে টেস্ট গুলো করে যেতেই হবে। আর আমি আইডিয়া করেছিলাম হয়তো এই দিনেই অপারেশন হয়ে যাবে কুষ্টিয়া রিপোর্ট অনুসারে। কারণ তার কম্পাউন্ডার যেভাবে বলেছিল। কিন্তু সেখানে উপস্থিত হয়ে বুঝলাম না কুষ্টিয়ার রিপোর্ট কখনোই তারা গ্রহণ করবে না, তারা সকল টেস্ট করবে। আর এটাই স্বাভাবিক। তবে মনে চিন্তা রয়ে গেল টেস্ট করলে কি রিপোর্ট আসবে আর কবে বা অপারেশন হবে।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বিষয় | মায়ের অসুস্থতা |
---|---|
লোকেশন | Location |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix hot 11s |
ফটোগ্রাফার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সকলে। আল্লাহ হাফেজ। |
---|