|| ৫ ই সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবস ||
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজ ৫-ই সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবস। আমাদের চারিপাশে এ পৃথিবীর সমস্ত কিছু থেকেই আমরা কোন না কোন ভাবে শিক্ষা পেয়ে থাকি। আজ জড়-প্রাণ নির্বিশেষে শিক্ষা দিয়েছে এমন এ পৃথিবীর সমস্ত কিছুকেই শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। শিক্ষক দিবস নিয়ে আমার কিছু কথা আজকের আলোচনায় লিপিবদ্ধ হলো।
জড় প্রাণ এ পৃথিবীর সমস্ত কিছুর কাছে থেকেই আমরা কোনো না কোনো ভাবে শিক্ষা পেয়ে থাকি। ব্যক্তিত্ব গঠনে সুশিক্ষা দেয় এমন পৃথিবীর সকল কিছুই আমাদের শিক্ষক।
একজন শিশুর সঠিক চরিত্র গঠনে একজন শিক্ষকের অবদান অনস্বীকার্য। জন্মের পর পিতা মাতার হাত ধরে একটি শিশু এই পৃথিবীকে দেখতে থাকে। বুঝতে থাকে। আমাদের কাছে প্রথমে পৃথিবীর সমস্ত কিছুই অজানা থাকে। তারপর এক এক করে শুরু জ্ঞান অর্জনের পালা। আমরা আকাশের দিকে তাকালে মা বলে দেন এটা আকাশ। তারপর একটু বড় আকাশের উদারতা দেখে আমরা শিখে নিতে থাকি মানুষ হিসেবে উদার হওয়ার প্রয়োজনীয়তা।
এভাবেই জানা শুরু হয়। প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন সকলের কাছে থেকেই আমরা শিখতে থাকি বেঁচে থাকার নিয়ম।
শিক্ষক দিবস দিনটি প্রথম যেভাবে শুরু হলো তার একটু বর্ণনা তুলে ধরি।
মহান আদর্শ শিক্ষক ডক্টর সর্বপল্লি রাধা কৃষ্ণন -এর জন্মদিনে আমাদের শিক্ষক দিবস উদযাপিত হয়। তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক ছিলেন প্রিয় ছাত্র ছাত্রীদের কাছে। রাধাকৃষ্ণন এর জন্ম হয় ৫ ই সেপ্টেম্বর ১৮৮৮ সালে ভারতের তামিলনাড়ুর টিরুত্তানিতে। একদিন সকল ছাত্র তাঁর জন্মদিন পালনে উদ্যত হলে তিনি বলেন,
"Instead of celebrating my birthday, it would be my privilege if September 5 is observed as Teachers' Day."
যদি তাঁর জন্মদিবস পালন করতেই হয় তবে সেই দিনটি শিক্ষক দিবস হিসেবেই পালিত হোক। আর সেই দিন থেকেই শুরু হয় শিক্ষক দিবস উদযাপন।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন শিক্ষক হিসেবে খুবই ছাত্র দরদী ছিলেন। ছাত্রদের শুধু পুঁথিগত শিক্ষায় নয় বরং তিনি জীবনের শিক্ষা দিতে আগ্রহী ছিলেন। তার জীবন দর্শন ছাত্রদের মাঝে বন্টন করেছিলেন। একজন ছাত্র কিভাবে এই বৃহৎ জীবনে সঠিকভাবে, সঠিক নিয়মে বেঁচে থাকতে পারবে তার মন্ত্র তিনি ছাত্রদের মাঝে বিলিয়ে ছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ছাত্রসমাজের এক আদর্শ শিক্ষক হয়ে ওঠেন।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ছিলেন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি। শুধু প্রথমই নন, দ্বিতীয় উপরাষ্ট্রপতিও তিনিই হয়েছিলেন।
তিনি একাধারে ছিলেন রাজনীতিবিদ, দার্শনিক এবং অধ্যাপক।
শিক্ষার গুরুত্ব আমাদের জীবনে অনেক বেশি। পুঁথিগত ও জীবন নিয়ে শিক্ষা আমাদের খুবই দরকার জীবনে, সৎ পথে চলার জন্য শিক্ষায় আসল মন্ত্র, যা আমরা আমাদের শিক্ষকের কাছে থেকে পেয়ে থাকি। একজন শিক্ষক সঠিকভাবে আমাদের মধ্যে যখন জ্ঞান বন্টন করেন তখন আমাদের ভেতরে দেখার একটি পথ খুলে যায়। যে দৃষ্টি দিয়ে আমরা পৃথিবীকে দেখি উদারতা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা দিয়ে। শুধু তাই নয় যে সকল দিক জীবনের ক্ষতি ঢেকে আনে সেটাও আমরা দেখতে পাই। অতএব বলা যায়, শিক্ষা শুধু আলোর পথ দেখায় না, যেখানে অন্ধকার সেটাও দেখায়।
শিক্ষার ওপর সার্বিক গুরুত্ব আরোপই শিক্ষক দিবসের মূল উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যকে সর্বজনের কাছে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এ কথা বলেন। মানুষ যখন সভ্যতার দিকে এগোই তখন থেকেই গুরুদের সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়ার প্রথা শুরু হয় এবং এই প্রথাকে জারি রাখার উদ্দেশ্যেই শিক্ষকদের জন্যও বিশেষ একটি দিন পালন করার চিন্তা ভাবনা করেন। তিনি মানবজাতির সঠিক জীবন পরিচালনার উদ্দেশ্যকে পূর্ণতা দেয়ার একটি সুন্দর পথ খুলে দেন।
শুধু পুঁথিগত শিক্ষার ক্ষেত্রের মধ্যে এই শিক্ষক দিবস নয় বরং প্রতিমুহূর্তে আমাদের চারপাশে যে সকল মানুষ আমাদের জীবনের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্যও।
আজ এই অব্দি রইল। আগামীকাল আবার নতুন কিছু কথা নতুন একটি লেখা নিয়ে হাজির হব। ততক্ষণ ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
সত্যি কথ বলতে কি শিক্ষক দিবস সম্পর্কে এত কিছু জানতাম না,আপনার পোষ্টের মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম রাধাকৃষ্ণ সম্পর্কে জানতে পারলাম। এইটাও ঠিক শুধুমাএ পুথিগত শিক্ষা নিয়ে শিক্ষক দিবস পালন না করে,আসল শিক্ষায় যারা শিক্ষা দেন তাদেরকে সহ শিক্ষক দিবস পালন করা উচিত।ধন্যবাদ
অনেক ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্য করে ভালো লাগলো।
একজন ভালো শিক্ষক মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। একজন ভালো শিক্ষক একটি সমাজকে বদলে দিতে পারেন একটি দেশকে বদলে দিতে পারেন। যেমন শিক্ষক ছিলেন সর্বপল্লি রাধা কৃষ্ণন। উনার সম্বন্ধে তেমন কিছু জানা ছিল না আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম যদিও আজকাল চারপাশে যখন তাকাই তখন খুব ভালো শিক্ষকের অভাবটা খুব অনুভব করি। তারপরেও সকল শিক্ষকদের কে জানাই শিক্ষক দিবসের শুভ কামনা। ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমরা একে অপরের থেকে এভাবেই জানতে থাকি, শুনতে থাকি আর নিজেকে সমৃদ্ধ করতে থাকি। অনেক ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ নামটা প্রথম শুনলাম। এবং পড়ে বুঝলাম সত্যি শিক্ষার্থী দরদী একজন মানুষ ছিলেন। একেবারে আদর্শ শিক্ষক। গুরু শিষ্য ছাএ শিক্ষক এর সম্পর্ক রক্তের না হলেও তার থেকে বেশি। রক্তের সম্পর্ক থাকে না কোনো স্বার্থ থাকেনা তারপরও ছাএের সাফল্যে শিক্ষক সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হয়। দারুণ লিখেছেন ভাই।।
গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
একটি শিশুর ভবিষ্যৎ গড়তে তার বাবা মার পরে শিক্ষকের ভুমিকা অনেক। শিক্ষা ত আমরা অনেকভাবে পেয়ে থাকি তবে প্রকৃত শিক্ষা শিক্ষকই দিতে পারেন।
আমি মনে করি শিক্ষক দিবসে স্যার ডক্টর সর্বপল্লি রাধা কৃষ্ণন এর উপরোল্লিখিত বিখ্যাত কথাগুলো সকল শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মনে করে শ্রদ্ধা জানানো উচিৎ। ধন্যবাদ দাদা।
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন। সত্য এগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক কাজে লাগবে। ধন্যবাদ সুন্দর একটা মন্তব্য রাখার জন্য।
সকল শিক্ষকদের জন্য এই শিক্ষক দিবসে আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। চমৎকার লিখেছেন ভাই শিক্ষক দিবস উপলক্ষে পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই আসলে শুধু পুঁথিগত বিদ্যা আমাদের শিখলে হবে না আমাদের আশেপাশে অনেক শিক্ষনীয় রয়েছে যেগুলো থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি, আর সেগুলোই আপনি খুব চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই একজন শিক্ষক পারে একজন ছাত্রকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশ ও জাতির মঙ্গলে মনঃনিবেশ করতে।
শিক্ষক দিবসের উপর বিস্তীর্ণ মতামত প্রদানের মাধ্যমে আপনার শিক্ষক প্রীতি ফুটে উঠেছে, সাথে খুবই সুন্দর ভাবনা। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে।