মজাদার মোরগ পোলাও রেসিপি
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি রেসিপি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । অনেকদিন হয়ে গেল রেসিপি পোস্ট দেওয়াই হচ্ছে না । আসলে এই গরমের ভিতরে কোন কিছু রান্না করাই আমার কাছে কষ্ট লাগে । এই কষ্টের জন্যই তো মাঝে মাঝে আবার বাইরে থেকে কিনে খেয়ে থাকি । আর রান্না করার সময় ছবি তোলা তো দূরের কথা । এই রান্নাটা অনেক দিন আগে করে রেখেছিলাম আজকে ফোনের ভিতরে ছবিগুলো পেয়ে গেলাম আর আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে এলাম । আজকে আমি মোরগ পোলাও রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করব । মোরগ পোলাও খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে । আমিতো দুপুরবেলা রান্নার আলসিতে মাঝে মাঝে মোরগ পোলা দোকান থেকে ২ প্যাকেট কিনে এনে খেয়ে ফেলি । আর এই মোরগ পোলাওটা আমি নিজের হাতে রান্না করেছিলাম এটা খেতে সত্যি অনেক টেস্টি হয়েছিল । যারা খেয়েছে তারা ভালই বলেছিল । আমার সুস্বাদু মোরগ পোলাও রেসিপিটি আপনাদের সাথে এখন শেয়ার করে দিচ্ছি ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
মুরগি―২ টি
পেঁয়াজ কুচি―২ কাপ
মরিচ―৮ টি
লবন― পরিমাণমতো
ঘি―৪ টেবিল চামচ
তেল― আন্দাজমতো
কাঠবাদাম বাটা― ৪টেবিল চামচ
জর্দার রং―১/১ চা চামচ
জায়ফল―১ টি
জায়ত্রি―১/১
গোলমরিচ―১ টেবিল চামচ
টকদই―১/২ কাপ
দারুচিনি এলাচ লং ― পরিমাণমতো
তেজপাতা― ৩ টি
চিনি― ২ টেবিল চামচ
ডিম― ৩ টি
কার্যপ্রণালী
প্রথমে মুরগিগুলো ভালো করে কেটে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়েছি । তারপর তার ভেতরে একটু জর্দার রং ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে রেখেছি । এরপর ব্লেন্ডারে কিছু কাঠবাদাম গুঁড়ো করে নিয়েছি তারপর জয়ফলজয়ত্রী গোলমরিচ শাহী জিরা দারচিনি এলাচ এগুলো সব কিছু একত্রিত করে গুড়া করে নিয়েছি । তারপর পেঁয়াজ গুলো দেখুন কেটে নিয়েছি ।
এরপর চুলায় একটি করাই দিয়ে একটু বেশি করে তেল দিয়ে তার ভিতর পেঁয়াজগুলো দিয়ে দিয়েছি । এই পেঁয়াজ দিয়ে আমি বেরেস্তা ভেজে নেব । তারপর বেরেস্তা ভাজা হয়ে গেলে একটা বাটিতে তুলে রেখে তার ভিতরে এলাচ তেজপাতা দারচিনি এগুলো দিয়ে দিয়েছি । তারপর আদা বাটা ,পেঁয়াজ বাটা, লবণ, রসুন বাটা দিয়ে দিয়েছি । সবকিছু দিয়ে মসলাটাকে বেশ খানিকটা সময় সুন্দরভাবে কষিয়ে নেব ।
মসলাটা বেশ খানিকটা সময় কষিয়ে নেওয়ার পরে তার ভিতরে দেখুন কত সুন্দর তেল ভেসে উঠেছে । এরপর সেই তেলের ভিতরে মেরিনেট করে রাখা মাংসের পিসগুলো দিয়ে দিয়েছি । তারপর মাংসের পিসগুলো ভালো করে নেড়ে চেড়ে বেশ খানিকটা সময় মসলার সাথে রান্না করে নিয়েছি । তারপর টক দই দিয়ে দিয়েছি তারপর একটু নেড়ে চেড়ে মিশিয়ে পেঁয়াজ বেরেস্তাগুলো দিয়ে দিয়েছি ।
পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে আরও বেশ খানিকটা সময় নেড়েচেড়ে রান্না করে নিয়েছি । তারপর বাদাম বাটা দিয়ে দিয়েছি এবং গুঁড়ো করে রাখা মশলাটা দিয়ে দিয়েছি । তারপর নেড়েচেড়ে আরো বেশ খানিকটা সময় রান্না করে নিতে হবে । এরপর একটু গুঁড়া দুধ দিয়ে আরো বেশ খানিকটা সময় রান্না করে নিয়ে রেখে দিয়েছি ।
এরপর অন্য একটা পাত্রে তেল দিয়ে দিয়েছি । তারপর ধুয়ে রাখা চাল গুলো দিয়ে দিয়েছি। এরপর চালগুলো নেড়েচেড়ে নিয়ে তার ভিতরে আদা বাটা রসুন বাটা ও লবণ দিয়ে আরো বেশ খানিকটা সময় চাল গুলোকে ভেজে নিয়েছি । তারপর শাহী জিরার গুড়া দিয়ে দিয়েছি ও ওই গুড়া করে রাখা মশলাটা দিয়ে দিয়েছি । এরপর পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রেখেছি । এখানে আমি গরম পানি ব্যবহার করেছি । তারপর ঢাকনা খোলার পরে দেখব যে ব্লক এসে পানিটা অনেকটাই কমে এসেছে ।
এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দমে রেখে দিয়েছিলাম । তারপর দেখুন ঢাকনা খোলার পরে আমার পোলাও টা একেবারে রান্না হয়ে গিয়েছে । তারপর ওপর থেকে কিছু পোলাও উঠিয়ে রেখে তার ভিতরে রান্না করে রাখা মাংসগুলো দিয়ে দিয়েছি । সাথে বাকি অর্ধেক পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে দিয়েছি ও কিছু ঘি দিয়ে দিয়েছি । কয়টা ডিম সিদ্ধ উপর দিয়ে দিয়ে দিয়েছি । মোরগ পোলাও এর সাথে ডিম সেদ্ধ না দিলে হয় নাকি । তারপর আবার উপর দিয়ে পোলাও গুলো দিয়ে চিকেন গুলো ঢেকে দিয়েছি ।
এরপর উপর দিয়ে আরও কিছু পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়েছি ও ঘি দিয়ে দিয়েছি । তারপর আস্তে করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিয়ে আবার দমে দিয়ে রেখেছি । এরপর দেখুন ঢাকনা খোলার পরে পেঁয়াজ বেরেস্তা গুলো কত সুন্দর পোলাও এর সাথে মিশে গিয়েছে এবং রান্না গিয়েছে । একেবারে ঝরঝরে খুব সুন্দর মজাদার একটি মোরগ পোলাও হয়েছিল । এরপর গরম গরম প্লেটে ঢেলে কিন্তু পরিবেশন করে খেলেই হয়ে যাবে ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness OR SET @rme as your proxy
তাইতো বলি এই গরমে আপনি কিভাবে এই রেসিপি তৈরি করলেন আবার সাথে সাথে খুব সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফি গুলোও করেছেন। আগের তোলা ছিল বলে এখন আপনার কাজে লাগলো। আমিও যখন একটু ঠান্ডা পড়ে তখন একসাথে বেশ কিছু রেসিপির ফটোগ্রাফি করে রেখে দেই। যাই হোক মোরগ পোলাও দেখে তো লোভ সামলাতে পারছি না। আমিও এই রেসিপি খেতে খুব পছন্দ করি। বাসায় কখনও তৈরি করা হয়নি তবে একটু ঠান্ডা পড়লেই দোকান থেকে কিনে আনি। আপনার রেসিপি দেখে শিখে নিলাম। অবশ্যই একদিন তৈরি করার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ মজাদার রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
মেহমান আসলে কিন্তু আপু গরমের ভিতরেও তৈরি করতে হয় কিছু করার নেই । তবে এটি অনেকদিন আগে করেছিলাম ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মোরগ পোলাও রান্নার খুবই সুন্দর একটা পদ্ধতি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। এই ধরনের রেসিপি গুলো দেখলে যেন আমি কোন ভাবে লোভ সামলাতে পারি না। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন লোভনীয় রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমার মোরগ পোলাও রেসিপিটা আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো ।
মজাদার মোরগ পোলাও রেসিপি দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আপনি খুবই মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন। মোরগ পোলাও আমার খুবই প্রিয়। আপনার রেসিপি পরিবেশনটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে, তাই দেখেই যেন ভালো লাগলো।
এ ধরনের খাবার গুলো দেখলে সত্যিই খেতে ইচ্ছা করে ।ধন্যবাদ আপনাকে ।
এত মজাদার একটা রেসিপি তৈরি করেছেন, দেখে বুঝতেই পারতেছি রেসিপিটা অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। দোকানের মোরগ পোলাও আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে খেতে। আর এরকম ভাবে যদি ঘরে নিজের হাতে তৈরি করা হয়, তাহলে তো আমার মনে হয় তা খেতে আরো বেশি ভালো লাগে। আপনার তৈরি করা মোরগ পোলাও তো আমার অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে। এত মজাদার রেসিপি তৈরি করেছেন দাওয়াত তো পেলাম না আপু। পরবর্তীতে তৈরি করলে আশা করছি দাওয়াত পেয়ে যাবো😜।
দোকানেরটা ভালো লাগে তবে নিজেরা যদি বাসায় হবে মজা করে তৈরি করে খাওয়া যায় তাহলে সত্যিই ভালো লাগে । আমার খাবারটি অনেক মজা হয়েছিল ।
আপনি তো দেখছি আজ অনেক লোভনীয় এবং আমার খুব পছন্দের একটা রেসিপি তৈরি করেছেন। আপনার রেসিপিটা আমার এত পছন্দ হয়েছে যে, কোন রকমে এখন আর লোভ সামলাতে পারছি না। মোরগ পোলাও দুইটা একসাথে রান্না করেছেন। দুইটাই আমার অনেক ফেভারিট। দুইটা একসাথে হলে তো কোন কথাই নেই। একেবারে জমিয়ে খাওয়া যাবে কিন্তু আপনার তৈরি করা এই রেসিপিটা। কেন যে এই সময় মজাদার রেসিপি টা দেখিয়ে লোভ লাগিয়ে দিলেন। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
খাবারটি শুধু লোভনীয় না খেতেও কিন্তু অসাধারণ টেস্ট হয়েছিল ।
পোলাও খেতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আজকে আপনি দেখতেছি মোরগ পোলাও রেসিপি করেছেন। আসলে গরমের কারণে অনেকে রান্না করতে তেমন সাইনা। যাইহোক আপনার মোবাইলের রেসিপিটি আগে ছিল বিধায় এত সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সত্যি আপনার মোরগ পোলাও রেসিপি দেখে আমার খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে।
আমার কাছেও খুব ভালো লাগে এজন্য আমি মাঝে মাঝে তৈরি করি এভাবে ।
আজ আপনি আমাদের মাঝে বেশ মজাদার রেসিপি শেয়ার করেছেন। আপনার রেসিপি দেখে আমার খেতে ইচ্ছে করছে। আসলেই মোরগ পোলাও খুব মজার একটি খাবার। আমার তো খুব ভালো লাগে খেতে। মাঝে মাঝে যখন মন চায় রেস্টুরেন্টে চলে যাই খেতে। আজ আপনার মোরগ পোলাও দেখতে বেশ চমৎকার হয়েছে। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এত মজাদার একটা রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আমারও খেতে খুব ভালোলাগে । আমি বেশিরভাগ সময়ই বাইরে থেকে কিনে খাই তবে মাঝে মাঝে নিজে করার চেষ্টা করি।
মোরগ পোলাও বাইরের দোকান থেকে খাওয়া হলেও কখনও বাড়িতে তৈরি করে খাইনি। এটা বেশ কঠিন মনে হতো আমার কাছে। মোরগ পোলাও টা বেশ চমৎকার তৈরি করেছেন আপু। অনেক উপাদানের প্রয়োজন হয়েছে দেখছি। সবমিলিয়ে দারুণ তৈরি করেছেন মোরগ পোলাও টা আপু। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
এ ধরনের খাবার রান্না করা আসলেই একটু ঝামেলা এবং কঠিন । যদি একটু কষ্ট করে করা যায় খেতে কিন্তু সত্যি অনেক ভালো লাগে । আর আমি একসাথে অনেক রান্না করি ফ্রিজে রেখে কয়েকদিন খাই।