হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের জন্য নতুন একটি ব্লক নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে $PUSS মোমো রেসিপি শেয়ার করবো।

বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে, বর্তমানে আমাদের কমিউনিটিতে একটি বিষয় নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে আর সেটা হলো আমাদের কমিউনিটির ফাষ্ট MEME টোকেন $PUSS. আমাদের কমিউনিটির সবাই $PUSS কয়েন কিনে হোল্ড করার পাশাপাশি প্রচুর প্রচরনা চালিয়েছে। আমরা চাই আমাদের এই টোকেনটি সারা বিশ্বের সবার মাঝে ছড়িয়ে যাক। সেই জন্য সবাই নিজ নিজ উদ্যোগে $PUSS নিয়ে কাজ করছে। আমিও আজকে আমার সাধ্যমত $PUSSকে নিয়ে নতুন একটি রেসিপি তৈরী করেছি। আর সেই রেসিপির নাম হলো $PUSS মোমো রেসিপি। মোমো রেসিপি কম বেশি সবাই খেয়েছেন। মোমো খেতে অনেক স্বাদ লাগে। আমি আজকে $PUSS এর আকৃতিতে মোমো রেসিপিটা তৈরী করেছি। $PUSS মোমোর মধ্যে চিকেন ও ভেজিটাবল ব্যবহার করেছি। আশা করি রেসিপিটা সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে।

চিকেন	বুকের অংশটা
আলু	দুইটি
টমেটো	একটি
বরবটি	পরিমান মত
পেঁপে	এক চতুর্থাংশ
ময়দা	বড় এক কাপ
আঁদা বাটা	পরিমান মত
রসুন বাটা	পরিমান মত
পেঁয়াজ কুচি	পরিমান মত
কাঁচা লঙ্কা	দুইটি
ধনিয়া পাতা	পরিমান মত
রাঁধুনী মসলা	পরিমান মত
জিরে গুঁড়ো	পরিমান মত
ধনিয়ার গুঁড়ো	পরিমান মত
তেল	পরিমান মত
পানি	পরিমান মত

রন্ধন পদ্ধতির ধাপ সমূহ

প্রথম ধাপ-

প্রথমে আমি সব গুলো সবজি কেটে ছোট ছোট টুকরো করে নিলাম। যেহেতো এগুলো মোমোতে দিবো, তাই ছোট ছোট টুকরো করলে ভালো হয়। তারপর আমি চুলাতে একটি পাতিল বসিয়ে পেঁপেটা সিদ্ধ করে একটি প্লাস্টিকের জালিতে পানিটা ছেঁকে নিলাম। পেঁপে সিদ্ধ করে ভাজি করলে খেতে ভালো স্বাদ লাগে।

দ্বিতীয় ধাপ-

তারপর চুলাতে কড়াই বসিয়ে তাতে সব গুলো সবজি দিয়ে দিলাম। তারপর পেঁয়াজ, রসুন, আঁদা, হলুদ, মরিচ, তেল সহ সব গুলো মসলা দিয়ে দিয়ে দিলাম। এখানে সব গুলো এক সাথে দিয়ে দিলে সিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি মসলা গুলো সবজির ভিতরে প্রবেশ করবে।

তৃতীয় ধাপ-

সব গুলো মসলা দিয়ে নেড়ে চেড়ে সব কিছু মিক্স করে নিয়ে ঢাকনা দিয়ে ডেকে আগুনের আচঁটা বাড়িয়ে দিলাম। তারপর অর্ধেক কষানোর পরে টমেটো গুলো দিয়ে দিলাম। মোটামুটি ভাবে সিদ্ধ হয়ে গেলে আর ঢেকে দিবো না। কারন তখন ঢেকে দিলে পানি উঠে যাবে। নাড়তে নাড়তেই ভাজিটা সম্পূর্ণ করে ফেললাম।

চতুর্থ ধাপ-

ভাজিটা হয়ে গেলে চুলাতে একটি পাতিল বসিয়ে অল্প একটু লবন দিয়ে গরম পানি করে নিবো। তারপর তাতে বড় এক কাপ ময়দা দিয়ে দিবো। একদুই মিনিট রেখে তারপর একটি চামচ দিয়ে নেড়ে নিবো। গরম পানি কম হলে ঠান্ডা পানি দেওয়া যাবে, কোন সমস্যা নেই।

পঞ্চম ধাপ-

এই পর্যায়ে ময়দা গুলো ভালো ভাবে মিক্স করে গোল বলের মত বানিয়ে নিলাম। আর অল্প একটু কাই নিয়ে খাবারের সবুজ রং দিয়ে ছোট একটি বলের মত করে নিলাম। এগুলো $PUSS মোমোর চোখ বানাতে কাজে লাগবে।

ষষ্ঠ ধাপ-

এই পর্যায়ে অল্প একটু কাই নিয়ে তার মধ্যে একটু হলুদ দিয়ে হলুদ কালারের ছোট একটি বল বানিয়ে নিলাম। এগুলো $PUSS মোমোর শরীরের মাঝখানে ব্যবহার করবো।

সপ্তম ধাপ-

এই পর্যায়ে অল্প অল্প কাই নিয়ে বেলুন দিয়ে রুটির মত বানিয়ে নিবো। তারপর তাতে চিকেন ও বিভিন্ন সবজি দিয়ে বানানো ভাজি থেকে অল্প একটু ভাজি রুটির মধ্যে নিয়ে অরিজিনালি মোমোর মত বানিয়ে নিলাম। তারপর আরেকটু রুটি বানিয়ে সেটা দিয়ে এই মোমোটা ডেকে দিলাম।

অষ্টম ধাপ-

দ্বিতীয় রুটিটা দিয়ে প্রথম মোমোটা ঢেকে উল্টিয়ে আবার ভাজি দিয়ে দুইটি মোমো একসাথে লাগিয়ে দিলাম। তারপর দ্বিতীয় মোমোর মুখটা নিচের দিকে দিয়ে দাড় করিয়ে দিলাম। এখানে এটা বানাতে একটু সময় লাগে। কোথাও বাঁকা হয়ে গেলে হাতের মাধ্যমে সোজা করে দিয়ে আঙ্গুল দিয়ে মাঝখানে চাঁপিয়ে দিতে হয়।

নবম ধাপ-

এই পর্যায়ে মোমো হয়েছে, তবে পুশের রুপ দিতে হবে। সে জন্য একটি কাঠি নিয়ে পুশের কান, চোখ ও মুখের জায়গা বানিয়ে নিলাম। এই পর্যায়ে কিছুটা মোমোর মধ্যে কিছুটা পুশের চেহেরা ফুটে উঠতেছে।

দশম ধাপ-

এই পর্যায়ে সবুজ কাই গুলো দিয়ে পুশের জন্য ছোট ছোট চোখের মনি বানিয়ে নিলাম। আর সাদা কাই দিয়ে পুশের মুখ ও হলুদ কাই দিয়ে পুশের নাক লাগিয়ে দিলাম।

একাদশ তম ধাপ-

সবুজ বল গুলো চোখের মধ্যে লাগিয়ে দিলাম। আর হলুদ কাই গুলো দিয়ে পুশের মাঝখানে সেইপ দিয়ে দিলাম। সেই সাথে মাঝখানে একটি ফুলের মত করে সেইপ লাগিয়ে দিলাম।

দ্বাদশ তম ধাপ-

এভাবে ধীরে ধীরে একটি একটি করে পুশ বানিয়ে পাশে রাখলাম। তারপর একটি প্লেটে নিয়ে একসাথে ছয়টি পুশ মোমো রেখে ফটোগ্রাফি করলাম। যদিও এগুলো বানাতে বেশ কিছু সময় লেগেছে। বানানোর পরে দেখে অনেক ভালো লেগেছে।

ত্রয়োদশ তম ধাপ-

সব গুলো পুশ মোমো বানানোর পরে রাইস কুকার নিয়ে তাতে পানি দিয়ে গরম করে নিলাম। আর জালির মধ্যে ঢাকনা লাগিয়ে কাঁচের ঢাকনার ছিদ্রটা টিসু দিয়ে বন্ধ করে দিলাম। যেন গরম ভাপটা বাহিরে বের হয়ে না আসতে পারে। ভালো ভাবে পানিটা গরম হয়ে আসলে পুশ মোমো গুলো ধীরে ধীরে জালিতে দিয়ে দিলাম।

চতুর্দশ তম ধাপ-

প্রায় আধা ঘন্টা এভাবে ভাপ দিতে থাকলাম। পানিটা যত বেশি ফুঁটবে তত বেশি ভাপ উঠবে। আর যত বেশি ভাপ উঠবে তত তারাতরি পুশ মোমো গুলো হয়ে যাবে। গ্লাসের মধ্যে ভাপের ছাপ গুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

পঞ্চদশ তম ধাপ-

প্রায় ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ মিনিট ভাপ দেওয়ার পরে আমার পুশ মোমো রেডি হয়ে গেলো। ঢাকনা খুলার পরে ভাপের পানিটা দেখা যাচ্ছে। উপরের পানিটা এক দুই মিনিটের মধ্যেই শুকিয়ে যায়। এবার খাবার পালা অহ সরি আগে পরিবেশন।

পরিবেশন

বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের $PUSS মোমো রেসিপি। আশা করি রেসিপিটা সবার কাছেই ভালো লাগবে। রেসিপিটা ভালোই স্বাদ হয়েছিল। যায়হোক সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।