মধ্যবিত্তের সাশ্রয়..
হ্যাল্লো বন্ধুরা
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় পরিবারসহ সুস্থ আছি, ভালো আছি। যাই হোক, আজ আপনাদের সাথে নতুন একটি পোষ্ট শেয়ার করতে চলে এসেছি। আমার আজকের পোষ্ট এর বিষয় - মধ্যবিত্তের সঞ্চয়। আশা করবো আপনাদের ভালো লাগবে। পোস্ট টি আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন অবশ্যই... তো চলুন, আর বেশি কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের পোষ্ট টি তে.... ৷
মধ্যবিত্তের সংসার বুঝি ভারী অদ্ভুত এক জায়গা। জায়গা না বলে একে শিক্ষালয়ও বলা যায় আমার মতে! কত কত কি যে শেখার আছে একটা সংসারের ভেতর। সত্যি কথা বলতে কি, বিয়ের পর আলাদা নিজের সংসার শুরু করেছি ঠিক ই, তবে তখন যেহেতু চাকরি করতাম প্রাইভেট সেক্টরে, সপ্তাহে একটা দিন ছুটি। তাও তো ঘরের সাংসারিক কাজ সারতেই কীভাবে বিকেল গড়িয়ে যেতো, টের ই পেতাম না! রান্না টা বরাবরই বাসায় ই করা হতো। অফিস শেষে বাসায় ফিরর রান্না করে খেয়ে দেয়ে ঘুম। ঘুমের থেকে উঠে আবারো রেডি হয়ে অফিস ছুট! তখনও সবকিছুই চলতো বটে, তবে তখন আলাদা করে হিসেব নিকেশ করা হতো না তেমন, সংসারের ম্যানেজমেন্ট নিয়েও অনেকটা উদাসীন ই ছিলাম। মহান করুণাময় সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে অভাব বুঝতে হয় নি কখনো। কামাই করেছি দুজনে, খরচ ও সেভাবেই হয়েছে হিসেব ছাড়াই। বয়সের কারণেই হোক কিংবা কম অভিজ্ঞতার কারণেই হোক, সঞ্চয় এর দিকে খুব একটা ভাবি নি। তবুও বিয়ের কয়েক মাস পরেই দুজনের নামে একটি যৌথ FDR খুলেছিলাম ব্যাংকে। সেখানে মাসিক যতটুকু জমতো, সেটাই সঞ্চয়! ও কথা আরেক দিন বলবো!
এদিকে আমি চাকরি ছাড়ার পর যখন একজনের উপর সমস্ত দ্বায়ভার চলে গিয়েছে, এখন তো আগের থেকে কিছুটা হলেও হিসেবি হওয়ার চেষ্টা করছি। ঢাকা শহরে একজনের ইনকাম দিয়ে চলতে গেলে কিছুটা হিসেবি তো হতেই হয়.. যদিও এখনো বেশ ভালো মতোই চলছে। রিজিক বড় অদ্ভুত জিনিস! এখন শুধু চেষ্টা করছি একটা আইডিয়া করে সাংসারিক খরচের ম্যানেজমেন্ট এর বিষয় টি তে গুরুত্ব দেয়ার। যেমন আমাদের সংসার এর শুরু থেকেই কখনো মাসিক বাজার টা একেবারে করা হয় না। যখন যেটা লাগে, তখন সেটা কিনে আনার অভ্যেস! এখন বুঝি যে এতে হিসেব থাকে না। তারচেয়ে মাসিক হিসেবে বাজার করলে একটা হিসেব থাকে, আর কিছুটা সঞ্চয় ও হয়। যদিও আমার সংসারে এখনো ইমপ্লিমেন্ট করা হয় নি এটি। নতুন বছর থেকেই শুরু করবো আশা রাখি।
সেদিন গিয়েছিলাম মীনা বাজার এ। মূলত শীতকাল তো চলেই এসেছে, তাই ত্বকের জন্য কিছু তো এক্সট্রা কেয়ার প্রয়োজন। যদিও বাসায় লোশন আছে, তবে ওতে আমার পোষায় না। ওলিভ ওয়েল টাই কম্ফোর্ট লাগে। আবার পা এর জন্য গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হয়। প্রথমে খুঁজে খুঁজে ওলিভ ওয়েল গুলো দেখলাম। আগের বছরের চেয়ে সবগুলোরই দাম বাড়তি অনেকখানিই। খুঁজতে খুঁজতেই সেলের সেকশনে চোখ গেলে দেখলাম একটা কম্বো প্যাকেজ এর অফার রয়েছে। অলিভ অয়েল এর সাথে গ্লিসারিন ফ্রি। এমন অফার থাকলে আমি আগে প্রোডাক্ট এর ডেট গুলো চেক করে নেই। কারণ বেশিরভাগ সময়ে যেগুলোর এক্সপায়ার ডেট খুব কাছাকাছি, সেগুলোতেই এমন অফার দেয়। ডেট চেক করে দেখলাম না, ডেট ঠিকঠাক ই আছে। অলিভ অয়েল এবং গ্লিসারিন দুটোই ২০২৪ এই উৎপাদন, এক্সপায়ার ডেট ২৬ এবং ২৭ সালে। তাই সেল থেকেই কম্বো অফার টি নিয়ে নিলাম। দুটো আলাদা কিনলে ৩৭০ টাকা পরতো, একসাথে ২৫০ টাকা পরলো। সাথে অডোনিল এর কম্বো প্যাক এয়ার ফ্রেশনার ও নিয়ে নিলাম। কম্বো প্যাক হওয়ায়, ওখানেও সাশ্রয় হলো কিছুটা! টুকিটাকি এভাবেই মধ্যবিত্ত সংসারের সঞ্চয় কিংবা সাশ্রয় এভাবেই করা শিখছি... শেখার তো কেবল শুরু! এখনো কত কি নজর দেয়া বাকি! একজন প্রায় উড়নচণ্ডী গা ছাড়া মেয়ের আরোও কত কি শেখা বাকি এই সংসার থেকে, তাই ভাবি মাঝে মাঝে! আপনারা যারা এক্সপার্ট সংসারি মানুষ আছেন, কিছুটা অভিজ্ঞতা থেকে টিপস শেয়ার করতে পারেন কিন্তু! নতুন বছরে নানা প্ল্যান রয়েছে সাংসারিক ম্যানেজমেন্ট নিয়ে.....
যাই হোক, আর কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনাদের কাছে। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি।
এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে 🌼 ধন্যবাদ 🌼
আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এই রকম অফারের খোঁজে আমিও থাকি, মাঝে মাঝে মিনা বাজারে যাই অফারগুলোর লোভে পড়ে হি হি হি।
হ্যা, নুডুলস, বিস্কুট সহ আরো নানা প্রয়োজনীয় জিনিস এ ওদের লোভনীয় সব অফার লেগেই থাকে। তাই মিনা বাজার গেলেই ওই সেকশনে একবার ঢু দেই আমিও। 😃
বর্তমান সময়ে হিসাব করে না চললে টিকে থাকাই কস্টকর হয়ে উঠবে। এটা একেবারেই ঠিক বলেছেন ঢাকা শহরে একজনের আয়ে সংসার চালানো বেশ কস্টসাধ্য। সেই ক্ষেত্রে হিসাব করে চললে কিছুটা সাশ্রয়। সব জায়গায় পরিকল্পনা মাফিক চললে ভাল থাকা যায়। তা অফিস কিংবা সংসার।
সেটাই আপু! জিনিসপত্রের যে দাম, দিন দিন আরোও যেভাবে লাগামহীন ভাবে বাড়ছে, হিসেব করর না চললে, চলা মুশকিল!
মধ্যবিত্ত বাঙালি হিসেবে এই ধরনের অফার বা আশ্রয় আমরা সবসময় খুঁজি। আর যেখানে বাজেট কম হয় সেখান থেকেই জিনিসপত্র কেনাকাটি করি। সেই দিকটি লক্ষ্য রেখে দারুণ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করলেন বোন। আলহাবাদী মধ্যবিত্ত বাঙালি হিসেবে দারুন পছন্দ হলো আপনার এই পোস্টটি।
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 😇