রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল ম্যাচ
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
আজকে আপনাদের সাথে খেলাধুলা বিষয়ক একটি পোস্ট শেয়ার করে নেবো। গতকাল ফাইনাল ম্যাচ ছিল এই চলতি টি২০ বিশ্বকাপের। আর এই ম্যাচটা খুবই লড়াই সম্পন্ন হবে সেটা ধারণা করেছিলাম, কিন্তু তাও এই ধারণা মাঝে মাঝে ভুল ,কারণ কোনো ফাইনাল ম্যাচেই টানটান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে হয় না। তবে এইটা ভালো দুটি শক্তিশালী টিমের মধ্যে আর সবচেয়ে বড়ো বিষয় হলো, এই বিশ্বকাপে নিউ ইয়র্ক থেকে শুরু করে বার্বাডোস পর্যন্ত দুটি টিম একটা মজবুত অবস্থান বজায় রেখে এসেছিলো। আর সাউথ আফ্রিকা এই প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে, ফলে খুব লড়াই করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে পিচের কন্ডিশন মোটামুটি বেশ ভালোই ছিল, আর এই পিচে রান তোলা যায়, তেমন বেশি একটা স্লোয়ার পিচ না। তবে এই বার্বাডোস এর মাঠে একদমই ঘাস কম, ড্রাইভ দেওয়াও মুশকিল এখানে। পিচটাও দেখেছেন কেমন, এই পিচে স্পিনারদের জন্য একদমই উপযুক্ত না, আসলেই বেধড়ক মার খায়, এর আগেও একটা ম্যাচ দেখেছিলাম এই পিচে, বিষয়টা একই রকম হয়েছিল।
গতকাল যদিও ইন্ডিয়া টস জিতেছিল, ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ সুযোগ তাদের হাতে ছিল। আর আগে ব্যাট নেওয়ার সিদ্ধান্তটা যদিও আমার কাছে তেমন পছন্দ হয়নি, তারপরেও পিচের কন্ডিশন বুঝেই নিয়েছিল সম্ভবত। আর এক্ষেত্রে কোচ আর ক্যাপ্টেন এর মধ্যে কথোপকথন এর মাধ্যমেই এইটা হয়ে থাকে। ইন্ডিয়া ব্যাটিংয়ে এসে শুরুটা বেশ সুন্দর করেছিল। কোহলি আর রোহিত দুইজনেই সমানে মার শুরু করেছিল, কিন্তু রোহিত এর শর্টটা ওইভাবে ক্যাচ হবে এটা কেউ আশা করিনি। তবে সুইপ শর্টটা দারুন ছিল, কিন্তু ওখানে লেগ আম্পায়ারের কাছে প্লেয়ার আছে এটা সম্ভবত খেয়াল করিনি রোহিত, নাহলে শর্টটা যেমন ছিল তাতে ওটা নিশ্চিতরূপে বাউন্ডারি যেত। যাইহোক, এখানে একটু প্রেসার ক্রিয়েট হয়ে যায়, তারপর পন্থ এসেই রিভার্স শর্ট-এ চলে যায় আর ওখানেই ভুল করে। ব্যাটের আগায় লেগে ক্যাচ উঠে যায়, সবসময় কেন যে রিভার্স শর্ট এর উপর খেলতে যায় বুঝিনা। ওখানেই ম্যাচ একদম স্লো হয়ে যায়। কারণ পুরো দায়িত্ব কোহলির একার উপরে এসে পড়ে।
আর গতকাল যদি কোহলি না খেলতো তাহলে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হতো এক কোথায়। বলতে গেলে ভরসাও করা যাচ্ছিলো না তার উপরে, কারণ পুরো বিশ্বকাপে কোনো রান নেই তার। সূর্যকুমার এসেও আউট হয়ে যায়, মানে ওখানে উঠে উঠে ৩ টা উইকেট নষ্ট। তবে ভালো বুদ্ধিমানের কাজ করেছিল অক্ষর প্যাটেলকে উপরে নিয়ে এসে, ভালোই খেলে দিয়েছিলো। ওখানে মিডিল ওভারে যে পার্টনারশিপটা প্রয়োজন ছিল, সেটা কোহলি আর অক্ষর প্যাটেল মিলে তৈরি করে দিয়েছিলো। তবে ওখানে অক্ষর প্যাটেল কি দৌড়ালো বুঝলাম না, রান আউট হয়ে যায়, এটা একদম ফালতু আউট ছিল। কোহলি গতকাল শেষ অব্দি কাঁধে বোঝা নিয়ে টেনেছে, কঠিন বিষয় ছিল কালকের ম্যাচে রান তোলাটা, তার একার এই ৭৬ রান অনেক কাজে দিলো বলতে হয় । তা নাহলে আর কেউ তেমন ব্যাটিং করতে পারেনি। মোটামুটি যা রান এসেছিলো বেশিরভাগটাই স্পিন বোলারদের কাছ থেকে।
তবে পিচের কন্ডিশন হিসেবে ১৮০ এর উপরে করা উচিত ছিল, কারণ সাউথ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা কম না এক একজন। তাছাড়া সাউথ আফ্রিকার সব ফিল্ডিংও করেছে, মিস দেয়নি একটাও। সাউথ আফ্রিকা যদিও এই পিচে ব্যাটিং এর দিক থেকে শুরুটা ভালো না করলেও পরে ভালোই টেনে দিয়েছিলো। এক্ষেত্রে ভারতীয় বোলারদের কথা বলতে গেলে প্রথমেই পেচ বোলাররা ভালো করেছিল। কিন্তু এই যে স্পিন খাটালো, ওমনি রান যেন ঝড়ের বেগে উঠে গেলো। প্রতিটা স্পিনার বোলারদের বেধড়ক পিটিয়েছে, বিশেষ করে তাদের এক ক্ল্যাসেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলো। একের পর এক ৬ মেরে গিয়েছে। তারপরেও ভারতের অনুকূলে ছিল ম্যাচটা। কিন্তু অক্ষর প্যাটেলের ১৪ ওভারের মাথায় ১ ওভারে যা মারলো, তাতেই ম্যাচ ওখানেই ডেথ হয়ে গিয়েছিলো। এক ওভারে ২২ নেওয়ার পরে রান আর বেঁচেই ছিল না বলতে গেলে, আমি তো ভেবেই নিয়েছিলাম ম্যাচ শেষ করে দিয়েছে এই ওভারে। কিন্তু বুমরাহকে ওখানে রোহিত শর্মা অনেক বড়ো একটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছিলো।
কারণ ওখানে রানটা না আটকালে আর আটকাতে পারতো না। পুরো টানটান উত্তেজনা ম্যাচ হয়ে গিয়েছিলো লাস্টের দিকে। তবে এখানে আরেকজনের কৃতিত্ত্ব না দিলে হচ্ছেই না, সেটা হলো সূর্যকুমার যাদব, ও যে মিলারের ক্যাচটা ধরলো, মারাত্মক ক্যাচ ছিল ওটা। নাহলে ওই ৬ বেরিয়ে গেলে সব শেষ হয়ে যেত নিমিষেই। অনেক বড়ো অবদান ছিল তার। আসলে কিভাবে যে ম্যাচটা ঘুরিয়ে আনলো, এটা শুধু ভারতীয় প্রেসারদের দমে সম্ভব হয়েছিল। অনেক বছর প্রতীক্ষার পরে এইবার কাপ ঘরে নিতে পারলো। আসলে প্রতিবারই এই সেমী-ফাইনাল নাহলে ফাইনাল থেকে হেরে যায়। রাহুল দ্রাবিড় এর কোচ হিসেবে একটা ইতিহাস তৈরি করে রেখে গেলো আর একসাথে বিরাট-রোহিত থাকাকালীন বিশ্বকাপ জিততে পারলো। এটা কোহলিরও শেষ টি২০ বিশ্বকাপ ছিল, অফিসিয়ালি রিটার্ড করে যাবে এইবার। অনেকদিন বাদে সেরা একটা ফাইনাল ম্যাচ দেখলাম, লাস্ট মোমেন্ট এর এইরকম টানটান উত্তেজনার মধ্যে দেখতে আলাদাই ফিলিংস কাজ করে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.discordapp.com/emojis/813259193313394728.gif)
![](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.discordapp.com/emojis/813259193313394728.gif)
![](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.discordapp.com/emojis/779167798706438164.gif)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বিশ্বকাপে ফাইনাল ম্যাচ যেন ফাইনালের মতোই হয়েছে। আর এই ম্যাচটি দেখতে পেয়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে এবং উত্তেজিত ম্যাচ ছিল। একবার তো ভেবেই নিয়েছিলাম যে ইন্ডিয়া আর পারলো না, ৩০ বলে ৩০ লাগে। একদম নিশ্চিত হারের মধ্যে থেকে কিভাবে যে ম্যাচ জিতাতে হয় সেটা যেন এই ম্যাচের মাধ্যমে দেখতে পেলাম। সত্যি অসাধারণ একটা ম্যাচ ছিল, কল্পনার বাইরে। দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। শুভকামনা রইল ইন্ডিয়ার টিমের জন্য।
অসাধারণ একটা ম্যাচ ছিল। আসলে এই ম্যাচটা দেখেই ভাবতে পারিনি যে ফলাফলে এটা হবে। ভেবে নিয়েছিলাম ইন্ডিয়া আজ পরাজিত হলো। কিন্তু একটা উইকেট যেন ইন্ডিয়াকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ক্যাচটা ছিল অসাধারণ। আর এই ক্যাচটা ধরাতে যেন ম্যাচটা হাতের মুঠোয় চলে আসলো। সত্যিই ইন্ডিয়াকে শুভকামনা জানাই। আর এরকম ফাইনাল ম্যাচ হয়তো আগামীতে পাবো কিনা সেটারই সন্দেহ। আমার কাছে ফাইনাল ম্যাচটি দারুন লেগেছে।
দাদা ১৫ তম ওভারে ক্লাসেন যখন দুই চার এবং দুই ছয় মারলো,আমি তো ভেবেছিলাম ইন্ডিয়া নিশ্চিতভাবে হেরে যাবে। কারণ অক্ষর প্যাটেল সেই ওভারে ২৪ রান দিয়েছিল। তারপর ২৭ বলে যখন ২৭ রান লাগবে, তখন তো সবাই ভেবেছিল সাউথ আফ্রিকা জিতবে। কিন্তু হার্দিকের বলে যখন ক্লাসেন আউট হয়ে গেলো,তখনই ম্যাচ টার্ন করে ইন্ডিয়ার দিকে চলে এসেছিল। তাছাড়া লাস্ট ওভারে মিলারের দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নিয়েছে সূর্যকুমার। যাইহোক ইন্ডিয়া নিঃসন্দেহে ওয়ার্ল্ডের বেস্ট ক্রিকেট টিম,এটা মানতেই হবে। এতো চমৎকার ভাবে এই ম্যাচের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
অনেক বেশি ইচ্ছা ছিল আপনার পোস্টের মাধ্যমে ফাইনাল ম্যাচটার রিভিউ পড়বো। আর এখন পড়তে পেরে সত্যি অনেক বেশি ভালো লাগতেছে দাদা। টান টান উত্তেজনা শেষে সৃষ্টি হয়েছিল এই বিষয়টা কিন্তু সত্যি দারুন ছিল। খেলার মধ্যে যদি টানটান উত্তেজনাই না থাকে তাহলে বেশি ফিলিংস আসে না। তবে কোহলির এটা শেষ টি20 ম্যাচ ছিল এটা শুনে অনেক বেশি খারাপ লাগতেছে। তার খেলা অনেক বেশি সুন্দর হয়। আমার কাছে তো তাকেই বেশি ভালো লাগে। অনেক সুন্দর করে আপনি আজকে ফাইনাল ম্যাচের রিভিউ টা সবার মাঝে ভাগ করে নিয়েছেন দাদা। এটার জন্য আপনাকে সত্যি অনেক অনেক ধন্যবাদ। আর আমাদের সবার পছন্দের টিম ইন্ডিয়ার জন্য আরো অনেক বেশি শুভকামনা রইল। তারা যেন এরকম ভাবেই সামনে এগিয়ে যেতে পারে এটাই কামনা করি। আশা করছি আপনি প্রতিনিয়ত এরকম খেলা বিষয়ক পোস্ট গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।
খুবই ভালো লাগতেছে দাদা ফাইনাল ম্যাচটার রিভিউ পড়তে পেরে। অনেক সুন্দর করে কিন্তু আপনি পুরোটার রিভিউ শেয়ার করেছেন। এই ম্যাচটা যদিও দেখার অনেক ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সময়ের কারণে আর দেখতে পারিনি। ম্যাচটা না দেখতে পারলে কি হয়েছে, আপনার পোস্টের মাধ্যমে তো পুরোটাই জেনে নিতে পারলাম। ফাইনাল ম্যাচে প্রথম দিকে ইন্ডিয়া পরাজিত হয়ে যাবে এরকম হলেও, শেষে কিন্তু তারাই বিজয়ী হয়েছে দেখে অনেক ভালো লাগতেছে। এরকম ম্যাচগুলোর শেষটা টানটান উত্তেজনার মধ্যে না হলে কিন্তু ভালোই লাগে না। আর এই ম্যাচটাও কিন্তু ঐরকমই হয়েছে। অনেক অনেক শুভকামনা প্রিয় ইন্ডিয়া টিমের জন্য। আর আপনাকেও ধন্যবাদ দাদা, এটা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।
কোহলি প্রতিটা ম্যাচ ছিল ফ্লপ। কিন্তু ফাইনালে ঠিকই খেলে দিয়ে গেছে সে। শেষ মূহূর্তে মনে হচ্ছিল আফ্রিকা জিতেই যাবে। কিন্তু বুমরাহ এবং পান্ডিয়া অর অসাধারণ বোলিং। পুরো আসর একেবারে দাপটের সাথে খেলেছে ভারত। যোগ্য দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন তারা।
টি২০ বিশ্বকাপের গতকালের ম্যাচটা সত্যিই দারুন ছিল। কোহলির শেষ টি২০ বিশ্বকাপ ছিল আর শেষ খেলাটাতেও বাজিমাত করেছে। আর এবারের খেলাটি একেবারে দারুণ হয়েছে। সব মিলে সত্যিই ভালো লেগেছে দাদা। আপনি অনেক সুন্দর করে খেলার মুহূর্তগুলো উপস্থাপন করেছেন আর নিজের অনুভূতি তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।