প্রাচীন শহর ( শেষ পর্ব )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে "প্রাচীন শহর" গল্পটির শেষ অংশটি শেয়ার করে নেবো। তো রাহুল ও তার বন্ধুরা যখন ধ্বংসাবেশ শহরটিকে পুনরায় গড়ে উঠতে দেখছিলো, তখন তাদের মনে যেমন একদিকে উত্তেজনা কাজ করছিলো আবার ভয়ও কাজ করছিলো। মাটির নিচ থেকে যেমন আলোর রশ্নি আসছিলো, তেমনি সেই সাথে সাথে গুহার ভিতর থেকে একটি দরোজাও উন্মুক্ত হয়ে গেলো। তারা দরোজার ওপারে গিয়ে দেখতে পেলো একটা বিশাল বড়ো প্রাসাদ এর মতো যা সেই ভূমিকম্পের ফলে ধংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে ছিল। এরপর তারা সাহস করে আস্তে আস্তে সেই প্রাসাদের ভিতরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলো এবং ভিতরে প্রবেশ করার পর তারা একদম দেখে বিশ্বাস করতে পারছে না যেন এরমকম এক অবস্থা।
কারণ তার ভিতরে একদম সবকিছু যেন রাজকীয় ভাবে সবকিছু সাজানো আছে। দেয়ালগুলো যেন প্রাচীন মণিমুক্তায় খোদাই করা আছে। সেখানে সবকিছু এতো প্রাচীন হওয়া সত্বেও এতো নিঁখুতভাবে ছিল যে, সময় যেন সেখানেই আটকে আছে। বোঝার কোনো উপায় ছিল না যে, সেই প্রাচীন সময় আর এখনকার বর্তমান সময়ের মধ্যে পার্থক্য কোথায়, কারণ সেখানকার জিনিসপত্র হিসেবে এতো প্রাচীন হওয়ার কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। তাছাড়া তারা আরো একটা বিষয় লক্ষ্য করে যে, সেখানে একটা সিংহাসন ছিল, যার উপরে একটা মূর্তি এমনভাবে ছিল, যেন জ্বলজ্যান্ত তাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। সবকিছুই যেন তাদের সামনে একদম জীবন্ত মনে হতে থাকে বিষয়গুলো। এরপর ধীরে ধীরে তারা গুহার ভিতরে সেইসব প্রাচীন জিনিসপত্র দেখতে লাগে এবং কিছু সময় পরে সেখানে হাওয়া যেন একটা গম্ভীর ভাব ধারণ করে।
তারা যে মূর্তিটা সিংহাসনের উপরে দেখেছিলো, সেখান থেকেই একটা গম্ভীর স্বর তাদের কাছে ভেসে আসলো যে, " তোমরা এখানে এসেছো, কারণ এই প্রাচীন শহরটিকে রক্ষা করা তোমাদের দায়িত্ব"। তবে এই প্রাচীন শহরটি পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকবে তখনই, যখন এটা সত্য, ন্যায় এবং জ্ঞানের আশ্রয়স্থল হবে। আর তা না হলে এই শহরটি আবারো চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে। রাহুল এবং তার বন্ধুদের মনে এই হঠাৎ করে স্বর ভেসে আসা এবং এইধরণের কথা শুনে একটু ভয় পেতে লাগে, গলা শুকিয়ে যেতে লাগে। কিন্তু তাও রাহুল অনেক সাহস নিয়ে মূর্তিটির কাছে জিজ্ঞাসা করে যে, তার জন্য আমাদের কি করতে হবে বা কি করা উচিত, এই শহরটিকে রক্ষা করতে হলে?
তখন উত্তরে মূর্তিটি তাদের বলে যে, এই প্রাচীন শহরটির কাহিনী পৃথিবীর মানুষদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং এই শহরটির ইতিহাসের গুরুত্ব তাদের বোঝাতে হবে ভালো করে। ফলে তোমরা যদি এই কাজে সফলতা অর্জন করতে পারো, তাহলে এই শহরটি পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকবে, আর ব্যর্থ হলে শহরটি মাটির নিচে চলে যাবে। এরপর সবকিছু আবার যেন তাদের সামনে হারিয়ে যেতে লাগে অর্থাৎ মাটির নিচে থেকে উঠে আসা সেই আলো নিভে যায় এবং চারিপাশে যে ধংসস্তূপ ছিল, সেইটা আবার পুনরায় গঠিত হয়ে যায়। এরপর রাহুল আর তার বন্ধুরা অনুধাবন করতে পারে যে, আমাদের কাজগুলো যদি সম্পন্ন করতে পারি, তখন এই শহরটি পুরোপুরি জাগ্রত হবে পৃথিবীর বুকে।
এরপর তারা এই শহরটির কাহিনী সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার একটা কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়। রাহুল তার অভিজ্ঞতা থেকে এই শহরটি সম্পর্কে একটি বই বের করে, যার নাম দিয়েছিলো "হারিয়ে যাওয়া শহর"। এরপর বইটি প্রকাশিত হওয়ার পরে, কম সময়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিলো মানুষের মাঝে এবং মানুষজন শহরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারলো। কয়েক সপ্তাহ পরে রাহুল সেখানে আবারো ফিরে যায় এবং দেখতে পায় সেই মূর্তিটির কথা অনুযায়ী সেখানে প্রাচীন শহরটি পুনরায় নির্মিতি হয়ে গিয়েছে এবং শহরটির গেটে লেখা ছিল "অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের যোগসূত্র"।
যে শহরটি এতদিন পৃথিবীর ইতিহাস থেকে হারিয়ে গিয়েছিলো, তা যেন পুনরায় আরেকবার তার অস্তিত্ব নিয়ে জেগে উঠেছে। এটি এখন আর শুধু রহস্যের বেড়াজালে আটকে নেই, এখন একটা ইতিহাসের নতুন অধ্যায় তৈরি হলো। সেই সাথে রাহুল এবং তার বন্ধুরাও এই ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে গেলো-একটি মৃত বা হারিয়ে যাওয়া শহরের বাঁচানোর গল্পের মধ্যে দিয়ে।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গল্পের শেষ অংশটিও অনেক সুন্দর হয়েছে দাদা। অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যতের যোগ সূত্র- কথাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই মেল বন্ধনটা আমাদের পরিবার,সমাজ ও সংস্কৃতির জন্য খুব জরুরি। গল্প শুধু গল্প নয় ম্যাসেজও। প্রাচীন শহর শিরোনামে গল্পটি শুধু গল্প নয়- অনেককিছু!! গল্পটি ভালো লেগেছে আমার। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দাদা আজ আপনি অনেক সুন্দর করে প্রাচীন শহর গল্পের শেষ পর্ব শেয়ার করেছেন। আমার কাছে এই পর্বটা অনেক ভালো লেগেছে। রাহুল আর তার বন্ধুরা শেষ পর্যন্ত পেরেছে এই শহরটাকে পুনরায় পৃথিবীর বুকে নিয়ে আসতে। শহরটি এখন অনেক সুন্দর ভাবে পৃথিবীর বুকে বেঁচে রয়েছে।
দাদা আমার কাছে এই গল্পের প্রথম পর্ব টা পড়তে অনেক ভালো লেগেছিল। আর আজকের দ্বিতীয় পর্বটা পড়ে তো আরো বেশি ভালো লাগলো। সবশেষে রাহুল নিজের কাজে সফল হয়েছে দেখে খুব ভালো লাগলো। ওই শহরটাকে পৃথিবীর বুকে নিয়ে আসতে সে এবং তার বন্ধুরা সফল হয়েছে। তারা অনেক ভালোভাবে তাদের কাজগুলো সম্পূর্ণ করেছে। অনেক ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর করে গল্পটার শেষ পর্ব শেয়ার করার জন্য।
রাহুল এবং তার দুই বন্ধুর জন্যই শেষ পর্যন্ত হারিয়ে যাওয়া শহরটা পৃথিবীর বুকে জাগ্রত হলো। সত্যিই তারা বেশ সাহসী। বিশেষ করে রাহুল সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। বেশ ভালো লাগলো দুই পর্বের এই গল্পটা পড়ে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
গল্পটার শেষ বেশ ভালো হলো। রাহুলের প্রচেষ্টায় সেই হারিয়ে যাওয়া শহর সম্পর্কে মানুষ আবার জানতে পারল। গল্পটা বেশ ভালো লাগল দাদা। দারুণ লিখেছেন এককথায়। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।