(হাদিস অনুযায়ী) মানুষের সাথে কথা বলার দিকনির্দেশনা পর্ব ২
৫। কথায় কথায় কসম খাওয়া থেকে বেঁচে থাকুন।
এই মর্মে সূরা আল-বাকারাতে আল্লাহ্ (সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা) বলেছেন :
“আর নিজেদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না…।” (আল-বাকারা : ২২৪)
৬। নিজের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার পরিসীমার মধ্যে থেকে কথা বলুন।
যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, সে বিষয়য়ে মত প্রকাশ করবেন না।
সূরা আল-ইসরা-তে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন :
“যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সে বিষয়ের পিছে পোড়ো না।” (আল-ইস্রা : ৩৬)
৭। তদন্ত করে নিশ্চিত না হয়ে শুধু শোনা কথা নিয়ে মানুষের সাথে আলাপ করা যাবে না।
কারন আপনি এমন কিছু শুনতে পারেন যে সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যা কিংবা সন্দেহজনক হতে পারে। যা শুনবেন তা-ই প্রচার করলে আপনিও পাপের অংশীদার হবেন।
একটি বিশুদ্ধ হাদীস অনুযায়ী, রাসূল (সা) সতর্ক করে বলেছেন :
“একজন মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য একটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শোনে তা-ই প্রচার করে বেড়ায়।” [সহীহ মুসলিম ১/৮, হাদীস ৫; সুনান আবু দাউদ ২/৬৮১, হাদীস ৪৯৮২]
৮। খেয়াল রাখবেন, মানুষের সাথে আপনার কথাবার্তা এবং আলাপ আলোচনার উদ্দেশ্য যেন হয় সত্যে উপনীত হওয়া।
সত্য আপনার মাধ্যমে উন্মোচিত হোক আর অন্যকারও মাধ্যমেই উন্মোচিত হোক — কার দ্বারা উন্মোচিত হলো সেটা বড় করে দেখবেন না। এক্ষেত্রে সত্যে উপনীত হওয়াটাই বড় কথা।
৯। অন্যকে ছোটো করা এবং অন্যের উপর জয়লাভ করার উদ্দেশ্যে অনর্থক তর্কে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকুন।
অকারনে তর্কে লিপ্ত হওয়া বিপথগামীতার লক্ষন। এ থেকে আমরা আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
এই মর্মে তিরমিযি কর্তৃক সংকলিত একটি হাদীসে রাসূল (সা) বলেছেন,
“আল্লাহ্ কাউকে পথ দেখালে সে বিপথগামী হয় না কিন্তু তারা বিনা কারনে তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়।”
আপনি নিজে সঠিক হলেও বিতর্ক পরিহার করুন।
আবু দাঊদের একটি হাদীসে রাসূল (সা) বলেছেন,
“সঠিক হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি বিনা কারনে তর্ক করা বন্ধ করে আমি জান্নাতের সমীপে তার জন্য একটি ঘরের নিশ্চয়তা দিচ্ছি।” [আবূ দাঊদ; অধ্যায় : ৪১, হাদীস : ৪৭৮২]