বাংলা ফুড আপি জীবন গল্প

in #lifehistory7 months ago

ফুডা আপ্পি নামে পরিচিত ফাবিহা হাসান মণিষা আপুকে নিয়ে আরজে কিবরিয়া ভাইয়ের উপস্থাপনায় একমাসের ব্যাবধানে পরপর দুইটা শো দেখলাম। প্রথম শো এর শিরোনাম ছিল "আমি কত বোকা ছিলাম"। মেয়েটার পুরো বক্তব্যের সারমর্ম ছিল সে অনেক বোকা, এবং এতটাই বোকা যে ভাজা মাছটা পর্যন্ত উল্টে খেতে জানেন না। আর তার প্রাক্তন স্বামী রুহুল আমিন এতটাই চালাক, যে তাকে শুধু ঠকায়, উচ্চকাবিন দেয় না, ২০১৩ সালে মাত্র একলাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করে। আর এতটাই অত্যাচারী যে তাকে প্রচুর নির্যাতন করে, যৌতুক চায়, রবীন্দ্র সরোবরে নাকি একদিন লাথি মারে, অনেক মানুষ দেখে কিন্তু কিছুই বলে না, স্বামীর যৌতুকের দাবি পূরণ করতে গিয়ে নিজের একটা কিডনি পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে চায়, পরে কি যেন ভেবে আর কিডনি বিক্রি করে না। ডিভোর্স হয়। নতুন একটা ছেলেকে বিয়ে করে। এবং বিয়ের আগে নিজের অতীত অর্থাৎ আগের সংসারের কথা জানায়। জেনেও ছেলে রাজি হয়। এখন সেখানে সুখের সংসার করছে ইত্যাদি ইত্যাদি। স্বীকার করতে দ্বিধা নাই যে ফুডাপ্পি ক্যামেরার সামনে অনেক ভালো পারফর্ম করেছে। এতটাই ভালো পারফর্ম যা দেখে পুরো দেশবাসী কেঁদেছে। আমি নিজেও আমার চোঁখের পানি ধরে রাখতে পারি নাই।

এখানে বলে রাখা উচিত যে, ফুডাপ্পি মণিষা সত্যি বলছে নাকি বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা গল্প বলছে সেটা যাচাই না করেই প্রচার করা হয়, এমনকি মণিষার বক্তব্য ক্রসচেকের জন্য তার প্রাক্তন স্বামীকে ফোনে যুক্ত করারও প্রয়োজন মনে করেন নাই আরজে কিবরিয়া ভাই। নারীদের কথায় অধিকাংশ মানুষই সহজে দ্রবীভূত হয়ে যায়, এবং বিশ্বাস করে। ওদের এক ফোঁটা চোঁখের জল দেখা মাত্রই পৃথিবীর কোন মানুষেরই আর বিবেক কাজ করে না, শুধু আবেগ কাজ করে। উপস্থাপক আরজে কিবরিয়া ভাইয়ের ক্ষেত্রেও হয়তো সেটাই হয়েছে। শুধু আবেগ কাজ করছে, বিবেক কাজ করে নাই।

কিন্তু সমস্যা হল, যার নামে এত নিন্দা আর বিদ্বেষ ছড়ানো হলো তিনি অর্থাৎ ফুডাপ্পি মণিষার প্রথম স্বামী রুহুল আমিন ভাই তার নামে এই "মিথ্যাচার" মেনে নিতে পারেন না। তিনি আরজে কিবরিয়া ভাইকে ফোন করে বলেন, "ভাই, আপনার প্লাটফর্মকে ব্যাবহার করে আমার প্রাক্তন স্ত্রী মণিষা আমার নামে মিথ্যাচার করছে, যা আমার এবং আমার ৭ বছরের সন্তানের উপরে প্রভাব ফেলছে। আমি এর জবাব দিতে চাই। ডিভোর্সের ৭ বছর হয়েছে, কিন্তু শুধুমাত্র আমার সন্তানের মঙ্গলের কথা ভেবে আমি এখন পর্যন্ত বিয়ে করিনাই। আপনার শো-এর মাধ্যমে আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যেটা আমি সহ্য করতে পারছি না। সত্যিটা তুলে ধরার জন্য আমাকে আপনার শো-তে এসে কথা বলার একটা সুযোগ দেওয়া হোক। কিবরিয়া ভাই তাকে সুযোগ দেন ঠিকই, কিন্তু যেহেতু রুহুল আমিন নারী নন, তিনি একজন পুরুষ, তাই এবার আর কিবরিয়া ভাইয়ের আবেগ কাজ করে না, শুধু বিবেক কাজ করে। তিনি বলেন, "আপনাকে কথা বলতে দেওয়া হবে, তবে আপনি মিথ্যা বলছেন কিনা সেটা যাচাই করার জন্য আপনার প্রাক্তন স্ত্রী মণিষাও সাথে থাকবে"। কারণ এবার তো পুরুষ মানুষ, যদি মিথ্যা কথা বলে, এরা নারীদের মত "সত্যবাদী" তো আর না। রুহুল আমিন ভাই বললেন আমার তাতে কোন আপত্তি নাই।

ফুডাপ্পি মণিষা এবং রুহুল আমিন ভাই দুইজনকে যখন একই শো-তে আনা হলো তখন দেখা গেল আগের শো-তে ফুডাপ্পি মণিষা যেসব গল্প বলেছিল তার অধিকাংশই বানানো। এবং এর প্রতিটা ডকুমেন্টস রুহুল আমিন ভাই সাথে করে নিয়ে এসেছেন।

১. যৌতুক আসলে রুহুল আমিন ভাই চাননি, বরং উল্টো মণিষার পরিবারই রুহুল আমিনের কাছে যৌতুক চেয়েছে। বলেছে, মণিষাদের তিনতলা বাড়ির উপরে চতুর্থ তালাটা কমপ্লিট করে দিতে হবে রুহুল আমিনকে। রুহুল আমিনের তখন মাসিক বেতন মাত্র ২০ হাজার টাকা। তার বাবাও রিটায়ার্ড করেছেন। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। তার বাবার শেষ সম্বল পেনশনের টাকা দিয়ে মণিষাদের তিনতলা বাড়ির চতুর্থ তলাটা কমপ্লিট করে দেওয়া হয়। রুহুল আমিনের বাবা বিজিবিতে চাকুরী করতেন। রিটায়ার্ডের পর তিনি তার শেষ সম্বলটুকু এখানে খরচ করতে রাজি ছিলেন না। রুহুল আমিন সহ সবাই মিলে বহু কষ্টে তাকে রাজি করান।
তবে শর্ত ছিল শুধুমাত্র চতুর্থ তলার ভাড়ার টাকাটা রুহুল আমিনের পরিবার ভোগ করবে। কিন্তু কাজ কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পর মণিষারা আর ভাড়ার টাকা দেয় না, ভাড়া তুলে তুলে নিজেরা ভোগ করে। তখন প্রস্তাব দেওয়া হয়, চতুর্থ তলাটা কমপ্লিট করতে খরচ হওয়া ১১ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে, সেটাও ওরা দেয় না। তখন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র চতুর্থ ফ্লোরটা রুহুল আমিন এবং মণিষা উভয়ের নামে যৌথভাবে দলিল করে দেওয়ার। সেই প্রস্তাবেও রাজি হয়নি মণিষার পরিবার।
অথচ মণিষারা ছিল মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার। মণিষার বাবা ব্যাবসায়ী, এবং ঢাকা শহরের একজন বাড়িওয়ালা। মণিষার বড় ভাই জাপানে থাকে।

২. ফুডাপ্পি মণিষা তার স্বামী রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা নারী নির্যাতন এবং যৌতুকের মামলা দেয়, যার ফলে রুহুল আমিনকে জেল খাটতে হয়। অস্থায়ীভাবে জামিনে একবার বের হয়ে আসার পর, তাকে আবারও জেলে ঢুকানোর জন্য মিথ্যা নারী নির্যাতনের অভিযোগে থানায় জিডি করে ফুডাপ্পি মণিষা। কিন্তু প্রথম শো-তে মণিষা বলেছে সে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি। দিয়েছে মণিষার বাবা-মা। মামলার ব্যাপারে সে কিছুই জানত না। অথচ রুহুল আমিন যখন দ্বিতীয় শো-তে মামলা এবং জিডির সবগুলো কপি দেখায়, যেখানে প্রত্যেকটাতেই ফুডাপ্পি মণিষার সাইন আছে, তখন মণিষা এটা স্বীকার করে।

৩. ফুডাপ্পি মণিষা এবং তার ছেলেবন্ধু আকিলের গোপন চ্যাটিং একবার তার স্বামী রুহুল আমিন দেখে ফেলে। যেখানে রুহুল আমিনকে কিভাবে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসানো হবে তার পুরো পরিকল্পনা নিয়ে মণিষা তার ছেলেবন্ধু আকিলের সাথে পরামর্শ করে। তখন রুহুল আমিন এই বিপদ থেকে বাঁচার জন্য আইনজীবির সাথে পরামর্শ করেন। ওই এলাকার কাউন্সিলরের সাথেও পরামর্শ করেন। এবং ডিভোর্সর কথা ভাবতে শুরু করেন। কারণ ডিভোর্সের পরে মিথ্যা মামলা দিলে, কিছুদিনের জন্য হাজতে আটকানো গেলেও শেষ পর্যন্ত সেটা টেকার সম্ভাবনা কম। জামিন নেওয়া সম্ভব। কিন্তু ডিভোর্সের আগে মামলা দিয়ে ফেললে, সহজে জামিন হয় না, জেল প্রায় নিশ্চিত।
যাই হোক, ডিভোর্স হয়, এবং মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলাও হয়। স্বামী রুহুল আমিন গ্রেফতার হন, এবং জেলও খাটেন, তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর জামিন হয়।
প্রয়োজন হলে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার অধিকার ইসলাম দেয়, এবং দেশের আইনও দেয়। কিন্তু শো-তে কিবরিয়া ভাই বারবার বলতেছিল ডিভোর্স দেওয়াটা নাকি তার উচিত হয় নাই। যখন একজন স্বামী জেনে যায় যে তাকে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর পরিকল্পনা হচ্ছে, তখন বাঁচার জন্য একজন পুরুষের ডিভোর্স ছাড়া আর কী অপশন খোলা থাকে? ডিভোর্স দিয়ে সে শুধু তাঁর স্ত্রীকে হারাইলো, কিন্তু ডিভোর্স না দিলে সে আজকে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলায় জেলে থাকত, তখন সে বউ, বাচ্চা, বাবা, মা, ভাই, বোন, চাকরি-বাকরি সবই হারাইতো। আর যেই স্ত্রী সংসারে থেকে শ্বশুর শাশুড়ীর সাথে বেয়াদবি করছে, শুধু তাই না, গোপনে গোপনে তার ছেলেবন্ধুর সাথে পরামর্শ করছে যে স্বামীকে কিভাবে জেলের ভাত খাওয়ানো যায়, সেই স্ত্রীকে সংসারে রাখলেই বা এমন কী লাভ হত?

৪. ফুডাপ্পি মণিষা তার দ্বিতীয় স্বামীর সাথেও প্রতারণা করে। মণিষা ডিভোর্সী হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে কুমারী পরিচয় দিয়ে পুনরায় বিয়ে করে। আমার মতে এটা অত্যন্ত অনৈতিক একটা কাজ। আর বাংলাদেশের দন্ডবিধি ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী এটা অপরাধ, যার শাস্তি ১০ বছরের জেল। তবে মণিষার দ্বিতীয় স্বামী অনেক দয়ালু মানুষ, তাই স্ত্রীর প্রতারণার ভিক্টিম হয়েও আইনের আশ্রয় নেন নাই।
রুহুল আমিন শো-তে সেই কাবিননামার কপিও দেখান। সুতরাং ফুডাপ্পির প্রথম শো-এর বক্তব্য মিথ্যা। ফুডাপ্পি বলেছিল সে নাকি তার দ্বিতীয় স্বামীকে তার সকল অতীত জানিয়েই তাকে বিয়ে করেছে।

৫. ফুডাপ্পি মণিষা প্রথম শো-তে বলেছিল যে রবীন্দ্র সরোবরে নাকি অনেক মানুষের সামনে তার স্বামী তাকে লাথি মেরেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় শো-তে যখন কিবরিয়া ভাই দুজনকেই জিজ্ঞেস করে যে আপনাদের দু'জনের মধ্যে কখনো মারামারি বা হাতাহাতি হয়েছে কিনা, মণিষা বলেছে যে হয় নাই।
এখন কোনটা সত্যি? আরেকটা প্রশ্ন হচ্ছে পাবলিক প্লেসে কেউ যদি কোন মহিলাকে লাথি মারে, পাবলিক কি তাকে ছেড়ে দেবে? রুহুল আমিনের দাবি এরকম কোন ঘটনা ঘটে নাই। কেউই প্রমাণ দিতে পারে নাই। তবে ফুডাপ্পি মণিষার অভিযোগ যথেষ্ট দুর্বল।

৬. ফুডাপ্পি মণিষা প্রথমদিন বলেছিল যে তার বাবা নাকি মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিল। কিন্তু রুহুল আমিন বলেন যে এটা সে মিথ্যা বলেছে। এবং মণিষা নিজেও দ্বিতীয় শো-তে এসে স্বীকার করে যে প্রথম শো-তে সে মিথ্যা বলেছিল। ফুডাপ্পি মণিষা এরকম আরও অসংখ্য মিথ্যা কথা তার প্রথম শো-তে বলেছিল, যেগুলো লিখতে গেলে লেখাটা অনেক বড় হয়ে যাবে।

৭. রুহুল আমিন সন্তানের কথা ভেবে এখনো বিয়ে করেননি। কিন্তু মণিষা ডিভোর্সের পর দ্বিতীয় বিয়ে করে ফেলে দ্বিতীয় স্বামীর বাচ্চাও গর্ভে ধারণ করে। এই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বাচ্চার কাস্টডি আদালত বাচ্চার বাবাকেই দেয়।

বাচ্চার মা কোন খরচ বহন করে না। সম্পূর্ণ ভরণপোষণের দায়িত্ব এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র বাচ্চার বাবাই বহন করে। তবুও বাচ্চার বাবা বাচ্চাকে নিয়মিত তার মায়ের সাথে দেখা করতে দেয়, কোন আপত্তি করে না। একদিন বাচ্চা তার মায়ের সাথে দেখা করে ফিরে এসে তাঁর বাবাকে বলছে "বাবা, মায়ের বাসায় আরেকটা বাবা আছে, মা বলেছে উনিই নাকি এখন থেকে আমার বাবা। ওই বাবাটা মাকে কোলে নিয়েছে। মণিষা তার বাচ্চাকে অন্য আরেকজন মানুষকে বাবা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, এবং এখন থেকে নিজের জন্ম দেওয়া সন্তান অন্য আরেকজনকে বাবা ডাকবে এটা রুহুল আমিন কোনভাবেই মেনে নিতে পারেন না। মণিষার আসল মতলবটা তাহলে কী সেটা নিয়ে সন্দেহও তৈরী হয়।

এরই মধ্যে একবার বাচ্চাকে অপহরণের চেষ্টাও করা হয়, পরিকল্পনা হচ্ছে ফুডাপ্পি মণিষা তার জাপানে থাকা ভাইয়ের সহায়তায় বাচ্চাকে নিয়ে জাপানে চলে যাবে। বাচ্চাকে আর কখনো ফেরত দেবে না, বাচ্চাকে তার বাবার সাথে দেখাও করতে দেবে না। এলাকার গুন্ডাপান্ডা দিয়ে বাচ্চাকে তার দাদীর কোল থেকে কেড়ে নিয়ে অপহরণ করে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক ঝামেলার পর বাচ্চাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কিন্তু প্রাক্তন স্ত্রী মণিষার এই বিশ্বাসঘাতকতা এবং অপহরণের ঘটনার পর থেকে বাচ্চার বাবা রুহুল আমিন আর মণিষাকে আগের মত বিশ্বাস করতে পারে না। তাই মণিষাকে বলে এখন থেকে বাচ্চার সাথে দেখা করতে চাইলে আমাদের বাড়িতে এসে দেখা করতে হবে। কিন্তু কয়েকবার বাড়িতে দেখা করার পর, বাচ্চাকে আবারও বাহিরে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু বাচ্চার বাবা থানায় ইনফর্ম করার শর্তে বাচ্চাকে বাহিরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু ফুডাপ্পি মণিষা এই শর্ত মানতে রাজি না। এখন সে দুই বছর ধরে বাচ্চার সাথে দেখাও করে না, ফোন করেও বাচ্চার কোন খোঁজখবর নেয় না।

প্রথম শো-তে ফুডাপ্পি মণিষা বলেছিল বাচ্চাকে দেখতে দেওয়া হয় না। অথচ দ্বিতীয় শো-তে বাচ্চার সাথে মণিষা বসে গল্প করছে এরকম অনেকগুলো ছবি রুহুল আমিন সাথে করে নিয়ে এসেছেন। পরে মণিষাও স্বীকার করে যে দেখা করতে দেওয়া হয়, কিন্তু পাহাড়া দিয়ে, যাতে আগেরবারের মত বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে না পারে, বাচ্চাকে তাঁর বাবার কাছ থেকে আলাদা করতে না পারে। তাহলে প্রথমদিন মণিষা ওই মিথ্যা কথাটা কেন বলল?

এইবার দেখা যাক কার কতটা লাভ এবং কার কতটা ক্ষতি হল।

ফুডাপ্পি মণিষা এবং তার পরিবার মিলে রুহুল আমিনের বাবার পেনশনের ১১ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করল। এই এগারো লক্ষ টাকায় মণিষাদের বাড়ির চতুর্থ তলাটা ফ্রীতেই কমপ্লিট হয়ে গেল। এখন সেখান থেকে মাসে মাসে ভাড়া পাচ্ছে মণিষারা। বিনা ইনভেস্টমেন্টে বিজনেস। মণিষা নতুন একটা স্বামী পেল, নতুন সংসার হল, বাচ্চাকাচ্চা হল। বিয়ের সময় আলোচনা সাপেক্ষে কাবিন নির্ধারিত হয়েছিল ১ লক্ষ টাকা। যেখানে ছেলের মাসিক বেতন মাত্র ২০ হাজার টাকা। যা কাবিননামা সুস্পষ্টভাবে লেখা ছিল। কিন্তু তবুও পরবর্তীতে কনেপক্ষ থেকে (মূলত মণীষার মায়ের পরামর্শে) কাবিনের নামে ৫ লক্ষ টাকা আদায়ের একটা চেষ্টা করা হয়। স্বামীকে মিথ্যা যৌতুক এবং নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসিয়ে জেলের ভাত খাওয়ানোর যে খায়েশ ছিল সেই খায়েশও পূরণ হয় মণিষার। আবার এইসব নিয়ে কিছুটা সত্য কিছুটা মিথ্যা মিশিয়ে গল্প বানিয়ে ক্যামেরার সামনে এসে কান্নাকাটি করে সেগুলো প্রচার করে মানুষের সহানুভূতিও আদায় করে। এগুলো বিক্রি প্রচুর ভিউজ হয়, প্রচুর ফ্যান ফলোয়ারও হয়। ফুডাপ্পির একটা খায়েশ শুধু পূরণ হয় নাই, সেটা হচ্ছে বাচ্চাটাকে কোনভাবে তার বাবার কাছে থেকে সরিয়ে একবার জাপান নিয়ে যাওয়া। যাতে বাচ্চাটাকে তাঁর বাবার কাছ থেকে চিরতরে আলাদা করে ফেলা যায়।

অন্যদিকে বাচ্চাটা আর তার বাবা রুহুল আমিনের কী কী ক্ষতি হল দেখেন। রুহুল আমিনের বাবার সারাজীবনের চাকরি করে জমানো শেষ সম্বল পেনশনের ১১ লক্ষ টাকা হারাতে হল। রুহুল আমিনের নিজেকে জেল খাটতে হল তার স্ত্রীর কারণে। ডিভোর্স হল। রুহুল আমিন তার স্ত্রীকে হারালো, তাঁর সন্তান হারালো মাকে। ৭ বছর ধরে রুহুল আমিনকে সিঙ্গেল অবস্থায় জীবনযাপন করতে হচ্ছে শুধুমাত্র তাঁর সন্তানের মঙ্গলের কথা ভেবে।
©️ লাভলু

FB_IMG_1701730159537.jpg

Screenshot_20231205_022146.jpg