#বা‌জি

in #love6 years ago

#বা‌জি

#৩য়_পর্বঃ-
•••••••••আয়াতঃ কে‌নো? আমি কি জান‌তে পা‌রি না?
তানিয়া: অবশ্যই পা‌রেন! কিন্তু আমার ম‌নে হয়না আপনার অজানা?

আয়াতঃ কারনটা হয়‌তো জা‌নি? কিন্তু আপ‌নি কেন মে‌নে নি‌লেন সেটা জা‌নি না?

তানিয়া: মে‌নে নিলাম ! (একটা দীর্ঘ‌ নিঃশ্বাস) মে‌য়েরা বাবা মা‌য়ের চো‌খের জ‌লের কা‌ছে যে বড়ই অসহায়।

আয়াতঃ মা‌নে?

তানিয়া: আপ‌নি এত মা‌নে মা‌নে ক‌রেন কে‌নো? বললাম না কিছু কথা অজানা থাকাই ভা‌লো। আচ্ছা আপ‌নি কেন হুট ক‌রে আমা‌কে বি‌য়ে কর‌তে রা‌জি হ‌লেন?

আয়াতঃ আপনার কা‌ছে য‌দি কিছু কথা অজানা রাখ‌তে ভা‌লো লা‌গে তাহ‌লে আমার কা‌ছেও কিছু কথা অজানা রাখ‌তে বেশ ভা‌লো লা‌গে।

তানিয়া: ওহ আমার কথা আমা‌কেই ফি‌রি‌য়ে দি‌লেন।

আয়াতঃ হয়‌তো বা? আচ্ছা তানিয়া তু‌মি কি স‌ত্যিই সিয়াম‌কে ভা‌লোবাস‌তে?

তনয়াঃ কে‌নো?

আয়াতঃ না মা‌নে অনেক দিন ধ‌রে তোমা‌কে চি‌নি জা‌নি। কিন্তু কখ‌নো তোমার কোন কথায় কা‌জে ম‌নে হয়‌নি তু‌মি সিয়াম‌কে ভা‌লোবা‌সো ? সবসময়ই ম‌নে হ‌য়েছে তু‌মি হয়‌তো ওকে বন্ধু ভা‌বো নয়‌তো পছন্দ ক‌রো। তাই ম‌নে হ‌লো তোমার ম‌নে কি সিয়াম‌কে নি‌য়ে কোন ফি‌লিংস তৈরী হ‌য়ে‌ছি‌লো? না‌কি হয়‌নি? না‌কি এখ‌নো সেটা আছে?

তানিয়া: (কিছুক্ষন ভে‌বে) আমি সিয়াম‌কে খুব পছন্দ করতাম। তা‌কে আমার ভিষন ভা‌লো লাগ‌তো। তার চলা‌ফেরা কথা বলার ধরন এসব জি‌নিস আমার খুব বে‌শি ভা‌লো লাগ‌তো। কিন্তু ভা‌লো লাগাটা কখ‌নো ভা‌লোবাসায় রূপান্তরীত হয়েছি‌লো কিনা? সেটা আমি আজও বুঝ‌তে পা‌রি‌নি? কিন্তু তবুও কেমন যে‌নো লাগ‌ছে? খুব অসহ্য একটা অনুভু‌তি হ‌চ্ছে।

আয়াতঃ হুমম বুঝলাম। সময় নেও ভা‌বো। সব ঠিক হ‌য়ে যা‌বে। হয়‌তো জে‌নে যা‌বে তোমার মন কি চায়?

তানিয়া: হয়‌তোবা? কে জা‌নে? আমি কি জানতাম আপনার সা‌থে আমার বি‌য়ে হ‌বে? তবুও হ‌লোতো ? জন্ম, মৃত্যু, বি‌য়ে তিনটা জি‌নিস না‌কি উপরওয়ালার সৃ‌ষ্টি। সেখা‌নে মানু‌ষের ম‌র্জি চ‌লে না। জা‌নি না তি‌নি আমা‌দের নি‌য়ে কি কর‌তে চাই‌ছে? হয়‌তো প্রকৃ‌তি নতুন কোন গল্প রচনা কর‌তে চাই‌ছে। আর সে গ‌ল্পে আমা‌দের তিন জন‌কে বেঁছে নি‌য়ে‌ছে। আমরা তো প্রকৃ‌তির সা‌থে পে‌রে উঠ‌বো না। সেটা সম্ভব না। তাই প্রকৃ‌তির বানা‌নো নিয়মটাই আমা‌দের মে‌নে চল‌তে হ‌বে! আচ্ছা আপ‌নি আমার একটা প্র‌শ্নের উত্তর দিন?

আয়াতঃ হুমম ব‌লো?

তানিয়া: অনেক দিন আগে আপ‌নি আমায় এক‌দিন কথায় কথায় ব‌লে‌ছি‌লেন আপ‌নি একটা মে‌য়ে‌কে খুব ভা‌লোবা‌সেন এবং বি‌য়ে কর‌লে তাকেই কর‌বেন!

আয়াতঃ হুমমম তো?

তানিয়া: তাহ‌লে তা‌কে ছে‌ড়ে আমা‌কে বি‌য়ে করার মা‌নে কি? আর বি‌য়ে কর‌লেন তো কর‌লেন প্রথম রা‌তেই ভা‌লোবা‌সি কথাটা বলে দি‌লেন? একবারও কি সেই মে‌য়েটার কথা ম‌নে হয়‌নি?

আয়াত কিছুক্ষন নীরব ব‌সে রই‌লো। তারপর বল‌লো?

আয়াতঃ দে‌খো তানিয়া তোমা‌কে আগেই ব‌লেছি। ঘু‌রি‌য়ে পে‌চি‌য়ে কথা বলা আমার অভ্যাস না। আমি সব কথা সবসময় সোজাসু‌জি ব‌লি।

হ্যা আমি একজন‌কে ভা‌লোবাসতাম! নাহ ঠিক বাসতাম বল‌লে ভুল হ‌বে এখ‌নো বা‌সি আর ভ‌বিষ্য‌তেও বাস‌বো।

তানিয়া: তাহ‌লে আমা‌কে ভা‌লোবা‌সি কথাটা বল‌লেন কেন?

আয়াতঃ কারন আমি তোমা‌কে ভা‌লোবা‌সি!

তানিয়া: আপনার কথার আগা মাথা আমি কিছু বুঝ‌তে পার‌ছি না? ক্লি‌য়ার ক‌রে ব‌লেন?

আয়াতঃ তানিয়া তু‌মি কি এখ‌নো বুঝ‌তে পা‌রো‌নি আমি কা‌কে ভা‌লোবা‌সি?

তানিয়া: কিছুক্ষন চুপ থে‌কে মা‌নে? আপনি?

আয়াতঃ হ্যা তানিয়া আমি সবসময় শুধু তোমা‌কেই ভা‌লোবে‌সে‌ছি। হয়‌তো কখ‌নো বলা হয়‌নি। আর যখন বল‌তে চে‌য়ে‌ছিলাম তখন অনেক দে‌রি হয়ে গে‌ছি‌লো। কিন্তু কথায় আছে না আল্লাহ চাই‌লে কি না হয়? তাই হয়‌তো তোমা‌কে পে‌য়ে গেলাম।

দুজ‌নেই নীরব । কারন কথা বলার মত কোন কারন খুজে পা‌চ্ছে না। তানিয়া ভাব‌ছে আয়াতকে এত দিন ধ‌রে চি‌নি অথচ তার ম‌নের কথাটা কখ‌নো টের পেলাম না। আর আয়াত ভাব‌ছে কি ক‌রে টের পা‌বে তোমার ম‌নের উপর যে সিয়া‌মের কথার জাদু বিছা‌নো ছি‌লো।

দূরের মসজিদ থে‌কে আযা‌নের ধ্ব‌নি ভে‌শে আস‌ছে। মোয়া‌জ্জে‌নের মধুর ক‌ন্ঠে ভে‌শে আস‌ছে আযা‌নের সুর।

তানিয়া: মাই গড। সকাল হ‌য়ে গে‌ছে? আর আজ রাতটা কখন পে‌রি‌য়ে গে‌লো তা তো টেরই পেলাম না। আয়াত স‌ত্যিই আপনার সা‌থে গল্প করে তো ভিষন মজা? তামিম (তানিয়ার ছোট ভাই) ঠিক বল‌ছি‌লো।

আয়াতঃ আচ্ছা! চ‌লো নামাজ পড়‌বে। আমিও নামাজ প‌ড়ে আসি।

তানিয়া: ঠিক আছে।

তানিয়া ওযু ক‌রে নামাজ প‌ড়ে নি‌লো। তারপর রু‌মের বাইরে বে‌রি‌য়ে রান্না ঘ‌রের দি‌কে যা‌চ্ছে। এ বা‌ড়ি‌তে তানিয়া আগেও ক‌য়েক বার এসে‌ছি‌লো। কিন্তু তখন বা‌ড়িটা এত সুন্দর ক‌রে সাজা‌নো ছি‌লো না। বা‌ড়ির সব রুম মোটামু‌টি চে‌নে। কিন্তু একা বের হ‌তে সং‌কোচ বোধ কর‌ছি‌লো তাই আয়াত‌কে ব‌লে‌ছি‌লো রান্না ঘর দে‌খি‌য়ে দি‌তে চা কর‌বে।

রান্না ঘ‌রে ডু‌কে তানিয়া চা বানা‌লো। সু‌জি আর বাদা‌মের হালুয়া বানা‌তে নি‌বে তখন শ্বাশু‌রির রুম থে‌কে কোরআনের মধুর ধ্ব‌নি সুর ভে‌শে আস‌ছে। তানিয়া চুলাটা নি‌ভি‌য়ে চা‌য়ের ট্রে নি‌য়ে শ্বাশু‌রির রু‌মে গে‌লো। শ্বশুর ব‌সে ব‌সে কোরআন তেলাওয়াত শুন‌ছে। তানিয়া রু‌মে ডু‌কে চা‌য়ের ট্রে রে‌খে শ্বাশু‌রির কা‌ছে গি‌য়ে ব‌সলো। কিছুক্ষন পর তি‌নি তানিয়া‌কে দে‌খে আয়াত শেষ ক‌রে কোরআন বন্ধ ক‌রে বল‌লেন-----

আয়া‌তের মাঃ কি রে এত জল‌দি ঘুম ভাঙ‌লো?

তানিয়া: রা‌গি চো‌খে তা‌কি‌য়ে ফু‌পি তু‌মি জা‌নো না আমি ফজ‌রের নামাজ প‌ড়ে ঘুমাই না।

আয়া‌তের মাঃ ভুল হ‌য়ে গে‌ছে মা জননী। এবার ব‌লো কি কাজ?

তানিয়া: কি কাজ মা‌নে? তোমার ছে‌লের রু‌মে একটা কোরআন শরীফ নাই। সকাল বেলা একটু তেলাওয়াত কর‌বো তাও পারলাম না। কেন তোমার ছে‌লে কি কোরআন তেলাওয়াত ক‌রে না?

আয়া‌তের মাঃ ক‌রে ত‌বে রোজ না। তুই বরং আমারটা নি‌য়ে নিস।

তানিয়া: ঠিক আছে। এখন চা খা‌বে চলো।

আয়া‌তের মাঃ চা ক‌রে‌ছিস?

তানিয়া: হুমমম। হালুয়া কর‌তে নি‌য়ে ছিলাম কিন্তু তোমার তেলাওয়‌াতের মধুর সুর শু‌নে থাক‌তে পারলাম না।

আয়া‌তের বাবা হালুয়ার কথা শু‌নে বল‌লো

আয়া‌তের বাবাঃ হালুয়া! তানিয়া আমায় একটু দি‌বি মা? তোর ফু‌পি আমা‌কে দেয় না।

আয়া‌তের মাঃ কি বললা তু‌মি? একটুও পাবে না। নি‌জের শরীরের খেয়াল আছে। আর তানিয়া এখন থে‌কে ফুপা ফু‌পি ডাকা বন্ধ বাবা মা ব‌লে ডাক‌বি।

তানিয়া: ঠিক আছে! বড় মা আর বড় আব্বু ব‌লে ডাক‌বো।

আয়া‌তের মাঃ ঠিক আছে। এবার চল রান্না ঘ‌রে।

তানিয়া আয়া‌তের বাবার কা‌ছে এসে বল‌লো

তানিয়া: বড় আব্বু চিন্তা কর‌বেন না। হালুয়া রান্না করা হ‌য়ে গে‌লে সবার আগে আপ‌নি পাবেন। আমি চ‌ু‌পি চু‌পি দিয়ে যা‌বো।

আয়া‌তের বাবাঃ ল‌ক্ষি মা আমার।

তানিয়া আর ওর শ্বাশুরি আর আয়া‌তের বোন তিন জন মি‌লে অনেক রকম নাস্তা তৈরী কর‌লো। ‌কিন্তু আয়াত এখ‌নো আস‌ছে না।

তানিয়া: আন্নি আপু তোমার ভাই কোথায়?

আ‌ন্নিঃ সে কি‌রে? এক রা‌তেই এত ভা‌লোবাসা?

তানিয়া: হ‌ুমমম। তোমার গো‌বেট মার্কা গামবাট হনুমান ভাইটা‌কে ভা‌লোবাস‌তে আমার ব‌য়েই গে‌ছে। আমি তো এম‌নিই জি‌গেস কর‌ছিলাম।

আন্নিঃ তাহ‌লে চল গামবাটটাকে দে‌খি‌য়ে দি?

আ‌ন্নি তানিয়ার হাত ধ‌রে বা‌ড়ির বাই‌রে নি‌য়ে গেলো। সেখা‌নে বিশাল বাগান করা। বাগা‌নের একটা অং‌শে তা‌কি‌য়ে তানিয়ার চোখ ধা‌ঁধি‌য়ে গে‌লো। চার রক‌মের অর্কিড ফুল গাছ। সাধা, গোলা‌পি ,হলুদ, আর বেগু‌নি রং এর অর্কিড। অনেকটা অং‌শে অর্কিড গাছ গু‌লো লাগা‌নো। আয়াত সেগু‌লোর যত্ন নি‌চ্ছে। আয়া‌তের ফু‌লের প্র‌তি এমন আকর্ষন দে‌খে তানিয়ার ভিষন ভা‌লো লাগ‌লো।

তানিয়া ফুল গু‌লোর কা‌ছে গি‌য়ে হাত দি‌য়ে ছু‌য়ে নি‌চ্ছে। ক‌য়েকটা ফুল‌কে ঠোঁট দি‌য়ে চু‌মো দি‌চ্ছে। আর আয়াত মুগ্ধ নয়‌নে দেখ‌ছে তানিয়া‌কে। ফু‌লের সৌন্দ‌র্য্যের সা‌থে একদম মি‌শে গে‌ছে ও।

তানিয়া: আচ্ছা আয়াত শেষ বার যখন আপনা‌দের বা‌ড়ি এসে‌ছিলাম তখন‌তো আপনা‌দের বাগা‌নে অার্কিড ছি‌লো না।

আয়াতঃ মি‌সেস তানিয়া! আপ‌নি শেষ বার ক‌বে আমা‌দের বা‌ড়ি এসে‌ছি‌লেন?

তানিয়া: প্রায় চার মা‌সের বে‌শি সময় আগে!

আয়াতঃ আপ‌নি কি জা‌নেন অর্কিড কত দি‌নের মাথায় ফুল দেয়?

তানিয়া: হুমম ৭৫ - ৯০ দি‌নের মাথায়।

আয়াতঃ বাহ। ম্যাডাম আপ‌নি যখন এসে‌ছি‌লেন তখন গাছ রোপ‌নের জন্য মা‌টি তৈরীর কাজ প্রায় শেষ হ‌য়ে গে‌ছি‌লো। তারপর গাছ লাগালাম। আর এখন ফু‌লে ফু‌লে ভরা।

তানিয়া: গুড। এবার নাস্তা খে‌তে আসেন আয়াত ভাইয়া।

আয়াতঃ কি? আবার? প্লিজ তানিয়া নট এগেইন?

তানিয়া: আই উইল ট্রাই।

সবাই নাস্তা ক‌রে কা‌জে লে‌গে পড়লো। কারন কাল আয়াত‌দের বৌ-ভাত। যে‌হেতু বি‌য়ে‌তে লোকজন তেমন আস‌তে পা‌রে‌নি। তাই বৌ - ভা‌তে অনেক লো‌কের আয়োজন করা হ‌য়ে‌ছে। বা‌ড়ি ঘর সুন্দর ক‌রে সাজা‌নো হ‌চ্ছে। অনেক লোকজন এসে তানিয়া‌কে দেখ‌ছে কথা বল‌ছে। তানিয়ার ভিষন অস‌স্তি লাগ‌ছে। এত গু‌লো মানু‌ষের ভিতর পুতু‌লের মত নিশ্চুপ হ‌য়ে ব‌সে থাক‌তে। সন্ধ্যার অনেক পর বা‌ড়ির লোকজন অনে‌কে চ‌লে গে‌লো। কিছু কা‌ছের নিকট আত্নীয় থে‌কে গে‌লো। রা‌তের খাবার খে‌য়ে তানিয়া শু‌তে গে‌লো। ভিষন ক্লান্ত হ‌য়ে প‌রে‌ছে। তার ওপর কাল সারা রাত একটুও ঘুমায়‌নি। তানিয়া রু‌মে গি‌য়ে শু‌য়ে পর‌লো। আয়াত এসে বিছানার অপর পা‌শে শুয়ে পর‌লো। তানিয়া বিছানা থে‌কে লাফ দি‌য়ে নে‌মে বল‌লো------

তানিয়া: আপ‌নিও কি এই বিছানায় শো‌বেন বা‌কি?

আয়াতঃ তাহ‌লে কোথায় শোব?

তানিয়া: তার আমি কি জা‌নি? এ বা‌ড়ি‌তে রু‌মের অভাব নাই । যান সেখা‌নে যান।

আয়াতঃ তানিয়া প্রথমত এটা কোন মু‌ভি না। যে তু‌মি খা‌টে আমি সোফায় বা অন্য রু‌মে ঘুমা‌বো। দ্বিতীয়ত বা‌ড়ি‌তে অনেক আত্নীয় স্বজন আছে। তারা দেখ‌লে কি বল‌বে?

তানিয়া: আমি আপনার সা‌থে ঘুমা‌বো না!

আয়াতঃ দে‌খো তানিয়া। বি‌য়েটা যখন হ‌য়ে‌ছে তখন আমা‌দেরও উচিৎ সম্পর্কটা‌কে গোছা‌তে সাহায্য করা। হয়‌তো সময় লাগ‌বে । ঠিক আছে নাও। তোমার যত খু‌শি ততসময় নাও। কিন্তু তানিয়া এক বিছানায় ঘুমা‌লেই যে তা‌দের ভিতর কিছু হ‌বে তা কিন্তু ভুল। দে‌খো বৈবা‌হিক জীবনটা বিশ্বাস থে‌কে চ‌লে। আর সম্প‌র্কে বিশ্বাস না থাক‌লে সে সম্প‌র্কের কোন মা‌নেই হয়। আমার ওপর বিশ্বাস রাখ‌তে পা‌রো। আমি ভু‌লেও তোমার বিশ্বাস ভাঙ‌বো না। যত‌ দিননা তু‌মি আমায় মন থে‌কে মান‌তে পার‌ছো তত‌দিন তোমার সা‌থে উল্টা পাল্টা কিছু করার চেষ্টা কর‌বো না।

দে‌খো তানিয়া বিবা‌হিত জীবন মা‌নেই শা‌রীরিক ‌মিলন না? সব থে‌কে বে‌শি জরু‌রি হ‌চ্ছে ম‌নের মিল। দে‌খো ম‌নের মিল থাক‌লে অন্য কিছু নি‌য়ে কোন কিন্তু থা‌কে না। তাই চুপচাপ বিছানায় শু‌য়ে প‌ড়ো। আমি মাঝখা‌নে কোলবা‌লিশ রে‌খে দিচ্ছি।

তানিয়া আর কিছু বল‌লো না। চুপচাপ গু‌টিসু‌টি মে‌রে বিছানায় শু‌য়ে পর‌লো। কিন্তু আয়াত আসন্ন বিপ‌দের থে‌কে অজ্ঞাত। কেন?

‌ম‌ধ্যে রা‌তে ও মা গো ব‌লে আয়াত চিৎকার দি‌য়ে উঠ‌লো। আয়াত খাট থে‌কে প‌রে গে‌লো। আয়া‌তের চিৎকা‌রে তানিয়ার ঘুম ভে‌ঙে গে‌লো। তানিয়া ধরপ‌রি‌য়ে উঠে বস‌লো। তারপর বল‌লো

তানিয়া: কি হ‌য়ে‌ছে আয়াত? চিৎকার দি‌চ্ছেন কেন?

আয়াতঃ এ্যাঁ । তানিয়া আমি জা‌নি তু‌মি আমা‌কে পছন্দ ক‌রো না। কিন্তু তাই ব‌লে এভা‌বে ফুটব‌লের মত লা‌থি মার‌বে?

তানিয়া: এ্যাঁ। আমি আপনা‌কে কখন লা‌থি মারলাম? আজব?

আয়াতঃ আজবই তো! রা‌তে ‌বেলায় মে‌য়েরা ঘু‌মের মা‌ঝে ফুটবল খে‌লে। আজব মে‌য়ে।

তানিয়ার এবার ম‌নে প‌ড়ে‌ছে যে ও ঘু‌মের অবস্থায় মা‌ঝে মা‌ঝে লা‌থি মা‌রে। ওর মা বা নীশা ব‌লেছি‌লো। এবার তানিয়া ঠিক হাস‌বে না কাঁদ‌বে ভে‌বে পা‌চ্ছে না। কারন আয়া‌তের এমন অবস্থা দেখ‌লে যে কেউ না হে‌সে পার‌বে না। তবুও হা‌সি চে‌পে। আয়াত‌কে ধ‌রে বিছানায় ব‌সি‌য়ে বল‌লো

তানিয়া: স্য‌রি আয়াত! বে‌শি লে‌গে‌ছে?

আয়াতঃ নাহ তেমন না। তু‌মি হাত ধর‌ছো না ঠিক হ‌য়ে গে‌ছে। তানিয়া এবার হে‌সে দি‌লো।

তানিয়া: আয়াত আপ‌নি জা‌নেন আপ‌নি এত্তগুলা ভা‌লো। উমমমমম্মমমমাহ।

চু‌মোটা দি‌য়ে তানিয়া নিজেও বোকা হ‌য়ে গে‌লো। লজ্জায় লাল হ‌য়ে উঠ‌লো। আয়াতও হা হ‌য়ে গে‌লো। তানিয়া কিছু বুঝ‌তে না পে‌রে চুপচাপ বিছানার অপর পা‌শে ঘু‌রে শু‌য়ে পর‌লো। আয়া‌তের যে‌নো ঘোর লে‌গে গে‌লো। এখ‌নো গা‌লে হাত দি‌য়ে আছে। সকাল বেলা আয়া‌তের ঘুম ভে‌ঙে দে‌খে তানিয়া আয়াত‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে ঘু‌মিয়ে আছে। আয়াত তানিয়ার দি‌কে তা‌কি‌য়ে ভাব‌ছে
কি নিঃষ্পাপ মায়া‌বি মুখ? সারা জীবন দেখ‌লেও সাধ মে‌টে না। আই লাভ ইউ মাই সুইট লি‌টেল এ্যান‌জেল। তানিয়া একটু ন‌ড়ে চ‌ড়ে উঠ‌লো। আয়াত তারাতা‌রি ঘু‌মের ভান ধ‌রে রই‌লো।

তানিয়া ঘুম ভাঙ‌তেই নি‌জে‌কে আয়া‌তের বু‌কে আবিষ্কার ক‌রে ভিষন লজ্জা পে‌লো। ধী‌রে ধী‌রে আয়া‌তের থে‌কে দূ‌রে গি‌য়ে উঠে ভাব‌ছে ইস কি রকম কি হ‌লো? ভা‌গ্যিস আয়াতটা ঘু‌মে আছে। দেখ‌লে ভিষন লজ্জা পেতাম।

নাস্তা করার পর তানিয়া কা‌ছে একটা ফোন আস‌লো। ফোনটা পে‌য়ে তানিয়া রু‌মের এক কোনায় ব‌সে ভিষন কাঁদ‌ছে । আয়াত সেটা দে‌খে বার বার জান‌তে চাই‌ছে কি হ‌য়ে‌ছে?

তানিয়: আয়াত আমি কি কোন পন্য? যে আপ‌নি আর সিয়াম আমা‌কে নি‌য়ে বা‌জি ধর‌লেন?

তানিয়ার মুখে #বা‌জি কথাটা শু‌নে আয়া‌তের মুখটা শু‌কি‌য়ে গে‌লো।

তানিয়া: কি এমন দোষ ক‌রে‌ছিলাম আমি? কি এমন চে‌য়ে‌ছিলাম আমি? যে আপনারা আমার জীবনটা‌কে এমন ক‌রে দি‌লেন? আমি‌তো সাধারন একটা জীবন চে‌য়ে‌ছিলাম। কিন্তু আপনারা তো আমার জীবনটা‌কে থ্রীল ক‌রে দি‌লেন। কেন আমার জীবনটা নি‌য়ে জুয়া খেল‌লেন? আচ্ছা কি বিষয় নি‌য়ে বা‌জি ধ‌রে‌ছি‌লেন? যার ফল আমায় ভোগ কর‌তে হ‌চ্ছে?

চল‌বে----------

ভুলত্রু‌টি ক্ষমার চো‌খে দেখ‌বেন....

image

Sort:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://www.packagetrackr.com/