এলোমেলো কিছু ফটোগ্রাফি। ফটোগ্রাফি পর্ব -৪৩
কেমন আছেন " আমার বাংলা ব্লগ " পরিবারের সবাই ? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই খুব ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি আবারও আমার তোলা কিছু এলোমেলো ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশাকরি আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
আপনারা সবাই হয়তোবা জানেন যে পাখির ফটোগ্রাফির করতে সবথেকে বেশি কষ্ট হয়। আপনাকে একটা পাখির ছবি তুলতে হলে আপনাকে নিঃশব্দে একটা জায়গায় বসে থাকতে হবে। আর আপনি যদি সেই জায়গাতে সামান্য শব্দ বা নড়াচড়া করেন তাহলে পাখিটি যে কোন মুহূর্তে উড়ে যেতে পারে। তাইতো অন্যান্য ফটোগ্রাফি অপেক্ষা পাখির ফটোগ্রাফি আমাদের কাছে সবথেকে বেশি কঠিন মনে হয়। আর আপনার কাছে যদি তেমন কোন জুম লেন্স না থাকে তাহলে তো ফটোগ্রাফি করাটা আরো বেশি অনেক কঠিন হয়ে যায়। যাইহোক এ ধরনের পাখির ফটোগ্রাফি করার জন্য আমরা বিশেষত বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে যেখানে অনেক বড় বড় হাওর বাওর রয়েছে সেই জায়গাটি বেছে নিয়ে।
আসলে আপনারা যে পাখিটি দেখতে পাচ্ছেন এটি কিন্তু এক ধরনের বক পাখি। এই পাখিগুলোকে অনেকে আবার কুচে বক বলে আবার অনেকে পানকরি বলে। আসলে এই পাখিটিকে জলাশয়ের আশেপাশে প্রায়ই দেখা যায়। এই পাখিটির প্রধান খাদ্য হলো মাছ। আসলে গ্রাম অঞ্চলের দিকে এই পাখিটি সংখ্যা তুলনামূলক আরো অনেক বেশি। যদিও শহরাঞ্চলে এই পাখিটি মোটেও দেখা যায় না। কারণ হলো শহর অঞ্চলের প্রায় সকল পুকুর মাটি দিয়ে স্থানীয় লোকজন ভরাট করে দিয়েছে। যার ফলে এই পাখিটিকে এখন প্রায় শহর অঞ্চলে মোটেও দেখা যায় না।
পাখিটির ছবি তোলার জন্য আমাকে একটা জায়গাতে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকতে হইল। আমি এক মুহূর্তের জন্য সেই জায়গাতে নড়াচাড়া করতে পারলাম না। কারন আমার কাছে তেমন কোনো ভালো লেন্স ছিল না। এছাড়াও জুম লেন্সের অভাবে আমাকে পাখিটির অনেক কাছেও যেতে হয়েছিল। যেহেতু পাখিটির অনেক কাছে ছিলাম তাই আমি বেশি নড়াচড়া না করে এক জায়গাতে চুপচাপ বসে রইলাম। কয়েকটা পাখি কিন্তু আমাকে দেখে আগেই উড়ে পালিয়ে ছিল। অবশ্য দুই একটা পাখি বুঝতে পারেনি যে আমি তাদের ছবি লুকিয়ে লুকিয়ে তুলছিলাম।
মাঝে মাঝে যখন পাখিটা আমার দিকে তাকিয়ে দেখছিল তখন আমি আর নড়াচড়া না করে এক জায়গাতে একদম পাথরের মত চুপচাপ বসে রইলাম। আসলে এ ধরনের ছবি তোলা কিন্তু অনেকটা ধৈর্যের ব্যাপার। আপনারা হয়তোবা ছবি দেখেই অনুমান করতে পারছেন। অবশ্য শীতকালে এই পাখিকে আর কিছু সময় জলে আবার কিছু সময় ডাঙ্গায় পাখা মেলে বসে থাকতে দেখা যায়। অর্থাৎ তারা নিজেদের শরীরকে শুকানোর জন্য পাখা মেলে রোদে বসে থাকে। এছাড়াও এই পাখি কিন্তু জলের নিচে ডুব দিয়ে মাছ শিকার করে খায়। যদিও এরা অনেকক্ষণ জলে নিচে ডুব দিয়ে থাকতে পারে। আসলে এরকম কয়েকটা ছবি তোলার পর যখন তারা বুঝতে পারল যে আমি তাদের ছবি তুলছি তখন তারা আমায় দেখে সবাই মিলে উড়ে পালালো।
এরপর যখন আমার এই পাখিটির ছবি তোলা শেষ হলো আমি দূরে দেখতে পেলাম যে একটা সজনে গাছে একজোড়া ঘুঘু পাখি বসে বসে মনের সুখে ডাকছিল। আসলে এই ঘুঘু পাখিটি আমাদের ভারতবর্ষের প্রায় সব অঞ্চলেই দেখা যায়। বিশেষ করে গ্রামে এই পাখির সংখ্যা তুলনামূলক হারে অনেক বেশি হলেও আমাদের শহরে কিন্তু এই পাখি সচরাচর দেখা যায়। বিশেষ করে আমি যখন ঘুম থেকে উঠি তখন প্রায়ই আমি আমাদের ছাদে কতগুলো ঘুঘু পাখি দেখতে পাই। আসলে ঘুঘু পাখির ডাক আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।
পাখি দুটিকে দেখে মনে হচ্ছিল যে তারা দুজন প্রেমিক-প্রেমিকা। যদিও তাদের ভিতরে কোন বিরহের সৃষ্টি হয়েছে তাই তারা দুজন দুদিকে মুখ করে বসেছিল। আসলে কয়েকজন অসাধু ব্যক্তিদের জন্য এসব পাখির সংখ্যাও দিন দিন আমাদের পৃথিবী থেকে তুলনামূলক হারে কমে যাচ্ছে। যদিও এখনো প্রায় সব জায়গাতে এই পাখি প্রচুর দেখা যায়। আসলে এই ঘুঘু পাখি বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ খেয়ে বাঁচে। আমি এই পাখি দুটোর ছবি আমার ক্যামেরায় বন্দি করে পরবর্তী ছবি তোলার জন্য অন্যদিকে লক্ষ্য দিলাম।
আসলে এই কবুতরকে কিন্তু পবিত্রতার প্রতীক বলে মনে করা হয়। এই পাখিটি কিন্তু বর্তমানে শুধুমাত্র পোষ্য পাখি হিসেবেই পরিচিত। এই পাখিটিতে আমরা বিভিন্ন বাড়িতে দেখতে পাই। অনেকে আবার প্রচুর পরিমাণে এই কবুতর পাখি পুষে থাকে। যদিও এই পাখিটি যখন ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশে উড়ে তখন সত্যিই আমাদের মন ভরে যায়। আসলে গ্রাম অঞ্চলে প্রায় প্রতিটা বাড়িতে এই পাখিকে দেখা যায়। যদিও এই পাখিটি এই মাঠের দিকে খাবারের সন্ধানে উড়ে এসেছিল। তাই এই পাখিটির ছবি আমি আমার ক্যামেরায় বন্দি করে নিলাম।
ক্যামেরা পরিচিতি : CANON
ক্যামেরা মডেল : Canon EOS 7D
ক্যামেরা লেংথ : 600 mm
আশাকরি আজকের এই ফটোগ্রাফিক পোস্টটি আপনাদের খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করতে অবশ্যই ভুলবেন না।
সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী পোস্টে।
You got some great bird photos. Thank you very much for your work and endurance. Happy holidays to you.