আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 130
'লাইটস, ক্যামেরা, অ্যাকশন। চিৎকার ভেসে এল। ভদ্রলোক: তুমি মেয়েটাকে অন্ধকারে রাখতে চাও।
মহিলা: ছেলেদের সঙ্গে না পড়লে যদি অন্ধকারে থাকা হয় তা হলে ওই ওইরকম আলোর দরকার নেই।
তিতির: ছেলেদের সঙ্গে পড়লে আমার কী ক্ষতি হবে।
মা: আমি অত কৈফিয়ত দিতে পারব না।
তিতির: মা, যতক্ষণ না তুমি আমাকে যুক্তি দিয়ে বোঝাবে ততক্ষণ আমি কো-এডুকেশন
কলেজ সম্পর্কে আগ্রহ হারাচ্ছি না। মা: দেখো জানতে চাইছ যখন তখন বলছি, কোন ছেলের মনে কী আছে তা কে বলতে পারে?
তিতির: সেটা তো কলেজে না গিয়েও হতে পারে।
মা: যা ভাল বোঝো করো, আমি এর মধ্যে নেই।
মা চলে যেতে অশোকের গলা শোনা গেল, কাট। ওকে। ফাইন।
সঙ্গে সঙ্গে ওপাশের অন্ধকার থেকে হাততালির আওয়াজ ভেসে এল। আলো জ্বলতে দেখা গেল বিভাসদা এগিয়ে আসছেন। কাছে এসে বললেন 'খুব খুশি হয়েছি তিতির। এইভাবেই, যা বলছ তা
ভেবে বলে যাও। অশোক!'
অশোক বলল, 'বলুন দাদা!' 'আমি চলি।' বিভাসদা বললেন।
'এখনই চলে যাবেন?' অশোক অবাক হল।
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'আর তো থাকার দরকার নেই। তিতিরকে আমি তোমার উপর জোর করে চাপিয়ে দিয়েছি কিনা দেখার জন্য এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম। ওকে নিয়ে আর চিন্তা করার কিছু নেই। চলি।' বিভাসদা বেরিয়ে গেলেন।
ওই মেকআপ রুমটাই তাদের বিশ্রাম এবং খাওয়ার জায়গা। লাঞ্চের সময় তিতিরের মনে হচ্ছিল, সবাই তাকে এত প্রশংসা করছে যখন তখন তার অভিনয় ভাল হচ্ছে। একবার শুনেই অনেকগুলো সংলাপ সে ঠিকঠাক মনে রাখতে পারছে। বলার সময় আটকে যাচ্ছে না। এর মধ্যে রাজু তাকে জানিয়েছে সিরিয়ালে যেসব অভিনেতা-অভিনেত্রী তিন-চার পাতার সংলাপ মুখস্থ করে এক নাগাড়ে ক্যামেরার সামনে বলে যেতে পারেন তাঁদের খুব চাহিদা। কারণ এঁদের সঙ্গে কাজ করলে তাড়াতাড়ি কাজ ওঠে এবং প্রযোজকের প্রচুর টাকা বেঁচে যায়।
যে মহিলা তিতিরের মা হয়েছেন তিনি পাশেই বসে খাচ্ছিলেন। খেতে খেতে জিজ্ঞাসা করলেন
'কী গো, কেমন লাগছে?' 'ভালই।'
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'তোমায় একটা কথা বলি, নিজেকে তৈরি করো।'
'কীভাবে করব?'
'কেন? বাড়িতে আবৃত্তি করবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। কবিতা, নাটক যা পাবে। বিখ্যাত আবৃত্তিকারদের ক্যাসেট শুনবে। আর সিনেমা দেখবে। ভালমন্দ সব সিনেমা। যার অভিনয় ভাল
লাগবে তাকে নিয়ে ভাববে। কেন তার অভিনয় দেখে ভাল লাগছে তাই নিয়ে চিন্তা করবে।'
'আমি তো এসব কিছুই করিনি।'
'হ্যাঁ। আজ তুমি তোমার নিজের চরিত্র পেয়ে গিয়েছ বলে যা বলছ তাই বেশ স্বাভাবিক
লাগছে।
কিন্তু সবসময় তো এরকম হবে না।' তিতির তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিল ভদ্রমহিলার উপদেশমতো কাজ করবে। সে জিজ্ঞাসা করল, 'আপনি এসব করেছেন?'
'আমি?' হঠাৎ ভদ্রমহিলা থেমে গেলেন। চুপচাপ খাওয়া শেষ করে হাত ধুয়ে এসে বললেন, 'ব্রজেন গুপ্তর নাম শুনেছ?'
'না।'
'তোমরা আর কী করে শুনবে। উনি এককালে বিখ্যাত নট এবং নাট্যকার ছিলেন। তখন শ্যামবাজারের থিয়েটারগুলো রমরম করে চলত। মাত্র ষোলো বছর বয়সে ব্রজেনদার দলে অভিনয় করতে যাই। প্রথম সাতদিন শুধু সারেগামাপাধানি চিৎকার করে বলতে হয়েছে, প্রত্যেকটাকে আলাদা করে, যেমন হওয়া উচিত। রিহার্সালে পাঁচ মিনিট দেরিতে গেলে ঢুকতে দিতেন না। নতুন নাটকের সংলাপ দিয়ে দেওয়ার তিনদিনের মধ্যে মুখস্থ না হয়ে গেলে আর রক্ষে থাকত না।'