আমার নিজের লেখা গল্প, কবিতা এবং আমার নিজের করা ফটোগ্রাফি।।। পর্ব- 159
তিতির বলেছিল, 'মেয়ে বেঁটে হলে কথা শুনতে হত না।'
'সব সময় পেঁচিয়ে কথা বলিস না।' মা ঝাঁঝিয়ে উঠেছিল।
আমি একটা কথা বুঝতে পারছি না। আমরা লম্বা বা বেঁটে যাই হই না কেন, তাতে তোমার ভূমিকা কোথায়? তুমি তো ইচ্ছে করে সেটা ঠিক করতে পারো না।'
'বাঃ! আমার পেটে তো তোরা হয়েছিস।'
কিন্তু সে তো বাবারও দায়িত্ব ছিল। তুমি বাবাকে পালটা অভিযুক্ত করবে না কেন? বাবা অত লম্বা হয়েও দাদাকে আরও আড়াই ইঞ্চি বাড়াতে পারেনি কেন? জিজ্ঞাসা করেছিলে কখনও?' তিতির হেসেছিল।
মা জবাব দেয়নি কিন্তু এটা যে মায়ের কমপ্লেক্স তা অল্প পরেই বুঝে গিয়েছিল তিতির, তাকে যখন জুতো কিনে দেওয়ার জন্য মা দোকানে নিয়ে যেত, কখনওই উঁচু হিল জুতো কিনে দিত না। বছর বারো বয়সে তিতির হিল জুতোর জন্য বায়না শুরু করতেই মা বুঝিয়েছিল, 'উঁচু হিল পড়লে
পায়ের আকৃতি খারাপ হয়ে যায়।' তিতির বলেছিল, 'হোক না খারাপ, আমি তো আর কিছুদিন পরে শাড়ি পরব, পা কেউ দেখতে পাবে না।' তবু মা শোনেনি, বলেছিল, 'তুই তো আমার থেকে লম্বা, তোর হিল পরার দরকার কী।' হ্যাঁ, সেই বয়সেই তিতির মায়ের মাথা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাঙালি মেয়েরা যখন পাঁচ তিন উচ্চতা নিয়ে খুশি থেকেছে তখন এইসব সুন্দরীদের দেখলে মন খারাপ হয়ে যাবেই। সেদিন জগুদা এক নায়িকার সমস্যার কথা বলছিল। খুব সুন্দরী, ভাল অভিনেত্রী কিন্তু ওর উচ্চতা পাঁচ ছয়। ওর সঙ্গে নায়ক হবে এমন অভিনেতা কলকাতায় মাত্র একজন এবং তাঁরও বয়স হয়েছে। বাকি যেসব চালু নায়ক আছেন তাঁদের উচ্চতা ওর চেয়ে কম অথবা মাথায় মাথায়। ফলে বেচারিকে নায়কদের পাশে দাঁড়িয়ে অভিনয় করার সময় জুতো খুলে ফেলতে হয়। হাই হিল তো দূরের কথা, ফ্ল্যাট চটি পরলেও ওকে বেশি লম্বা দেখায়। জগুদা বলেছিল, 'তোমার
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
কোনও অসুবিধে হবে না। তবে হিল ব্যবহার কোরো না।' অথচ হিন্দি সিনেমার যিনি জনপ্রিয়তমা নায়িকা তিনি বিশ্বসুন্দরী খেতাব নিয়ে এসেছেন। স্বভাবতই ভারতীয় মেয়েদের তুলনায় লম্বা কিন্তু নায়ক পেতে ওখানে অসুবিধা হয়নি। এখন আর
বেঁটে মেয়েরা সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজয়িনী হতে পারে না।
ব্যান্ড বাজতে লাগল। দর্শকদের দিকের আলো কমে এল আরও। একের পর এক সুন্দরীরা হেঁটে গেলেন মঞ্চে তাঁদের কলাকৌশল দেখিয়ে। শরীরের মাপ, হবি ইত্যাদি দর্শকদের জানিয়ে দেওয়া হল। তিতির আড়চোখে দেখল মা মুগ্ধ হয়ে দেখে যাচ্ছে। শুধু সুন্দরীদের নয়, এই ব্যাঙ্কুয়েট
হলের সব কিছু।
কাজের চাপটা এখন একটু হালকা, ব্যাক স্টেজে দাঁড়িয়ে রঞ্জনা সুন্দরীদের দেখছিল। আজকের এই অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে করার জন্যে অফিস বেশ কিছু ট্রেইন্ড ছেলে-মেয়ের সাহায্য নিয়েছে। রঞ্জনা দেখতে পেল যে প্রসাধন কোম্পানি এই প্রতিযোগিতাকে স্পনসর করছে তাদের এক বড় কর্তা এগিয়ে
আসছেন। এই ভদ্রলোকের ক্ষমতা অসীম। এরই আনুকুল্যে উপাসনা কাজটা পেয়েছে।
'থ্যাঙ্ক ইউ, খুব ভালভাবে এখনও পর্যন্ত চলছে।' ভদ্রলোক নিচু গলায় বললেন।
For work I use:
মোবাইল |
Redmi Note 11s |
ফটোগ্রাফার |
@taskiaakther |
লোকেশন |
ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছবি তোলা |
বাহিরে |
'আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন স্যার, ভালভাবেই শেষ হবে।'
'হ্যাঁ, আমিও তাই মনে করি। আপনাদের সঙ্গে কাজ করে আমরা খুব খুশি হয়েছি। আশা করি
আগামী বছরেও আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব।'
'আপনি যদি মনে রাখেন তা হলে আমরা কৃতজ্ঞ হব।' কথাগুলো বলল রঞ্জনা উপাসনার কথা মনে রেখে। উপাসনাই তাদের শিখিয়েছে ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কথা বলার সময় কতটা বিনয় প্রকাশ করতে হয়।
এই সময় উপাসনা এগিয়ে এল ওদের দিকে। ভদ্রলোককে দেখে বলল, 'ওয়েল মিস্টার সান্যাল,
কেমন মনে হচ্ছে বলুন?'
'ওই কথাই এতক্ষণ এঁকে বলছিলাম। গুড ওয়ার্ক।' ভদ্রলোক ঘড়ি দেখলেন, 'মনে হয় দশটার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে, তারপর আমি কি একটা সুযোগ পেতে পারি?'
উপাসনা ভ্রূ তুলল, 'কী রকম?'
'জাস্ট একটু ডিনার। আজকের সাকসেসকে সেলিব্রেট করব।'
'ওঃ, আই অ্যাম অনার্ড।'
'তা হলে কথা হয়ে গেল। আপনারা একটু অপেক্ষা করবেন, একসঙ্গে যাওয়া যাবে।'