শেষ বিকেলের মায়া - আমার লেখা ছোট একটি গল্প - পার্ট ১২

আসসালামুআলাইকুম

গল্পের বাকি অংশ সুরু করা যাক ......

.

আজ ফিফথ পিরিয়ডে শুনলাম ৩১ তারিখ পর্যন্ত ছুটি। খবরটা আমদের কাছে যেন ইদের চাঁদ দেখার মতো আনন্দ বয়ে আনল। কারণ ১৯ তারিখ থেকে পরীক্ষা ছিল। আমাদের গ্রুপের কেউই কিছু পড়িনি। রুবি, সুমি, আমি আর মিনি মিলে ঠিক করলাম প্রথম সপ্তাহটা চিল করব। তারপরের সপ্তাহ থেকে ধুমিয়ে গ্রুপ স্টাডি করব। পরীক্ষায় ভালো করা যাবে।

For Photos I use:

---

Camera	Iphone 12 Mini
Lens	Wide 26 mm-Equivalent
Photographer	@fxsajol
Location	khulna , Bangladesh
Processing photos	Outdoor

---

এই প্ল্যানিংয়ের মধ্যে অবশ্য সুমি কিছুটা বাগড়া দিয়েছিল। বলল, ‘আখিকে বলবি না?” আখিকে বলার ব্যাপারে আমরা কেউই আগ্রহী না। কেনইবা বলব! আস্ত একটা খ্যাত হয়ে গিয়েছে ও। লাস্ট সুলতান'স এ গিয়েছিলাম সবাই মিলে খেতে। খাওয়ার ফাঁকে দু- চারটা সেল্ফি না নিলে চলে! নাহ! তিনি সেল্ফি তো নিলেনই না, উলটো বিশাল লম্বা চওড়া লেকচার দিয়ে আমাদের সবার মুডের বারোটা বাজিয়ে দিল। আমাদের সাথে সেল্ফি তুললে আমরা তো অবশ্যই পিকগুলো আপলোড করব; তখন নাকি কত লোক দেখবে। আর আমাদের তাপসী রাবেয়ার পর্দা নষ্ট হবে। কোনো মানে হয়! দুই দিনের সন্ন্যাসী। ভাতেরে কয় অন্ন। যত্ত সব!

সেদিন ভাইয়া ইতালি থেকে ফেরার সময় আমার সব বান্ধুবীদের জন্য কী সুন্দর কাপল শোপিস নিয়ে এল। আখির জন্যও এনেছিল। ভাইয়া তো আর জানে না, আমাদের ছোট্টবেলার বন্ধুত্বে ফাটল ধরেছে ওর বাড়াবাড়ির জন্য। কী আর করা! এনেছে যখন ক্লাসে নিয়ে দিলাম সবাইকে। সবাই খুব খুশি। কিন্তু আমাদের তাপসী রাবেয়া! শুরু করে দিল নিজের ওয়াজ। ঘরে পুতুল শোপিস রাখলে নাকি রহমতের ফিরিশতা আসে না ইত্যাদি ইত্যাদি।

সত্যি বলতে মাঝে মাঝে আমি নিজেও আখিকে খুব মিস করি। আগে আমরা সবাই একসঙ্গে কত্ত মজা করতাম। আমরা পাঁচ জনের গ্রুপ। সেই ছোট্টবেলা থেকে।

মর্যাদা লেখা হয়ে গেছে। আর ঝুমি! ঝুমির তো কোনো পরীক্ষাই নেওয়া হলো না। ইমানের পরীক্ষা। হঠাৎ সেই ঘটনা মনে পড়ল। যখন সাহাবিগণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহর সাহায্যের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেছিলেন, ‘তোমাদের পূর্বে আরও অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছিল, এমনকি তাদের শরীর থেকে লোহার চিরুনি দিয়ে মাংস আলাদা করা হতো, অথচ তোমরা অধৈর্য হচ্ছো।’

ঝুমির দু'চোখ ভরে উঠল। এত এত নিয়ামতের মধ্যে ডুবে থেকেও কত সহজে জীবন নিয়ে হতাশ হয়ে যাচ্ছিল। কত সামান্য সমস্যাতেই এ পুরো পৃথিবীটাই একটা কারাগার মনে হচ্ছিল। অথচ এখনো তো এক বিন্দু পরিমাণ রক্তও ঝুমিকে দিতে হয়নি। এখনো তো বিলাল রা.-এর মতো তপ্ত রোদে পুড়তে হয়নি।

এখনো তো ইবরাহিম আলাইহিস সালামের মতো আগুনে কেউ ফেলেনি তাকে। আসিয়া আলাইহাস সালামের মতো পরীক্ষা কি দিতে হয়েছে? পান থেকে চুন খসলেই মনে হয়—‘এত আল্লাহকে ডাকি, এত ইবাদত করি, তাও কেন আল্লাহ আমাকে এত কষ্টে ফেললেন!' অথচ এখনো তো মারইয়াম আলাইহাস সালামের মতো ইবাদতের ধারে কাছেও নেই। না তাঁর মতো ভয়াবহ পরীক্ষা দিতে হচ্ছে! নিজের অবস্থায় খুব লজ্জিত হয় ঝুমি। ছলছল চোখ নিয়ে দু'হাত তোলে

সময় নিয়ে গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ