বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান এক দেশ থাকলে কেমন হত ওয়ানডে দল?

in #sports7 years ago

IMG_20171013_102651.jpg
স্পোর্টস ডেস্ক: উপমহাদেশের বাইরের সব দল মিলে যতো না ভক্ত-সমর্থক আছে, উপমহাদেশের একেকটা দলের সমর্থক তার চাইতেও অনেক অনেক বেশি। এ দলগুলো মানে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান যখন পরস্পরের মুখোমুখি হয়, খেলার মাঠ তখন হয়ে উঠে উৎসবের কেন্দ্র। কিন্তু যদি এই তিন দল মিলে এক দল হতো, কেমন হতো ওয়ানডে দল! নিশ্চয় পৃথিবীর বুকে এর চেয়ে শক্তিশালী দল হওয়া সম্ভব হতো না কখনো।

যারা থাকবেন পেস আক্রমণে
এই তিন দেশের ওয়ানডে দলে যারা খেলছেন, তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে সেরা পেসার মোহাম্মদ আমির।
পেস আক্রমণের মূল সেনানী তাই তিনি ছাড়া আর কেউ নন। তিনজন পেসার নিয়ে দল গোছালে বাকি দুজনের একজন অবশ্যই ভুবনেশ্বর কুমার। যতো দিন যাচ্ছে ভুবনেশ্বর ততোই হয়ে উঠছেন ব্যাটসম্যানদের আতঙ্কের নাম। আমিরের গতি ও সুইংয়ের মতো ভুবনেশ্বরের মূল অস্ত্রও তাই।

তৃতীয় পেসার নিয়ে হতে পারে তুমুল বিতর্ক। নাম আসতে পারে মোস্তাফিজুর রহমান, জাসপ্রিট বোমরাহ, রুবেল হোসেন বা হাসান আলির। তবে বোলিং বৈচিত্র এবং ডেথ ওভারের সামর্থ্য সবাইকে পিছনে ফেলে দেয়ার যোগ্যতা রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান। সাম্প্রতিক ফর্ম হয়তো তার ভালো নয়। কিন্তু ভুলে গেলে হবে না, ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন গুঁড়িয়ে দিয়েই ওয়ানডে খেলা শুরু করেছেন তিনি।

স্পিনার এবং স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার
উপমহাদেশের দলে স্পিনার থাকবেন না বা স্পিনিং অলরাউন্ডার থাকবেন না, তা হতে পারে না। অবশ্যই থাকবেন, কিন্তু কারা হবেন এ দুজন? ওয়ানডেতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ততোটা কার্যকর নন। রবিন্দ্র জাদেজাও চলেন না। বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে সবাইকে পিছনে ফেলে দিচ্ছেন ইয়াসির শাহ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত সিরিজে দারুণ বোলিং করেছেন তিনি। তার সঙ্গ দেয়া এবং ব্যাটিং লাইনে অবদান রাখার জন্য অন্যদের পিছনে ফেলে জায়গা করে নিতে পারেন ইমাদ ওয়াসিম। বল বা ব্যাট; যে কোনো কিছু করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার দারুণ ক্ষমতা আছে তার।

পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার
এই জায়গায় যে কোনো রকম বিতর্কের উর্ধ্বে গিয়ে নাম আসবে সাকিব আল হাসানের। বাংলাদেশের তো বটেই, বিশ্বেরই সেরা অলরাউন্ডার পাওয়াটা আসলে উপমহাদেশের ক্রিকেটেরই এক চরম সৌভাগ্য!

উইকেটরক্ষক
ব্যাটিং সক্ষমতা বিবেচনায় মুশফিক জায়গাটা নিতে পারতেন। কিন্তু এমএস ধোনি যে আছেন! উইকেটরক্ষণের পাশাপাশি ধোনির ব্যাটিং সক্ষমতাও তো ঈর্ষণীয়। এ ছাড়া অধিনায়কত্বের ভারটাও বইতে হবে তাকে। ভারতীয় ক্রিকেটের এই মাস্টারমাইন্ডও সাকিবের মতো উপমহাদেশের ক্রিকেটের এক অমূল্য সম্পদ।

দরকার একজন পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান, প্রয়োজনে যে বোলিংও করে দিবে
কার কার নাম মনে আসছে? খুব বেশি নয় তো! এই জায়গাটা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। মঞ্চ যতো বড়, ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ ততো দৃঢ়। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তিনটি সেঞ্চুরির সবগুলোই তিনি করেছেন আইসিসির বড় বড় আসরে। বল হাতেও বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে চমক দেখানোর দারুণ ক্ষমতা তার। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের ওয়ানডে দলে মাহমুদুল্লাহ তাই বিকল্পহীন।

ব্যাটিংয়ের তিন-ত্রাশ
এখন দরকার দুই ওপেনার, তিন নম্বর ব্যাটসম্যান এবং সহঅধিনায়ক। দুই ওপেনারের আলোচনায় পরে আসা যাক। তার আগে বরং তিন নম্বরে যে বিরাট কোহলি ছাড়া কেউ নেই, সেটা নিশ্চিত করা হোক! বিরাট কোহলি কেনো এই দলে, এটার নিশ্চয় ব্যাখ্যা দেয়ার দরকার নেই! সঙ্গে এটাও নিশ্চয় বলার দরকার নেই যে, দলের সেরা ব্যাটসম্যানই হোক সহঅধিনায়ক!

ওপেনিংয়ে কারা থাকবেন— এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে নিশ্চয় মাথার ভিতরে ঝাঁকে ঝাঁকে নাম আসতে শুরু করবে! কিন্তু শেষমেষ এ কথা তো নিশ্চিত যে রোহিত শর্মা এই দুজনের একজন হবেন। বাকি থাকে একটা মাত্র জায়গা। যে জায়গায় আহমেদ শেহজাদ, শেখর ধাওয়ান ও তামিম ইকবালদের নামও চলে আসবে সহজেই। এই তিনজনের মধ্যে কাকে বেছে নিবেন? ক্রিকেটীয় দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা। এই তিনটি দিক থেকে চিন্তা করলে তামিম ইকবালের নামটাকে কি উপেক্ষা করা যাচ্ছে? নাহ! তামিমই হতে পারেন দ্বিতীয় ওপেনার।

সব মিলিয়ে যে দলটা দাঁড়াতে পারে, তা নিঃসন্দেহে হয়ে যাবে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দল। কে জানে, হয়তো আধুনিক ক্রিকেটেরই ভয়ঙ্করতম দল এটি!