তৃষ্ণা জহির রহমান Part _ 1

in #steemit2 months ago (edited)

একটি সুন্দর সকাল।
বুড়ো রাত বিদায় নেবার আগে বৃষ্টি থেমে গেছে। তবু তার শেষ চিহ্নটুকু এখানে সেখানে ছড়ানো। চিকন ঘাসের ভগায় দু-একটি পানির ফোটা সূর্যের সোনালী আভায় চেক চেক করছে।
চারপাশে রবি শস্যের ক্ষেত। হলদে ফুলে ভরা। তারপর এক পূর্ণ যৌবন নদী। ওপারে তার কাশবন। এপারে অসংখ্য খড়ের গাদা।
21c761e0-7b94-4ac3-899b-f4447a463f1a.jpg

ছেলেটি বুকে মুখ রেখে খড়ের কোলে দেহটা এলিয়েন দিয়ে মেয়েটি ঘুমাচ্ছে। ওর মুখে কোন অভিব্যক্তি নেই। ঠোঁটের শেষ সীমানায় শুধু একটুখানি হাসি চিবুকের কাছে এসে হারিয়ে গেছে। ওর হাত ছেলেটির হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে রাখা। দুজনে ঘুমাচ্ছে ওরা। ছেলেটি ও ঘুমিয়ে।
তার মুখে দীর্ঘ পথ চলার ক্লান্তি। মনে হয় অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজে ছিলো ওরা। চুলের প্রান্তে এখনো তার কিছু রেশ জড়ানো রয়েছে।
সহসা গাছের ডালে বুনো পাখির পাখা ঝাপটানোর শব্দ শোনা গেলো। মটরশুঁটির ক্ষেত থেকে একটা সাদা ধবধবে খরগোশের বাচ্চা ছোটে পালিয়ে গেল কাছের অরণ্যের দিকে। ঘরের কোলে জেগে উঠলো অনেকগুলো পায়ের ঐক্যতান। সমতালে এগিয়ে এল ওরা। যেখানে ছেলেটি আর মেয়েটি এই পৃথিবীর অনেক চড়াই উৎরাই আর অসংখ্য পথ মাড়িয়ে এসে অবশেষে এই স্নিগ্ধ সকালে সোনা রোদে পরস্পরের কাছে অঙ্গীকার করেছিল। ভালোবাসি।
বলেছিলো। এই রাত যদি চিরকালের মতো এমনি থাকে এই রাত যদি আর কোনদিন ভোর না হয় আমি খুশি হবো।
বলেছিলো। ওই যে দূরের তারা গুলো যারা মিটিমিটি জ্বলছে তারা যদি হঠাৎ ভুল করে নিবে যেতো তাহলে খুব ভালো হতো। আমরা অন্ধকারে দুজন দুজনকে দেখতাম। বলেছিলো। হয়তো কিছুই বলেনি ওরা।
শুধু শুয়ে ছিলো। 18 জোড়া আইনের পা ধীরে ধীরে চারপাশ থেকে এসে বৃত্তাকারে ঘিরে দাঁড়ালো ওদের।
ওরা তখনো ঘুমাচ্ছে।

Sort:  
Loading...