প্রথম বাংলা লিখা সুন্দর কাহিনী এইটা
বর্তমান বিয়ের আসরগুলো একেকটা শুটিং স্পট। হিন্দু ধর্ম আর ইসলামের পার্থক্য কেবল মন্ত্র আর কবুলে। বাকীসব কদু আর লাউয়ের মিশ্রণ।
ছোটবেলায় দেখতাম বিয়ে হলে মেয়েরা কীভাবে কাঁদে। তার পাড়াপড়শিরা কীভাবে কাঁদে। কীভাবে কাঁদে তাদের বাবা-মা। আজকের বিয়েতে মেয়েরা সিনেমার নায়িকা কিংবা ম্যাগাজিনের মডেলদের মতো ফটোশুট করে। আগের বিয়েতে মেয়েদের লজ্জা ছাড়া আর কিছু পাওয়া যেতো না। এখন বিয়ে হয় না অমুক ফটোগ্রাফার আর তমুক ফটোগ্রাফি না হলে। তা ফটোগ্রাফার নর্তকীর মেইকআপম্যান-কোরিওগ্রাফারের মতো নতুন বউয়ের শাড়িটা ঠিক করে দেন। সিনেমার শুটিংয়ের পরিচালকদের মতো ধরে ধরে বিভিন্ন পোজ দিতে সহায়তা করেন।
এক নপুংসক দাইয়্যুস জামাই বসে থাকে মুখে রুমাল দিয়ে। পুরুষ তো সেই যার স্ত্রীর শরীরে সামান্য টাচ লাগার আগে অন্য পুরুষের হাজারবার ভাবতে হবে। পুরুষ হতে গেলে আত্মসম্মান লাগলে। ফেইসবুকের জেন্ডার চেঞ্জকারী ফেইক আইডির মতো এগুলো এখন পুহিলা বনে গেছে।
সোশাল মিডিয়ার নামে আরেক ট্রেন্ড জোরেশোরে চলছে- যেকোনো কিছুতেই ছবি তুলে তুলে আপলোড করা। সাথে কমেন্টের জয়জয়কার। "সুবহানআল্লাহ!" "মাশা আল্লাহ!"ও ছাড় পায় না। একইসাথে বরকনের সাথে পাউডার মেখে ছবি তুলে ফেবুতে ছড়িয়ে দিতে হবে অন্যদেরও। বিয়েতে গেছে এর প্রমান নইলে কী?
এরপর আছে নাচানাচি। বর আর বউ পক্ষের মেয়েদের নাচানাচি। চামে দিয়ে দুই পক্ষের লুইচ্চা ছেলেদের মজা লুটার ব্যবস্থা করা। ছেলে-মেয়ে একসাথেও এই নাচে শরীক হয়। আজকাল বর কনে হিন্দি সিরিয়াল দেখে দেখে নিজেরাই বিয়ের আসরে "নাচতে নেইকো মানা" সূত্র জপে। নির্লজ্জতার মাত্রা থাকে না কিছুই। আগে বিয়ের ক্ষেত্রে কিছু সাংস্কৃতিক উপলক্ষে বর কনে একসাথে এক মঞ্চে উপবেষ্টিত হতো। কিন্তু এটার নাম মণ্ডপ ছিলো না। এখন ধার করে মঞ্চের নামও চেঞ্জ করতে হচ্ছে। যদিও রঙ্গমঞ্চও ভালো শোনায় না।
আগে বিয়ে হওয়ার প্রমাণ ছিল দুই সাক্ষী এবং কাবিননামা। আর এখন বিয়ের প্রমাণ হলো ব্রাইডাল সাজের নামে কিম্ভুতকিমাকার এক মানুষ হয়ে বরের আঁচলের তলে দাঁড়িয়ে পোজ দেওয়া ছবি আপলোড করা।
একটা ঘটনা মনে পড়ছে। কিছুদিন আগে জনৈক ভাই একবার ফেবুতে লাইফ ইভেন্ট দেন- "Got Married".
সাথে সাথে এক আপা কমেন্ট করেন, "বউয়ের ছবি কই?" (যেন বউয়ের ছবি দিলিনা তো তোর বিয়ে বাতিল টাইপের কিছ)।
ভাই বুঝতে পেরে শুধু বলে দিলেন, "কিন্তু আমার বউ তো পর্দা করে।" এবার ও রিপ্লাই আর পাওয়া যায়নি ঐ আপা থেকে। বিয়েটা এখন আগের মতো নেই,খুব মিস করি আগের বিয়ে গুলোতে । যেখানে আশে-পাশের পরিবারের সবাই মা সহ সবাই গীত বলত,কিন্তু সময় গুলো এখন বসে বসে মিস করি ।