আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমার নাম মোঃ শাহিন আপনাদের সাথে যুক্ত রয়েছি মালয়েশিয়া থেকে। মাঝেমধ্যে রান্নার রেসিপি দিতে একটু লজ্জা করে কেননা ছেলে মানুষ হয়ে রান্নার রেসিপি শেয়ার করব এটা কেমন কেমন লাগে। বিদেশের মাটিতে আছি বলেই রান্নাটা মোটামুটি শিখতে পেরেছি।
ডিউটি থেকে এসে যাই রান্না করি না কেন খাওয়ার সময় যেন সবই কাচ্ছি বিরানির মত লাগে। যাইহোক নিজের রান্না নিজেই অনেক প্রশংসা করে ফেলছি এখন মূল লেখায় ফিরে আসা যাক। শুরুতেই রান্নার উপকরণগুলো উল্লেখ করি তো চলুন।
দুই রকম ডাউন | ২০০ গ্রাম মতো |
তেল | আনুমানিক ৫০ গ্রামের মত চাইলে কম বেশি করতে পারেন । মাছ ভাজা বাদে |
ঝালের অংশ এখানে কিছুটা বেশি দেখা যাচ্ছে কেননা এই ছবিটা অন্য আরেকদিন তোলা ছিল।
প্রথম ধাপ,
আমি এই রেসিপিটা বানাতে গিয়ে কোরাল মাছের মাথা ব্যবহার করছি। আপনার যে কোন মাছের মাথা দিয়ে এই রেসিপিটা বানাতে পারেন তবে মাছ সাইজে বড় হতে হবে তাহলে এ রেসিপিটার স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে খেতেও অনেক সুবিধা হবে। মাছের মাথাগুলো ফ্রিজ থেকে বের করে আরো একবার ধুয়ে পরিষ্কার করে নিলাম। তারপর মাছের মাথা থেকে পানি ঝরিয়ে লবনও হলুদ দিয়ে মাখিয়ে পাঁচ মিনিট মতো রেখে দিয়েছি যাতে করে মাছের ভিতরে লবণ হলুদ ভালোভাবে প্রবেশ করতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপ
একটি খালি কড়াইয়ে তেল গরম করে তারপর মাছের মাথা গুলো খুব সুন্দর করে আমি ভেজে নিয়েছি। আমার এই মাছের মাথাগুলো অনেক বড় তাই একটি করে ই ভেজে নিয়েছি। তা না হলে আমার অনেকগুলো তেল ঢালতে হতো এই মাছগুলো ভাজতে । মাছ ভাজার পর ওই তেল আর দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা যায় না এজন্য মাছগুলো ভাজতে একটু সময় লাগছে।
তৃতীয় ধাপ
মাছগুলো ভাজা শেষ হলে কড়াই পরিষ্কার করে আবারো নতুন তেল দিয়ে পেঁয়াজ, রসুন, আদা জিরা বাটা , ঝাল আরো অন্যান্য উপকরণগুলো হালকা লাল লাল করে ভেজে নিয়েছি এরপর হলুদ ও মাছের আলাদা মসলা দিয়ে হালকা একটু পানি অ্যাড করছি মসলাগুলো আরেকটু সুন্দর করে কষানোর জন্য।
চতুর্থ ধাপ
দুই রকম ডাল আগে থেকেই ধুয়ে রাখছিলাম পিঁয়াজ রসুন কষানো হয়ে গেলে তারপর ডাল দিয়ে আরো পাঁচ মিনিট মতো কষিয়ে নিয়েছি আগে যে মসল্লার কিছু পরিমাণ পানি অ্যাড করেছিলাম সেগুলো পুরোপুরি শুকিয়ে নিয়েছি।
![1000005515.jpg]
()
পঞ্চম ধাপ
ডাল কষানো হয়ে গেলে পরিণত পানি এ্যড করছি এরপর আলু ও টমেটো একসাথে দিয়েছি। ডাল এর পানি হালকা গরম হয়ে আসলে মাছের মাথাগুলো ভেঙ্গে নিয়ে তারপর ঝোলের উপরে দিয়েছি। এরপর হালকা নাড়া দিয়ে ঢাকা দিয়েছি। ডাল ফুটে আসলে কিছুক্ষণ পরপর নাড়া দিচ্ছিলাম যাতে করে তলায় লেগে না যায়। ডাল গলে ঘন হয়ে আসলে এরপর চুলার জল বন্ধ করে ধনেপাতা উপরে ছিটিয়ে দিয়ে একবার নাড়া দিয়েই শেষ করছি মাছের মাথা দিয়ে ডাউল রান্নার এই রেসিপি।
তো বন্ধুরা খুব সহজে হয়ে গেল আমার এই সুস্বাদু রেসিপি আপনারাও চাইলেই বাসায় বানিয়ে খেতে পারেন। আজকের মত আমি এখানে বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশাই করি আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।
মূলত চাল কে ভেজে কিছুটা মুড়ির মত করে এরপর মাছের মাথা দিয়ে রান্না করা হয় বলে এই রান্না কে মুড়িঘন্ট বলা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে কেন যেন এই রান্নাটি ডাল দিয়ে করা হয়। আবার অনেকে চিনি গুড়া চাল দিয়ে ও রান্না করে।
তবে যেভাবে রান্না করুক না কেন ঠিকভাবে রান্না করতে পারলে বেশ মজাই হয়।
আপনিও দু রকমের ডাল দিয়ে খুব সুন্দরভাবে মুড়িঘন্ট রান্না করেছেন। দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে।আর খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা ও করেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি রান্নার
রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
গ্রামের বাড়িতে আমি কখনো দেখি নাই চাউল দিয়ে রান্না করতে সব সময় দেখেছি বিভিন্ন রকম ডাল দিয়ে মাছের মাথা দিয়ে মুড়িঘন্ট করে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পড়তে পড়ে খুব সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য ভালো থাকবেন।
প্রথমেই বলব আপনার রেসিপি টা দেখতে ভীষণ লোভনীয় হয়েছে,,। মুড়িঘন্ট সত্যি কথা বলতে আমি খাবারটা আগে খেতে ভীষণ ভয় পেতাম,, ভাবতাম ভাতের সাথে মাখিয়ে মুখে দিলেই গলায় কাটা বেঁধে যাবে।। সে ভয় কতদিন রান্না করার পরেও খাইনি,,
তবে আমার শাশুড়ি মা একদিন আমাকে খাইয়ে বলল এইভাবে খেতে হয় এবং তার হাতের এই মুড়িঘন্টার রেসিপিটাও ভীষণ মজাদার হয়,, আর তারপর থেকেই আমি মাঝেমধ্যে একদম আপনার স্টাইলে রেসিপিটা তৈরি করি,,,।
মাঝেমধ্যেই খুব মজাদার রেসিপি শেয়ার করেন এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো তবে, আপনার ওয়াইফের জন্য আরো ভালোভাবে ভবিষ্যতে,,, তার খুব একটা কষ্ট করতে হবে না,,, 😁খুবই ভালো লেগেছে এবং পরবর্তী রেসিপি অপেক্ষায় রইলাম।।
মাগো মা আমি শুনছি বিদেশ থেকে যারা দেশে যাই এয়ারপোর্টে থেকে নাকি ভুলে যাই রান্না করার সমস্ত উপকরণ। তবে আপনি ঠিক বলছেন ওয়াইফকে অবশ্যই সহযোগিতা করতে পারব এটা আমারও ইচ্ছা আছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
একথাটা কিন্তু আপনি ঠিকই বলেছেন। কাজ করার পর যকন আমাদের কষ্ট হয়ে যায় তখন যেকোনো কিছু খেতেই ভালো লাগে । আমি যেহেতু নিজেই রান্না করে খেতাম তাই আমারও এই অভিজ্ঞতা রয়েছে। আজ আপনি মাছের মাথা দিয়ে মুড়িঘণ্ট রান্না করেছেন এবং রেসিপিটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ভালো থাকবেন।
যেহেতু আপনি রান্না করে খেয়েছেন তাই ফিল করতে পারছেন যে নিজের হাতে রান্না করার পরে খেতে কেমন লাগে। যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।